ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ
পুরোহিতের পবিত্র মন্ত্রোচারনের মধ্যদিয়ে চার হাত এক হ'ল! পরিনীতা হলো হটী! বাসর ঘরে হটী ও সৌম্যসুন্দর পাশাপাশি দুটি আসনে বসে আছে! রূপেন্দ্রকে ডাকতে এলেন শোভারানী! বললেন," রূপোদা বাসর ঘরে আসুন বর কনে জোড়ে আপনাকে প্রনাম করবে!"
এটা পিতার কর্তব্য, তাই বাসর ঘরে গেলেন রূপেন্দ্র! বাসরঘর জমজমাট! বর কনেকে ঘিরে আছে স্বর্নলঙ্কারে সুসজ্জিতা নারীরা! সদ্য বিবাহিতা দম্পতি প্রনাম করল তাঁকে!
হটী পিতার পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রনাম করতে গেলে বাধা দেয় রূপেন্দ্র! "-
অমন করে মাথা নামাসনি মামনি মুকুটটা পড়ে যাবে "
এই প্রথম অবাধ্য হ'ল হটী! তার চন্দনচর্চিত কপালটি পিতার পদযুগল স্পর্শ করল! রূপেন্দ্র নিচু হয়ে স্বর্নমুকুটির স্হানচ্যুতি ঠেকাতে দুহাতে চেপে ধরলেন লাজ বস্ত্র আচ্ছাদিত মস্তক!বাবার কানে কানে অস্ফুট স্বরে কিছু বলল! যা অন্য কারো শ্রুতি গোচর হ'ল না! প্রত্যুত্তরে রূপেন্দ্র বলল," আমিও দেখিনি মামনি!"
মালতী স্হান কাল পাত্র ভুলে সর্বসমক্ষে জোর করে রূপেন্দ্রর হাত ধরে পাশের ঘরে এনে বললেন " এবার তিনি মুখে দিন!"মীনুর না তাতে সায় দিয়ে বললেন," হ্যাঁ বউমা এবার পাগলটাকে দুটো খাইয়ে দাও দু- দুটো দিন কিছু খায় নি!"
রুপেন্দ্র শুধু এক পাত্র বেলের সরবৎ খেয়ে বলল," আমাকে মার্জনা করবেন বৌঠান! মামনির প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আমি কিছু মুখে তুলতে পারব না!
মালতি জিজ্ঞাসা করলেন," মামনি কি জানতে চাইল?"
রূপেন্দ্র উত্তর দিল! সে জানতে চেয়েছে " শুভদা কি আসেনি?"
ভাদুড়িবাড়ী নিস্তব্ধ নিঝুম! বাড়ীটা দাঁড়িয়ে আছে 'ভুতপুরীর ' মতো! ডুবে আছে গহন আঁধারে!
তারাপ্রসন্ন কি ঘুমিয়ে পড়েছেন? দ্বাররক্ষী শুধু বললেন সবাই জেগে আছে! বাড়ীতে কি হয়েছে সে কিছু জানেনা! ভিতরে গেলে রূপেন্দ্র মালুম পাবেন!
অন্দরে প্রবেশ করে রূপেন্দ্র দেখলেন!," তারাপ্রসন্ন আরামকেদারায় অর্ধশায়িত! রপেন্দ্রকে দেখে কিছু বলতে গেলেন কিন্তু মুখ দিয়ে কোন শব্দ বেরোল না!
রুপেন্দ্র তাঁর পদতলে ভুমিতেই বসে জানতে চাইলেন কি হয়েছে? তারাপ্রসন্ন কান্নায় ভেঙে পড়লেন! তাঁর হতে একটি পত্র! তিনি ইশারায় অনুজ প্রতিম রূপেন্দ্রনাথকে দেখাতে চাইলেন! রূপেন্দ্র লক্ষ্য করলেন! তারা বৌঠান, পুটুরানী, শুভপ্রসন্ন কাউকে দেখতে পাচ্ছেন না! দাসদাসীরাও যেন যন্ত্রের মতো কাজ করছে!
রূপেন্দ্রনাথ পত্রটি নিলেন কিন্তু পর্যাপ্ত আলোর অভাবে পড়তে পারলেন না! শুধু প্রশ্ন করলেন," কিসের এই মৃতাশৌচ? কে মারা গেছেন তারাদা?"
বজ্রাহতের মতো তারাপ্রসন্ন বললেন, " আমি - আমি রুপেো "
রূপেন্দ্র বুঝলেন, প্রকৃত রহস্য এই পত্রের মধ্যে আছে ! তাই প্রদীপের আলোতে পত্রটি পড়লেন! পত্রের লেখক - শ্রীমান শুভপ্রসন্ন দেবশর্মনঃ
প্রাপক - তাঁর পিতৃদেব শ্রী তারাপ্রসন্ন ভাদুড়ী মহাশয়!
পত্রের মর্মার্থঃ. শুভ প্রসন্ন আত্ম সন্ন্যাস গ্রহন করেছে!তাই আজ সকালে ভোরে সে গৃহত্যাগ করেছে!সে সদ্ গুরুর সন্ধানে অজানা পথের যাত্রী হয়েছে!আক্ষেপ করে জানিয়েছে, সদ্ গুরু সে স্বগ্রামেই পেয়েছিল! কিন্তু কুপমন্ডুক ব্রাক্ষ্মন্য সমাজ কুসংস্কারের কৈঙ্কর্যে তার সেই সদ্ গুরুকে বাধ্য করেছে তাঁর প্রিয় শিষ্যকে পরিত্যাগ করতে! সে জানিয়েছে পৈত্রিক সম্পত্তির অধিকার সে১ নির্ব্যুঢ় স্বত্বে পরিত্যাগ করে যাচ্ছে!
পত্রের শেষে সে একান্তভাবে অনুরোধ করেছে! তাকে যেন অনুসরন না করা হয়! তাহলে সে আত্মহনন করতে বাধ্য হবে! সে বাঁচতে চায়, জীবিত থেকে ভুমার স্পর্শ পেতে চায়! সে, রাজ্য শিব সুন্দরের আর্শীবাদ লাভ করতে চায়! পত্রের শেষে বাবলা কাঁটায় আঁটা আর একটি ছোট্ট পত্রে লেখা...পরম কল্যাণীয়াসু
মঞ্জুভাষিনী,
মা ভূদেবং ক্ষণমপি চ তে সুন্দরাৎ বিপ্রয়োগঃ!!
(চলবে )
পুরোহিতের পবিত্র মন্ত্রোচারনের মধ্যদিয়ে চার হাত এক হ'ল! পরিনীতা হলো হটী! বাসর ঘরে হটী ও সৌম্যসুন্দর পাশাপাশি দুটি আসনে বসে আছে! রূপেন্দ্রকে ডাকতে এলেন শোভারানী! বললেন," রূপোদা বাসর ঘরে আসুন বর কনে জোড়ে আপনাকে প্রনাম করবে!"
এটা পিতার কর্তব্য, তাই বাসর ঘরে গেলেন রূপেন্দ্র! বাসরঘর জমজমাট! বর কনেকে ঘিরে আছে স্বর্নলঙ্কারে সুসজ্জিতা নারীরা! সদ্য বিবাহিতা দম্পতি প্রনাম করল তাঁকে!
হটী পিতার পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রনাম করতে গেলে বাধা দেয় রূপেন্দ্র! "-
অমন করে মাথা নামাসনি মামনি মুকুটটা পড়ে যাবে "
এই প্রথম অবাধ্য হ'ল হটী! তার চন্দনচর্চিত কপালটি পিতার পদযুগল স্পর্শ করল! রূপেন্দ্র নিচু হয়ে স্বর্নমুকুটির স্হানচ্যুতি ঠেকাতে দুহাতে চেপে ধরলেন লাজ বস্ত্র আচ্ছাদিত মস্তক!বাবার কানে কানে অস্ফুট স্বরে কিছু বলল! যা অন্য কারো শ্রুতি গোচর হ'ল না! প্রত্যুত্তরে রূপেন্দ্র বলল," আমিও দেখিনি মামনি!"
মালতী স্হান কাল পাত্র ভুলে সর্বসমক্ষে জোর করে রূপেন্দ্রর হাত ধরে পাশের ঘরে এনে বললেন " এবার তিনি মুখে দিন!"মীনুর না তাতে সায় দিয়ে বললেন," হ্যাঁ বউমা এবার পাগলটাকে দুটো খাইয়ে দাও দু- দুটো দিন কিছু খায় নি!"
রুপেন্দ্র শুধু এক পাত্র বেলের সরবৎ খেয়ে বলল," আমাকে মার্জনা করবেন বৌঠান! মামনির প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আমি কিছু মুখে তুলতে পারব না!
মালতি জিজ্ঞাসা করলেন," মামনি কি জানতে চাইল?"
রূপেন্দ্র উত্তর দিল! সে জানতে চেয়েছে " শুভদা কি আসেনি?"
ভাদুড়িবাড়ী নিস্তব্ধ নিঝুম! বাড়ীটা দাঁড়িয়ে আছে 'ভুতপুরীর ' মতো! ডুবে আছে গহন আঁধারে!
তারাপ্রসন্ন কি ঘুমিয়ে পড়েছেন? দ্বাররক্ষী শুধু বললেন সবাই জেগে আছে! বাড়ীতে কি হয়েছে সে কিছু জানেনা! ভিতরে গেলে রূপেন্দ্র মালুম পাবেন!
অন্দরে প্রবেশ করে রূপেন্দ্র দেখলেন!," তারাপ্রসন্ন আরামকেদারায় অর্ধশায়িত! রপেন্দ্রকে দেখে কিছু বলতে গেলেন কিন্তু মুখ দিয়ে কোন শব্দ বেরোল না!
রুপেন্দ্র তাঁর পদতলে ভুমিতেই বসে জানতে চাইলেন কি হয়েছে? তারাপ্রসন্ন কান্নায় ভেঙে পড়লেন! তাঁর হতে একটি পত্র! তিনি ইশারায় অনুজ প্রতিম রূপেন্দ্রনাথকে দেখাতে চাইলেন! রূপেন্দ্র লক্ষ্য করলেন! তারা বৌঠান, পুটুরানী, শুভপ্রসন্ন কাউকে দেখতে পাচ্ছেন না! দাসদাসীরাও যেন যন্ত্রের মতো কাজ করছে!
রূপেন্দ্রনাথ পত্রটি নিলেন কিন্তু পর্যাপ্ত আলোর অভাবে পড়তে পারলেন না! শুধু প্রশ্ন করলেন," কিসের এই মৃতাশৌচ? কে মারা গেছেন তারাদা?"
বজ্রাহতের মতো তারাপ্রসন্ন বললেন, " আমি - আমি রুপেো "
রূপেন্দ্র বুঝলেন, প্রকৃত রহস্য এই পত্রের মধ্যে আছে ! তাই প্রদীপের আলোতে পত্রটি পড়লেন! পত্রের লেখক - শ্রীমান শুভপ্রসন্ন দেবশর্মনঃ
প্রাপক - তাঁর পিতৃদেব শ্রী তারাপ্রসন্ন ভাদুড়ী মহাশয়!
পত্রের মর্মার্থঃ. শুভ প্রসন্ন আত্ম সন্ন্যাস গ্রহন করেছে!তাই আজ সকালে ভোরে সে গৃহত্যাগ করেছে!সে সদ্ গুরুর সন্ধানে অজানা পথের যাত্রী হয়েছে!আক্ষেপ করে জানিয়েছে, সদ্ গুরু সে স্বগ্রামেই পেয়েছিল! কিন্তু কুপমন্ডুক ব্রাক্ষ্মন্য সমাজ কুসংস্কারের কৈঙ্কর্যে তার সেই সদ্ গুরুকে বাধ্য করেছে তাঁর প্রিয় শিষ্যকে পরিত্যাগ করতে! সে জানিয়েছে পৈত্রিক সম্পত্তির অধিকার সে১ নির্ব্যুঢ় স্বত্বে পরিত্যাগ করে যাচ্ছে!
পত্রের শেষে সে একান্তভাবে অনুরোধ করেছে! তাকে যেন অনুসরন না করা হয়! তাহলে সে আত্মহনন করতে বাধ্য হবে! সে বাঁচতে চায়, জীবিত থেকে ভুমার স্পর্শ পেতে চায়! সে, রাজ্য শিব সুন্দরের আর্শীবাদ লাভ করতে চায়! পত্রের শেষে বাবলা কাঁটায় আঁটা আর একটি ছোট্ট পত্রে লেখা...পরম কল্যাণীয়াসু
মঞ্জুভাষিনী,
মা ভূদেবং ক্ষণমপি চ তে সুন্দরাৎ বিপ্রয়োগঃ!!
(চলবে )
Post A Comment:
0 comments so far,add yours