রিয়া ভট্টাচার্য, লেখিকা, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর:
নির্ভয়া ধর্ষণের পর কেটে গেছে ছয় বছর, দোষীদের ফাঁসির সাজা ঘোষণা হলেও কার্যকর করা হয়নি তা। সবচেয়ে বেশি অত্যাচার করা তথাকথিত নাবালক অপরাধী মুক্তি পেয়ে বাইরে ঘুরছে, মেয়েটি কিন্তু মৃত! হায়রে ভারতবর্ষের বিখ্যাত আইনব্যবস্থা!
পার্কস্ট্রিট ধর্ষণকান্ডকে মহিলা ক্ষমতাসীন বলেছিলেন " সাজানো ঘটনা ", তাঁর সুগঠিত মন্ত্রীসভার উচ্চশিক্ষিত মন্ত্রীমহোদয়গণ মহিলার চরিত্র, পোশাক, অত রাতে পাবে কি করছিল ইত্যাদি নানারকম প্রশ্ন এমনকি দেহোপজীবিনীর রেট নিয়ে গন্ডগোল বলেও লঘু করতে চেয়েছিলেন ঘটনাটি। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে সত্যতা প্রমাণ করায় কম গুরুত্বপূর্ণ পদে ট্রান্সফার হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম সেরা মহিলা আইপিএস অফিসার। বছর ঘুরে গেছে অনেকগুলি, সাজা তো অনেকদূর ; ধরা পড়েনি মূল অভিযুক্ত।
রাতের ট্রেনের ভরা কামরায় একা ভ্রমণ করছিলেন, চার দুষ্কৃতি গলার হার ছিনতাই করার চেষ্টা করায় বাধা দেন প্রাণপনে। প্রচন্ড পিটিয়েও কাজ না হওয়ায় তাঁকে চলন্ত ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয় দুষ্কৃতিরা, এককামরা লোক তামাশা দেখেছিল; প্রতিবাদ করেনি বিন্দুমাত্র। মেয়েটি প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েই নিজের সাফল্যে দেশকে করেছেন গর্বিত, অপরাধী কিন্তু আজও অধরা। মেয়েটির নাম? অরুনিমা সিনহা!
সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে? আপনি মহিলা? মধ্যরাতে সেক্সচ্যাটের প্রস্তাব, ইনবক্সে গোপনাঙ্গের ছবি এমনকি পোস্টের কমেন্টবক্সে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়েছেন? ঠিক কতজন প্রতিবাদ করেছে আপনার হয়ে আর কতজন তামাশা দেখে ব্যাঁকা হাসি নিয়ে উপভোগ করেছে দৃশ্য? নিজেই ভেবে বলুন না!
বাসে ট্রামে প্রতিদিন সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের শিকার হয় নারী, কনুইয়ের ঠ্যালা ও গোপনাঙ্গের চাপ তো নিত্যনৈমিত্তিক। এইসব জায়গায় একজন মহিলার হেনস্থা হলে কয়জন প্রতিবাদ করেন বলুন তো! বেশিরভাগই তো কেটে পড়তে পারলে বাঁচেন নয়ত ড্যাবড্যাব করে চেয়ে লাইভ পানুদর্শন করেন! প্রতিবাদী পুরুষ এলিয়েনের ন্যায় দ্রষ্টব্য বলে বিবেচিত হন নয়ত আইন হাতে তুলে নেওয়ার অপরাধে তার বিরুদ্ধেই অতিদ্রুত বিচারসভা বসিয়ে ফেলা হয়।
এ পোড়াদেশে ভক্ষক মহান, রক্ষক সবচেয়ে বড় অপরাধী। বধূহত্যার পর তার পরিবার অনুধাবন করে ভালো মেয়েটাকে নির্যাতন করত জামাই, ততদিন " সহ্য করে মানিয়ে গুছিয়ে নে মা!" রাস্তার মোড়ে ইভটিজিং এর শিকার হয়ে প্রতিবাদ করা ফুটফুটে মেয়েটা পেট বের করে শাড়ি পরা মধ্যবয়স্কার কাছে শোনে, " ছি...নাল মা...গি বলেই প্রতিবাদ করেছে, ভালো মেয়ে হলে মুখ লাগত না। " এই মধ্যবয়স্কাই আবার পুরুষশিশুর গোপনাঙ্গ চটকে স্থুল আনন্দ লাভ করেন ও তাকে স্নেহবিজড়িত আদরের নাম দ্যান। এই হল আমাদের সমাজচিত্র ও তার সুবিখ্যাত নাগরিকমনন।
এখানে কোন ডিএম তার বিয়ে করা বৌ এর সম্মানরক্ষায় হেনস্থাকারীকে থাবড়েছে, আইন হাতে তুলে নেওয়ার অপরাধে তাকে ফাঁসি দিন। বিদ্যালয়ে সেক্স এডুকেশন সংস্কৃতির পরিপন্থী, ভুলেও ওসব চালু করবেন না। মেয়েদের সেল্ফ ডিফেন্স শেখাবেন না, সমাজের নপুংসকতায় ক্ষিপ্ত হয়ে কোনোদিন আপনাকেই দুঘা বসিয়ে দিতে পারে। তারচেয়ে ঘোমটা দিয়ে বিছানায় স্বামীকে কিভাবে খুশি করতে হয় শেখান; মেয়েদের আবার প্রতিবাদ করতে আছে নাকি! শিশুকাল থেকে আদরের নামে যৌন হেনস্থা করে করে একটি পুরুষশিশুকে নারীবিদ্বেষী করে তুলুন, বড় হয়ে সে যদি আপনার ব্লাউজ ধরে টানে প্রতিবাদ করার কিচ্ছু নেই! প্রতিবাদকারীকে শাস্তি দিন, অপরাধীর মুক্তিকামনার্থে মোমবাতি মিছিল করুন.......... আচ্ছে দিন এসে গেছে।
নির্ভয়া ধর্ষণের পর কেটে গেছে ছয় বছর, দোষীদের ফাঁসির সাজা ঘোষণা হলেও কার্যকর করা হয়নি তা। সবচেয়ে বেশি অত্যাচার করা তথাকথিত নাবালক অপরাধী মুক্তি পেয়ে বাইরে ঘুরছে, মেয়েটি কিন্তু মৃত! হায়রে ভারতবর্ষের বিখ্যাত আইনব্যবস্থা!
পার্কস্ট্রিট ধর্ষণকান্ডকে মহিলা ক্ষমতাসীন বলেছিলেন " সাজানো ঘটনা ", তাঁর সুগঠিত মন্ত্রীসভার উচ্চশিক্ষিত মন্ত্রীমহোদয়গণ মহিলার চরিত্র, পোশাক, অত রাতে পাবে কি করছিল ইত্যাদি নানারকম প্রশ্ন এমনকি দেহোপজীবিনীর রেট নিয়ে গন্ডগোল বলেও লঘু করতে চেয়েছিলেন ঘটনাটি। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে সত্যতা প্রমাণ করায় কম গুরুত্বপূর্ণ পদে ট্রান্সফার হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম সেরা মহিলা আইপিএস অফিসার। বছর ঘুরে গেছে অনেকগুলি, সাজা তো অনেকদূর ; ধরা পড়েনি মূল অভিযুক্ত।
রাতের ট্রেনের ভরা কামরায় একা ভ্রমণ করছিলেন, চার দুষ্কৃতি গলার হার ছিনতাই করার চেষ্টা করায় বাধা দেন প্রাণপনে। প্রচন্ড পিটিয়েও কাজ না হওয়ায় তাঁকে চলন্ত ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয় দুষ্কৃতিরা, এককামরা লোক তামাশা দেখেছিল; প্রতিবাদ করেনি বিন্দুমাত্র। মেয়েটি প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েই নিজের সাফল্যে দেশকে করেছেন গর্বিত, অপরাধী কিন্তু আজও অধরা। মেয়েটির নাম? অরুনিমা সিনহা!
সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে? আপনি মহিলা? মধ্যরাতে সেক্সচ্যাটের প্রস্তাব, ইনবক্সে গোপনাঙ্গের ছবি এমনকি পোস্টের কমেন্টবক্সে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়েছেন? ঠিক কতজন প্রতিবাদ করেছে আপনার হয়ে আর কতজন তামাশা দেখে ব্যাঁকা হাসি নিয়ে উপভোগ করেছে দৃশ্য? নিজেই ভেবে বলুন না!
বাসে ট্রামে প্রতিদিন সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের শিকার হয় নারী, কনুইয়ের ঠ্যালা ও গোপনাঙ্গের চাপ তো নিত্যনৈমিত্তিক। এইসব জায়গায় একজন মহিলার হেনস্থা হলে কয়জন প্রতিবাদ করেন বলুন তো! বেশিরভাগই তো কেটে পড়তে পারলে বাঁচেন নয়ত ড্যাবড্যাব করে চেয়ে লাইভ পানুদর্শন করেন! প্রতিবাদী পুরুষ এলিয়েনের ন্যায় দ্রষ্টব্য বলে বিবেচিত হন নয়ত আইন হাতে তুলে নেওয়ার অপরাধে তার বিরুদ্ধেই অতিদ্রুত বিচারসভা বসিয়ে ফেলা হয়।
এ পোড়াদেশে ভক্ষক মহান, রক্ষক সবচেয়ে বড় অপরাধী। বধূহত্যার পর তার পরিবার অনুধাবন করে ভালো মেয়েটাকে নির্যাতন করত জামাই, ততদিন " সহ্য করে মানিয়ে গুছিয়ে নে মা!" রাস্তার মোড়ে ইভটিজিং এর শিকার হয়ে প্রতিবাদ করা ফুটফুটে মেয়েটা পেট বের করে শাড়ি পরা মধ্যবয়স্কার কাছে শোনে, " ছি...নাল মা...গি বলেই প্রতিবাদ করেছে, ভালো মেয়ে হলে মুখ লাগত না। " এই মধ্যবয়স্কাই আবার পুরুষশিশুর গোপনাঙ্গ চটকে স্থুল আনন্দ লাভ করেন ও তাকে স্নেহবিজড়িত আদরের নাম দ্যান। এই হল আমাদের সমাজচিত্র ও তার সুবিখ্যাত নাগরিকমনন।
এখানে কোন ডিএম তার বিয়ে করা বৌ এর সম্মানরক্ষায় হেনস্থাকারীকে থাবড়েছে, আইন হাতে তুলে নেওয়ার অপরাধে তাকে ফাঁসি দিন। বিদ্যালয়ে সেক্স এডুকেশন সংস্কৃতির পরিপন্থী, ভুলেও ওসব চালু করবেন না। মেয়েদের সেল্ফ ডিফেন্স শেখাবেন না, সমাজের নপুংসকতায় ক্ষিপ্ত হয়ে কোনোদিন আপনাকেই দুঘা বসিয়ে দিতে পারে। তারচেয়ে ঘোমটা দিয়ে বিছানায় স্বামীকে কিভাবে খুশি করতে হয় শেখান; মেয়েদের আবার প্রতিবাদ করতে আছে নাকি! শিশুকাল থেকে আদরের নামে যৌন হেনস্থা করে করে একটি পুরুষশিশুকে নারীবিদ্বেষী করে তুলুন, বড় হয়ে সে যদি আপনার ব্লাউজ ধরে টানে প্রতিবাদ করার কিচ্ছু নেই! প্রতিবাদকারীকে শাস্তি দিন, অপরাধীর মুক্তিকামনার্থে মোমবাতি মিছিল করুন.......... আচ্ছে দিন এসে গেছে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours