নাজমীন মর্তুজা, লেখক ও গবেষক, অ্যাডিলেড, অস্ট্রেলিয়া:

আজকাল সংসারের নানান অসঙ্গতি , অনাচার ধর্মের হানাহানা রক্তপাত দেখতে দেখতে
আমার কিচ্ছু ভালো লাগে না!

“সন্ত্রাসী !! সন্ত্রাসী !! কোথা যাও নাচি নাচি..? দাড়াও না একবার ভাই.
ঐ ব্যাটা টাকা গোনে... যাই তাহা আহরনে দাঁড়াবার সময় তো নাই...
মাস্তান !! মাস্তান !! সাথে নিয়ে পোলাপান কোথা যাও বলে যাও শুনি..?
এখন না দিও বাধা... তুলিয়াছি বহু চাঁদা নিজে নিজে ভাগ করে গুনি..
পুলিশ ভাই !! পুলিশ ভাই !! নিরাপত্তা কোথায় পাই...? রাস্তায় চলা বড় দায়
ঐ চৌরাস্তা মোড়ে.. চেক পোষ্ট সেট করে.. জনপ্রতি একশ চাঁদা তুলি.. আমরা ইহাকেই নিরাপত্তা বলি..”
(নেট থেকে নেয়া কবিতা)

এই নিয়ে আছি বেশ আমার যেমনি হোক তবুও আমার সোনার দেশ ।
“এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের সেরা সে যে আমার জন্মভূমি।“
নিজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে -যত ক্রোধেই তুলি না কেন বন্দুক বারুদ ভিজে যাচ্ছে  অশ্রুতে ।  উক্ত সময়ে বিশ্বময় সমূহ সন্ত্রাসে নিমজ্জিত ,দেখে শুনে সশস্ত্র বোধ তীব্র হয় । তবুও হিংসা ভুলি, ঘৃণা ধুই কান্নার উচ্চ্ছ্বাসে চিরকালীন বীভৎস স্মৃতি হয়ে চিৎ হয়ে আমারই সাথে ঘুমোবে বেওয়ারিশ লাশ প্যারিস , বৈরুদ, আফগানিস্তান, সিরিয়া  ভারত , নিউজিল্যান্ড বাগদাদের। জানি হিংসা দ্বেষ , ও রক্তপাতের অঙ্কিত ভূগোল  মানব ইতিহাসের একটি পর্যায় মাত্র। মানুষ ধর্মে খণ্ড বিখণ্ড হয়ে যাওয়ার প্রতিধ্বনি পৃথিবীময়, সবর্স্বান্তের হাহাকার স্বজন হারানোর হাহাকার,  ষড় যন্ত্রকারী আততায়ীর ট্রিগারের লক্ষের  বাইরে কেউ নয় । টিভি পর্দায় যখন দেখি, প্যারিসে - নিউজিল্যান্ডে বোমায় স্তব্ধ মানুষের জেগে ওঠা নেই, চলাচল নেই ,উচ্চারণ নেই, শব্দ নেই , আতঙ্কে বাংলাদেশের গুলশানের পাখিরা গাইতে ভুলেছে গান । এসব দেখেও  আমি ফেবুর প্রোফাইল ঢাকিনি কারোও কালো পতাকায় । কারণ আমি  বাংলাদেশ , শ্রীলঙ্কা , বৈরুদ .বাগদাদ, আফগানিস্তান সিরিয়ার  ভারত পাকিস্তানের পতাকায় এর আগে মুখ ঢেকে কাঁদিনি ....ক্ষমা করো প্যারিস ক্ষমা করো নিউজিল্যান্ড ক্ষমা করো বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা। কেবল শুনতে পাচ্ছো আমার বুকের ভেতরকার শব্দ ষষ্ঠ নৈ:শব্দ কান্নার রোল ।
আমরাও ভাল নেই , আমাদের দেশে আমরাও চুপসানো বেলুন, শুধু দিন রাত গুনে যাচ্ছি...এক কোপ , দুই কোপ , তিন কোপ ! আমারো শোনাতে ইচ্ছা করে  এই সব দেশের শোকার্ত স্বজনদের , যারা বালিশে মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে কাঁদছে, তাঁদেরকে  পড়ে শোনাতে ইচ্ছা হয় আমাদের একাত্তরের দিন গুলো বতর্মান সময় গুলোর বিবরণ। পৃথিবীর এক কোণে বসে শুধু এইটুকুই ভাবছি, মানুষ চলে যাচ্ছে গন্তব্যে শুধু মানুষের জন্য যাত্রার এ আয়োজন । আমাদের মত অসহায় মানুষের শুধু একটাই কাজ , ভুরুর তলা থেকে চোখের পাতা গুলো জোর করে মেলে ধরে ফ্যাল ফ্যাল চোখে দেখে থাকা টিভি বাক্সে শান্ত কফিন গুলোর সমাহিত হওয়ার অপেক্ষা ॥ ধর্ম নিয়ে মন্দির মসজিদ নিয়ে খুনোখুনি লাঠালাঠি । ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের মগজ ধোলাই করা হচ্ছে কত কত মেধাবীদের । তাদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। দারিদ্র্য, বেকারত্ব, জিহাদের কল্পনা ও ইসলামি মৌলবাদী গোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান প্রভাবের কারণে তরুণেরা আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীতে পরিণত হচ্ছেন। মসজিদের মঞ্চ ব্যবহার করে ধর্মবেত্তারা উপদলীয় ঘৃণা ছড়াচ্ছেন, যাই কিছু মসজিদ, মাজার ও গির্জার ওপর হোক, সবই করা হয়েছে ধর্মের নামে। সমাজে বিরাজমান চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদ উৎপাটনে আমরা যদি আন্তরিক হই, তাহলে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

বিবিসির একটা রিপোর্টে পড়েছিলাম -“বৈশ্বিক সন্ত্রাসের বেশি শিকার মুসলিমরা । ফরাসী ব্যঙ্গাত্মক সাময়িকী শার্লি হেবদোর অফিসে হামলার মতো বড় ধরণের ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ব এখন ইসলামপন্থীদের হামলার বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক। কিন্তু প্যারিস হত্যাকাণ্ডের পর সেখানকার একজন ইমাম বিবিসিকে বলেছেন বিশ্বে সংঘটিত সন্ত্রাসী ঘটনাগুলোর যারা শিকার হচ্ছেন তাদের ৯৫ শতাংশই মুসলিম।
কিন্তু বিশ্বের বড় সন্ত্রাসী হামলা গুলো যেমন শার্লি হেবদোতে হামলা, লন্ডনে ৭/৭, মাদ্রিদে ট্রেনে হামলা এবং অবশ্যই ৯/১১ এর কথা চিন্তা করলে প্যারিসের ইমাম হাসান শাগউমির এ দাবি হয়তো পশ্চিমাদের অবাকই করবে। মূলত দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই এসব হামলাগুলো করা হয়েছিলো এবং হামলাকারীরা সফলও হয়েছিলো। সেখানে আক্রান্তদের বেশিরভাগই মুসলিম ছিল না। তাহলে ৯৫ শতাংশের এ দাবি কতটা সত্যি?

এদিকে অযোধ্যার বাবারী মসজিদ ইস্যু নিয়েও
নানান ধরনের বাক বিতণ্ডা হয়েই যাচ্ছে । সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য বিবিসিকে বলছিলেন, এই মামলায় এখনও সাজার অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ঠিকই - কিন্তু বাবরি ভাঙাটা যে বিরাট এক অপরাধ সেটা ভারতের বিচারবিভাগ অনেক আগেই মেনে নিয়েছে।
তিনি বলছিলেন, "১৯৯৪-এ ইসমাইল ফারুকি মামলাতেই কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, বাবরি মসজিদ ভাঙাটা একটা 'ন্যাশনাল সিন', মানে জাতীয় পর্যায়ের পাপ।"
"তখন আরও বলা হয়েছিল এখানে এমন একটা অপরাধ সংঘটিত হয়েছে যা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার ভিতটাকেই নড়িয়ে দিয়েছে।" একদল ছেনি-হাতুড়ি নিয়ে কাঠামোটা ভেঙেছেন কি শুধু মসজিদ ভেঙ্গেছেন ধর্মনিরপেক্ষতার ভিতটাকেও।

ভারতের মুসলমানরা সুবিচার পায়নি'
রিভিউর আবেদন জানানোর দাবি মুসলিম সমাজের একটা বড় অংশ থেকেই উঠছে কারণ গত এক সপ্তাহে রায়ের যা যা বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে নানা সংবাদমাধ্যমে, তার পরে মুসলমান সমাজের অনেকেই এখন মনে করতে শুরু করেছেন যে রায়ের মধ্যে বেশ কিছু প্রশ্ন থেকে গেছে, যে কারণে রিভিউর আবেদন দাখিল করাই উচিত। বলে মনে করছেন অনেকেই । মুসলমানদের বৃহত্তম সংগঠন জামিয়তে উলেমা-এ-হিন্দ বলছে অর্থ অথবা 'বিকল্প জমি' মসজিদের জমির বিকল্প হতে পারে না। “

উফফ কত্ত কত্ত কাহিনী ।  মানবতার মিনার না গড়ে গড়ছি মন্দির আর মসজিদ । এই নিয়ে শোক বাক বিতণ্ডা মারামারি হানাহানি , তুই মুসলিম আমি হিন্দু ! আহ!
হাতাহাতি খুনোখুনো ধর্ম বিদ্বেষকে উপেক্ষা করে ঐদিকে ইতালির সেরা পর্যটন নগরীগুলোর একটি ভেনিস প্রবল বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। ভেসে যাচ্ছে  সেন্টমার্কস স্কোয়ার পর্যটকদের কাছে শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় জায়গা এটি। একে বলা হয় 'ইউরোপের বৈঠকখানা'।

এদিকে বুলবুল , অষ্ট্রেলিয়ায় দাবানল, পুড়ছে আমাজন । তাতে কি আমরা তো আছি সন্ত্রাসের ঝান্ডা কোথায় উড়ানো যায় ।  কোথায় শান্তি নাই , চারদিক হা হা কার , এরই মাঝে স্বপ্ন দেখা এরই মাঝে জীবন প্রসব করে চালাই জীবন , শুধু জীবনের কথা বলাই জীবন।

বিশ্ব জুড়েই ধর্ম সংক্রান্ত সন্ত্রাস। এই বৈশ্বিক সন্ত্রাস বা গ্লোবাল টেররিজম নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলার নেই তাই সহ্য করে যেতে হয়। অপেক্ষা করতে হয় পরবর্তী কোথায় ট্রেন উড়বে , মসজিদে কতল হবে , মন্দিরে রক্তস্রোত বইবে। সভার লোক সমাগমে বোমা ফেলবে , গীর্জায় ব্লাষ্টিংএ শিশু প্রাণ কেঁদে উঠে বলবে ছেড়ে দাও পৃথিবী কেঁদে বাঁচি।
দেখতে হবে বেশিরভাগ ঘটনাগুলোর ...বাস্তব রূপ ।
আমার কিচ্ছু ভালো লাগে না ! তবুও বলবো
চলতি কা নাম জিন্দেগি ...
নাক পর্যন্ত ডুবে থাকা কাজের মাঝেই থাকে —
সদানন্দ ... এই সংসার , এই সন্তান , এই বন্ধু বান্ধব ...
এই নিয়ে জীবন ....
সুস্থ থাকাটাই নিয়ামত।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours