জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:

যারা যত লেনিনকে বাদ দিয়ে মার্ক্সের কথা ভেবেছেন, স্তালিনকে বাদ দিয়ে জাতীয়তার কথা ভেবেছেন, নিস্কলুষ ট্রেড ইউনিয়নের নামে বি টি রনদিভে বা কমরেড জ্যোতি বসুকে  দূরে
রেখে ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টা করেছেন বা ভেবেছেন
----- সবাই শেষ পর্য্যন্ত, চলমান ডুবন্ত ভারতীয় সত্বার শ্রোতে   ধীরে ধীরে মার্ক্সের জ্ঞান সত্বার বিপরীত পথে হাটবেন,
------ প্রকৃতি ও সমাজ বিজ্ঞানের সাধারন নিয়মেই। 
 এই বিপরীত যাত্নিরায়,
---- নিজেদের অজান্তেই  ফ্যাসিস্তদের জন্য জমি নির্মান করেছেন এবং করবেন। পরিনামে ফ্যাসিস্তরা যতই  মধ্যযুগীয় বা তার পূর্বের  প্রেতাত্মাদের ময়দানে নামিয়ে দিতে থাকবে- সাইনবোর্ড সর্বস্যতা শেষ পর্য্যন্ত -----

 জ্ঞানের বিপরীতে সব রকম সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উসৃ্ংখলতার শিকার হতে থাকবেন।  উপর তলার নেতাদের হাতে মার্ক্স এবং লেনিন থাকলেও
------, নিচুতলায় ভাবাদর্শগত  আত্মসমর্পনের সামনে, নিজেদেরকে কমরেড বি টি আর কিংবা জ্যোতি বসু থেকে দুরত্ব রেখে চলতে থাকবেন।এই দুরত্বের অবস্বম্ভাবি পরিনাম হবে লেনিনকে তাড়িয়ে দিয়ে তত্বের জাল বোনা, যার
পরিনাম দাড়ায় সংগঠন এবং তত্বহীনতার তত্বের উপর
-----   গায়ের জোরে  'মার্ক্সবাদের' সংস্থাপনের জগাকিছুরি।
জ্ঞান, তত্ব এবং ইতিহাস বোধের  প্রয়োগে সম্মেলন ঘটানোর প্রশ্নে, যখন শ্রমিক আন্দোলনের নেতারা
------  , ভারতের পরিপ্রেক্ষিতে কমরেড বি টি আরকে ভয় পেয়ে উলটো পথে দীর্ঘদিন হাটতে থাকবেন, সংশোধনের জন্য  নিজেদেরকে উপরতলা কিংবা সহকর্মী কমরেড এবং  সাধারন বুদ্ধিসত্বার কাছে আত্মসমর্পনের আকাংখ্যা না থাকে,
-----    নিচুতলায় প্রয়োগ বিজ্ঞান সংক্রান্ত বোধহীনতা, উচুতলাকে আত্থেমসমর্পনে টেনে আনবেই। প্রকৃ্তি বিজ্ঞানের নিয়মগুলিকে সমাজ বিজ্ঞানে প্রয়োগ সত্বাকে যখন মান্ধাতা আমলের , অর্ধজ্ঞানকে মান্ধাতা পদ্ধিতে আধুনিক উৎপাদন কাঠামো এবং  সদ্যজাগ আধুনিক শ্রমিক শ্রেনীর আবেগের উপরে
------ দীর্ঘ  ও অধ্যবসায়ের সাথে  শিক্ষন ও প্রশিক্ষনের পথকে এড়িয়ে গিয়ে, যখন গায়ের জোরে,অতীতের পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়া পদ্ধতি চাপিয়ে দিতে থাকেন তখন নিচুটার সাথে সাথে উপরটারো বারোটা বাজাতে থাকে।
------ বৌ্দ্ধিকস্থিতি যেমনভাবে ভূমিতলে গেছে, তেমনভাবে শ্রমিক শ্রেনী সামাজিক প্রশ্নে নিরপেক্ষ হয়েছে এবং এই নিরপেক্ষতাই ক্রমে সাম্যচেতনাকে দুর্বল করেছে।শ্রমিক আন্দোলনের পশ্চাতপদ অংশ থেকে কৃ্ষক সহ অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা জ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান সহ, জনজীবনের সর্বক্ষেত্রে বিস্তার লাভ করতে থাকবে।

এইভাবে যে জ্ঞানসত্বাকে প্রকৃ্ত বিজ্ঞান থেকে যাত্রা শুরু করে ইতিহাসের দ্বন্দ্বগুলিকে অতিক্রম করে বর্তমান, সেই বর্তমান থেকেই
---- একজন সাম্যবাদী কিংবা শ্রমিক শ্রেনীর নেতৃ্ত্বদায়ী অংশকে ইতিহাসকে অভিবিষ্যতের পথে সমাজকে এগিয়ে দিতে হয়, সেখানে একপ্রান্তে আন্তরিকতাক সমুদ্রের উচ্ছাসের পর্য্যয়ে উঠিয়ে আনতে একজন নেতাকে  কাব্যিক স্তরে  উঠিয়ে আনতে হয়। 
রবীন্দ্রনাথ বোধ হয় তাই বল্লেনঃ
"জীবনে জীবনে যোগ করা
না হলে, কিত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয় গানের পসরা'"

সমাজ বিজ্ঞান যেহেতু প্রয়োগ বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ রুপ, এর প্রকাশ যেহেতু মানবিকতার পথে সামাজিক রুপান্তরন প্রকৃয়ায় শ্রমিক নেতৃত্ব
সেকারনেই,
----- লেনিন যেখানে একে 'মেহনতের'  প্রতি শতভাগ  আনুগত্ত্বের কথা বলেছেন, সেখানে, রবীন্দ্রনাথ, এই সম্পর্ককে এক পবিত্র মানবিক বন্ধন বলে চিহ্নিত করলেন। 
আজকের দিনে,  জ্ঞান যদি তার  সামগ্রিক চরিত্র
থেকে ক্রমাগত বিচ্ছিন্নতা এবং খন্ড বিখন্ডনের দিকে
গড়িয়ে যাওয়ার কারন হয়ে থাকে ----
তবে নিশ্চিতভাবে তার  কারনগুলির অন্যতম দিক  হিসেবে নিম্নলিখিত বিষয়গুলিকে মানতে হবেঃ
প্রথমতঃ যারা এখনো, মানতে জ্ঞানর উৎস হিসেবে
প্রকৃ্তি বিজ্ঞান, প্রকৃ্তির রুপান্তরনে মেহনতের অবদান এবং ইতিহাসের অভিমুখে উৎপাদনের রুপান্তর প্রকৃয়ায় এবং মানবিকতার মহামানবিক উত্তোরনে  শ্রমের অবদান অস্বিকার করেন ---
তাদের পক্ষ কোনদিন জ্ঞানতত্বে এবং মেহনতের সর্বোচ্চ রুপ হিসেবে 'মহামানবিক সত্বাকে চিহ্নিত করতে গিয়ে, বার বার অমানবিকতার
ধুম্রজালে  আচ্ছন্ন হয়ে পড়বেন।

এই তত্বকে যখন এগিয়ে দেওয়া যায় তখনই সাম্প্রতিক কালে
জ্ঞানর রুপ যে কেন খন্ড বিখন্ড হয়েছে, তার কারন এবং সাথে সাথে
উৎপাদন প্রকৃয়া আন্তর্জাতীক হয়ে গেলেও,
----- কেন মেহনতের আবেদনকে আন্তর্জাতিকতায় উঠিয়ে আনতে বাধার কারন হয়েছে , সে সব কথা স্পষ্ট হবে।

নিশ্চিতভাবেই,
মেহনতি চেতনার ক্রমাবনতি এবং তার সাথে সাথে সামাজিক চেতনার ক্রমান্বয় পাতাল যাত্রার প্রাথমিক কারনঃ
 সামাজিক উৎপাদনে শ্রম বিভাজন,  উৎপাদন প্রকৃয়ায় জীবন্ত শ্রমের অবদানের ক্রম সংকোচন এবং সর্বশেষ একটি নিদৃষ্ট উৎপাদন প্রকৃয়া একাধীক দেশে বিক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে
-----  শ্রম চেতনাকে  সমাজের কালগত এবং আন্তর্জাতীক চেতনায় উঠিয়ে আনাকে আটকাতে  বিশ্বপুজিতন্ত্র একটা বিকট কুজ্ঝটিকা নির্মান করতে পেরেছে।

 অন্যপ্রান্তে
 শ্রমিক আন্দোলনকে যখন নেতারা
------ অবিমিশ্র ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন বা  সামাজ  নিরপেক্ষ শ্রমিক  আন্দোলন বলে বিবেচনা করেছেন,
-----   অন্যপ্রান্তে  শ্রমিকদের  উপরে বিশ্বাস হারানো বলুন, কিংবা শ্রমিক আন্দোলনে অশ্রমিক চেতনার অতি প্রভাবের কারনে ...... ,
 সাধারন শ্রমিকদের  বিশ্বাস যোগ্যতা হারিয়ে ফেলা হক কিংবা উভয় কারনে শ্রমিক আন্দোলনকে জ্ঞান সত্বা থেকে ক্রমাগত দূরে সরিয়ে এনেছে।
এই পথেই আন্তর্জাতীকতাহীনতায়
শ্রমিক আন্দোলন যেভাবে
পূজিতন্ত্রে হৃদকাপানো সেই শ্লোগানের
মনমোহিনী রুপ ক্রমে সুকিয়ে গিয়ে ফুরিয়ে
গেছে,জ্ঞানর সর্বোচ্চ রুপ হিসেবে 'মহামানবিকতাও'
শুঁকিয়ে গিয়েছে ক্রমে 'মেহনতের' সেই শ্লোগানটাও
মেহনতিরা দিতে ভূলে গেছে আজকাল
-- দু'হাত উপরে তুলে, মনমোহিনী হৃদকাপানো
সেই শ্লোগানটি এরকম
- দু - নি  - য়া - র ... ম-জ-দু-র/ এক হোক। (ক্রমশঃ)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours