মৌসুমী মন্ডল, ফিচার রাইটার, কলকাতা:
"এমন কোনো সমস্যা যদি আসে পলিটব্যুরোর সামনে, যার বিচারে অত্যন্ত বেশি মাত্রায় বিচার বুদ্ধির আবশ্যক, তাহলে স্ট্যালিনকেই সেই দায়িত্ব দিতে হবে।" - লেনিন।
সালটা ১৮৭৮। আর তারিখটা ১৮ই ডিসেম্বর। এক দরিদ্র মুচির ঘরে জন্ম নিলেন জোসেফ বেসারিওনি জুগাসভিলি। যাকে গোটা বিশ্ব স্ট্যালিন নামে জানে। বহু কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের মতো তাঁরও ছদ্মনাম স্ট্যালিন। ১০ বছর বয়স থেকে মিশন চার্চ স্কুলে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। তৎকালীন জর্জিয়ান শিশুদের রুশ ভাষা শিখতে বাধ্য করা হত। কিন্তু চার্চে পড়ানো বিষয়বস্তুর বাইরেও জানার আগ্রহ গড়ে ওঠে তাঁর। যেসব বই চার্চ নিষিদ্ধ করেছিল সেই বইগুলি তিনি পুরাতন বইয়ের দোকান থেকে কিনে পড়তেন। সেই সময় ভ্লাদিমির-এর আন্দোলনের কথা তাঁকে প্রভাবিত করতে থাকে। চার্চের এই বলপূর্বক রাশিয়ান ভাষা শেখানোর বিরুদ্ধে তখন তিনি প্রতিবাদ করেন। এবং খুব স্বাভাবিক ভাবেই চার্চ কর্তৃপক্ষ তাঁকে বহিষ্কার করে। এইসময় থেকেই তিনি সরাসরি রাজনীতিতে যোগদান করেন। গড়ে তুলতে থাকেন সর্বহারার দল। তৈল খনির মজুর, রেলের শ্রমিক, কৃষক এদেরকে সংগঠিত করতে থাকেন। সবকিছুর বিরুদ্ধে গিয়ে তাঁর এই কার্যকলাপের জন্য তাঁকে বহুবার কারারুদ্ধ করা হয়। কিন্তু প্রতিবারই তিনি পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। রুশ ভাষায় 'স্ট্যাল' শব্দের অর্থ 'ইস্পাত' আর 'স্ট্যালনোই অর্থ ' কঠিন ইস্পাত'। শ্রমীকদের মাঝে কাজ করার সময় তাঁর কঠিন ইস্পাতসম ব্যক্তিত্বর জন্যে তাঁকে স্ট্যালিন নামে অভিহিত করা হয়।
ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর স্ট্যালিন জেলের বাইরে এলেন। এবং দেখলেন পার্টি প্রায় নেতৃত্বহীন অবস্থায় আছে। লেনিন তখন দেশের বাইরে। নিজের কাঁধে তুলে নিলেন পার্টির সমস্ত দায়ভার। মুখপাত্র ইস্ক্রা পুনরায় চালু হল। লেনিন দেশে ফিরে এলে কেরেনস্কি সরকার তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে বলে। ট্রটস্কি, জিনোভিয়েভ-রা লেনিনকে আত্মসমর্পণ করতে যুক্তি দেয়। কিন্তু একমাত্র স্ট্যালিন এদের বিরুদ্ধে গলা তোলে। তিনি লেনিনকে সাবধান করে বলেন যে, তিনি আত্মসমর্পণ করলে কেরেনস্কিরা তাঁকে হত্যা করবে। লেনিনকে সেই মুহূর্তে অন্যত্র সরিয়ে তিনি তাঁর জীবন রক্ষা করেন। শোনা যায় ট্রটস্কি, কামেনেভ, জিয়োভিয়েভ, বুখারিন এদের সম্পর্কে লেনিন বলেছিলেন যে, "এঁরা ইন্টেলেকচ্যুয়াল। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা কম। কারণ এরা কেউই জনগণকে সংগঠিত করার কাজ করেনি"। এদের বাইরে স্ট্যালিনই একমাত্র জারের আমলে গুপ্তভাবে জনগণকে সংগঠিত করে। যেবার লেনিন স্ট্যালিনকে পার্টির সাধারণ সম্পাদকের পদে উন্নীত করে সেদিন ইতিহাস সাক্ষী ছিল যে ভ্লাদিমির যোগ্য উত্তরসূরী বেছে নিয়েছিল।
শোনা যায় স্ট্যালিন অত্যন্ত সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। ব্রিটেনের ওয়েব দম্পতি যখন জারের দেশের সমাজতন্ত্রকে দেখতে এল তখন তাঁরা স্ট্যালিনের স্ত্রী কে কারখানার আর পাঁচজন শ্রমীকের সাথে কর্মরত অবস্থায় দেখে অবাক হয়ে যান। তিনি নিজের সম্পর্কেও অতিরঞ্জন একদম পছন্দ করতেন না। তাঁর ছোটবেলা সম্পর্কে এক বইয়েতে তিনি দেখেন বইটা পুরোটাই অতিরঞ্জনে ভর্তি। তখন তিনি বলেছিলেন 'এই বই মিথ্যেয় ভর্তি, এ বীরপূজা, ব্যক্তি পূজা বইটি পুড়িয়ে ফেলা দরকার।' এমনই এক ব্যক্তিত্ব ছিলেন স্ট্যালিন। হ্যাঁ আজ স্ট্যালিনের জন্মদিন। এমন মানুষদের মৃত্যুদিন হয় না। এরা শুধুমাত্র সমাজে জন্মায় ইতিহাসকে সংশোধন করার জন্য। পৃথিবীর যেখানেই ধর্মের আড়ম্বর আসবে সেখানেই স্ট্যালিনরা জন্মাবে ভাতের জন্য।
"এমন কোনো সমস্যা যদি আসে পলিটব্যুরোর সামনে, যার বিচারে অত্যন্ত বেশি মাত্রায় বিচার বুদ্ধির আবশ্যক, তাহলে স্ট্যালিনকেই সেই দায়িত্ব দিতে হবে।" - লেনিন।
সালটা ১৮৭৮। আর তারিখটা ১৮ই ডিসেম্বর। এক দরিদ্র মুচির ঘরে জন্ম নিলেন জোসেফ বেসারিওনি জুগাসভিলি। যাকে গোটা বিশ্ব স্ট্যালিন নামে জানে। বহু কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের মতো তাঁরও ছদ্মনাম স্ট্যালিন। ১০ বছর বয়স থেকে মিশন চার্চ স্কুলে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। তৎকালীন জর্জিয়ান শিশুদের রুশ ভাষা শিখতে বাধ্য করা হত। কিন্তু চার্চে পড়ানো বিষয়বস্তুর বাইরেও জানার আগ্রহ গড়ে ওঠে তাঁর। যেসব বই চার্চ নিষিদ্ধ করেছিল সেই বইগুলি তিনি পুরাতন বইয়ের দোকান থেকে কিনে পড়তেন। সেই সময় ভ্লাদিমির-এর আন্দোলনের কথা তাঁকে প্রভাবিত করতে থাকে। চার্চের এই বলপূর্বক রাশিয়ান ভাষা শেখানোর বিরুদ্ধে তখন তিনি প্রতিবাদ করেন। এবং খুব স্বাভাবিক ভাবেই চার্চ কর্তৃপক্ষ তাঁকে বহিষ্কার করে। এইসময় থেকেই তিনি সরাসরি রাজনীতিতে যোগদান করেন। গড়ে তুলতে থাকেন সর্বহারার দল। তৈল খনির মজুর, রেলের শ্রমিক, কৃষক এদেরকে সংগঠিত করতে থাকেন। সবকিছুর বিরুদ্ধে গিয়ে তাঁর এই কার্যকলাপের জন্য তাঁকে বহুবার কারারুদ্ধ করা হয়। কিন্তু প্রতিবারই তিনি পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। রুশ ভাষায় 'স্ট্যাল' শব্দের অর্থ 'ইস্পাত' আর 'স্ট্যালনোই অর্থ ' কঠিন ইস্পাত'। শ্রমীকদের মাঝে কাজ করার সময় তাঁর কঠিন ইস্পাতসম ব্যক্তিত্বর জন্যে তাঁকে স্ট্যালিন নামে অভিহিত করা হয়।
ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের পর স্ট্যালিন জেলের বাইরে এলেন। এবং দেখলেন পার্টি প্রায় নেতৃত্বহীন অবস্থায় আছে। লেনিন তখন দেশের বাইরে। নিজের কাঁধে তুলে নিলেন পার্টির সমস্ত দায়ভার। মুখপাত্র ইস্ক্রা পুনরায় চালু হল। লেনিন দেশে ফিরে এলে কেরেনস্কি সরকার তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে বলে। ট্রটস্কি, জিনোভিয়েভ-রা লেনিনকে আত্মসমর্পণ করতে যুক্তি দেয়। কিন্তু একমাত্র স্ট্যালিন এদের বিরুদ্ধে গলা তোলে। তিনি লেনিনকে সাবধান করে বলেন যে, তিনি আত্মসমর্পণ করলে কেরেনস্কিরা তাঁকে হত্যা করবে। লেনিনকে সেই মুহূর্তে অন্যত্র সরিয়ে তিনি তাঁর জীবন রক্ষা করেন। শোনা যায় ট্রটস্কি, কামেনেভ, জিয়োভিয়েভ, বুখারিন এদের সম্পর্কে লেনিন বলেছিলেন যে, "এঁরা ইন্টেলেকচ্যুয়াল। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা কম। কারণ এরা কেউই জনগণকে সংগঠিত করার কাজ করেনি"। এদের বাইরে স্ট্যালিনই একমাত্র জারের আমলে গুপ্তভাবে জনগণকে সংগঠিত করে। যেবার লেনিন স্ট্যালিনকে পার্টির সাধারণ সম্পাদকের পদে উন্নীত করে সেদিন ইতিহাস সাক্ষী ছিল যে ভ্লাদিমির যোগ্য উত্তরসূরী বেছে নিয়েছিল।
শোনা যায় স্ট্যালিন অত্যন্ত সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। ব্রিটেনের ওয়েব দম্পতি যখন জারের দেশের সমাজতন্ত্রকে দেখতে এল তখন তাঁরা স্ট্যালিনের স্ত্রী কে কারখানার আর পাঁচজন শ্রমীকের সাথে কর্মরত অবস্থায় দেখে অবাক হয়ে যান। তিনি নিজের সম্পর্কেও অতিরঞ্জন একদম পছন্দ করতেন না। তাঁর ছোটবেলা সম্পর্কে এক বইয়েতে তিনি দেখেন বইটা পুরোটাই অতিরঞ্জনে ভর্তি। তখন তিনি বলেছিলেন 'এই বই মিথ্যেয় ভর্তি, এ বীরপূজা, ব্যক্তি পূজা বইটি পুড়িয়ে ফেলা দরকার।' এমনই এক ব্যক্তিত্ব ছিলেন স্ট্যালিন। হ্যাঁ আজ স্ট্যালিনের জন্মদিন। এমন মানুষদের মৃত্যুদিন হয় না। এরা শুধুমাত্র সমাজে জন্মায় ইতিহাসকে সংশোধন করার জন্য। পৃথিবীর যেখানেই ধর্মের আড়ম্বর আসবে সেখানেই স্ট্যালিনরা জন্মাবে ভাতের জন্য।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours