নাজমীন মর্তুজা, লেখক ও গবেষক, অ্যাডিলেড, অস্ট্রেলিয়া:

পরকীয়া মানে
প্রেম নাকি প্রণয়?
নাকি শুধুই গোপন
নাকি অবৈধ আকর্ষন|
পরকীয়া মানে
টানাপড়েন যন্ত্রনা
লুকোচুরি লুকোছাপা
নিরব নিস্তদ্ধ মুখ
তিক্ততায় মোড়ানো, নিষিদ্ধ সুখ|
পরকীয়া মানে
নিষেধে ভরা একটি ভুল
নিষিদ্ধ গোপন সর্ম্পক
নাকি একাকিত্বের অবসান
নাকি প্রেমেরই জয়গান?
____________স্বপন শর্মা,
“বনমালী তুমি পর জনমে হইও রাধা “

হিন্দু পুরাণে রাধা-কৃষ্ণের প্রেম কাহিনী সবাই জানে। স্বামী থাকা সত্ত্বেও রাধা কৃষ্ণের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। আর সেই প্রেমকথা চিরকালীন অমরত্ব লাভ করে।
রাধা-কৃষ্ণের প্রেম মানুষের সঙ্গে ভগবানের চিরকালীন প্রেমেরই প্রতিচ্ছবি। একটি মাত্র পরকীয়া প্রেমের পাত্র পাত্রী যুগলে পূজিত হয়, বাদ বাকী যত পরকীয়া সবই কলঙ্কিত।
এই জন্যই অনেকে আক্ষেপ করে বলেন
“কৃষ্ণ করলে লীলা, আর আমরা করলে বিলা"।
আবার পরকীয়া প্রেম থেকে দূরে থাকার জন্য সাবধান করেছেন একজন -
“যমুনারও ঘাটে যাইও না গো রাধা ওইখানেতে বইস্যা আছে, কানু হারামজাদা।"
চিরকালের নিষিদ্ধ এই প্রেম গুলোর উপর তবুও কেন এতো আগ্রহ মানুষের। যেন কত মধু কত যাদু , পরের বউ কিম্বা অন্যের বান্ধবী , কিংবা কলিগ , পাশের বাড়ির ভাবীর উপরে, চিরকালই লাট্টু হওয়া পাবলিক বেশ রাশ টেনে বলেন - স্বয়ং কবিগুরু করেছেন ভাবীর সাথে পরকিয়া আমরা তো আম জনতা।

পরকীয়ার সম্পর্ক আজকাল কোনো অস্বাভাবিক বিষয় নয়। যে হারে মানুষ পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছেন এতে করে বিষয়টি দিনকে দিন উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছে সকলের কাছে। প্রেম একটি জটিল মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার।

কে, কেন, কোথায়, কার প্রেমে পড়বে, তা ঠিক করে বলা মুশকিল। তবে গড়পরতা হিসেবে করে প্রেমে পড়ার কিছু কারণ বের করা যায়। বিশেষ করে মধ্য বয়সে প্রেমে পড়ার বিষয়টি। মধ্য বয়সে বা শেষ যৌবনে মানুষের কিছু শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়।
আসে কিছু হরমোনাল পরিবর্তনও। এর ফলে মানুষ কিছুটা চাপের মুখে থাকে। অনেকেই হয়ে ওঠেন বিধ্বংসী। যৌবন চলে যাচ্ছে, আমার আর কোনো আবেদন থাকবে - এই চিন্তা তাদের ঠেলে দেয় জোর নতুন কিছু করার দিকে। পাশ্চাত্যে এ সমস্যাটিকে বলা হয় 'মিডল এজ ক্রাইসিস'। প্রেম নাকি পরকীয়া?

বিবাহিতদের ক্ষেত্রে প্রেমের চেয়ে পরকীয়া শব্দটাই বেশি যুতসই। এই শব্দটার সাথে কমবেশি সবাই পরিচিত। পাশ্চাত্যের মতোই আমাদের সমাজেও পরকীয়ার হার দিনকে দিন বেড়ে চলছে।

পরকীয়া মানুষ কেন করে?
এরও রয়েছে নানা রকম কারণ। সংসারে অশান্তি, বিবাহিত জীবনে সুখী না হওয়া, স্বামী বা স্ত্রীর সাথে বনিবনা না থাকা ইত্যাদি কারণে বিবাহিত নারী ও পুরুষরা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। পরকীয়া প্রেমের ফলাফল হয় মারাত্মক। সংসারে ভাঙন, ডিভোর্স তো হয়ই, নৈতিকতারও হয় অবনতি।

পরকীয়াকে কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। না পারিবারিক ভাবে, না সামাজিক ভাবে, না ধর্মীয় ভাবে! ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এটাকে পাপ হিসেবে গণ্য করা হয়। পরকীয়ায় লিপ্ত ব্যক্তিকে সমাজ অসম্মানের দৃষ্টিতে দেখে। আর যাদের থাকে সন্তান-সন্ততি, তাদের ক্ষেত্রে পরকীয়া ডেকে নিয়ে আসে ভয়াবহ পরিণতি। পিতা বা মাতার ভুলের ফল ভুগতে হয় সন্তানদের।
শুধুই শারীরিক চাহিদা :
তেলে জ্বলতে থাকা বাতি নিভে যাবার আগে দপ্ করে একবার জ্বলে উঠে নিভে যায়। একই ব্যাপার ঘটে মানুষের ক্ষেত্রেও। যৌবন ফুরিয়ে যাবার আগ দিয়ে মানুষের শারীরিক চাহিদা হঠাত্‍ করেই বেড়ে যায়। এই চাহিদার কারণেও অনেকেই জড়িয়ে পড়েন প্রেমের সম্পর্কে। তবে এ ধরনের সম্পর্ক সাধারণত গড়ে ওঠে বয়সে ছোট কারো সাথে। নারী এবং পুরুষ উভয়েই জড়িয়ে যান বয়সে ছোট কারো সাথে। এর ফলাফলও ভালো হয় না। কারণ শারীরিক চাহিদার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা সম্পর্কের কোনো শুভ পরিণতি থাকে না। স্বাভাবিকভাবেই এসব সম্পর্ক টিকে থাকে স্বল্প দিন, তবে ছাপ রেখে যায় ব্যাপক।

সুখী পরিবারকে চোখের পলকে তছনছ করে দিতে পারে পরকীয়া সম্পর্ক। কেউ নিজের ইচ্ছায় এই নিষিদ্ধ সম্পর্কে জড়ান, আবার কেউ পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়েন। আবার জীবনসঙ্গী মনের মতো না হলে কেউ কেউ সচেতনভাবেই পরকীয়া প্রেম করেন।

মানুষ ঠিক কেন পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ান এই সম্পর্কে রুটজার ইউনিভার্সিটির বায়োলজিক্যাল অ্যান্থ্রোপলজিস্ট হেলেন ফিশার, তাঁর বইয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। শুধু একপক্ষের ভুলের কারণে পরকীয়ার সম্পর্কের উৎপত্তি নয়। পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ানোর জন্য দুই পক্ষেরই ভুল রয়েছে। বিশেষ করে একজন নারী যখন পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ান তখন তার স্বামীর অনেকটা ভূমিকা থাকে। জানতে চান কীভাবে?

*তিনি আপনার ব্যাপারে অনেক দ্বিধায় ভোগেন
*তার প্রয়োজনে আপনি কখনোই সাপোর্ট দেন না
*আপনি তার প্রতি নমনীয় নন একেবারেই
*আপনার কোনো কাজে তিনি অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছেন
*আপনার স্ত্রী / স্বামী একাকী বোধ করেন!

তবে স্বাভাবিকভাবেই একজন পুরুষ একজন নারীর থেকে একটু কম আবেগী হয়ে থাকেন এবং মানসিক দিক দিয়ে যদি আঘাত প্রাপ্ত হন তাহলে সাপোর্ট খুঁজে থাকেন। এদিকে নারীরা সবসময়েই চান তার স্বামী তার প্রতি যতোটা সম্ভব নমনীয় হোন যাতে তার নিজের সব কিছু ছেড়ে আসার যন্ত্রণাটা কিছুটা হলেও ভুলে থাকতে পারেন।
কিন্তু যখন নিজের স্বামীর কাছ থেকে এইধরনের কিছু না পেয়ে থাকেন তখন অন্য কারো কাছে সামান্য কেয়ার পেলেও তার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন মনের অজান্তেই। আর এ থেকেই ভুল পথে পা বাড়ান অনেকে।

বহুদিন আগে ফেসবুকে একটা পরকীয়া নিয়ে লেখা পড়েছিলাম , সংগৃহীত লেখা থাকাতে আমি আসলে ঠাহর করতে পারিনি লেখাটা কার ছিল , বেশ রসিয়ে হলেও পরকীয়ার নিগুঢ় তত্ত্বটা কষিয়ে রেঁধেছেন লেখাটাতে , শেয়ার করছি কোট আনকোট করে।

“পরকীয়া খুব ভালো জিনিস । সেই শ্রীকৃষ্ণ থেকে শুরু করে হালের নগর আধিকারিক কেউই এর দাপট থেকে বাঁচতে পারেননি। পরকীয়া বৈবাহিক  জীবনের একঘেয়েমি দূর করে।
মনে নতুন উত্তেজনা আনে , শরীরে ডোপামিন বাড়ে , ত্বকে চিকনভাব , মনে চিকেনভাব বাড়ে। নিজের প্রতি যত্ন বাড়ে কারন অন্যের কাছে নিজেকে প্রেজেন্টেবল করে তুলতে হয়। বাকচাতুর্যে শান দেওয়া হয় নিজের বুদ্ধিজীবী ইমেজ গড়ে তুলতে।
পাঁচশো নিরানব্বই টাকায় তিনমাস অফুরন্ত ফোন ও রোজ দেড়জিবি নেটপ্যাক পুরোটা উসুল হয় । জামাকাপড় , গয়নাগাটি বিক্রেতা ও রেস্তোরাঁ মালিকদের পোয়াবারো হয় । একরাত দুদিন দীঘা , ডায়মন্ডহারবার ট্যুরিজম সাফল্যের চুড়োয় ওঠে । পাড়ার মহিলারা কিটি পার্টিতে ও বরেরা মান্থলি ক্লোজিঙের বিয়ার আড্ডায় আলোচনার নতুন বিষয় পান । কবি আরো বেশি কবিতা ও লেখক চ্যাটচেটে উপন্যাস লেখেন। উপহার শিল্প বিস্তার লাভ করে।
মানুষ ভুঁড়ি কমাতে জিম জয়েন করে । পরকীয়া কালে মানুষ নিজের দাঁতমাজা থেকে শুরু করে হাইতোলা পর্যন্ত সারাদিনে সাতশো একানব্ব‌ইটি সেলফি তোলে ও প্রতিটি চৌত্রিশবার এডিট , ফিল্টার ও ফটোশপ করে দেওয়ালে ঘুঁটে মারে।
সারাদিন মুচকি মুচকি হাসে, বসকে গাল দেওয়া ভুলে যায় , সন্তানের খারাপ রেজাল্ট ইগনোর করে তাকে " যা বেটা , জি লে আপনি জিন্দগি" বলে । মিডিয়া নতুন বিষয় পায়, পরিচালক প্লট , গড় মানুষ ফুটেজ পায়, কেচ্ছায় ভরে ঘট।
ধরা পড়লে জীবনসঙ্গী আরো আঁকড়ে ধ‍রে বা লাথ মারে , একটা হেস্তনেস্ত হয়ে যায় । বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য ও আত্মহত্যার কারন পাওয়া যায়।

এককথায় পরকীয়া খুব খুব ভালো জিনিস, প্রায় বিটকয়েন কেনা বা কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী হ‌ওয়ার মতন দুর্দান্ত জিনিস । প্রতিটি সচেতন নাগরিকের দেশের সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি বাড়াতে একাধিক পরকীয়া করা উচিত । এর পরোক্ষ প্রভাব জিডিপিতে পরে।
তবে ..., হ্যাঁ একটা তবে আছে । পরকীয়া করলে আরাম নেই । না না নবাব কিনলে আরাম ফ্রির আরাম নয় ,  প্রানের আরাম , মনের আরাম। সবসময় তটস্হ হয়ে থাকতে হয় , কেউ জেনে ফেললো না তো ? কেউ দেখে ফেললো না তো ? পত্রিকায় সাংবাদিক খবর দিল না তো ? এসব তো আছেই।

এছাড়া প্রাত্যহিক জীবনের তুচ্ছ তুচ্ছ আরাম। ব‌উ বা বরের সামনে আপনাকে দম আটকে ভুঁড়ি কমিয়ে রাখতে হয় না , প্রেমিক বা প্রেমিকার সামনে হয়।
ভাত খেয়ে লুঙ্গি বা নাইটি হাফ ভাঁজ করে থালাইভা স্টাইলে গুটিয়ে ভুঁড়িতে হাত বোলাতে বোলাতে পান গালে পুরে পরকীয়া হয় না।
ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে চা খাওয়া , খক্কর খক্কর করে বেসিনে মুখ ধোয়ার সময় গলার বাইল তোলা, বিছানায় বসে বাতকর্ম , মাংস খেয়ে খড়কে কাঠি দিয়ে দাত খোঁচানো পরকীয়ার সাথে যায় না।

মাংসের হাড় চুষে সুড়ুৎ বার করা বা সজনে চিবিয়ে ছিবড়ের পাহাড় বানানো যাবে না প্রেমিক বা প্রেমিকার সামনে । বাথরুম থেকে "ওগো আমার আমাশা হয়েছে গো , মেট্রোজিল বার করো " বলা যায় না । হরর মুভি দেখে শোওয়ার পর রাতে বাথরুমে যেতে হলে "ওগো , ওঠো না , আমি বাথরুমে যাচ্ছি , তুমি একটু জোরে জোরে গান গাওনা " বলা যায় না।
মাসের শেষে ধার চাওয়া যায় না । ফোন বা মেসেজ দেখেও ইগনোর করা যায় না। বুদ্ধিজীবী সেজে মাথার উপর দিয়ে যাওয়া খটোমটো কোরিয়ান বা রাশিয়ান সিনেমা দেখতে হয় , নেরুদা , দেরিদা নবারুণ কোট করতে হয় না।

প্রতিদিন সাড়ে বারোবার দাঁত মাজতে হয় , মাসে দুটো ফেসিয়াল , প্রতি সপ্তাহে চুল , গোঁফ রঙ করতে হয় , টাক ঢাকতে হয়, সর্বদা জিনস পরে কোমরে দাগ পড়ে যায় । সাবান মেখে প্রতিদিন লুফা দিয়ে দুবার গায়ের ছাল তুলে গা ঘষতে হয়।

ফোনে ভয়ংকর জটিল পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখতে হয় যা নিজেই প্রতি সাতদিনের দিন ভুলে যেতে হয় । পরিচিত কারোর সাথে সপ্রেম রাস্তায় দেখা হলে, "এ আমার কেউ নয় / মাসতুতো বোন / দাদা হয় " উত্তর দিতে হয় । খরচের ঠেলায় সঞ্চয় দূর অস্ত , ধার করতে হয়।
সাড়ে তেইশ মিনিট অন্তর ঝগড়া ও প্রতি আড়াই ঘন্টা পর অভিমান ভাঙাতে হয় । ইয়ে করার সময় কর্তা বা গিন্নির নাম যাতে ভুল করে মুখে না আসে সে বিষয়ে সদা সচেতন থাকতে হয়।
মোদ্দা কথা এ হল ভীষ্মের শরশয্যা , শুতে পারো কিন্তু অই , কাঁটার উপর । তাই সুধী , যদি আরাম চান , পরকীয়া ভুলুন , নিজের সাতপুরনো বর বা বউকে কাছে টেনে নিন । দুপুরে ইলিশ ভাঁপা অথবা রাতে ইটিং আউট নিশ্চিত । নিজের বর/ব‌উকে ভালোবাসুন , সুখে নয় , স্বস্তিতে থাকুন।”

এতো কিছু জেনে শুনে বুঝে আমরা আর সকল নীতি নৈতিকতাকে শিকেয় তুলে রেখে, মজে যাই বার বার পরকীয়ার বৃন্দাবনে।
চৈতন্যদেব প্রভাবিত বৈষ্ণব পদাবলীর রাধা, যেমন এখন ঘরে ঘরে তেমনি অলিতে গলিতে ফেসবুকে কৃষ্ণ কানাইয়ার ভজন চলছে।

মানুষকে কৃষ্ণ প্রেমে মাতিয়েছেন। বিশ্বের আর কোথাও এমন প্রেমময় ধর্ম প্রচার কখনো হয়নি। বাঙ্গালীর বাউল বা বাংলার প্রতিটি মানুষ বিরহে তো রাধা- কৃষ্ণকেই স্মরণ করে। এই প্রেমের একটি বিপ্লবী বিশ্বজনিন রূপও তো রাধা কৃষ্ণ। বিপ্লবী রূপটি হলো পরকীয়া প্রেম।
বৈষ্ণব রসশাস্ত্রে রূপ গোস্বামী বলেছেন, পরকিয়ার সঙ্গে কৃষ্ণের অধিক আনন্দ। ইহাতে ক্রীড়া করেন গোবিন্দ।
সকলের শ্রেষ্ঠা হয় পরকীয়া নারী। তার ভাষায় আপন মহিমা তার কহেন শ্রী হরি।
বিশ্বের বিশাল সাহিত্য ভান্ডারে সীতা, হেলেন, জুলেখা সবইতো পরকীয়া। ইতালির মহাকবি দান্তের ডিভাইন কমেডিতে ফ্রাঞ্চেস্কা প্রেমে পরেন স্বামীর অনুজ পাওলের সঙ্গে।
পারস্যের মহাকবি, ফেরদৌসির শাহনামায় সম্রাট কাউকাওসের মহিষী সওদাবা তার সতিন পুত্র সিয়াউসের প্রতি আসক্ত হন।
আজিজ মিশরের স্ত্রী জুলেখা বিবি আসক্ত হয়ে পরেন নবী ইউসুের প্রতি। পরে তাদের বিয়েও হয়। এই পরকিয়া অবশ্য মিলনান্তক।
কখনো কখনো অবশ্য পরকীয়া মর্মান্তিকও হয়, যেমন কার্ল মার্কসের কন্যা ইলিনর যখন জানতে পারেন তার স্বামী অন্যের প্রতি আসক্ত তখন তিনি আত্মহত্যা করেন। কৃষ্ণের রাধা কি এমনি কোন অভিমানে আত্মহত্যা করেছিলেন বা আত্মগোপন করেছিলেন। জানি না । বৈষ্ণব কবিরা রাধার কোন খোঁজ আমাদের দেননি।
শুধু এই গানটি রয়েছে, রাধার বিরহের, না পোড়াইও রাধা অঙ্গ ভাসাই ও জলে। মরিলে বাঁধিয়া রাইখো তমালের ডালে।
তাইতো কবি রাধারমণ দত্ত গেয়ে উঠেন, ভ্রমর কইও গিয়া শ্রীকৃষ্ণ বিচ্ছেদের অনলে অঙ্গ যায় জ্বলিয়া।
পরকীয়া যুগে যুগে চলেছে চলবে... নগর ধ্বংস হয়েছে , ধ্বংস হয়েছে জনপদ, দেশ ধ্বংস হয়েছে , সেখানে সংসার তো তুচ্ছ !

পরকীয়া যেন সব মনের নিকোষিত হেম!

শরতের আকাশে অবারিত কাশবন মেঘের ভাঁজে ভাঁজে আনন্দ আলোর খেলা! ভেজা জোছনার মত নরম সব আলো, ডানায় ডানায় উড়ে উড়ে ...

(তথ্যসুত্র: লেখাটার কার্টিসি পাবার যোগ্য আমার পড়া বিভিন্ন  ইতিহাস , নেট ফিচার, মধ্যযুগের রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান, এবং বিভিন্ন  সময় পেপারে পড়ে কোট করে রাখা কিছু কথা , এবং অবশ্যই ফেসবুক সংগৃহীত পোষ্টের কাছে।)
Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours