জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:

শ্রমিক গনতন্ত্রের যারা সংরক্ষক তাদের যদি  যোগ্যতা এবং কিঞ্চিৎ ইচ্ছা থাকতো, তবে এদেশের শ্রমিক আন্দোলনে, যে বিপুল  সংখ্যায় সৎ দায়বদ্ধ, উৎসর্গ করার মতো  সংখ্যায়  ট্রেড কর্মী রয়েছেন, এই কর্মীদেরকে দিয়েই
-----  সোনার  কাঠির ছোয়ায় , যাদুকরের মতোই জাগিয়ে তুলতে পারতেন, সাধারন শ্রমিকদেরকে।কিছু না. , এখন যেভাবে চেষ্টা চলছে, সেই পথটাকে কেবল উল্টে দিতে হোত।
শ্রমিক আন্দোলনের যে  সংখ্যক নেতা এখনো রয়েছেন, তারা যদি , মেহনতি নেতাকর্মীদের মধ্যে রোজ ' দুবার'  করে বোঝাতেনঃ
--- মেহনতিরা উৎপাদন কাঠামোগত ভাবেই মনোলিথঃ
"সেখানে বাম নেই, নেই কো ডান। বিশ্বে যত শ্রমিক আন্দোলন হয়, তাতে বাম কিংবা ডানের প্রভাব থাকতে পারে কিন্তু শ্রমিকদের নিজস্ব আন্দোনলে নেই বাম নেই ডান। কারন - 'মেহনতই' অস্তিত্ব। তাতে দ্বিতীয় চরিত্র থাকতে পারে না।"
তারপর রোজ যদি অন্য বন্ধুর কানে কানে বলতে পারতেনঃ
--- "   একমাত্র মেহনতিরাই 'মেসিনে' কাজ করতে করতে, একটা বিড়ি - দুই-ধর্মের দু'জন ভাগ করে 'পান' করার বিশ্বজনীনতার প্রতীক। সেটাই উল্লেখিত মনোলিথের প্রতীক। বিশ্বে কোন দিন কোথায়ো, কারখানা গেট থেকে সাম্প্রদায়ীক দাংগার জন্ম হয় নাই। এটা ঢোকানো হয় বাইরে থেকে যেমন, বাম-ডান ঢোকানো হয়।"
এইভাবে কথা আরো একটু এগুতেরি পারতোঃ 
" মেহনতিদের পক্ষেই আত্মপরতার বাইরে গিয়ে, বিশ্বজনীনতার অধীন থেকে, সামগ্রিক  মেহনতী স্বার্থ রক্ষা করার স্বার্থেই,  জাতীয় স্বার্থে এক হতে হয়। সে ছাড়া অন্য কে, দেশের অর্থনৈ্তিক স্বাধীনতা বিক্রি হয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে এক হয়েছে।"
শেষ গিয়ে একটা ঘোষনা রাখতেই পারতো
"মেহনতি যেদিকে বিশ্ব সে দিকে' 
ভারতে এই সংখ্য  ১০০ কোটি। সব থেকে দ্রুততার সাথে এক হওয়ার যোগ্যতাটা, ভেতর থেকে বাইরে আসার অভিমুখ। 
পরে বলতে হোত দুবার করেঃ
"মেহনতিদের এক হতে হবে, নিজেকে রাজনৈ্তিক শক্তি হিসেবে এক হতে হবে"

এখানেই সব গোল। 'আমরা নেতারা তো বাবু হয়ে গেছি'  কী না? 
তাই আমরা নিজের চেতনা থেকেও,
শত্রু চেতনায় আচ্ছাদিত।
আজ নিশ্চিত করে বলা যায়। শ্রমিক আন্দোলনের দোলাচলে,  মধ্যমবর্গের মধ্যে, বিশ্ব পুঁজির  অতিকেন্দ্রিকতার কারনে  যেমনভাবে,  পুঞ্জপুঞ্জ দাসত্বের অভিমুখগুনিতে দাসত্বের উপাদানের অনুপ্রবেশ ঘটছে, সেটা ইতিমধ্যেই সঞ্চিত, ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের উপকরন সমুহের সাথে রশায়ন হয়ে যাওয়ায় মধ্যমবর্গের মধ্যে
----- ইতিমধ্যেই নিজেকে 'দাসত্বের' ভোগসত্বার সাথে  অংশিদার করে নিতে শুরু করেছে।  মধ্যবিত্তের এই অংশ থেকেই আত্মপরতা - সংগঠিত শিল্পে  তথা কথিত উচ্চবর্ন থেকে আসা  যন্ত্র কেরানী কিংবা প্রযুক্তি শ্রমিকদের নিশ্চিতভাবেই প্রভাবিত করছে। এটা ঘটছে, ঠিকাদার শ্রমিক এবং সব ধরনের সারভিস শ্রমিক নিয়োগের সুত্রে।দু'দিক থেকে এদের 'দাস শোষনের' সাথে যুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে।
----- প্রথমত সারভিস কিংবা উৎপাদনে, দ্রব্যমূল্যের কারনে, কার্য্যতঃ  বিনা বেতনে, যারা কাজ করছেন, সেই শ্রমের ভোগসত্বে, দাসঅর্থনীতি ধারা থেকেই ঘটছে। এটাকেই মিলিটারীতন্ত্রের অর্থনীতিবিদর, 'চুইয়ে পরা' বা 'Trickling process of economic distribution  বলা হচ্ছে।
----  অন্যদিকে সোজাসুজি সুবিধা এর নিচ্ছে, সেই একই 'বর্ণগত ঘণাকে কাজে লাগিয়ে, কারখানার উৎপাদন ব্যবস্থার মধ্যেই, যে সব কাজ, খুব মেহনতের কিংবা সাফাই ধরনের - সে সব কাজ যে ঠিকাদারদের হাতে চলে গেছে, তাতে
----  একপ্রান্তে বর্ণঘৃণা অন্যপ্রান্তে মেহনত ঘৃ্না এক সাথে মিলে মিশে কাজ করে।
এখন নিশ্চিত এমনটি ঘটেছে বলেই , দুর্গাপুর কারখানা থেকে কয়েক হাজার ঠিকা শ্রমিককে কারখানাতেই পিটিয়ে পিটিয়ে ভাগিয়েছে, তখন  যন্ত্র কেরানীরা কিংবা যন্ত্রচালক মেহনতিরা দাড়ীয়ে দাড়ীয়ে দেখেছেন।

HERE LIES THE BASIC QUESTION IN RELATIONS TO MIDDLE CLASS AND WORKING CLASS RELATIONS. শ্রমিক আন্দোলন যতসময়, মধ্যমবর্গের ভেতরকার স্থবিরতা বা দোলাচলকে নিশ্চল করতে পারছেন, ততসময় শ্রমিক শ্রেনী নিজেই এই দোলাচলের শিকার হয়ে যাবে। (ক্রমশ)




Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours