শেখ ফরিদ, প্রগতিশীল লেখক, বাংলাদেশঃ
ফয়েজ আহম্মদ ফয়েজের কবিতা নিয়ে আলচনা হবে এটাই স্বাভাবিক। সমালোচনা হবে তাও স্বাভাবিক। কেন না, তিনি গালিব ও ইকবাল প্রভাবিত হলেও উর্দু কবিতায় আধূনিকায়ন করেন। কিন্তু মজার বিষয় হলো তার যে তার একটি কবিতা পাকিস্তানে,রাষ্ট্র বিরোধী ও "ইসলাম বিরোধী" ছিলো। সেই কবিতাই আজ ফয়েজ আহমদের মৃত্যুর এত বছর পরেও আবার ভারতে " হিন্দু বিরোধী" হয়ে যাচ্ছে। সিএএ বিরোধীরা তার কবিতা আবৃত্তি করায়।
ফয়েজ আরবী শব্দ, ফয়েজ মানে বিজেতা বা বিজয়ী। যদিও কেউ নিজে নিজে তার নাম রাখে না। মা,বাবা অভিভাবকেরাই নাম রাখে। প্রাকৃতিক নিয়মের কারনেই নিজেই নিজের নাম রাখার সুযোগও নেই। তবুও এখানে তার নামের অর্থের সার্থকতা খুজে পাওয়া যায়। কবিতার মধ্যদিয়ে তিনি সফল। তিনি স্মর্তব্য তাই বিজয়ী।
আলোচনায় সিএএ বিরোধী সমাবেশে ফয়েজ আহমেদের কবিতা।
কবি ফয়েজ আহামদ বহুভাষী ছিলেন। আরবী, উর্দূ, পার্সী, পাঞ্জাবী, রুশ ও ইংরেজি ভাষায় লিখতেন পড়তেন এবং বলতেন। দুজন বাংলাদেশির প্রভাব ছিলো ফয়েজ আহমদ ফয়েজের উপর। প্রথমজন কমরেড মোজাফফর হোসেন, দ্বিতীয়জন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। কবি ফয়েজ আরবীর ছাত্র হলেও কমরেড মোজাফফরের সংস্পর্শে এসে কমিউনিষ্ট হন। যদিও ফয়েজ আহমদের একজন বড় ওস্তাদ ছিলেন আহলে হাদীস ফেরকার অন্যতম মওলনা হাফিজ মোহাম্মদ ইব্রাহীম মীর শিয়ালকোটি। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ফয়েজ আহমদ ফয়েজের আইনি সহযোগিতা করতেন। ফয়েজ আহমদ জেল খেটেছেন। তিনি তার দেশ পাকিস্তান থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন। আবার ফিরেও এসেছিলেন। রাশিয়ান সরকার তাকে, "আমাদের (রুশদের) কবি মনে করতেন। তিনি চেষ্টা করেছিলেন, পাকিস্তানে কমিউনিস্ট রাজনীতি ও চিন্তা প্রচার ও প্রসারের। কিন্তু ব্যার্থ হয়েছেন বা খুব একটা সফল হতে পারেননি। কারন পাকিস্তানে কমিউনিস্ট পার্টি ও কমিউনিজমের প্রচার নিষিদ্ধ ছিলো। তিনি ভারত ভাগ হলে পাকিস্তানে নাগরিকত্ব নেন। তিনি কখনো পাকিস্তানের সরকারের সুবিধাপ্রাপ্ত ছিলেন, কখনো বা কোন সরকারের চক্ষুশূল ছিলেন। কখনো কখনো তার দেশ থেকে বিতাড়িতও হয়েছেন।
ফয়েজ আহমদ পঁচিশ, ছাব্বিশ পংক্তির একটি কবিতা লিখেছিলেন পাকিস্তানের জান্তা সরকার জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে। সে কবিতা আজ ভারতের সিটিজেনসীপ এমেন্ডমেন্ট এক্ট (সিএএ) বিরোধীরা ১৭ ডিসেম্বার কানপুরে আইটিটিতে এক প্রতিবাদ সভায় আওড়ালে আবার বিপত্তি ঘটে। এমন কি ফয়েজ আহমদ ফয়েজের কবিতা পাঠের কারনে মামলাও হয়েছে। এই কবিতা রাষ্ট্র বিরোধী ও হিন্দু ধর্ম বিরোধী কি না তাি যাচাই করার কমিটিও করা হয়েছে। বিচিত্র বিষয় হলো, এই কবিতাটি এক সময় পাকিস্তানে, সরকার ও ইসলাম বিরোধী বলে মনে করা হতো। আবার এই কবিতার একটি পংক্তি খোদ দু চারজন কমিউনিস্টদের দ্বারাও সমালোচিত হয়েছে। একজন নাস্তিক কমিউনিস্ট কিভাবে " বস নাম রহে গা আল্লাহ্ কা.." পংক্তি লিখেন! সে অন্য বিষয়।
কানপুরে সিএএ বিরোধী প্রতিবাদী সভা থেকে যখন ফয়েজ আহমদের কবিতা পাঠ করা হয়। তখন প্রতিবাদে অংশ নেয়াদের মধ্য থেকেই কয়েকজন প্রতিবাদ করে, "হাম দেখেঙ্গে, লাজিম হ্যায় কি হাম ভি দেখেঙ্গে" কবিতা আবৃত্তির। এক দিকে পাকিস্তানী কবি (অবশ্য কবিদের কোন দেশে আবদ্ধ থাকা বা আবদ্ধ রাখা উচিত নয়।) অন্য দিকে সেই কবিতায় এমন কিছু শব্দ ও পংক্তি ছিলো যা এক দৃষ্টিতে হিন্দু বিরোধী মনে হতে পারে। যে যেহেতু, "বন্দে মা তরম", "জয়শ্রী রাম " শ্লোগান গুলো মুসলিমরা সাম্প্রদায়িক মনে করে। তখন হিন্দুদের, "বস নাম রহে গা আল্লাহ কা" " জব আর্জ এ খুদা কে কাবে সে / সব বুত ওঠাায়ে জায়েঙ্গে" এই সব পংক্তিগুলোতে আপত্তি হওয়াটা স্বাভাবিক। এক টিভি টক শোতে যদিও ভারতের প্রখ্যাত শায়র মনুওয়ার রানা, এই পংক্তিগুলোয় বিজেপির এক নেতার আপত্তিকে উর্দু ভাষা ও শায়রী না বুঝার নাদানী মনে করেন। অবশ্য বিজেপির সেই নেতা প্রশ্ন তোলেন, তারা যদি কোন প্রতিবাদ সভায়, "বস নাম রাহে গা রাম কা " "বস নাম রহে গা হনুমান কা" এই রকম পংক্তি সমূহ আওড়ালে তা মুসলিমরা সাম্প্রদায়িক মনে করতেন কি না? কিংবা সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ সভায় কেনই বা পাকিস্তানী কবির এই কবিতাটাই বেছে নেয়া হলো? তার জবাব কেউ দেয়নি। বরং আরেক প্রখ্যাত কবি,শায়র, লেখক, গীতিকার কাহিনীকার জাভেদ আক্তারও মনে করেন, কবি ফয়েজ আহমেদের এই কবিতা ও পংক্তিতে হিন্দু বিরোধী কিছু নেই। তার ভাষায়, যদি এই কবিতা হিন্দু বিরোধী হতো, তবে পাকিস্তানের সামারিক জান্তা জিয়াউল হক ফয়েজ আহমদের কবিতা নিষিদ্ধ করতেন না।
"জব আরজ খুদা কে ক্বাবে সে / সব বুত ওঠায়ে জায়েঙ্গে /সব তাজ উসাল জায়েঙ্গে /
হাম আহল এ সফা, মরদূদ এ হরম, / মসনদ পে বিঠায়ে জায়েঙ্গে/ সব তখত উসাল জায়েঙ্গে /সব তখত্ গিরায়ে জায়েঙ্গে / বস রাহে গা আল্লাহ কা/ হাম দেখেঙ্গে, হাম দেখেঙ্গে / লাজিম হ্যায় কি হাম ভি দেখেঙ্গে...।" এখানে সংক্ষিপ্ত, তবে ফয়েজ আহমদের পূর্ন কবিতাটি একটি প্রতিবাদী কবিতা তাতে সন্দেহ নেই। তবে, ভারতের সিএএ বিরোধী প্রতিবাদে এই কবিতা উদ্দেশ্য প্রণোদিত কি না তা বুঝা মুশকিল। বিজেপি নেতাদেরও উর্দু কবি ফয়েজ আহমেদ বিরোধী হওয়ার কথা নয়৷ টক শো গুলোতেও বিজেপি নেতাদের ফয়েজ আহমেদে বিরোধী দেখা যায়নি। সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ সভায় এই কবিতার উপস্থানা ও দু এক লাইন নিয়ে তাদের আপত্তি। বিজেপি নেতা ও ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপায়ী নিজেও উর্দু কবিতার কবিও ছিলেন।
ফয়েজ আহম্মদ ফয়েজের কবিতা নিয়ে আলচনা হবে এটাই স্বাভাবিক। সমালোচনা হবে তাও স্বাভাবিক। কেন না, তিনি গালিব ও ইকবাল প্রভাবিত হলেও উর্দু কবিতায় আধূনিকায়ন করেন। কিন্তু মজার বিষয় হলো তার যে তার একটি কবিতা পাকিস্তানে,রাষ্ট্র বিরোধী ও "ইসলাম বিরোধী" ছিলো। সেই কবিতাই আজ ফয়েজ আহমদের মৃত্যুর এত বছর পরেও আবার ভারতে " হিন্দু বিরোধী" হয়ে যাচ্ছে। সিএএ বিরোধীরা তার কবিতা আবৃত্তি করায়।
ফয়েজ আরবী শব্দ, ফয়েজ মানে বিজেতা বা বিজয়ী। যদিও কেউ নিজে নিজে তার নাম রাখে না। মা,বাবা অভিভাবকেরাই নাম রাখে। প্রাকৃতিক নিয়মের কারনেই নিজেই নিজের নাম রাখার সুযোগও নেই। তবুও এখানে তার নামের অর্থের সার্থকতা খুজে পাওয়া যায়। কবিতার মধ্যদিয়ে তিনি সফল। তিনি স্মর্তব্য তাই বিজয়ী।
আলোচনায় সিএএ বিরোধী সমাবেশে ফয়েজ আহমেদের কবিতা।
কবি ফয়েজ আহামদ বহুভাষী ছিলেন। আরবী, উর্দূ, পার্সী, পাঞ্জাবী, রুশ ও ইংরেজি ভাষায় লিখতেন পড়তেন এবং বলতেন। দুজন বাংলাদেশির প্রভাব ছিলো ফয়েজ আহমদ ফয়েজের উপর। প্রথমজন কমরেড মোজাফফর হোসেন, দ্বিতীয়জন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। কবি ফয়েজ আরবীর ছাত্র হলেও কমরেড মোজাফফরের সংস্পর্শে এসে কমিউনিষ্ট হন। যদিও ফয়েজ আহমদের একজন বড় ওস্তাদ ছিলেন আহলে হাদীস ফেরকার অন্যতম মওলনা হাফিজ মোহাম্মদ ইব্রাহীম মীর শিয়ালকোটি। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ফয়েজ আহমদ ফয়েজের আইনি সহযোগিতা করতেন। ফয়েজ আহমদ জেল খেটেছেন। তিনি তার দেশ পাকিস্তান থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন। আবার ফিরেও এসেছিলেন। রাশিয়ান সরকার তাকে, "আমাদের (রুশদের) কবি মনে করতেন। তিনি চেষ্টা করেছিলেন, পাকিস্তানে কমিউনিস্ট রাজনীতি ও চিন্তা প্রচার ও প্রসারের। কিন্তু ব্যার্থ হয়েছেন বা খুব একটা সফল হতে পারেননি। কারন পাকিস্তানে কমিউনিস্ট পার্টি ও কমিউনিজমের প্রচার নিষিদ্ধ ছিলো। তিনি ভারত ভাগ হলে পাকিস্তানে নাগরিকত্ব নেন। তিনি কখনো পাকিস্তানের সরকারের সুবিধাপ্রাপ্ত ছিলেন, কখনো বা কোন সরকারের চক্ষুশূল ছিলেন। কখনো কখনো তার দেশ থেকে বিতাড়িতও হয়েছেন।
ফয়েজ আহমদ পঁচিশ, ছাব্বিশ পংক্তির একটি কবিতা লিখেছিলেন পাকিস্তানের জান্তা সরকার জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে। সে কবিতা আজ ভারতের সিটিজেনসীপ এমেন্ডমেন্ট এক্ট (সিএএ) বিরোধীরা ১৭ ডিসেম্বার কানপুরে আইটিটিতে এক প্রতিবাদ সভায় আওড়ালে আবার বিপত্তি ঘটে। এমন কি ফয়েজ আহমদ ফয়েজের কবিতা পাঠের কারনে মামলাও হয়েছে। এই কবিতা রাষ্ট্র বিরোধী ও হিন্দু ধর্ম বিরোধী কি না তাি যাচাই করার কমিটিও করা হয়েছে। বিচিত্র বিষয় হলো, এই কবিতাটি এক সময় পাকিস্তানে, সরকার ও ইসলাম বিরোধী বলে মনে করা হতো। আবার এই কবিতার একটি পংক্তি খোদ দু চারজন কমিউনিস্টদের দ্বারাও সমালোচিত হয়েছে। একজন নাস্তিক কমিউনিস্ট কিভাবে " বস নাম রহে গা আল্লাহ্ কা.." পংক্তি লিখেন! সে অন্য বিষয়।
কানপুরে সিএএ বিরোধী প্রতিবাদী সভা থেকে যখন ফয়েজ আহমদের কবিতা পাঠ করা হয়। তখন প্রতিবাদে অংশ নেয়াদের মধ্য থেকেই কয়েকজন প্রতিবাদ করে, "হাম দেখেঙ্গে, লাজিম হ্যায় কি হাম ভি দেখেঙ্গে" কবিতা আবৃত্তির। এক দিকে পাকিস্তানী কবি (অবশ্য কবিদের কোন দেশে আবদ্ধ থাকা বা আবদ্ধ রাখা উচিত নয়।) অন্য দিকে সেই কবিতায় এমন কিছু শব্দ ও পংক্তি ছিলো যা এক দৃষ্টিতে হিন্দু বিরোধী মনে হতে পারে। যে যেহেতু, "বন্দে মা তরম", "জয়শ্রী রাম " শ্লোগান গুলো মুসলিমরা সাম্প্রদায়িক মনে করে। তখন হিন্দুদের, "বস নাম রহে গা আল্লাহ কা" " জব আর্জ এ খুদা কে কাবে সে / সব বুত ওঠাায়ে জায়েঙ্গে" এই সব পংক্তিগুলোতে আপত্তি হওয়াটা স্বাভাবিক। এক টিভি টক শোতে যদিও ভারতের প্রখ্যাত শায়র মনুওয়ার রানা, এই পংক্তিগুলোয় বিজেপির এক নেতার আপত্তিকে উর্দু ভাষা ও শায়রী না বুঝার নাদানী মনে করেন। অবশ্য বিজেপির সেই নেতা প্রশ্ন তোলেন, তারা যদি কোন প্রতিবাদ সভায়, "বস নাম রাহে গা রাম কা " "বস নাম রহে গা হনুমান কা" এই রকম পংক্তি সমূহ আওড়ালে তা মুসলিমরা সাম্প্রদায়িক মনে করতেন কি না? কিংবা সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ সভায় কেনই বা পাকিস্তানী কবির এই কবিতাটাই বেছে নেয়া হলো? তার জবাব কেউ দেয়নি। বরং আরেক প্রখ্যাত কবি,শায়র, লেখক, গীতিকার কাহিনীকার জাভেদ আক্তারও মনে করেন, কবি ফয়েজ আহমেদের এই কবিতা ও পংক্তিতে হিন্দু বিরোধী কিছু নেই। তার ভাষায়, যদি এই কবিতা হিন্দু বিরোধী হতো, তবে পাকিস্তানের সামারিক জান্তা জিয়াউল হক ফয়েজ আহমদের কবিতা নিষিদ্ধ করতেন না।
"জব আরজ খুদা কে ক্বাবে সে / সব বুত ওঠায়ে জায়েঙ্গে /সব তাজ উসাল জায়েঙ্গে /
হাম আহল এ সফা, মরদূদ এ হরম, / মসনদ পে বিঠায়ে জায়েঙ্গে/ সব তখত উসাল জায়েঙ্গে /সব তখত্ গিরায়ে জায়েঙ্গে / বস রাহে গা আল্লাহ কা/ হাম দেখেঙ্গে, হাম দেখেঙ্গে / লাজিম হ্যায় কি হাম ভি দেখেঙ্গে...।" এখানে সংক্ষিপ্ত, তবে ফয়েজ আহমদের পূর্ন কবিতাটি একটি প্রতিবাদী কবিতা তাতে সন্দেহ নেই। তবে, ভারতের সিএএ বিরোধী প্রতিবাদে এই কবিতা উদ্দেশ্য প্রণোদিত কি না তা বুঝা মুশকিল। বিজেপি নেতাদেরও উর্দু কবি ফয়েজ আহমেদ বিরোধী হওয়ার কথা নয়৷ টক শো গুলোতেও বিজেপি নেতাদের ফয়েজ আহমেদে বিরোধী দেখা যায়নি। সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ সভায় এই কবিতার উপস্থানা ও দু এক লাইন নিয়ে তাদের আপত্তি। বিজেপি নেতা ও ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপায়ী নিজেও উর্দু কবিতার কবিও ছিলেন।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours