ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:
হটী তিজলহাটী থেকে ফিরে আর জানতে চায়নি বড়বাড়ী অর্থাৎ তারাপ্রসন্নের বাড়ী থেকে কেউই তার বিবাহে আসেন নি কেন? হয়তো জ্যেঠমা, পুটুরানী আর শুভদার উপর তীব্র অভিমানে!
সোঁয়াই গ্রামে প্রত্যাবর্তনের তৃতীয় দিনে হটী ডুরে শাড়ী পরে সন্ধ্যা বেলায় তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালিয়েমঙ্গলারতি করল শঙ্খধ্বনি করল মালতি! ওরা দুজন বাড়ীতে এলে, রুপেন্দ্র হটীকে বলল " মামনি কয়েকদিন তোকে বলা হয়নি, একটা চরম দুসংবাদ আছে!"
চোখদুটো বড় বড় করে জানতে হটী বলল," বড়বাড়ী সংক্রান্ত? কাশীধাম থেকে দুসংবাদটা এসেছিল?"
রূপেন্দ্র বলল," না রে মা, জ্যেঠিমা ভালই আছেন! সংবাদটা শুভা প্রসন্নকে নিয়ে!"
অবাক হয়ে হটী জিজ্ঞাসা করল,"কেন শুভদার কি হয়েছে?"
রূপেন্দ্র জানাল, সে গৃহত্যাগ করেছে আত্ম সন্ন্যাস নিয়েছে!সংসার ত্যাগ করে সদ্ গুরুর সন্ধানে হিমালয়ের পথে যাত্রা করেছে!সোঁয়াই গ্রামকে চিরদিনের জন্য পরিত্যাগ করে চলে গেছে! তার বাবা তারাপ্রসন্নকে একটি পত্র মারফৎ জানিয়ে গেছে সে সন্ন্যাস নিয়েছে এবং পার্থিব সমস্ত অধিকার সে ত্যাগ করে যাচ্ছে! বিষয় সম্পত্তি যেন অন্যান্য শরীকদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়!
সংবাদটা শোনার পর প্রচন্ড মানসিক আঘাতে হটী তার সোনা মাকে জড়িয়ে ধরে তাঁর আঁচলে মুখ লুকিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল!মালতি ওকে নিবিঢ়ভাবে জড়িয়ে ধরল! কেঁদে মেয়েটা মনটা একটু হাল্কা করে নিক!
কিছুক্ষন নিঃশব্দ থাকার পর রূপেন্দ্র বললেন," শুভ অন্যায় কিছু করে নি, জীবনতো একটাই! সে যদি পরম করুনাময়ের সন্ধান পেতে সন্ন্যাস নেয়, তাহলে আপত্তি করার কিছু নেই! কিন্তু আপত্তি সময় নির্ধারনে! হটীর বিয়েতে অনুপস্হিত থেকে সে গ্রামবাসীর কাছে কি বার্তা দিল? গ্রামের নিন্দুক মানুষরা, যারা বলেছিল একই বিদ্যায়তনে বালক বালিকাদের শিক্ষাদান করলে সমাজে অনাচার প্রবেশ করবে!তারা ঢক্কানিনাদে আর বেশী করে প্রচার করবে! তাই হটীর বিয়েতে উপস্হিত থেকে আর একটা দিন অপেক্ষা করতে পারল না?"
মালতি উৎকন্ঠা নিয়ে জানতে চাইল, এই খবর তিজলহাটিতে পৌঁছালে কি হবে ?
হটী বিরক্ত হয়ে বলল," তার মানে? গ্রামের একটি মেয়ের বিয়ের রাতে একটি ছেলে সন্ন্যাস নিয়েছে! এর মধ্যে কোনটাতে আপত্তি? বিয়েতে না সন্ন্যাস গ্রহনে?
রূপেন্দ্র এই দুজনের মাঝে অংশ নিয়ে বলল," আমার আপত্তিটা আগেই বলেছি শুভর সন্ন্যাস গ্রহনের কাল নির্নয়ে!"
রূপেন্দ্র কন্যা তর্কশাস্ত্র অধ্যয়ন করেছে! সে তার পিতাকে স্মরন করিয়ে দিল! অপরাধীর অনুপস্হিতে তার বক্তব্য না শুনে তাকে অপরাধী করা শাস্ত্র বিরূদ্ধ কাজ! এর পর তার পিতাকে হটী বলল," বাবা, আপনি শুভদাকে অপরাধী সাব্যস্ত করার আগে একবারও ভাবেন নি আমার বিয়ে আর শুভদার সংসার ত্যাগ কাকতালীয় হতে পারে! আপনি তাকে দোষী সাব্যাস্ত করার আগে বিস্মৃত হয়েছিলেন যুগবতার আদি শঙ্করাচার্যের শাস্ত্রোক্ত নির্দেশ-"যদহরেব বিরজ্যেত তদহরেব প্রব্রজ্যত!"
কিছুক্ষন দুচোখ মুদ্রিত রেখে নিরব রইলেন রূপেন্দ্র! তারপর চোখ খুলে একটি হাত কন্যার মাথায় রেখে বললেন,"শাস্ত্রে বলা আছে সর্বত্র জয়মিচ্ছুতি,পুত্র শিয্যাৎ পরাজয়ম "....
*******আমাদের একজন প্রিয় পাঠক আমার পরম শ্রদ্ধেয় সোঁয়াই গ্রামের বাসিন্দা! আমি প্রায় ১০ বছর পূর্বে একটি পুস্তক পড়ে হটীর কথা জানতে পারি এবং অবাক হই ভারতবর্ষের নারী আন্দোলন ও নারী শিক্ষার পথিকৃত হটীর জন্ম দুর্গাপুর মহকুমার সোঁয়াই গ্রামে! এবং তিনিই ভারতের প্রথম মহিলা যিনি বিদ্যালঙ্কার উপাধিতে ভূষিতা!আমি ব্যক্তিগত ভাবে হটী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে ব্রতী হই! যিনি লেখা সম্পর্কে7ঋ প্রতিবাদ করেছেন তাঁর কাছে গেলে তিনি দাবী করেন হটীর বাবার নাম বিশ্বেশর এবং পদবী ছিল ' মুখার্জী'! কিন্তু সপক্ষে জোরালো কোন তথ্য দিতে পারেন নি! ওই গ্রামের ব্রজেন ব্যানার্জী যিনি হটীর বংশের উত্তর পুরুষ!তিনি একটি চটি বইয়ে হটী সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন! আর আমি ব্যক্তিগত ভাবে কাশীর মনিকর্নিকা ঘাটের কাছে বাঙলী টোলে খোঁজ খবর করে জানতে পারি সেখানেই হটী প্রতিষ্ঠিত টোলটি ছিল এবং হটী বন্দ্যোঘাটি তাঁর নাম ছিল! আমার ব্যক্তগত অনুরোধ হটী সম্পর্কে প্রামান্য তথ্য বা নথি থাকলে আমাকে দিন! আমি হটীর উপর একটি 'তথ্যচিত্র ' নির্মানে আগ্রহী!বর্তমান ও আগমী প্রজন্ম হটী সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুক এটাই আমার উদ্দেশ্য**********
হটী তিজলহাটী থেকে ফিরে আর জানতে চায়নি বড়বাড়ী অর্থাৎ তারাপ্রসন্নের বাড়ী থেকে কেউই তার বিবাহে আসেন নি কেন? হয়তো জ্যেঠমা, পুটুরানী আর শুভদার উপর তীব্র অভিমানে!
সোঁয়াই গ্রামে প্রত্যাবর্তনের তৃতীয় দিনে হটী ডুরে শাড়ী পরে সন্ধ্যা বেলায় তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালিয়েমঙ্গলারতি করল শঙ্খধ্বনি করল মালতি! ওরা দুজন বাড়ীতে এলে, রুপেন্দ্র হটীকে বলল " মামনি কয়েকদিন তোকে বলা হয়নি, একটা চরম দুসংবাদ আছে!"
চোখদুটো বড় বড় করে জানতে হটী বলল," বড়বাড়ী সংক্রান্ত? কাশীধাম থেকে দুসংবাদটা এসেছিল?"
রূপেন্দ্র বলল," না রে মা, জ্যেঠিমা ভালই আছেন! সংবাদটা শুভা প্রসন্নকে নিয়ে!"
অবাক হয়ে হটী জিজ্ঞাসা করল,"কেন শুভদার কি হয়েছে?"
রূপেন্দ্র জানাল, সে গৃহত্যাগ করেছে আত্ম সন্ন্যাস নিয়েছে!সংসার ত্যাগ করে সদ্ গুরুর সন্ধানে হিমালয়ের পথে যাত্রা করেছে!সোঁয়াই গ্রামকে চিরদিনের জন্য পরিত্যাগ করে চলে গেছে! তার বাবা তারাপ্রসন্নকে একটি পত্র মারফৎ জানিয়ে গেছে সে সন্ন্যাস নিয়েছে এবং পার্থিব সমস্ত অধিকার সে ত্যাগ করে যাচ্ছে! বিষয় সম্পত্তি যেন অন্যান্য শরীকদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়!
সংবাদটা শোনার পর প্রচন্ড মানসিক আঘাতে হটী তার সোনা মাকে জড়িয়ে ধরে তাঁর আঁচলে মুখ লুকিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল!মালতি ওকে নিবিঢ়ভাবে জড়িয়ে ধরল! কেঁদে মেয়েটা মনটা একটু হাল্কা করে নিক!
কিছুক্ষন নিঃশব্দ থাকার পর রূপেন্দ্র বললেন," শুভ অন্যায় কিছু করে নি, জীবনতো একটাই! সে যদি পরম করুনাময়ের সন্ধান পেতে সন্ন্যাস নেয়, তাহলে আপত্তি করার কিছু নেই! কিন্তু আপত্তি সময় নির্ধারনে! হটীর বিয়েতে অনুপস্হিত থেকে সে গ্রামবাসীর কাছে কি বার্তা দিল? গ্রামের নিন্দুক মানুষরা, যারা বলেছিল একই বিদ্যায়তনে বালক বালিকাদের শিক্ষাদান করলে সমাজে অনাচার প্রবেশ করবে!তারা ঢক্কানিনাদে আর বেশী করে প্রচার করবে! তাই হটীর বিয়েতে উপস্হিত থেকে আর একটা দিন অপেক্ষা করতে পারল না?"
মালতি উৎকন্ঠা নিয়ে জানতে চাইল, এই খবর তিজলহাটিতে পৌঁছালে কি হবে ?
হটী বিরক্ত হয়ে বলল," তার মানে? গ্রামের একটি মেয়ের বিয়ের রাতে একটি ছেলে সন্ন্যাস নিয়েছে! এর মধ্যে কোনটাতে আপত্তি? বিয়েতে না সন্ন্যাস গ্রহনে?
রূপেন্দ্র এই দুজনের মাঝে অংশ নিয়ে বলল," আমার আপত্তিটা আগেই বলেছি শুভর সন্ন্যাস গ্রহনের কাল নির্নয়ে!"
রূপেন্দ্র কন্যা তর্কশাস্ত্র অধ্যয়ন করেছে! সে তার পিতাকে স্মরন করিয়ে দিল! অপরাধীর অনুপস্হিতে তার বক্তব্য না শুনে তাকে অপরাধী করা শাস্ত্র বিরূদ্ধ কাজ! এর পর তার পিতাকে হটী বলল," বাবা, আপনি শুভদাকে অপরাধী সাব্যস্ত করার আগে একবারও ভাবেন নি আমার বিয়ে আর শুভদার সংসার ত্যাগ কাকতালীয় হতে পারে! আপনি তাকে দোষী সাব্যাস্ত করার আগে বিস্মৃত হয়েছিলেন যুগবতার আদি শঙ্করাচার্যের শাস্ত্রোক্ত নির্দেশ-"যদহরেব বিরজ্যেত তদহরেব প্রব্রজ্যত!"
কিছুক্ষন দুচোখ মুদ্রিত রেখে নিরব রইলেন রূপেন্দ্র! তারপর চোখ খুলে একটি হাত কন্যার মাথায় রেখে বললেন,"শাস্ত্রে বলা আছে সর্বত্র জয়মিচ্ছুতি,পুত্র শিয্যাৎ পরাজয়ম "....
*******আমাদের একজন প্রিয় পাঠক আমার পরম শ্রদ্ধেয় সোঁয়াই গ্রামের বাসিন্দা! আমি প্রায় ১০ বছর পূর্বে একটি পুস্তক পড়ে হটীর কথা জানতে পারি এবং অবাক হই ভারতবর্ষের নারী আন্দোলন ও নারী শিক্ষার পথিকৃত হটীর জন্ম দুর্গাপুর মহকুমার সোঁয়াই গ্রামে! এবং তিনিই ভারতের প্রথম মহিলা যিনি বিদ্যালঙ্কার উপাধিতে ভূষিতা!আমি ব্যক্তিগত ভাবে হটী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে ব্রতী হই! যিনি লেখা সম্পর্কে7ঋ প্রতিবাদ করেছেন তাঁর কাছে গেলে তিনি দাবী করেন হটীর বাবার নাম বিশ্বেশর এবং পদবী ছিল ' মুখার্জী'! কিন্তু সপক্ষে জোরালো কোন তথ্য দিতে পারেন নি! ওই গ্রামের ব্রজেন ব্যানার্জী যিনি হটীর বংশের উত্তর পুরুষ!তিনি একটি চটি বইয়ে হটী সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন! আর আমি ব্যক্তিগত ভাবে কাশীর মনিকর্নিকা ঘাটের কাছে বাঙলী টোলে খোঁজ খবর করে জানতে পারি সেখানেই হটী প্রতিষ্ঠিত টোলটি ছিল এবং হটী বন্দ্যোঘাটি তাঁর নাম ছিল! আমার ব্যক্তগত অনুরোধ হটী সম্পর্কে প্রামান্য তথ্য বা নথি থাকলে আমাকে দিন! আমি হটীর উপর একটি 'তথ্যচিত্র ' নির্মানে আগ্রহী!বর্তমান ও আগমী প্রজন্ম হটী সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুক এটাই আমার উদ্দেশ্য**********
Post A Comment:
0 comments so far,add yours