ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:
বেয়াই পাঁচকড়ি ঘোষাল মশাইয়ের শ্রাদ্ধে রূপেন্দ্র উপস্হিত হলেন! বৃষোৎসর্গের শ্রাদ্ধ এলাহী আয়োজন! কিন্তু রূপেন্দ্রর আজ একাদশী ! স্ত্রী বিয়োগের পর থেকে তিনি একাদশী পালন করেন! গ্রামের জমিদার মিত্র মশাই তাঁকে সন্ধ্যায় তাঁর বাড়ীতে আমন্ত্রন করলেন পাঁচকড়ি ঘোষালের উইল সম্পর্কে আলোচনার জন্য!
সেখানে গিয়ে শুনলেন, তাঁর বেয়াই সম্পত্তির একটি বড় অংশের সদগতির জন্য একটি তিন সদস্যের অছি পরিষদ গঠন করেছেন!তার সদস্য তাঁর গুরুদেব, জমিদার মিত্র মশাই ও রূপেন্দ্র! রূপেন্দ্র প্রথমেই বলেদিলেন বৈবাহিকের সম্পত্তিতে তাঁর বিন্দুমাত্র লোভ নেই! তবে তাঁর শেষ ইচ্ছানুযায়ী সোঁয়াই গ্রামের 'একবগ্গা দিঘী 'খনন করার বিষয়টি তিনি সমর্থন করেন এবং মৃত ব্যক্তির শেষ ইচ্ছাকে মর্যাদা দেওয়া উচিত! কিন্তু পাঁচকড়ি ঘোষালের ভাই তিনকড়ি ও বড় ছেলে নকড়ি পুকুর খনন করে অর্থের অপচয় করতে নারাজ! তাঁদের পক্ষে মিত্র মশাই ও!কিন্তু রূপেন্দ্র সে প্রস্তাবে সায় না দেওয়ায় তীব্র বাদানুবাদের পর মধ্যরাতেই জমিদার বাড়ী ত্যাগ করে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন রূপেন্দ্র নিজ ভূমের অভিমুখে!
মাস খানেক পরের ঘটনা! ভাদ্রের ঝিরঝিরে বৃষ্টির রাত! রূপেন্দ্র গৃহে অনুপস্হিত দুর গাঁয়ে গেছেন রোগী দেখতে! ঘুমের মধ্যে এক বিচিত্র স্বপ্ন দেখলো হটী! তুষারবৃত পাহাড় চুড়ায় সে উঠেছে!ঘন কুয়াশায় আবৃত! হঠাৎ নজরে পড়ল মুন্ডিত মস্তক এক কিশোর সন্ন্যাসী!তার পরিধানে গৈরিক বসন, উর্ধাঙ্গে কম্বল,হাতে সন্ন্যাস দন্ড!তাঁকে খুব চেনা মনে হচ্ছে ! চিৎকার করে ডাকতে গেল! কিন্তু কিছুতেই নামটা মনে পড়ল না! হঠাৎ কুয়াশায় আবৃত হয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল সেই কিশোর সন্ন্যাসী! বিপরীত দিক থেকে ছুটে আসছে এক অশ্বারোহী! হটীকে দেখা মাত্র অশ্বটি সামনের দুই পা তার কাঁধের উপর চাপিয়ে দিয়ে বিজয়োল্লাসে হ্রেষাধ্বনী করে উঠল! তৎক্ষনাৎ প্রচন্ড ভয়ে ঘুম ভেঙে গেল হটীর!পালঙ্কে বসেই আঁচল দিয়ে মুখটা সে মুছতে থাকে ! হঠাৎ পুনরায় হ্রেষাধ্বনী!
চমকে ওঠে হটী! কি হলো? এখনতো সে স্বপ্ন দেখছে না? তাহলে??
দরজায় কষাঘাত করে আগন্তুক বলে," দ্বার খোল রূপা! অতিথি "
কন্ঠস্বর বুঝতে পেরে দুরন্ত আবেগে রোমাঞ্চিত হয় হটী! দ্বার খোলে সে! ও প্রান্তে সৌম্যসুন্দর, মুন্ডিত মস্তক বলা যাবে না মাথায় ঘন কচি কেশদামে অপূর্ব লাগছে তাকে!
হটী অবাক হয়ে বলল,"তুমি? এত সকালে?"
সৌম্য শুধু হেসে বলে," হাত পাতো তোমায় একটা জিনিষ দেবো!"
চোখ মুদ্রিত করে হাত পাতে হটী! সৌম্য তাদের বাগানের সদ্য প্রস্ফুটিত কদম ফুল তার হাতে দেয়!
হটী বলে," হাতে কেন দিলে? খোঁপায় গুঁজে দিলেনা কেন?"
সৌম্য শুধু ম্লান হেসে বলে আমার একটি ব্রত চলছে! তাই যদি আমাকে প্রনাম করতে চাও পগস্পর্শ করো না!
হটী বিস্ময়ািবষ্ঠ কন্ঠে প্রশ্ন করে,"আমাকে ছোঁবে না?"
গুরুনিপাতের প্রথম বৎসরটুকু - বলল সৌম্য!
কিঞ্চিৎ ক্ষুব্ধা হলো হটী! তবুও ঘরে নিয়ে এলো সৌম্যসুন্দরকে!
(চলবে)
বেয়াই পাঁচকড়ি ঘোষাল মশাইয়ের শ্রাদ্ধে রূপেন্দ্র উপস্হিত হলেন! বৃষোৎসর্গের শ্রাদ্ধ এলাহী আয়োজন! কিন্তু রূপেন্দ্রর আজ একাদশী ! স্ত্রী বিয়োগের পর থেকে তিনি একাদশী পালন করেন! গ্রামের জমিদার মিত্র মশাই তাঁকে সন্ধ্যায় তাঁর বাড়ীতে আমন্ত্রন করলেন পাঁচকড়ি ঘোষালের উইল সম্পর্কে আলোচনার জন্য!
সেখানে গিয়ে শুনলেন, তাঁর বেয়াই সম্পত্তির একটি বড় অংশের সদগতির জন্য একটি তিন সদস্যের অছি পরিষদ গঠন করেছেন!তার সদস্য তাঁর গুরুদেব, জমিদার মিত্র মশাই ও রূপেন্দ্র! রূপেন্দ্র প্রথমেই বলেদিলেন বৈবাহিকের সম্পত্তিতে তাঁর বিন্দুমাত্র লোভ নেই! তবে তাঁর শেষ ইচ্ছানুযায়ী সোঁয়াই গ্রামের 'একবগ্গা দিঘী 'খনন করার বিষয়টি তিনি সমর্থন করেন এবং মৃত ব্যক্তির শেষ ইচ্ছাকে মর্যাদা দেওয়া উচিত! কিন্তু পাঁচকড়ি ঘোষালের ভাই তিনকড়ি ও বড় ছেলে নকড়ি পুকুর খনন করে অর্থের অপচয় করতে নারাজ! তাঁদের পক্ষে মিত্র মশাই ও!কিন্তু রূপেন্দ্র সে প্রস্তাবে সায় না দেওয়ায় তীব্র বাদানুবাদের পর মধ্যরাতেই জমিদার বাড়ী ত্যাগ করে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন রূপেন্দ্র নিজ ভূমের অভিমুখে!
মাস খানেক পরের ঘটনা! ভাদ্রের ঝিরঝিরে বৃষ্টির রাত! রূপেন্দ্র গৃহে অনুপস্হিত দুর গাঁয়ে গেছেন রোগী দেখতে! ঘুমের মধ্যে এক বিচিত্র স্বপ্ন দেখলো হটী! তুষারবৃত পাহাড় চুড়ায় সে উঠেছে!ঘন কুয়াশায় আবৃত! হঠাৎ নজরে পড়ল মুন্ডিত মস্তক এক কিশোর সন্ন্যাসী!তার পরিধানে গৈরিক বসন, উর্ধাঙ্গে কম্বল,হাতে সন্ন্যাস দন্ড!তাঁকে খুব চেনা মনে হচ্ছে ! চিৎকার করে ডাকতে গেল! কিন্তু কিছুতেই নামটা মনে পড়ল না! হঠাৎ কুয়াশায় আবৃত হয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল সেই কিশোর সন্ন্যাসী! বিপরীত দিক থেকে ছুটে আসছে এক অশ্বারোহী! হটীকে দেখা মাত্র অশ্বটি সামনের দুই পা তার কাঁধের উপর চাপিয়ে দিয়ে বিজয়োল্লাসে হ্রেষাধ্বনী করে উঠল! তৎক্ষনাৎ প্রচন্ড ভয়ে ঘুম ভেঙে গেল হটীর!পালঙ্কে বসেই আঁচল দিয়ে মুখটা সে মুছতে থাকে ! হঠাৎ পুনরায় হ্রেষাধ্বনী!
চমকে ওঠে হটী! কি হলো? এখনতো সে স্বপ্ন দেখছে না? তাহলে??
দরজায় কষাঘাত করে আগন্তুক বলে," দ্বার খোল রূপা! অতিথি "
কন্ঠস্বর বুঝতে পেরে দুরন্ত আবেগে রোমাঞ্চিত হয় হটী! দ্বার খোলে সে! ও প্রান্তে সৌম্যসুন্দর, মুন্ডিত মস্তক বলা যাবে না মাথায় ঘন কচি কেশদামে অপূর্ব লাগছে তাকে!
হটী অবাক হয়ে বলল,"তুমি? এত সকালে?"
সৌম্য শুধু হেসে বলে," হাত পাতো তোমায় একটা জিনিষ দেবো!"
চোখ মুদ্রিত করে হাত পাতে হটী! সৌম্য তাদের বাগানের সদ্য প্রস্ফুটিত কদম ফুল তার হাতে দেয়!
হটী বলে," হাতে কেন দিলে? খোঁপায় গুঁজে দিলেনা কেন?"
সৌম্য শুধু ম্লান হেসে বলে আমার একটি ব্রত চলছে! তাই যদি আমাকে প্রনাম করতে চাও পগস্পর্শ করো না!
হটী বিস্ময়ািবষ্ঠ কন্ঠে প্রশ্ন করে,"আমাকে ছোঁবে না?"
গুরুনিপাতের প্রথম বৎসরটুকু - বলল সৌম্য!
কিঞ্চিৎ ক্ষুব্ধা হলো হটী! তবুও ঘরে নিয়ে এলো সৌম্যসুন্দরকে!
(চলবে)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours