ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:
পরদিন আড়ালে হটীকে ডেকে তারাপ্রসন্ন বললেন," ওরা বোধহয় রূপেন্দ্রর আদ্যশ্রাদ্ধ গ্রামে করতে দেবে না!আর তাছাড়া শ্রাদ্ধাধিকারীও কেউ নেই! তুই চতুর্থী পালন কর আমি সব ব্যবস্হা করে দিচ্ছি! কি কি লাগবে বল?"
হটী বলল," উপকরন তো মাত্র তিনটি - তিল,তুলসী, আর গঙ্গাজল! ও আমার বাড়ীতেই আছে! পুরোহিতের প্রয়োজন হবে না ! হয়তো কেউ রাজীও হবে না! মন্ত্রতো 'ইদং মে শ্রাদ্ধম 'তবে আমি দ্বদশটি অব্রাক্ষ্মনকে নিমন্ত্রন করব!
" দ্বাদশটি অব্রাক্ষ্মন?!"বিম্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল তারাপ্রসন্ন!
তারাপ্রসন্ন কিছু বলার আগেই হটী বলল," না না জ্যাঠা মশাই, আপনাকে কিছু যোগাড় করতে হবে না!আমি শুধু শ্মশান বন্ধুদের কৃতঞ্জতা জানাব! ওদের তো কারও জাত যাওয়ার ভয় নেই! শুধু কাঁচা ফলাহার! আমি জীবনদাকে দিয়ে আনিয়ে নেবো!
"না না জীবন কেন আমিই পাঠিয়ে দেবো সবকিছু!কি কি লাগবে বল?" বললেন তারাপ্রসন্ন!
বাধা দিয়ে হটী জানাল," না জ্যেঠু, সোঁয়াই হাট থেকে কেনা কোনকিছু দিয়ে শ্মশান-বন্ধুদের আপ্যায়ন করলে আমার বাবার আত্মা শান্তি পাবেম না!"
" ঠিক আছে তুই যা ভাল মনে করিস তাই করবি! তবে এই ফাঁকা বাড়ীতে তোরতো একা থাকা চলবে না! আর শিবনাথ রাতে শয়ন করতে এলে নানা কথা উঠবে!" তারাপ্রসন্ন বললেন!
"জানি! শোভপিসিও ওই কথায় বলেছিলেন! আমি রাজী হই নি! তা হয় না!" জানাল হটী!
তারাপেরসন্ন বললেন," কেন হয় না মা? শোভা আর পুঁটু যদি পালাপালি করে....."
তাঁকে বাধা দিয়ে হটী বলল,"না!আমার দুর্দৈব আমাকেই সইতে হবে!এ নিয়ে সমাজপতিদের নতুন করে আঘাত হানার সুযোগ দেবো না!আমরও 'প্রাতিচ্চির ' হয়নি! সামাজিক বিধান অগ্রাহ্য করে আমি চিতাভ্রষ্টা!বাবার শেষ যাত্রায় কাউকে কাঁধ দিতে দেওয়া হ'ল না!এ ভিটেতে রাত কাটালে তাকেও তো জাতিচ্যুত করা হবে!আমার জন্য আর কারোকে বিড়ম্বিত হতে দেবো না জ্যেঠু!
তারাপ্রসন্ন কিছুক্ষন চিন্তা করে বললেন,"তুই আমার বাড়ীতে চল! দেখি কে আমাকে জাতিচ্যুত করে!"
এতক্ষন হটী স্হির ছিল ! এবার আবেগের বাঁধ ভেঙে গেল! তার দু চোখ অশ্রুর বন্যা!নত নয়নে অস্ফুটস্বরে বলল,"সেদিন এ কথাটা বলেল নি কেন জ্যেঠু!"
হটীর চোখের অশ্রু ফোঁটা ফোঁটা মুক্ত হয়ে ঝরে পড়ল! হটীর প্রশ্নে নিদারুন লজ্জা পেলেন তারাপ্রসন্ন! সত্যিই সেদিন যদি এ কথাটা বলবার হিন্মৎ থাকতো তাঁর সংসারটা ছারখার হয়ে যেত না!শুভাপ্রসন্ন সংসারত্যাগী হতো না!তারীসুন্দরী মুক হয়ে যেতেন না!আর এই একরত্তি মেয়েটা সসন্মানে মাথা উঁচু করে ভাদুড়ীবাড়িতে গিয়ে উঠতো অনাথার পরিচয়ে নয় গৃহবধুরূপে! নিজের শ্বশুরবাড়ীতে! (চলবে)
পরদিন আড়ালে হটীকে ডেকে তারাপ্রসন্ন বললেন," ওরা বোধহয় রূপেন্দ্রর আদ্যশ্রাদ্ধ গ্রামে করতে দেবে না!আর তাছাড়া শ্রাদ্ধাধিকারীও কেউ নেই! তুই চতুর্থী পালন কর আমি সব ব্যবস্হা করে দিচ্ছি! কি কি লাগবে বল?"
হটী বলল," উপকরন তো মাত্র তিনটি - তিল,তুলসী, আর গঙ্গাজল! ও আমার বাড়ীতেই আছে! পুরোহিতের প্রয়োজন হবে না ! হয়তো কেউ রাজীও হবে না! মন্ত্রতো 'ইদং মে শ্রাদ্ধম 'তবে আমি দ্বদশটি অব্রাক্ষ্মনকে নিমন্ত্রন করব!
" দ্বাদশটি অব্রাক্ষ্মন?!"বিম্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল তারাপ্রসন্ন!
তারাপ্রসন্ন কিছু বলার আগেই হটী বলল," না না জ্যাঠা মশাই, আপনাকে কিছু যোগাড় করতে হবে না!আমি শুধু শ্মশান বন্ধুদের কৃতঞ্জতা জানাব! ওদের তো কারও জাত যাওয়ার ভয় নেই! শুধু কাঁচা ফলাহার! আমি জীবনদাকে দিয়ে আনিয়ে নেবো!
"না না জীবন কেন আমিই পাঠিয়ে দেবো সবকিছু!কি কি লাগবে বল?" বললেন তারাপ্রসন্ন!
বাধা দিয়ে হটী জানাল," না জ্যেঠু, সোঁয়াই হাট থেকে কেনা কোনকিছু দিয়ে শ্মশান-বন্ধুদের আপ্যায়ন করলে আমার বাবার আত্মা শান্তি পাবেম না!"
" ঠিক আছে তুই যা ভাল মনে করিস তাই করবি! তবে এই ফাঁকা বাড়ীতে তোরতো একা থাকা চলবে না! আর শিবনাথ রাতে শয়ন করতে এলে নানা কথা উঠবে!" তারাপ্রসন্ন বললেন!
"জানি! শোভপিসিও ওই কথায় বলেছিলেন! আমি রাজী হই নি! তা হয় না!" জানাল হটী!
তারাপেরসন্ন বললেন," কেন হয় না মা? শোভা আর পুঁটু যদি পালাপালি করে....."
তাঁকে বাধা দিয়ে হটী বলল,"না!আমার দুর্দৈব আমাকেই সইতে হবে!এ নিয়ে সমাজপতিদের নতুন করে আঘাত হানার সুযোগ দেবো না!আমরও 'প্রাতিচ্চির ' হয়নি! সামাজিক বিধান অগ্রাহ্য করে আমি চিতাভ্রষ্টা!বাবার শেষ যাত্রায় কাউকে কাঁধ দিতে দেওয়া হ'ল না!এ ভিটেতে রাত কাটালে তাকেও তো জাতিচ্যুত করা হবে!আমার জন্য আর কারোকে বিড়ম্বিত হতে দেবো না জ্যেঠু!
তারাপ্রসন্ন কিছুক্ষন চিন্তা করে বললেন,"তুই আমার বাড়ীতে চল! দেখি কে আমাকে জাতিচ্যুত করে!"
এতক্ষন হটী স্হির ছিল ! এবার আবেগের বাঁধ ভেঙে গেল! তার দু চোখ অশ্রুর বন্যা!নত নয়নে অস্ফুটস্বরে বলল,"সেদিন এ কথাটা বলেল নি কেন জ্যেঠু!"
হটীর চোখের অশ্রু ফোঁটা ফোঁটা মুক্ত হয়ে ঝরে পড়ল! হটীর প্রশ্নে নিদারুন লজ্জা পেলেন তারাপ্রসন্ন! সত্যিই সেদিন যদি এ কথাটা বলবার হিন্মৎ থাকতো তাঁর সংসারটা ছারখার হয়ে যেত না!শুভাপ্রসন্ন সংসারত্যাগী হতো না!তারীসুন্দরী মুক হয়ে যেতেন না!আর এই একরত্তি মেয়েটা সসন্মানে মাথা উঁচু করে ভাদুড়ীবাড়িতে গিয়ে উঠতো অনাথার পরিচয়ে নয় গৃহবধুরূপে! নিজের শ্বশুরবাড়ীতে! (চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours