আনন্দিতা রায়, লেখিকা ও সঙ্গীতশিল্পী, দুর্গাপুর:

প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যে প্যারোডি ছিল না বললেই চলে ।মূলত ইংরেজি সাহিত্যের হাত ধরেই বাংলা সাহিত্যে প্যারোডির আগমন হয়। প্যারোডি হলো ইংরেজ আগন্তুক। A feeble ridiculous imitation. কোন কবি বা লেখকের এর বিখ্যাত কাব্য বা গদ্য রচনা কে মূলানুগ অনুসরণ তথা অনুকরণ করে ভিন্নধর্মী মজাদার ব্যঙ্গাত্মক অথবা হাস্যরসাত্মক আবহ সৃষ্টি করাই হল প্যারোডির উদ্দেশ্য।
রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়াও বাংলা গানের বিভিন্ন ধারার রসের স্রোতে ডুব দিয়ে শিখতে গাইতে ও শেখাতে গিয়ে আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়েছে রবীন্দ্র সংগীত নজরুল গীতি আধুনিক গানের বিপুল জনপ্রিয়তার আড়ালে বহুজাতিক বাংলা গানের বেশ কিছু অংশ চর্চার অভাবে বিস্মৃতপ্রায় হয়ে উঠেছে। প্যারোডি তারমধ্যে একটি। আমাদের প্রতিদিনের ব্যস্ততা ,মানসিক চাপ যুক্ত জীবন,  দ্বন্দ্ব, সম্পর্কের টানাপোড়েন ও যান্ত্রিক জীবনযাত্রায় নির্মল হাস্যরসবোধ আজ উবে গেছে। তাই অতি সাধারণ একজন মানুষ হিসেবে এ এক ছোট্ট আর্তি আমার বিশ্ব সংস্কৃতি ভান্ডারের দিকদর্শী সম্পদ প্যারোডি কে তুলে ধরার।
বিশিষ্ট প্যারোডিকার শ্রী সতীশ চন্দ্র ঘটক 'প্যারোডি' শব্দটির পরিবর্তে 'লালিকা' শব্দটি কে ব্যবহার করার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু বাঙালির কানে তা ধরেনি। তাই দেখি লালিকা শব্দটির মধ্যে মিষ্ট লালিত্য থাকা সত্ত্বেও একটি মরমে প্রবেশ করেনি। শ্রী চিত্তরঞ্জন লাহা বাংলা সাহিত্যে "প্যারোডি "নামক গ্রন্থে বলেছেন প্যারোডি হল সাহিত্যের পাল্টা গান। শ্রী জ্ঞানেন্দ্র প্রকাশ ঘোষ  আবার প্যারোডি কে বলেছেন 'আমোদজনক উত্তর'। (ক্রমশ)



Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours