ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ

গোলবাধল  মেহেরকে  নিয়েই!বামুনের  সাত  পুরুষের  ভিটেয় যবনী  লেখা পড়া  শিখবে  হিঁন্দু  মেয়েদের  সাথে? জাত ধর্ম  সব  জলাঞ্জলীতে  গেল! কিন্তু সরাসরি  কথাটা  না  বলে  গোঁড়া  ব্রাক্ষ্মন  পরিবারের  কর্তারা  তাঁদের  বাড়ীর  মেয়েদের   রূপেন্দ্রর  মহিলা বিদ্যালয়ে  যাওয়া  বন্ধ  করে  দ়িল! প্রথমে  তারাসুন্দরী, পুটুরানী  করে শোভারানীও অনুপস্হিত!
         এদিকে  হঠাৎ  মৌলবী  সাহেব  একদিন  এসে  জানালেন  তাঁর  বোন  আর  পড়তে  আসবে  না!রূপেন্দ্র  কারন  জানতে  চাইলে  তিনি  জানালেন, তাঁরা  নিজেরাই  লজ্জিত  এবং  ক্ষমা প্রার্থী! মেহের  হিঁন্দুর  বাড়ীতে  লেখাপড়া  শিখতে  যাচ্ছে  খবরটা  কোনভাবে  বড়  ইমামের  কাছে  পৌঁছালে, তিনি  ক্ষিপ্ত  হয়ে   তলব  করে তাঁকে  অপমান  করে  বলেন," তোমার  সাহস তো  কম  নয়! ইসলামের  বিরোধিতা  করে, প্রতিদিন  বোনকে  নিয়ে  কাফেরের  বাড়ীতে  গিয়ে  কাফেরদের  ভাষা  শিখতে  যাও,তাদের  পুতুল পুজার  প্রসাদ  গ্রহন  করো এতো  বেয়াদব  তোমরা?", মৌলবী  ইমামের  কাছে  ক্ষমা  চেয়ে  অঙ্গীকার  করে  এই  বেয়াদবী  আর করবে    না! তারা  ভাইবোন  রূপেন্দ্রর  কাছে  এসে  ক্ষমা  চেয়ে  চলে  যান!
         
 কিন্তু  এই  মেহেরের  জন্যই  রূপেন্দ্রর  মহিলা  বিদ্যালয়ে  হিঁন্দু  ছাত্রীরা  না  আসায়  সংকটে  পড়লে  রূপেন্দ্র  প্রত্যেকের  বাড়ী গিয়ে  অনুরোধ  করেন  তাঁদের মেয়ে  বোনদের  বিদ্যালয়ে  পাঠাতে, এবং  একথাও  বলেন যে  বর্তমানে  মুসলিম  ছাত্রীটি  না ভবিষ্যতেও  আর  পড়তে  আসবে  না! কিন্তু  তা  সত্বেও  ছাত্রী  সংখ্যা  পাঁচের  বেশী  ছয়  হ'লো  না!
            চিন্তিত  রূপেন্দ্র তাঁর  স্বপ্নে লালিত 'ব্রজসুন্দরী  মহিলা  বিদ্যায়তন'- এর  ভবিষ্যৎ  নিয়ে! ঘন  ঘন  পায়চারি  করছেন  তাঁর ' আরোগ্য  নিকেতন' - এর  সামনে!
এমন  সময়  তাঁর  শিষ্য  ও আরোগ্য   নিকেতনের  সহকর্মী  জীবন  বললেন, সকাল  থেকে  ভিন  গাঁয়ের  এক  ব্রাক্ষ্মন   আপনার  প্রতীক্ষায়  আছেন! তাঁকে  কি  ডাকবো! সম্বিত  ফিরে  এলো  রূপেন্দ্রর  বললেন, - ডাকো
           আগন্তুক  গৌরবর্ন  সৌম্যকান্তি  এক  ব্রাক্ষ্মন  রূপেন্দ্রর সমবয়সী!তিন  রূপেন্দ্রকে  নমস্কার  জানিয়ে  জানালেন, তাঁর  নাম তিনকড়ি  ঘোষাল, নিবাস  তিজলহাটি  গ্রাম! তাঁর কনিষ্ঠ ভাতুষ্পুত্র সৌম্য সুন্দর,অসুস্হ! সে      এয়োদশবর্ষীয় কৃষ্ন নগরের  চতিষ্পাঠিতে  অধ্যয়নরত!  উপনয়নের  জন্য  এসেই  জ্বরে  আক্রান্ত! গ্রামের  কবিরাজ  দেখার  পর  তাঁর  পরামর্শেই  রূপেন্দ্রর  নিকট  এসেছেন!
           রূপেন্দ্র  তিনকড়ি  ঘোষালকে  জিজ্ঞাসা  করলেন," তার  ভাইপো  সৌম্যসুন্দরকে কি  কয়েক  বছর  পূর্বে  কি  সর্প  দংশন  করেছিল?"
উত্তরে  তিনকড়ি জানালেন, সৌম্যসুন্দর  নয়, তার  দাদা সাতকড়কে  সাপে  কামড়েছিল! তাকে  রূপেন্দ্রই  বাঁচিয়েছিলেন!সে কথা  মনে  থাকায়  বিস্মিত  হলেন  তিনকড়ি!
(চলবে)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours