জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:

গত পরসু, রাজ্য রাজনীতির অভিবাবক হিসেবে, যিনি বাংলার কৃষ্টি সভ্যতা এবং সংস্কৃতিকে যার সব রকম অনুমান ধর্মীতা থেকে সত্যজ্ঞানে উঠিয়ে আনার দায়বদ্ধ,  ভারতীয় ইতিহাসের অতীতকে ব্যখ্যা করতে গিয়ে, ভারতে মহাকাব্যিক কালেই 'পরমানু'  অস্ত্র ছিলো বলে উল্লেখ করেছেন।তিনি যা বলেছেন, তার জন্য উনাকে দায়ী করা থেকে, আজকে বাংলার মানুষকেই দায়ী করবো। বাংলা যদি মেনে থাকেন,
-----  একদল লোক দেশকে এবং দেশের একতাকে আঞ্চলিক স্তরে জাতি ধর্মে বিভাজিত করতেই, সাধারনভাবে যুক্তিবাদী জ্ঞানকে খন্ড বিখন্ড করে দিচ্ছেন ইচ্ছা করেই, তবে এই লোকটা যখন এসব কথা বলছিলেন, তাকে 'ঝাটা'  নিয়ে তাড়া করেন নাই কেন?
আসলে ভারত যখন ডুবছে , তাকে অন্ধকার থেকে  জ্ঞানকে,  যুক্তিবাদি স্তরে উঠিয়ে আনায়  যে একান্ততা  সাম্যবাদী আন্দোলনে প্রয়োজন ছিলো সেটা  ক্রম  সংকুচিত হয়ে যাওয়ায়
-----  যারা 'আদিভৌতিকবাদ' বা 'ম্যাটাফিসিক্সকে' জনচিন্তায় প্রতিষ্ঠা দিয়ে রাজ চলাতে এবং সে লক্ষে মানুষকে খন্ড বিখন্ড করে দিয়ে, দেশ বিক্রীর আয়োজন করছেন, তাদের শক্তিবৃ্দ্ধি ঘটছে।
আসলে 'সাম্যের' সাথে জ্ঞানের অখন্ড সত্বা  বা যুক্তিবাদী জ্ঞানের অন্তসম্পর্কটাই যেমনভাবে সাম্যবাদী আন্দোলনে দুর্বল হয়েছে, তেমনভাবেই 'ভারতে' আধুনিক জাতীয়তাবাদ যতটুকু এগিয়ে আসার সুযোগ পেয়েছিলো, দ্বিতীয় যুদ্ধকালে। আই পি টি এ যুগের সাথে কল্লোল যুগের মেল বন্ধনে -,' রক্তসম্পর্কীয়' বিভৎসতা রোধ করতেই জ্ঞান জগতে একটা অখন্ড সত্বা   প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলো। এটা ঘটেছিলো সাম্যবাদী আন্দোলনের ব্যপ্তির সাথে সাথে।

আজকের পরিস্থিতি যে কী ভয়ংকর একটি ঘটনা থেকে
পরিস্থিতির বাস্তবতা কিঞ্চিত স্পষ্ট হতে পারেঃ
সম্প্রতি পড়াশুনা সংক্রান্ত একতা আলোচনা সভায় উপস্থিত
প্রাথমিক স্তরের শিক্ষকদের জানতে চেয়েছিলাম,
---- মানুষ্য সমাজ কোথা থেকে এবং কোন পরিস্থিতিতিতে
প্রানীজগৎ থেকে পৃ্থক হয়ে গেলো এবং বিশ্বের কোন প্রান্ত থেকে
এই পৃ্থকিকরন শুরু হোল। জানা পনেরোর মধ্যে একজন থেকেও
কোন স্পষ্ট ধারনা পাওয়া গেলো না।
কথাটা নিয়ে ভয়েই এগুই নাই । যদি কেঊ বলে বসেন --- বিষয়টি
তো জ্ঞান জগতের ভাগাভাগিতে,'ভূগোলে' পরে । এই সুত্রেই,  রেনেশাঁর পর
থেকে, জ্ঞানগত বিষয়টি খন্ড বিখন্ড হয়ে যাওয়া এবং 
অর্থনীতীর উপরে 'বহূজাতিকের' আধিপত্ত্বকে কায়েম রাখতে,  রাষ্ট্রীয় নেতৃ্ত্বেই যে জাতীকে খন্ড  বিখন্ডিত রাখতেই শুধু জ্ঞানকে টুকরো টুকরো
করছে তাই নয়,
------জ্ঞানের এক একটি অংশ কার্পেটের তলায় নিয়ে যাচ্ছেন, যাকে আমরা ইংরাজীতে বলি, hidden..এই বিষয়ে আগামী অংশে আলোচনার ইচ্ছা আছে।
তবে আজকে এর রাজনৈতিক দিক সম্পর্কে, বছর খানেক পূর্বে আমার একতা লেখা ছাপিয়ে দিয়ে আজকের লেখা শেষ করবো।

সেই লেখাটা লিখতে মনে হয়েছিলঃ
সেকাো্‌ সাধারনভাবে অর্থনীতি এবং ইতিহাস তো বটেই বিজ্ঞানের  সাথে যুক্ত
প্রায় সবাই, সাম্যবাদী দলে বিরাজমান না থাকলেও যে
সাম্যের সাধারন নিয়মধরেই 'জ্ঞানের এক অখন্ড সত্বা' মাথায় নিয়ে, অধ্যাপনার  কাজ করতেন, তাকেই
------ সাম্যবাদী আন্দোলনের সব থেকে বড় সাফল্য বলে মেনে ছিলাম।এটাই প্রতিফলিত হোত, যে সাম্য কোন ব্যক্তি বা দলের পৈ্ত্রিক সম্পত্তি নয়।  কিন্তু দল রেনেশাঁ উত্তোরকালে শিক্ষার অভিমুখ নির্মানে সাম্যবাদীদেরকেই মুখ্য অভিমুখ নির্মানের ভূমিকা নিতে হোত। অন্যদের মতো তার সমালোচনা করেই কাজ শেষ করতে পারতেন না।
প্রশ্নটা এখান থেকেই উঠবেঃ
কোন শিক্ষক কিংবা অধ্যাপক দাবী করেনঃ
মনুষ্যের জন্ম, চিত্ত্বের উদ্ভব এবং বিকাশের গতি সম্পর্কে জাণার জন্য নিদৃষ্ট এক ডজন কিংবা তারো বেশী শিক্ষকের কাছে পাঠ নিতে হবে
---- তখন প্রশ্ন দাড়ায় গনশিক্ষার সাধারন স্তরটি সম্পর্কেই।পঠন পাঠন সম্পরড়কে প্রশ্ন উঠবেঃ
যিনি জ্ঞানের ধারাটী যে " আগুন থেকে অজৈব, জৈব থেকে অজৈব এবং অজৈব থেকে চিত্ত এবং চিত্ত থেকে চিত্তমুক্তি
---- তিনি কি করে , বিজ্ঞান তো বটেই, সাহিত্য কিভাবে পড়াবেন।

কাজেই আজকের ঘোরতর বিপদে, দেশে প্রধান স্বিকৃত সাম্যবাদী দলটি থেকে সাধারনভাবে সাম্যে বিশ্বাসী মানুষজনের উপরে যে এক সর্বোতোমুখী দায়
বর্তেছে,
তা নিয়ে গতবছরের কলম থেকে বেরুনো লেখাটি নিচে ছেপে দিচ্ছিঃ


" ইতিহাস বিচারের
আধুনিক দৃষ্টিকোন যেভাবে
রামায়নি আর মহাভারতিক ভাবে
আচ্ছন্ন হচ্ছে,
আধুনিক ভাবপ্রবাহের যাত্রা পথে
বাঁধার কারন হচ্ছে,
আধুনিক বিজ্ঞানের ধারনাকে
খন্ডিত-বিখন্ডিত করছে,
গত ২০০০ বছর ধরে চলতে থাকা
গৃহযুদ্ধের
শক্তিমান অংশটিকে শক্তি যোগাচ্ছে,
সেই শক্তি যেমণভাবে
ভারতের আধুনিক শিল্প কাঠামোকে ভেংগে দিয়ে -
শ্রম গৌ্রবকে তছনছ করে দিতে পেরেছে,
জাতীয় ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তিকে
গুড়িয়ে দিতে পেরেছেঃ

চলমান বুর্জোয়া রাজনীতির ভাংগা-গড়ায়,
যতই ভারতীয় জাতিসত্বাগুলির মধ্যে
বিশ্বাস জাগানোর চেষ্টা করুক না কেনঃ

বর্তমান  নির্বাচন ব্যবস্থায় সাম্যবাদী দলগুলিকে এই ভাংগা গড়ায় নিজের
ভূমিকা, পালণ করতে হবে এবং অংশও নিতে হবে---
দুই।

এসব সত্বেও,
জাতি সমস্যা ক্রমাগত জটিল থেকে জটিলতর হবে।
নির্য্যাতিত জার্তীসত্বাগুলির যন্ত্রনায়  কোন সুরাহা করতে পারবে না।

দাসত্বের শেঁকলে যেমনভাবে অধিকতর সংখ্যায় মানুষ বাঁধা পরতে থাকবে,
তেমণভাবেই ঊল্লেখিত জাতিসত্বায়,
 ভাংগণ এবং আধুনিকতায় ছেদ ঘটার কারনে,
শিক্ষা, সংস্কৃতিতে ভাংগণ নিয়ে এসে
ভারতীয় আধুনিকতাকে এক গভীর অন্ধকারে
টেনে নামাতে থাকবে।
সংসদীয় ব্যবস্থা এবং সাংবিধানিক কাঠামো
ভেংগে পড়তে থাকবে।
ভারতীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা বিদেশী শাসনের অধীন হয়ে পড়বে।
ধর্মীয় মৌ্লবাদীদের পারস্পরিক সম্পর্কটাই =
বিদেশী পুঁজি এবং  সামরিক শক্তির দালাল হয়ে দাঁড়াবে।

তিন।

ইতিমধ্যে স্বাধীনতার সংরক্ষনে
দুই প্রধান শক্তি -
আধুনিক শিল্প পুজি এবং আধুনিক শ্রমিক শ্রেনী
নির্বংশ হয়ে যাবে।
সে যায়গায় পরগাছা পুঁজি এবং
দাসত্বের ভাব, সংস্কৃতি,
মানবিকতাহীন মানব প্রবৃত্তি ইতিহাসের
চালিকার আসণটিকে দখল করতে চাইবে।

চার।

HENCE IT IS TO-DAY OR NEVER ,
TO DEVELOP
THE OTHER TIER TO DEFENSE
THE DESTINY AND ADVANCE IT TOWARDS
SOCIAL TRANSFORMATION.

এই পরিস্তিতিতে,
হয় এক্ষুনি অথবা কখনো নয়।
জাতির একক সত্বা এবং এক ভারতবর্ষের
অস্তিত্বের প্রশ্নে
বিকল্প শক্তি দাড় করানো।
একেই, সি পি আই এম তার
দলের কর্মসূচীতেও
''পিপিলফ্রন্ট' হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

এখানেই ট্রেড ইউনিয়নের দায় আকাশচুম্বি।
পিপিল ফ্রন্ট ট্রেড ইউনিয়ন মঞ্চকে ঘিরেই
হতে হবে। দল,
রাজনৈ্তিক এবং ভাবাদর্শগত নেতৃত্ব দেবে।

কিন্তু আসল কাজটা করবে শ্রমিক শ্রেনী, সমাজে থেকে
এবং সামাজিক পরিশ্তিতিতে ইতিবাচক রুপান্তরনের পথে।
এইভাবেই,
শ্রমিক শ্রেনী - দেশ এবং জাতির সুরক্ষায়ঃ
মানুষকে -  শিক্ষা, ভাব, সংস্কৃতির
এমণ এক  শিখরে আরোহণ করতে সাহায্য করবে,
যেখানে দাড়িয়ে মানুষ,
জাতীকে বর্তমান সংকট থেকে মুক্ত করবে।

পাচ।

কোটি টাকার প্রশ্ন এখানেই,
যারা শ্রমিক আন্দোলনে নেতৃ্ত্বদায়ী ভূমিকা,
পালনে, দায়বদ্ধতার কথা ঘোষনা করেও -
আন্দোলনকে ক্রমাগত আপোষমুখীনতার পথে নিয়ে যাচ্ছেনঃ
তাদের সে পথে নিরস্ত্র করা যাবে কী না?

শ্রমিকদের থেকে উঠে আসা নেতাদের,
বিশেষতঃ সংগঠিত শিল্পের নেতাদের -
নেতৃ্ত্বগত দোলাচলকে স্থব্ধ করতেই হবে।
সেখানে সাধারনের দায়ঃ তত্বে,
সংগঠনে,  কাব্যে কবিতায় এবং আন্দোলনে
শ্রমিকদের জন্য,
মাজমুখীনতায় তার নিদৃষ্ট পথে -
সেই তেলেংগানা কালের সেই
কিলিং ইন্সস্টিংকটিকে খুজে দেওয়া।" ( চ ল বে )

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours