সভার একপ্রান্তে একটি উঁচু বেদী! সেখানে তিনজন বিচারকের আসন! তার ডান দিকে নব্য পন্ডিতদের পাঁচটি আসন, বামে একটি মাত্র আসন প্রতিযোগিনীর!বেদীর দক্ষিন পার্শ্বে আর একটি পৃথক বেদীর উপর রত্নখচিত সিংহাসন! সেটি কাশীরাজের! কিন্তু কাশীনরেশ বলবন্ত সিং লোকান্তরিত, তাঁর উত্তরাধিকারী নাবালক - তাই ওই সিংহাসনের উপর কাশীরাজের প্রতীকরূপে রাখা আছে রাজদন্ডটি! সন্মুখে দর্শকাসন! দুর-দুরান্ত থেকে বহু মানুষ এসেছেন তর্কসভায়! না - শুনতে নয়, কারন আলোচনা হবে বিশুদ্ধ সংস্কৃতে ! তারা এসেছে তামাশা দেখতে! স্ত্রীলোক পুরুষের বেশে সমানতালে তর্ক করতে চায় পুরুষের সাথে! তামাশা নয়?
হটী এ যুক্তি মানতে চায়নি - বলে পাঠিয়েছিলেন কেউ আসুক না আসুক ব্যাবস্হা থাকা চায়!
বিতর্কসভা শুরুর আগেই সভামন্ডল পরিপূর্ন! হটী সভায় এলেন , তবে পালকিতে চেপে নয়! পদব্রজে! প্রায় এক ক্রোশ পথ হেঁটে!
মুন্ডিত মস্তক! দীর্ঘটিকির প্রান্তে একটি শ্বেতকরবী ফুল বাঁধা! পরিধানে ধুতি, পুরুষের মতো মালকোচা দিয়ে পরা! নগ্নপদ, উর্ধাঙ্গে ঢিলেঢালা পিরান,তার উপর নামাবলী দেহে কোন অলঙ্কার নেই - নিরাভরন! শুধু প্রতিপক্ষের উপবীতের পরিপূরক কন্ঠে রুদ্রাক্ষের মালা!
একাকী নন!দ্বারকেশ্বর বিদ্যার্নবের গুরুকূলভুক্ত অনেকেই পদব্রজে তার সাথে পদব্রজে এসেছেন! সর্বাগ্রে আসছিলেন আচার্য স্বয়ং! অশীতিপর বৃদ্ধ কিন্তু বয়সের ভারে নুয়ে পড়েন নি! তাঁরও মুন্ডিত মস্তক, দীর্ধ টিকি, উর্ধাঙ্গ নিরাভরন,শুধু উপবীত! তাঁর পাশে আসছেন হটীর সহধ্যায়ী রমারঞ্জন ভট্টশালী!বৃদ্ধের মাথার উপর একটি তালপাতার ছাতা ধরে হাঁটছেন! বিচারকগন ইতিমধ্যেই সভায় উপস্হিত, উপস্হিত প্রতিপক্ষরাও! দুর থেকেই শোভাযাত্রা আসতে দেখেই শ্রোতাদের মধ্যে গুঞ্জন উঠল " এসে গেছেন - এসে গেছেন..."
হঠাৎ চিকের ঘেরাটোপ থেকে শঙ্খধ্বনী বেজে উঠল...সকলেই হতচকিত! (চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours