জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:

তথাকথিত, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সাংসদদের ভারত আগমণ, নিয়ে আসার প্রকৃতি,  ভারতের অমর্য্যাদাকে মানবিক রঙ লাগিয়ে, সরকারী নিয়ন্ত্রনে প্রত্যক্ষ করানো এবং বিশ্বপ্রচারে নিয়ে আসার  রাষ্ট্রীয় আয়োজনে
শুধু গোয়েবেলকে স্মরন করাচ্ছে তাই নয়,
-----   নিশ্চিতভাবেই , ৩৭০ বিলোপ এবং কাশ্মীরে পরবর্তীকালের অত্যাচারে যেভাবে বিশ্বজনমত ভারতের বিপক্ষে যাচ্ছে, তাকে সামাল দেওয়াই এই বাছাই করে আমন্ত্রনের প্রধান কারন। ইতিমধ্যে, বিলেতের লেবর পার্টী, ণতুন করে কাশ্মীরে 'গনভাট'চেয়েছেন। ইসলামিক দেশগুলি ৩৭০কে ফিরিয়ে আনার দাবী করেছেন। অত্যাচার যেমণ বেড়েছে, তেমনভাবেই বিদেশে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনের ৩৭০ এর পক্ষে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভগুলিতে যেভাবে ভিন-দেশের মানুষ ভাগ নিচ্ছিলো, সেটাও সরকার শির পীড়ার কারন হয়েছে। বিজেপি এই প্রথম, জাতীয় প্রশ্নেও যে কী বিপুল  আন্তর্জাতীক প্রতিকৃয়া দেখা দিতে পারে তা বুঝতে পারলো।

এতদসত্যেও,  দেশের প্রশ্নে, যখন দেশের সাংসদরাই স্বাধীনভাবে কাশ্মীরে যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছেন না, তখন বাছাই করাদের নিয়ে কাশ্মীরে খাণাপিনা এবং ঘোরানোর পেছনে,
------ এই দেশকে নিয়ে তলে তলে যে কি হচ্ছে তাস্র প্রতিধ্বনী খুজে পাওয়া যাবে । প্রসংগতঃ উল্লেখযোগ্য, যারা আসছেন তারা কিন্তু স্বাধীনভাবে দেখার স্বাধীনতা পাচ্ছেন না। ইউরোপিয়ান পার্লিয়ামেন্টে ক্রিস  ডেভিস নামে, বিলেতের এক সাংসদ, স্বাধীনভাবে ঘুরতে দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগে পালিয়ে গেছেন।

যাই হোক যেভাবে, এক ভারতীয় মহিলাকে সামনে রেখে, একটি এন জিও দাড় করিয়ে দিয়ে, সেই এন জিও কে সামনে রেখে, এই ব্যবস্থাপনা এবং যেব হাভে এসব ভাড়া করে আনা মাননীয় সাংসদদের প্রধানমন্ত্রী বুক ফুলিটয়ে সাক্ষাতকার দিয়েছেন, জেনারেল রায় চচধুরীর মতো মানুষো বিষ্ময়কর বলেছেন। এই ছবি এই লেখায় দেওয়া হচ্ছে।সেই নারীর ছবিও দেওয়া হচ্ছে, যাকে ভারতীয় মিডিয়া রহস্যময়ী বলে উল্লেখ করেছেন।

------ এসব থেকে অতিগুরুত্বপূর্ন সম্পর্কটি সামনে আসবে যখন এদের চাল   থেকে কাঁকর তুলে আনার মতো বেছে তুলে আনা হয়েছে, তার সাথে মাণনীয় প্রধানমন্ত্রীর ৯০০ ভার বিদেশ ভ্রমণ, দেশে ফ্যাসিবাদের বিস্তার, হিটলারের দ্বিতিয় যুদ্ধের কার্য্যপ্রনালীকে মিলিয়ে একটা চালচিত্র দাঁড় করার চেষ্টা হবে।
----- হিটলার কী উপায়ে, জার্মান রক্তশোধনের সংগ্রাম বিশ্বশোধনে রুপ দিতে গিয়ে, বিশ্বপুজির কেন্দ্রিকতা রক্ষায় বিশ্ব সংগ্রামে বদলে দিয়েছিলেন, তার একটা প্রতিচ্ছবি খুজে পাওয়া যাবে, শ্রীমোদি-অমিত সাহের এই উদ্যোগে । বিজেপি এর সয্যা সংগী শিবসেনা ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, ঘরোয়া রাজনীতিকে বিশ্ব-আদালতে নিয়ে যাওয়ার এরকম চেষ্টা বিস্ময়কর।

হিটলার যদি ইতিহাসের সেই,  প্রেতাত্মাদের, যাদের  এঙ্গেলসের কথায়,  উধাও হয়ে গিয়েছিলো রেনেঁশার আগমন বার্তায়, আবার ফিরে এলো, সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ প্রান্ত থেকেই চিন্তনপ্রকৃয়াকে স্থবীর করে দিয়ে।
----- সেই প্রেতাত্মারাই অক্টোবর বিপ্লব এবং ড্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে দ্বিতীয় মহামানবিক বিপ্লবের পর, ফিরে যাওয়ার পর, আবারো ফিরে এলো
সোভিয়েত এবং পূর্ব ইউরোপের সমাজতন্ত্র ভেঙ্গে যাওয়ার পর, ওরাই ফিরে এলো;  জ্ঞান এবং সৃজনীতে  আকালো ফিরে এলো, হাতে হাত মিলিয়ে।

শেষবেলায় এসে আরো বুঝলাম, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে 'রক্তত্রাসের' রাজনীতি নিশ্চিতভাবে, পর্বতের প্রস্তরের মাঝখানে যেমন জীবভ্রন হাজার হাজার বছর টিকে থাকে, তেমনভাবেই এই 'রক্তের' সম্পর্ককের রাজনীতিও হাজার বছর টিকে থাকার সাথে সাথে দেশান্তরে বিস্তার ঘটায়, যদি না ইতিমধ্যে কোন বিপ্লব এসে, সবকিছুর বিনাস  ঘটায়।

সমাজ বিজ্ঞান অধ্যয়নের প্রশ্নে, আরো একটা অতিগুরুত্বপূর্ন উপাদানকেও চিহ্নিত করার সুযোগ হোল জীবনের শেষ প্রান্তে। দ্বিতীয় যুদ্ধোত্তরকালের  আর্থ-রাজনীতির আলো-আঁধারের লুকোচুরীকে, স্তালিনের দিয়ে যাওয়া দুটি তত্বের মিশ্রন ঘটিয়ে
--- কোন একটা কালকে, তার অজস্ত্র জটিলতা এবং পরস্পর বিরোধীতার পারস্পরিকতাকে ছিন্ন করে যদি বুঝে নিতে হয় তবে নিশ্তিতভাবে  মনস্তত্বের সাথে নৃতত্বের মেলবন্ধন একান্ত প্রয়োজন। সেই আয়নাতেই বুঝতে পারা সম্ভব, কেমনভাবে ইতিহাসের স্থবীরতার হাত ধরেই, অজ্ঞানতার সৃজনহীনতায়, রক্তত্রাসের পোকামাকর ঘুরে ফিরে আসে। এই পোকামাকরকেই একদিন এঙ্গেলস, অতি-অতীতের প্রেতাত্মা বলে চিহ্নিত করেছেন এবং বুঝিয়েছেন, ইতিহাসের সৃজনহীনতার সুত্র ধরেই এদের যেমণ আগমণ ঘটে, তেমনি ইতিহাস, তার জ্ঞানে এবং সৃজনে যেমনভাবে পরবর্তী সংখ্যব বৃত্তে আরোহণ করে, তেমনি ভাবে এদের নিঃস্ক্রমণ ঘটে।
----  মার্ক্সীয় জ্ঞানতত্বের মুল কথাটাই এখেনে, এই আগমণ এবং নিঃস্ক্রমনে,  সংখ্য বৃত্তের আরোহণ এবং পতনের মধ্য দিয়েই, ইতিহাস সভ্যতাকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। 

পুর্বে যেভাবে ভারতীয় সংসদকে শুধু দখলই নয়,
----- তাকে লেনিনের ব্যখ্যা অনুযায়ী শুয়োরের খোয়ার বানানো হয়েছে
-----, রাষ্ট্রপতি ভবণ থেকে সাংবিধানীক কাঠামো সমুহের দখল নেওয়া হয়েছে
------যেভাবে ভারতীয় অতীত থেকে প্রেতাত্মা সমুহকে টেনে তুলতে ইতিহাসকেই শুধু নয়, বিজ্ঞানকে কলুষিত করা হয়েছে
------ সেই কলুষতায় ঢেকে, ভারতের শিক্ষাব্যবস্থাকে অপবিত্র করা হয়েছে এবং রবীন্দ্রনাথ ও ণজরুলকে আসামীর কাঠগড়ায় দাড় করানোর চেষ্টা হচ্ছে
-----  এইভাবে, ভৌতিকবাদের বিপরীতে 'আদিভৌতিক'বাদের বিস্তৃতি ঘটিয়ে, 'জ্ঞান-সৃজনের' পরিবর্তে, অতি-অতীমের আদিমতাকে টেনে আনা হচ্ছে।
-----  সেই আদীমতার কল্যানেই, দেশে পঞ্চাশ বছরের বসবাসকারীকেও এন আর স্যার নামে 'ডিটেনশান ক্যাম্পের' নামে কার্য্যত কণসেন্ট্রেশানে পাঠানো হচ্ছে।সেই সভ্যতার দিকে ণজর পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না, যখন বিশ্বের ইতিহাসে সর্ব্বৃহৎ মাইগ্রেশানের ক্ষেত্রে এরকম আচরন অসভ্যতার নামান্তর। আক্রমণ শুধু ভারতের দুই তিন কিংবা কয়েকটা প্রদেশ নয়, আক্রান্ত উপমহাদেশের ভাব-মর্য্যাদা।
------ দেশে শিল্পপুজি এবং ক্যাপিটাল গুডস শিল্পের (যে শিল্পোৎপাদন যন্ত্র নির্মান করে এবং একবার উৎপাদণ করেই নিজে ভোগ্য হয়ে যায় নয়া।)  দেশকে  বানিজ্যিক পুজির দেশে বদলে দিয়েছে। পরিনামে, শুধু উৎপাদনের গুন নয়, মেহণতের গুন, প্রযুক্তি শ্রম থেকে আনসিক্লড শ্রমে বদলে দেওয়া হচ্ছে।
------ এসবের মধ্য দিয়ে দেশের মধ্যেই 'দাসত্ব' নির্মান করছে না, অর্থনৈ্তিক স্বয়ংসম্পুর্নতা হারিয়ে ফেলে পুরো দেশটাই বিশ্ববাজারে চাকর হয়ে যাচ্ছে। আমদানীর পরিবর্তে, এখন আর গুডস বা পন্য রপ্তানীর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, আস্ত মানুশ রপ্তানী করেই দেনা মেটাতে হচ্ছে। মেয়েদের বিদেশের বাজারে পাঠাতে হচ্ছে লাখে লাখে।
-----  সব মিলিয়ে দেশে এমণ একটা পরিস্থিতি নির্মান হচ্ছে, যখন সমস্ত সম্পদের মালিক হয়ে যাচ্ছে কয়েকটি পরিবার। এই প্রকৃয়া যেমনভাবে ঘটছে, নারীত্বের মর্য্যাদার অধিকারকে যেন ব্যক্তি থেকে সমাজের হাতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আজ আর শিশুবলাৎকারের পর হত্যা করাটায় সমাজ আতঙ্কিত হছে না।

এসব কিছুকে যদি মেনেও নেওয়া হয়, তবু ইউরোপ থেকে বাছাই করে লোক 'সাংসদ' ধরে আনা, তাদের সরকারী নিয়ন্ত্রনে রেখে স্ব-দেশে প্যাক করে পাঠিয়ে দেওয়ায় শুধু উপরের উল্লেখিত বিড়ম্ববনাকেই অন্তরাষ্ট্রীয় করা হোল তাই নয়,
----- যারা রক্তের আঁধারে  মানবিকতার তুল্যমূল্য বিচার করেন, রবীন্দ্রনাথের মহামানবিকতায় বিশ্বাস করেন না, যারা ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের মতো মহাদেশীয় মানবিক সত্বার একাত্বতা দাবী করেন না, যারা এন এর সি নামে, হিটলারের মতো কণসেন্ট্রেশান বসিয়ে, মানুষ ভাগানোতে বিশ্বাস করেন।বিভিন্ন সংবাদত্রে এদের দলগত আনুগত্যে যে চিত্র-বিচিত্রা এখেছেন, তা থেকেই দেখা গেছে, ইউরোপীয়ণ দেশগুলির মুলশ্রোতের দলগুলি থেকে কেউ আসেন নাই। যারা এসেছেন, তদের সবাই, হিটলার ভাবের কাছাকাছি অথবা সেই শ্রোতে।

আরো মজার বিষয়, শর্মা নামে যে রহস্যাবৃত মহিলার সৌজন্যে এই আয়োজন, তার এন জী ও, টি নাকি কাশ্মীরের জনগনের হয়ে, সেই টিমের কাছে ডেপুটেশান দিয়েছেন। তিনি নাকি যারা এসেছিলেন, তাদের বানিজ্যিইক সুবিধারো প্রস্তাব দিয়েছেন।
----- আসল বিষয় এখানেই, শ্রীমোদি-অমিত সাহ সাহ জুটী যে পথ ধরে এগুচ্ছেন তাতে, একটা সময়ে, তার পক্ষে বিশ্ব মতামতেও তার সমগোত্রীয়দের সাথে একটা একাত্মতা নির্মান করতেই হবে। এই 'ইউরোপীয়' প্রতিনিধী'দের ভারত সফর শ্রীমোদির ৯০০ বিদেশ ভ্রমনের রহস্য উদ্ঘাটিট করছে।
স্মরন রাখতে হবে, দ্বিতীয় যুদ্ধ, গুনগত দিক থেকেই, প্রথম থেকে পৃথক ছিলো। প্রথম যুদ্ধকে সামরিক যুদ্ধেই শেষ করা সম্ভব ছিলো। কিন্তু দ্বিতিয় যুদ্ধে, দুই মেরু থেকেই, দু'ধরনের বিশ্ব জনমত নির্মান করেই জয় পরাজয়ের নিস্পত্তি করতে হয়েছে।
স্তালিন বিপরীত মেরুতে 'মেহণতি মানুষের একতাকে সুনিশ্চিত করেই,'জনযুদ্ধের' অবস্থাণ নিতে পেরেছিলেন বলেই জয়টা শেষ পর্য্যন্ত তার হাতেই এসেছিলো।
 সে সময়ে নেহেরু, সাম্যবাদীরা এবং  ভারতের অন্যান্য অধিকাংশ  রাজনৈ্তিক নেতারা যদি 'জনযুদ্ধ' সম্পর্কে নিঃস্পৃহতা দেখিয়ে থাকেন, তার প্রধান কারন, মুলরাজনৈ্তিক দলগুলি তখন বিপুলভাবে হিটলারের রক্তত্রাস নীতির অনেকটাই কাছাকাছি ছিলেন। রঁমা  রোলহ এর ভারতপঞ্জীতে সে সব কথা লিখেছেন।
------  তিনি বলছেন, মুশোউ্লিনীর মাধ্যমে হিটলার, ভারতের সব শিক্ষাব্রতিদের সাথেও যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি লিখছেন, একমাস্ত্র আচার্য্য জগদীশ চন্দ্র বোস ব্যতিরেখে সবাই কোন বা কোন রকম দুর্বলতা দেখিয়েছেন।

কাজেই মেহণত এবং মেহণতিদের জন্যে, নানা দিকে, কাস্মীরে এই ইউরোপীয় সার্কাস ভারতীয় ইতিহাসের দিক থেকে অর্থবহ হয় উঠার সম্ভাবনা বিস্তর।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours