ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:

পরদিন  সুর্যোদয়ের  পূর্বেই নৌকা  রওনা  দিল  কাশীধামের  উদ্দেশ্যে! মোট  জনা  বিশেক  যাত্রীদের দু জন  মাঝি  ও জনা তিনেক পাইক  ছাড়া  সকলেই  নারী  ও শিশু! মন্বন্তরে  মানুষের  খাবার  জুটছে  না! তাই  নদীবক্ষে  দস্যুদের  লুটতরাজ  বেড়েছে! হটী  যাত্রীদের  সকলকে  চিনতে  না  পারলেও প্রায়  সকলেই  তাকে,ভবানী মা  রূপে  চিহ্নিত  করেছে!হটী  সাথে  নিয়েছে  খান  কয়েক  থান  কাপড়, দুটি  প্রিয়  পুঁথি,কিছু  জরুরী  ঔষুধপত্র  আর  একমুঠি  বাবার  দেওয়া  বিডবরাহ -বিতাড়নের  ত্রিশূলটি!
          নৌকা  চলল  দক্ষিন-পুর্ব মুখে! অনেক  গ্রাম,গঞ্জ  শহর  অতিক্রম  করল! কিন্তু   সব  শূন্য  খাঁ খাঁ  করছে  জন মানব শুন্য, দুর্ভিক্ষের  কারনে  হয়  পালিয়েছে  নয়তো  মারা  গেছে!নৌকা  মাঝে  মাঝে  চরায়  ভেড়ে  যাত্রীরা  সামন্য  রান্না  করে  খায়  আবার  নৌকা নিয়ে  বেরিয়ে  পড়ে! সঞ্চয়ও ধীরে  ধীরে  কমতে  থাকে!রাজমহলের  কাছাকাছি  পৌঁছে  কিছু  চাল  কেনা  যাবে ! এই আশাতেই  আধপেটা  খেয়ে  কোন  রকম  দিন  পার  করতে  থাকে!
        গঙ্গায়  পৌঁছে  নৌকা  উত্তর২ মুখে  চলতে  থাকে! নবদ্বীপ  অতিক্রম  করে পশ্চিমমুখী  হয়  নৌকা!
            একদিন  রাত্রে  অতর্কিতে  জলদস্যুরা  আক্রমন  করে  নৌকা! মধ্যরাতে চিৎকার  চেঁচামিচিতে  ঘুম  ভেঙে  যায়  হটীর! সে  দেখতে  পায় যাত্রীরা  প্রানভয়ে  ছোটাছুটি  করছে! একদল  মশালধারী  দস়্যু তাদের  সর্বস্ব  লুঠ  করেছে!হটী  তার  ত্রিশূলটা  খুঁজে  পেল  না!কোন  দস্যু  আগেই  ওটা  চুরি  করেছে! নিরস্ত্র  অবস্হায়  প্রতিরোধ  গড়ে  তুলতে  চেষ্টা  করল  হটী! কিন্তু  অসম  যুদ্ধে  ব্যার্থ  হ'ল! এক  ষন্ডামার্কা  দস্যু  সর্দারের  লাঠির  আঘাতে  লুটিয়ে  পড়ল  নৌকার  পাটাতনের  উপর! (চলবে)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours