রিয়া ভট্টাচার্য, লেখিকা, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর:
সম্পর্কটা পুরানো দুবছরের, ইনবক্স গড়িয়ে তা এখন উপনীত ঘরের দরজায়। হাজার মনোমালিন্য, পারিবারিক ভেদাভেদের যুক্তিজাল ছিন্ন করে ভালোবাসা মজবুত পাকা দালানবাড়ির মত। ট্রামলাইনে একত্রে হাত ধরে হেঁটে ম্যাডক্স স্কয়ারের দেবীদালান ছুঁয়ে পাড়ার অলিগলিতে মাখে অস্তরাগ। ছেলেটির বন্ধুদের কাছে মেয়েটির পরিচয় এখন শুধুই বৌদী, দুজনকে একসঙ্গে দেখে ইঙ্গিতপূর্ণ হাসিগুলো বড্ড গা সওয়া; তারমধ্যেই যে মিশে আছে স্বীকৃতির কিচিরমিচির। বিকেলের ধোঁয়া ওঠা চায়ের ভাঁড়ে সযত্নে ফুঁ দিয়ে তুলে ধরা লাল ঠোঁটের কাছে, কপালে জমে থাকা ক্লান্তির ঘাম মুছে নেওয়া পরিপাটি আঁচলে। এভাবে, হ্যাঁ এভাবেই এগোচ্ছিল গল্পটা। আচমকা অন্ধকার ; নিকষ কালো.... এলোমেলো ভাঙা কাঁচের মত বিক্ষিপ্ত ছড়িয়ে গেল সম্পর্কগুলো। ছেলেটা এখন আর ফোন হাতে বসে থাকে না সারাদিন, সকাল থেকে শুরু হয় না গৃহস্থালির খুঁটিনাটি গল্পগুলো। অভিমান, অনুযোগের মিছিলে একত্রে পা মিলিয়েও দিনের শেষে কেউ বলেনা " ভালোবাসি"। ছেলেটার দিন এখন শুরু হয় সূর্য যখন মধ্যগগনে, বাসি ভাতের মত পরিত্যক্ত শরীরটাকে টেনে নিয়ে যায় কাজে। প্রতিদিন চলে ভুলে থাকার ব্যর্থ লড়াই ; রাতের ফাঁকা সড়ক জানে নেশায় আচ্ছন্ন প্রেতের একলা প্রলাপের গল্প।
সম্পর্ক ভাঙার কারণ জানতে চান? তবে শুনুন, সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির অনুপ্রবেশ। আচমকাই একদিন মেয়েটির ইনবক্সে হানা বন্ধুবেশী ঝড়ের, ফলত ঝরাপাতার মত পুরানো সম্পর্কের পরিসমাপ্তি। মেয়েটি ভাবেনি একবারও দুবছরের হাতে হাত ধরে হাঁটার মুহূর্তগুলো ছুঁড়ে ফেলতে আস্তাকুঁড়ে। এগিয়ে গেছে অনেকটাই, পেছনে ছেড়ে গেছে ক্ষয়িষ্ণু এক পোড়োবাড়ি; যার প্রতিটা ইঁট ভেঙে পড়ছে নিঃশব্দে।
মেয়েটি স্বপ্ন দেখেছিল, স্বপ্ন দেখেছিল শিশিরভেজা ঘাসে একসাথে পা মিলিয়ে হাঁটবার। ফুচকার ঝালে চোখ বেয়ে গড়িয়ে নামা জল কোনো স্নেহমাখা হাত মুছিয়ে দিত অনেক যত্নে, গাড়িবোঝাই ব্যস্ত রাস্তা পার হয়ে যেত শক্ত করে আঁকড়ে। আচমকা থমকে গেল সময়টা, বেশি সুন্দরী পেয়ে সেই স্নেহমাখা হাতটা আচমকাই ছেড়ে গেল পথের বাঁকে, আজও নাকি স্ট্যাটাসটাই আসল; ভালোবাসা সে তো রঙ বদলায় বর্ষাকাশের মত। মেয়েটি আজকাল শান্তি খোঁজে অ্যান্টি ডিপ্রেশন পিলে, শরীর ভাঙছে ধীরে ধীরে নীরব অত্যাচারে ; ভ্রুক্ষেপহীন।
গল্পগুলো খুব চেনা লাগছে তাইতো? অনেকেই আছেন যাদের ভালোবাসা রঙ বদলেছে মুহূর্তেই, সৌজন্যে তৃতীয় ব্যক্তি। প্রতিদিন ইনবক্সে ভীড় জমায় এইসব নানা গল্প, ভগ্নহৃদয় মানবপিঞ্জর আর্তি জানিয়ে বলে, " আমায় নিয়েই গল্প হোক"। কি বলব তাদের? বাস্তব কখনো গল্প হয়না, বরং তা রুদ্ধকল্প হয়ে ঘুমিয়ে থাকে স্মৃতির ভাঁজে। ভাঁজ খুললেই পাওয়া যায় ন্যাপথলিনের ধোঁয়াশে গন্ধ। এভাবে, ঠিক এভাবেই, পুড়ছে কত মানুষ, প্রতিনিয়ত ; আমাদের দৃষ্টির সামনেই। আটকানো কি যায় না? অবশ্যই যায়, একটু চেষ্টা করলেই। কেন আসতে দিই আমরা সম্পর্কের মাঝে অন্য নাম, কেন বুঝিনা কিছু সম্পর্ক ডেডিকেশন চায় ; পুরোটাই।
ভালোবাসা কি শুধু একটা শব্দ? নাকি একটা দায়িত্বের নাম, যা বয়ে চলতে হয় সযত্নে। কারো জীবনের সঙ্গে জড়াবেন তখনই যখন তার দায়িত্ব নিতে পারবেন পরিপূর্ণভাবে। দুদিনের হাতে হাত রাখার নাম ভালোবাসা নয়, ভালোবাসা তাই যা জড়িয়ে থাকে অন্তিম শ্বাসে।
আর মন হারানো বন্ধুদের বলি, সবাই সবার জন্য পারফেক্ট হয়না, মনভাঙনের গল্প আমাদের সকলেরই থাকে, একটা বা একাধিক। আর একবার জীবনকে একটা চান্স দিয়েই দেখো, হয়ত এমন কাউকে পাবে যে আগলে রাখবে ; ছেড়ে যাবে না কোনোমতেই।
ভালোবাসুন, একসঙ্গে বাঁচুন। দুদিনের টাইমপাস করে ছেড়ে যাবেন না প্লিজ৷ আপনার দুদিনের এন্টারটেইনমেন্ট যেন অপরের ধ্বংসের কারন না হয়, মনে রাখবেন দিনের শেষে নজরটা মেলাতে হয় নিজের সাথেই।
সম্পর্কটা পুরানো দুবছরের, ইনবক্স গড়িয়ে তা এখন উপনীত ঘরের দরজায়। হাজার মনোমালিন্য, পারিবারিক ভেদাভেদের যুক্তিজাল ছিন্ন করে ভালোবাসা মজবুত পাকা দালানবাড়ির মত। ট্রামলাইনে একত্রে হাত ধরে হেঁটে ম্যাডক্স স্কয়ারের দেবীদালান ছুঁয়ে পাড়ার অলিগলিতে মাখে অস্তরাগ। ছেলেটির বন্ধুদের কাছে মেয়েটির পরিচয় এখন শুধুই বৌদী, দুজনকে একসঙ্গে দেখে ইঙ্গিতপূর্ণ হাসিগুলো বড্ড গা সওয়া; তারমধ্যেই যে মিশে আছে স্বীকৃতির কিচিরমিচির। বিকেলের ধোঁয়া ওঠা চায়ের ভাঁড়ে সযত্নে ফুঁ দিয়ে তুলে ধরা লাল ঠোঁটের কাছে, কপালে জমে থাকা ক্লান্তির ঘাম মুছে নেওয়া পরিপাটি আঁচলে। এভাবে, হ্যাঁ এভাবেই এগোচ্ছিল গল্পটা। আচমকা অন্ধকার ; নিকষ কালো.... এলোমেলো ভাঙা কাঁচের মত বিক্ষিপ্ত ছড়িয়ে গেল সম্পর্কগুলো। ছেলেটা এখন আর ফোন হাতে বসে থাকে না সারাদিন, সকাল থেকে শুরু হয় না গৃহস্থালির খুঁটিনাটি গল্পগুলো। অভিমান, অনুযোগের মিছিলে একত্রে পা মিলিয়েও দিনের শেষে কেউ বলেনা " ভালোবাসি"। ছেলেটার দিন এখন শুরু হয় সূর্য যখন মধ্যগগনে, বাসি ভাতের মত পরিত্যক্ত শরীরটাকে টেনে নিয়ে যায় কাজে। প্রতিদিন চলে ভুলে থাকার ব্যর্থ লড়াই ; রাতের ফাঁকা সড়ক জানে নেশায় আচ্ছন্ন প্রেতের একলা প্রলাপের গল্প।
সম্পর্ক ভাঙার কারণ জানতে চান? তবে শুনুন, সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির অনুপ্রবেশ। আচমকাই একদিন মেয়েটির ইনবক্সে হানা বন্ধুবেশী ঝড়ের, ফলত ঝরাপাতার মত পুরানো সম্পর্কের পরিসমাপ্তি। মেয়েটি ভাবেনি একবারও দুবছরের হাতে হাত ধরে হাঁটার মুহূর্তগুলো ছুঁড়ে ফেলতে আস্তাকুঁড়ে। এগিয়ে গেছে অনেকটাই, পেছনে ছেড়ে গেছে ক্ষয়িষ্ণু এক পোড়োবাড়ি; যার প্রতিটা ইঁট ভেঙে পড়ছে নিঃশব্দে।
মেয়েটি স্বপ্ন দেখেছিল, স্বপ্ন দেখেছিল শিশিরভেজা ঘাসে একসাথে পা মিলিয়ে হাঁটবার। ফুচকার ঝালে চোখ বেয়ে গড়িয়ে নামা জল কোনো স্নেহমাখা হাত মুছিয়ে দিত অনেক যত্নে, গাড়িবোঝাই ব্যস্ত রাস্তা পার হয়ে যেত শক্ত করে আঁকড়ে। আচমকা থমকে গেল সময়টা, বেশি সুন্দরী পেয়ে সেই স্নেহমাখা হাতটা আচমকাই ছেড়ে গেল পথের বাঁকে, আজও নাকি স্ট্যাটাসটাই আসল; ভালোবাসা সে তো রঙ বদলায় বর্ষাকাশের মত। মেয়েটি আজকাল শান্তি খোঁজে অ্যান্টি ডিপ্রেশন পিলে, শরীর ভাঙছে ধীরে ধীরে নীরব অত্যাচারে ; ভ্রুক্ষেপহীন।
গল্পগুলো খুব চেনা লাগছে তাইতো? অনেকেই আছেন যাদের ভালোবাসা রঙ বদলেছে মুহূর্তেই, সৌজন্যে তৃতীয় ব্যক্তি। প্রতিদিন ইনবক্সে ভীড় জমায় এইসব নানা গল্প, ভগ্নহৃদয় মানবপিঞ্জর আর্তি জানিয়ে বলে, " আমায় নিয়েই গল্প হোক"। কি বলব তাদের? বাস্তব কখনো গল্প হয়না, বরং তা রুদ্ধকল্প হয়ে ঘুমিয়ে থাকে স্মৃতির ভাঁজে। ভাঁজ খুললেই পাওয়া যায় ন্যাপথলিনের ধোঁয়াশে গন্ধ। এভাবে, ঠিক এভাবেই, পুড়ছে কত মানুষ, প্রতিনিয়ত ; আমাদের দৃষ্টির সামনেই। আটকানো কি যায় না? অবশ্যই যায়, একটু চেষ্টা করলেই। কেন আসতে দিই আমরা সম্পর্কের মাঝে অন্য নাম, কেন বুঝিনা কিছু সম্পর্ক ডেডিকেশন চায় ; পুরোটাই।
ভালোবাসা কি শুধু একটা শব্দ? নাকি একটা দায়িত্বের নাম, যা বয়ে চলতে হয় সযত্নে। কারো জীবনের সঙ্গে জড়াবেন তখনই যখন তার দায়িত্ব নিতে পারবেন পরিপূর্ণভাবে। দুদিনের হাতে হাত রাখার নাম ভালোবাসা নয়, ভালোবাসা তাই যা জড়িয়ে থাকে অন্তিম শ্বাসে।
আর মন হারানো বন্ধুদের বলি, সবাই সবার জন্য পারফেক্ট হয়না, মনভাঙনের গল্প আমাদের সকলেরই থাকে, একটা বা একাধিক। আর একবার জীবনকে একটা চান্স দিয়েই দেখো, হয়ত এমন কাউকে পাবে যে আগলে রাখবে ; ছেড়ে যাবে না কোনোমতেই।
ভালোবাসুন, একসঙ্গে বাঁচুন। দুদিনের টাইমপাস করে ছেড়ে যাবেন না প্লিজ৷ আপনার দুদিনের এন্টারটেইনমেন্ট যেন অপরের ধ্বংসের কারন না হয়, মনে রাখবেন দিনের শেষে নজরটা মেলাতে হয় নিজের সাথেই।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours