ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ

তিন  চারদিনের মধ্যেই  সৌম্যসুন্দর  অনেকটা  সুস্হ! এখন  সে  কথা  বলছে, তবে  বেশ  দুর্বল! পুরোপুরি  সুস্হ  হতে  আরও  সপ্তাহ দুয়েক  সময়  লাগবে! রূপেন্দ্র  এই  মেধাবী  ছাত্রটিকে খুব  ভাল  লেগে গেছে! তাই  তাকে  রূপেন্দ্র  জিজ্ঞাসা  করলেন, দু  সপ্তাহ  অধ্যয়ন  বন্ধ, ব্যকরনের  সূত্রগুলো  সব  মনে  থাকবে? সৌম্যসুন্দর  শুধু  ম্লান  হাসলেন!
   রূপেন্দ্র  প্রশ্ন  করলেন, বলতো  বাবা  'নিপাতনে  সন্ধি 'কাকে  বলে ?...শান্তস্বরে সৌম্য  উত্তর  দিল, ' যা ব্যাকরনের  সূত্র  অনুসারে  সিদ্ধ  নয় , কিন্তু  ভাষা  বাধ্য  হয়ে  স্বীকার  করে  নিয়েছে, এবং  অর্থবহ  তাই  ভাষায়  স্বীকৃত 'রূপেন্দ্রনাথ  বললেন, বাঃ  সবই  মনে  আছে, এর  উদাহরন  দিতে  পারবে?
সৌম্য  শান্ত স্বরে  বললো, আপনার  নিবাস  সোঁয়াই  গ্রামের  'একবগ্গা  দিঘী!'
   রূপেন্দ্র  অবাক  হয়ে জিজ্ঞাসা  করলেন  কিভাবে?
    সৌম্যের  উত্তর..জলাশয়টি  দীর্ঘিকা- নির্মানের  ব্যকরন  মানেনি!দিঘীর  প্রতিটি  পাড়  বিপরীত  পাড়ের  সমান্তরাল  হওয়ার  কথা, তা হয়নি!অথচ  দিঘীটি সিদ্ধ  স্বীকৃত  এবং  গ্রামের  মানুষের  উপকার সাধন  করে  চলেছে!
      রপেন্দ্র  সৌম্যের  উত্তরে  মুগ্ধ, তার  মাথায়  হাত  রেখে  বললেন," তুমি  দিঘীটি  দেখেছো?"
মাথা  নেড়ে  সৌম্য জানালো  দেখেছে! এবং  বললো, গত বছর  তার  দাদা  আর  বৌঠানের  সাথে  সোঁয়াই- এর  জমিদার  বাড়ীতে  দুর্গা প্রতিমা  দর্শন  করতে  গিয়ে  'একবগ্গা ' দিঘী  দেখেছে!
          রূপেন্দ্র  গৃহস্বামী পাঁচকড়ি  ঘোষালের  উদ্দেশ্যে  বললেন, " ঘোষাল  মশাই  আপনার  এই  ছেলে  একদিন  সবাইকে  ছাপিয়ে  যাবে,একদিন মহামহোপাধ্যায়  হবে! আমার গ্রামের  একবগ্গা দিঘীটা  যে  নিপাতনে  সন্ধি  ইতিপূর্বে  আমার  নিজেরই  খেয়াল  হয়নি!
         সৌম্য  তিন  দিনেই  অনেকটা  সুস্হ  হলেও  রূপেন্দ্রর  গৃহে  নতুন  এক  সমস্যা তৈরী  হ'ল  তার  সমাধানের  কোন  রাস্তা  তিনি  খুঁজে  পাচ্ছেন  না!
       
   রূপেন্দ্র  অনুভব  করছেন  মালতী  বৌঠান  তাঁর  প্রতি  অনুরক্ত  এবং  রূপেন্দ্র তাঁকে  গ্রহন  না  করলে  তিনি  আত্মঘাতী  হবেন! অন্যদিকে রূপেন্দ্রও  মালতী  বৌঠানের  প্রতি  দুর্বল! এখন  মালতী  আত্মহননের  পথ বেছে  নিলে  ঘনশ্যাম  সার্বভৌমের  বংশ ধর  যে  মালতীর  গর্ভে  লালিত  হচ্ছে  তারও  যে  মৃত্যু  হবে! শেষ  হয়ে  যাবে  ঘনশ্যাম  সার্বভৌমের  শেষ  চিহ্নটুকু! মানসিকভাবে  বিভ্রান্ত  রূপেন্দ্র  কোন  দিশা  খুঁজে  পাচ্ছেন  না...শুধু  হাতড়ে  চলেছেন,!


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours