জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:
মার্ক্সবাদী কর্মীদের মধ্যে মার্ক্সবাদ সম্পর্কে অনেক ভূল ধারনাই সাম্যবাদী আন্দোলনকে অনেক সময় যে শত্রুর ট্রেপে নিয়ে গেছে, সেটা আজ যদি ভালো করে বুঝতে হয়, তবে প্রথমেই যদি বুঝতে হবে, মার্ক্সসবাদ কোন দল কিংবা শ্রেনীর ম্যানিফেস্টো নয়, তবে এটাও বুঝতে হবে আন্তর্জাতীকতাবাদ, ইনকিলাব জীন্দাবাদে যেমন শেষ হয় না,তেমনি সমাপ্ত হয় না শ্রমিক শ্রেনীর সমাজতন্ত্র কিংবা শ্রেমীকদের বিশ্ব সৌভ্রাতৃ্ত্বতেই।
মার্ক্সবাদ যদি দর্শনের সর্বোচ্চ চুড়া এবং ইতিহাসের অভিমুখ আগে থেকে বলে দেওয়া এবং এর এগিয়ে যাওয়ার আর্থ-সামাজিক সর্তগুলিকে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে তবে আন্তর্জাতীকতা মানবজাতিকে তার চেতনার শ্রোত কে সীমা থেকে অসীমতার পেছনে পরিচালিত করে ইতিহাসে মনুষ্যজাতিকে সৃজনীর পথে ক্রিয়াশীল রাখে।
লেনিনবাদ এখানেই আন্তর্জাতীকতাকে ইনকিলাব এব্ং আন্তর্জাতীক সৌভভ্রাতৃত্বের বিষয়টিকে মার্ক্সবাদের সাথে যুক্ত করে ইতিহাসের অভিমুখকে স্থব্ধ করে দেওয়ার শত্রু স্বরযন্ত্রকে স্থব্ধ করার চেষ্টা করেছেন এবং শ্রমিক আন্দোলনকে একটা আন্তর্জাতীক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার রননীতিটাকে নির্মান করেছেন।
কাজেই মার্ক্সবাদকে ইতিহাস এবং সমাজ বিজ্ঞানের দর্শন এবং লেনিনবাদকে পুজির শাসন থেকে সমাজতন্ত্রে উত্তরনের মিলন সুত্র হিসেবে যদি না দেখার চেষ্টা হয় পদে পদে বিভ্রম হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাবে।
---- এই সুত্র থেকেই গত পোস্টিংটির সারাংশ ধরেই, ইতিহাসের সাথে তাল রেখে জাতীয়তার স্বতস্ফুর্ত বিকাশ ধারাটাকে আন্তর্জাতীকতা এবং ইতিহাসের পথকে কন্টকাকীর্ণ হতে না দিতেই সমাজ বিপ্লবে শ্রমিক অংশগ্রহনকে ভাবগত ভাবে সমৃদ্ধ করার কারনেই লেনিনবাদ আন্তর্জাতীকতাকে উচ্চ শিখরে উঠিয়ে এনেছেন।
আগের পোস্টিং এ উল্লেখ করেছি, কিভাবে জাতীয়তার আন্তর্জাতীক অভিমুখে কিভাবে লোকাচার এবং লোক উৎসবগুলির রুপ বদল হয়ে, সব মিলিয়ে বিশ্বরুপের দিকে প্রবাহমান। সেখানে স্বতস্ফুর্ত উপাদান যেমন কাজ করে, তেমনি ইতিহাসের বিবাদমান দিকগুলিও সমভাবেই সক্রীয় থাকে। শেষ পর্য্যন্ত জাতীয়ততা, উলটো পথে হেটে প্রতিক্রিয়ায় কিভাবে আত্মসমর্পন করে থাকে, তার প্রমান ভারতীয় ইতিহাসের মাঝে মাজে উত্থান এবং তার পর পতনের ধারা থেকেই স্পষ্ট।
এটা যে লোকাচারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য তা নয়, ইতিহাসের ধারার সাথে সাহিত্য সংস্কৃতির সর্বতোমুখী রুপান্তরে ইতিহাসের আধুনিকতার অভিমুখেই তা স্পষ্ট। বাংলা সাহিত্যের দিকে যদি তাকিয়ে দেখা যায়, আজ থেকে দু'শ বছর পুর্বে যখন রেনেঁশার ছোট রেখাটি বাংলায় আসতে শুরু করলো, তখন ঈশ্বর চন্দ্রর হাত ধরে একপ্রান্ত সমাজ সংস্কার অন্য প্রান্তে বাংলা ভাষা উভয়ের জন্ম এবং বিকাশ শুরু হোল। এখানেই, জাতীয়তার আধুনিক পথ ধরে আন্তর্জাতীক উন্মেষের ধারাপাত বলে মানতে হবে।
বঙ্কীম চন্দ্রকে যদি বাংলা সাহিত্যের জনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, তবে মানতে হবে সেই সাহিত্য একপ্রান্ত ঈশ্বর চন্ত্র, অন্যপ্রান্তের শিপাহী বিদ্রোহের প্রস্তুতি কাল হিসেবে দেখতে হবে। ইতিমধ্যে রেনেশার আলো রেখাও মোটা হয়েছে। মজার বিষয় হোল রবীন্দ্রনাথ যখন এলেন তখন বিশ্ব রেনেশাই শুধু নয়, রুশ বিপ্লব মহামানবিকতার ছায়া নিয়ে, রবীন্দ্রকলমে নির্ঝরিত হতে লাগলো। তিনি বঙ্কিমের আনন্দমঠ বলুন কিংবা কপালকুন্ডলার আপোষকামিকতার রুপ ও গন্ধকে বদলে দিলেন মহামানবিকতার আবেদনে। নির্ঝরের স্বপ্ন ভাংগে, তিনি মার্ক্সের জ্ঞানতত্ব পর্য্যন্ত পৌছে গেলেন। আফ্রিকায়, তিনি ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে এক সৌ্মকান্তি জীবন্ত প্রতিবাদ। তার শেষ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ যখন লিখছেনঃ
"সত্যেরে সে পায়
আপন আলোকে-ধৌত অন্তরে অন্তরে;
কিছুতে পারে নয়া তারে প্রবঞ্চিতে,
শেষ পুরস্কার নিয়ে যায় সে যেঁ
আপন ভান্ডারে।
অনায়াসে সে পেরেছে ছলনা সহিতে
সে পায় তোমার হাতে
শান্তির অক্ষয় অধিকার।"
এইভাবে তিনি দর্শনের মানবিক উৎকর্শতা সর্বোচ্চ ধাপটি চিহ্নিত করলেন।
এবারে দেখুন, যদি মেনে চলেন অক্টোবর বিপ্লব বিশ্বের প্রথম মহামানবিব বিপ্লব বিশ্ব সাহিত্যের সাথে সাথে ভারতীয় সাহিত্যকলাতেও রেনেশার এবং এই মহামানবিক শ্রোত মিলিত হয়ে নতুন রুপে উদ্ভাসিত হোল।
তাই রবীন্দ্র কাব্যের প্রথম কালের কিছুটা ধীরে চলার শ্রোত শেষ প্রান্তে এক অপরুপ সৌ্ন্দর্য্যের গম্ভিরতা আবিষ্ট। রবীন্দ্রকাব্য তখন মহামানবিকতার মহাসমুদ্র ।
কল্লোল যুগের সাহিত্য তা থেকেই বেরিয়ে আসা এক সাগর। পরবর্তিকালে দ্বীতীয় মহামানবিক বিপ্লবের কালে,রেনেশার সাথে আই পি টি এর ইতিবাচক শ্রোত মমিলিত বাংলা সাহিত্য ভারতীয় সাহিত্যের মাতৃভূমির যায়গা করে নেওয়ার সুযোগ।
এই সুত্রগুলি ধরে এগিয়ে গেলেই দেখা যাবে মানবিকতার সাথে যেমন মহামানবিকতার কোন বিরোধ নেই, তেমনি আন্তর্জাতীকতাও সীমা ছারিয়ে আধুনিকতার পথে সভ্যতার এগিয়ে যাওয়্র একটি শ্রোত। (ক্রমশ)
মার্ক্সবাদী কর্মীদের মধ্যে মার্ক্সবাদ সম্পর্কে অনেক ভূল ধারনাই সাম্যবাদী আন্দোলনকে অনেক সময় যে শত্রুর ট্রেপে নিয়ে গেছে, সেটা আজ যদি ভালো করে বুঝতে হয়, তবে প্রথমেই যদি বুঝতে হবে, মার্ক্সসবাদ কোন দল কিংবা শ্রেনীর ম্যানিফেস্টো নয়, তবে এটাও বুঝতে হবে আন্তর্জাতীকতাবাদ, ইনকিলাব জীন্দাবাদে যেমন শেষ হয় না,তেমনি সমাপ্ত হয় না শ্রমিক শ্রেনীর সমাজতন্ত্র কিংবা শ্রেমীকদের বিশ্ব সৌভ্রাতৃ্ত্বতেই।
মার্ক্সবাদ যদি দর্শনের সর্বোচ্চ চুড়া এবং ইতিহাসের অভিমুখ আগে থেকে বলে দেওয়া এবং এর এগিয়ে যাওয়ার আর্থ-সামাজিক সর্তগুলিকে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে তবে আন্তর্জাতীকতা মানবজাতিকে তার চেতনার শ্রোত কে সীমা থেকে অসীমতার পেছনে পরিচালিত করে ইতিহাসে মনুষ্যজাতিকে সৃজনীর পথে ক্রিয়াশীল রাখে।
লেনিনবাদ এখানেই আন্তর্জাতীকতাকে ইনকিলাব এব্ং আন্তর্জাতীক সৌভভ্রাতৃত্বের বিষয়টিকে মার্ক্সবাদের সাথে যুক্ত করে ইতিহাসের অভিমুখকে স্থব্ধ করে দেওয়ার শত্রু স্বরযন্ত্রকে স্থব্ধ করার চেষ্টা করেছেন এবং শ্রমিক আন্দোলনকে একটা আন্তর্জাতীক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার রননীতিটাকে নির্মান করেছেন।
কাজেই মার্ক্সবাদকে ইতিহাস এবং সমাজ বিজ্ঞানের দর্শন এবং লেনিনবাদকে পুজির শাসন থেকে সমাজতন্ত্রে উত্তরনের মিলন সুত্র হিসেবে যদি না দেখার চেষ্টা হয় পদে পদে বিভ্রম হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাবে।
---- এই সুত্র থেকেই গত পোস্টিংটির সারাংশ ধরেই, ইতিহাসের সাথে তাল রেখে জাতীয়তার স্বতস্ফুর্ত বিকাশ ধারাটাকে আন্তর্জাতীকতা এবং ইতিহাসের পথকে কন্টকাকীর্ণ হতে না দিতেই সমাজ বিপ্লবে শ্রমিক অংশগ্রহনকে ভাবগত ভাবে সমৃদ্ধ করার কারনেই লেনিনবাদ আন্তর্জাতীকতাকে উচ্চ শিখরে উঠিয়ে এনেছেন।
আগের পোস্টিং এ উল্লেখ করেছি, কিভাবে জাতীয়তার আন্তর্জাতীক অভিমুখে কিভাবে লোকাচার এবং লোক উৎসবগুলির রুপ বদল হয়ে, সব মিলিয়ে বিশ্বরুপের দিকে প্রবাহমান। সেখানে স্বতস্ফুর্ত উপাদান যেমন কাজ করে, তেমনি ইতিহাসের বিবাদমান দিকগুলিও সমভাবেই সক্রীয় থাকে। শেষ পর্য্যন্ত জাতীয়ততা, উলটো পথে হেটে প্রতিক্রিয়ায় কিভাবে আত্মসমর্পন করে থাকে, তার প্রমান ভারতীয় ইতিহাসের মাঝে মাজে উত্থান এবং তার পর পতনের ধারা থেকেই স্পষ্ট।
এটা যে লোকাচারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য তা নয়, ইতিহাসের ধারার সাথে সাহিত্য সংস্কৃতির সর্বতোমুখী রুপান্তরে ইতিহাসের আধুনিকতার অভিমুখেই তা স্পষ্ট। বাংলা সাহিত্যের দিকে যদি তাকিয়ে দেখা যায়, আজ থেকে দু'শ বছর পুর্বে যখন রেনেঁশার ছোট রেখাটি বাংলায় আসতে শুরু করলো, তখন ঈশ্বর চন্দ্রর হাত ধরে একপ্রান্ত সমাজ সংস্কার অন্য প্রান্তে বাংলা ভাষা উভয়ের জন্ম এবং বিকাশ শুরু হোল। এখানেই, জাতীয়তার আধুনিক পথ ধরে আন্তর্জাতীক উন্মেষের ধারাপাত বলে মানতে হবে।
বঙ্কীম চন্দ্রকে যদি বাংলা সাহিত্যের জনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, তবে মানতে হবে সেই সাহিত্য একপ্রান্ত ঈশ্বর চন্ত্র, অন্যপ্রান্তের শিপাহী বিদ্রোহের প্রস্তুতি কাল হিসেবে দেখতে হবে। ইতিমধ্যে রেনেশার আলো রেখাও মোটা হয়েছে। মজার বিষয় হোল রবীন্দ্রনাথ যখন এলেন তখন বিশ্ব রেনেশাই শুধু নয়, রুশ বিপ্লব মহামানবিকতার ছায়া নিয়ে, রবীন্দ্রকলমে নির্ঝরিত হতে লাগলো। তিনি বঙ্কিমের আনন্দমঠ বলুন কিংবা কপালকুন্ডলার আপোষকামিকতার রুপ ও গন্ধকে বদলে দিলেন মহামানবিকতার আবেদনে। নির্ঝরের স্বপ্ন ভাংগে, তিনি মার্ক্সের জ্ঞানতত্ব পর্য্যন্ত পৌছে গেলেন। আফ্রিকায়, তিনি ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে এক সৌ্মকান্তি জীবন্ত প্রতিবাদ। তার শেষ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ যখন লিখছেনঃ
"সত্যেরে সে পায়
আপন আলোকে-ধৌত অন্তরে অন্তরে;
কিছুতে পারে নয়া তারে প্রবঞ্চিতে,
শেষ পুরস্কার নিয়ে যায় সে যেঁ
আপন ভান্ডারে।
অনায়াসে সে পেরেছে ছলনা সহিতে
সে পায় তোমার হাতে
শান্তির অক্ষয় অধিকার।"
এইভাবে তিনি দর্শনের মানবিক উৎকর্শতা সর্বোচ্চ ধাপটি চিহ্নিত করলেন।
এবারে দেখুন, যদি মেনে চলেন অক্টোবর বিপ্লব বিশ্বের প্রথম মহামানবিব বিপ্লব বিশ্ব সাহিত্যের সাথে সাথে ভারতীয় সাহিত্যকলাতেও রেনেশার এবং এই মহামানবিক শ্রোত মিলিত হয়ে নতুন রুপে উদ্ভাসিত হোল।
তাই রবীন্দ্র কাব্যের প্রথম কালের কিছুটা ধীরে চলার শ্রোত শেষ প্রান্তে এক অপরুপ সৌ্ন্দর্য্যের গম্ভিরতা আবিষ্ট। রবীন্দ্রকাব্য তখন মহামানবিকতার মহাসমুদ্র ।
কল্লোল যুগের সাহিত্য তা থেকেই বেরিয়ে আসা এক সাগর। পরবর্তিকালে দ্বীতীয় মহামানবিক বিপ্লবের কালে,রেনেশার সাথে আই পি টি এর ইতিবাচক শ্রোত মমিলিত বাংলা সাহিত্য ভারতীয় সাহিত্যের মাতৃভূমির যায়গা করে নেওয়ার সুযোগ।
এই সুত্রগুলি ধরে এগিয়ে গেলেই দেখা যাবে মানবিকতার সাথে যেমন মহামানবিকতার কোন বিরোধ নেই, তেমনি আন্তর্জাতীকতাও সীমা ছারিয়ে আধুনিকতার পথে সভ্যতার এগিয়ে যাওয়্র একটি শ্রোত। (ক্রমশ)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours