জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:
আজ বিশ্বভাবের দুই মেরু যখন আত্মমুক্তির পথে মানবিকতার আধুনিক স্বরুপ উদঘাটনের সংগ্রাম বনাম বিশ্বপুঁজীর হিংস্র মিলিটারী স্বরযন্ত্রের ফ্যাসিস্ত আগ্রাসন বা এগ্রান্ডাইজমেন্ট,
------ দুর্ভাগ্যবসত ভারতে সাম্যবাদী আন্দোলনের ভাবগত উদ্ঘাটনের কাজ সত্তোর দশকের শেষ প্রান্ত থেকে দুর্বল থতে থাকার কারনে, সেই ভাবগত দ্বন্দ্বের প্রতিরুপ দাড়িয়ে গেছে,
----- আত্মমুক্তির পথে মানবিকতার আধুনিকতম স্বরুপ উদ্ঘাটনের সংগ্রামের ক্রমাগত দুর্বল হতে থাকা স্বরুপ বনাম বিশ্বপুজির ফ্যাসিস্ত আগ্রাসনের মুখে বিদেশী বৃহৎ পুজির কাছে ভারতের সরকারী পুঁজি সমেত, শিল্পপুজির আত্মসমর্পন এবং ভারতের নিয়ন্ত্রন বানিজ্যিক পুজির হাতে চলে যাওয়ায়, মানবিকতার আধুনিক রুপটিকে ক্রমাগত বিকৃতির গহ্বর পরতে হচ্ছে। এদিকে ব্রাহ্মন্যবাদের আবির্ভাবে জগাই-মাধাই এর তান্ডব নৃত্যে, ভারত নামক বিশ্বের দ্বিতীয় সর্ব্বৃহৎ দেশটিতে ভাবগত আধুনিকতার মুখে নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছে।
হই হই করার কারন নেই। উপরের দ্বন্দ্ব বলতে যেটা বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে, সেটি ইতিহাসের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বগুলির পেছনে যে ভাবগত দ্বন্দ্ব কাজ করছে সেটাকেই বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে।জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতীক দ্বন্দ্ব হিসেবে ১৯৬৪ সালের পার্টী কংগ্রেস কিংবা ১৯৭০ এর বর্ধমান প্লেনামে আন্তর্জাতীক দ্বন্দ্বগুলি সোভিয়েত ভেংগে যাওয়া সত্বেও একই রয়েছে। সাধারনভাবে বুঝতে হবে, সোভিয়েত কিংবা পূর্ব ইউরোপের সমাজতন্ত্র ভেংগে যাওয়ার পর, অন্য দ্বন্দ্বগুলির কিছুটা হের ফের হলেও, প্রধান বিশ্ব দ্বন্দ্ব হিসেবেঃ
------ মেহনত এবং পুঁজির দ্বন্দ্বে কোন হেরফের হয় নাই। সে ক্ষেত্রে, তিরুনান্দপুরের পার্টী কংগ্রেসে, সম্ভবতঃ ১৯৯১ হবে, কোন রকম ভাবগত কিংবা বুনিয়াদী রাজনীতিতে আপোষের বিরোধীতা করে, জীবন রায় যে কথা বলেছিলেন, তাতে তিনি এখনো অনড়; তিনি উল্লেখ করেহিলেনঃ এসব ভাংন - মেহনত এবং পুঁজির সংঘাতের হেরফের হচ্ছে কই।তিনি বল্লেন - যা ঘটেছে, তা হোল 'সমাজতন্ত্রের সংকট, শ্রমিক শ্রেনী থেকে বিচ্ছুরিত এবং সঞ্চিত একটি আলোকস্থম্ভ ধ্বসে পরেছে মাত্র। তিনি বল্লেন - মজুর রয়েছে মেহনতের যান হিসেবে, পুজিও, ঘাবরানোর কিছু নেই, নতুন করে ঘর সাজানো হোক।
প্রশ্ন এখানে, তিরুনান্দপুরের পূর্বে সালকিয়া কিংবা বর্ধমানের সিদ্ধান্ত অথবা স্তালিন সম্পর্কীত সিধান্ত গুলিকে ঠিক মতো কার্য্যকরি করার মধ্যে দিয় সাম্যবাদীদের যে অংশকে মানুষ মেনেছিলো, সে অংশ নিজেকে সোজা হয়ে দাড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছিলো অথবা সেখানে দুর্বলতা দেখিয়ে,
------- একপ্রান্তে অতি বাম (যাদের আমরা নকশাল বলে চিনেছিলাম) বোধকে চাংগা করেছি, অন্যপ্রান্তে নিজের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দিয়ে, আমেরিকান অর্থনৈ্তিক এবং সামরিক চাপের কাছে এক দু; পা করে আপোষ করেছি এবং ১৯৬৪ সালের কর্মসূচীকে এমনভাবে বদল করেছি, যা শ্রমিক শ্রেনীর আন্তর্জাতীকতাকে নড়বড়ে করে দিয়ে,
------- দ্বিতীয় যুদ্ধে, যেখানে শেষ প্রতিরোধের স্থম্ভ হিসেবে কারখানা গেট কিংবা খনীমুখের প্রতিরোধের শক্তিকেও আত্মমর্য্যাদাহীনতায় ডোবানো হয়েছে। এইভাবে 'ভয়ের' ভাবাদর্শ যেমনভাবে শক্তি পেয়েছে, তেমনভাবে
আন্তর্জাতীকতার শীড়দাড়াকে অকেজো এবং অকর্মন্য করা হয়েছে।
পরিনামে শ্রমকে খন্ড বিখন্ড হয়েছে।
সোভিয়েত ভেংগে যাওয়ার পর, যেখানে সমাজতান্ত্রিকভাব সত্বা, সংস্কৃতি সৃজনীর সব ধারার অভিমুখগুলিকে যখন ভারত সহ তৃ্তীয় বিশ্বের দেশগুলিতে যখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো,
------ তখন যেখানে, স্তালিনের সেই বুর্জোয়া সংস্কৃতিকে এগিয়ে দেওয়ায় এক বিপ্লবী উদ্যোগকে ভারতীয় পরিপ্রেক্ষিতে রবীন্দ্র এবং তার পর কল্লোল বা আ পি টি এ ভাবনাকে ক্রমাগত এগিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রতিরোধের ভানাকে জাগরুক করা প্রয়োজন ছিলো তখন
------- হয়তো সাম্যবাদী বা ট্রেড ইউনিয়ন অভিমুখে 'সব কিছুই' হয়তো করা হয়েছে, কিন্তু ভাবপ্রবাহের বৈপ্লবিক সত্বা তো ডুবেছেই, এমন কী বিদ্রোহী সত্বাও। রবীন্দ্র তো দুরের কথা সাহিত্যে কল্লোল যুগকেও কদাচিত খুজে পাওয়া যাচ্ছে।
গতকাল এবং আজকের লেখা দুটির শিরোনামাকে এই লেখার পরিপ্রেক্ষিতটিকে খুজে নিতে হবে। সমাজ বিজ্ঞানে, কর্মসূচীগত দ্বন্দ্বগুলির ইতিবাচক এবং নেতীবাচক দিক দুটির উঠানামার পারস্পরিকতা নির্নয় হয়,
------ দুই মেরুর ভাবগত দ্বন্দ্বের পারদ উঠানামার মধ্যে রাজনৈ্তিক এবং ভাবাত্মক দিকের অন্তসম্পর্কটা তুলে ধরা, ভাবাত্মক দিকের দুর্বলতায় যখন রাজনৈ্তিক বিপর্য্য্যের কারন হয়ে দাড়ায়, তখন গন অংশ গ্রহনের প্রয়োজনীয়তার দিকটি তুলে আনায়
------- পাঠকদের অংশগ্রহনের দিকটিকে মাথায় রেখেই এই পর্বের লেখাগুলির সূচনা।গতকালের লেখায় ইংগীত দিয়েছি্ যদি আজ ভারতকে দাসত্বের গহ্বরে নিক্ষেপ করা হয়ে থাকে, সেখানে রাজনীতি বা অর্থনৈ্তিক দাসত্ব থেকেও, ভাবগত দাসত্বই প্রথমোক্ত দিক গুলিকে মরকের দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে।
----- ভাবের পুনোরোদ্ধারে, যদি আমরা যারা এতোদিন নিজেদের সাম্যের একমাত্র নির্নায়ক মনে করেছি, তারা যদি তেমন ভাবতে থাকেন, থাকুন না কেন
বিষয়টা যখন এখন ভাবাত্মক বিপর্য্যয়ে গিয়ে ঠেকেছে, মানুষকে নামতে হবে পথে। এই পথে নামার প্রথম কাজ, মানুষের মনের রঙ মহলকে খুলতে থাকা। বুঝতে সুরু করা, সেই রঙমহলের দরজা - জানালা, এক কিংবা এক শ' অথবা এক লক্ষে সিমীত নয়। ১৩০ কোটি মানুষের রঙমহলের ভাবপুঞ্জকে ধারন করার
------ মতো দরজা জানালাকে উন্মুক্ত করার মতো ভাবগত এবং সংগঠনগত শক্তি সংগ্রহের জন্য, একপ্রান্তে শিক্ষার জ্ঞানগত উত্তোরন, জ্ঞানের সৃজনে এবং সামাজিক একাত্মতার পথে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার
চেষ্টায় থাকতে হবে।
------ একে কেউ 'দাম্ভিকতা' বলে নিতেই পারেন, কিন্তু জীবন রায়, আত্মপ্রত্যয়ের তরঙ্গে উঠে এসেই, বার বার তার কমরেড এবং সহচরদের
বলেছেন, একজনের ভাব বলুন কিংবা মন অথবা আত্মা বলুন সেখানে যদি তরঙ্গ নির্মান করতে তিনি ব্যর্থ হন তবে তিনি কি করে তার অন্তরে ১৩০ কোটির সাতারের আয়োজন করতে পারবেন।
মার্ক্সের কাছে পৌছুনোর প্রয়োজন নেই, রবীন্দ্রনাথ পর্য্যন্ত যারা পৌছেছেন, তারাও মানবেন, মনের পবিত্রতা এখন শ্রেফ দুষিত নয়, বিষাক্ত হয়েছে, মনের বিষাক্ততাই, আজ প্রকৃ্তিকেও বিষাক্ত করছে।
কাজেই রাজনীতিকে যদি রাজনীতিহীনতা থেকে মুক্ত করতে হয়, তবে সেই মুক্তি যে আত্মা বা মনের মুক্তিতেই যে নিহীত সে কথাটাকে প্রথমে বুঝতে হবে, বুঝতে হবে এই মুক্তিতেই ইতিহাসের এবং সর্বশেষে প্রকৃতীর মুক্তি।
সব শেষে আমরা দিদীমা, যিনি আট ছেলে এবং এক মেয়ের মা ছিলেন - কোন দিন বিদ্যালয় শিক্ষা পেয়েছিলেন কী না খবর নেই। ছোট বেলায় তার একটা পরামর্শ বারবার মনে হয়, প্রাচীনত্বের কালেও 'মন'কে পার্থিব রুপেও দেখা হোত --
------ তিনি বলতেন - "আরে আত্মাকে কষ্ট দিতে নাই" । সেই কথার আধুনিক রুপটাই হোল - অজ্ঞানতা এবং সৃজনহীনতা থেকে আত্মা তথা চিন্তনের মুক্তি এবং এই মুক্তির নামই সাম্য।এইভাবেই মনের রঙমহলের উন্মুক্তির সংগ্রামের নামই সাম্য এর সংগ্রাম। এই সংগ্রামকের সাথে গনতন্ত্রের সংগ্রামের সেতুবন্ধন ব্যতিরেখে রাজনীতির মুক্তি নেই।
শুরু হোক তর্ক বিতর্ক, খুলতে থাকুক রঙমহলের দরজা-জানালা। (ক্রমশ)
আজ বিশ্বভাবের দুই মেরু যখন আত্মমুক্তির পথে মানবিকতার আধুনিক স্বরুপ উদঘাটনের সংগ্রাম বনাম বিশ্বপুঁজীর হিংস্র মিলিটারী স্বরযন্ত্রের ফ্যাসিস্ত আগ্রাসন বা এগ্রান্ডাইজমেন্ট,
------ দুর্ভাগ্যবসত ভারতে সাম্যবাদী আন্দোলনের ভাবগত উদ্ঘাটনের কাজ সত্তোর দশকের শেষ প্রান্ত থেকে দুর্বল থতে থাকার কারনে, সেই ভাবগত দ্বন্দ্বের প্রতিরুপ দাড়িয়ে গেছে,
----- আত্মমুক্তির পথে মানবিকতার আধুনিকতম স্বরুপ উদ্ঘাটনের সংগ্রামের ক্রমাগত দুর্বল হতে থাকা স্বরুপ বনাম বিশ্বপুজির ফ্যাসিস্ত আগ্রাসনের মুখে বিদেশী বৃহৎ পুজির কাছে ভারতের সরকারী পুঁজি সমেত, শিল্পপুজির আত্মসমর্পন এবং ভারতের নিয়ন্ত্রন বানিজ্যিক পুজির হাতে চলে যাওয়ায়, মানবিকতার আধুনিক রুপটিকে ক্রমাগত বিকৃতির গহ্বর পরতে হচ্ছে। এদিকে ব্রাহ্মন্যবাদের আবির্ভাবে জগাই-মাধাই এর তান্ডব নৃত্যে, ভারত নামক বিশ্বের দ্বিতীয় সর্ব্বৃহৎ দেশটিতে ভাবগত আধুনিকতার মুখে নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছে।
হই হই করার কারন নেই। উপরের দ্বন্দ্ব বলতে যেটা বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে, সেটি ইতিহাসের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বগুলির পেছনে যে ভাবগত দ্বন্দ্ব কাজ করছে সেটাকেই বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে।জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতীক দ্বন্দ্ব হিসেবে ১৯৬৪ সালের পার্টী কংগ্রেস কিংবা ১৯৭০ এর বর্ধমান প্লেনামে আন্তর্জাতীক দ্বন্দ্বগুলি সোভিয়েত ভেংগে যাওয়া সত্বেও একই রয়েছে। সাধারনভাবে বুঝতে হবে, সোভিয়েত কিংবা পূর্ব ইউরোপের সমাজতন্ত্র ভেংগে যাওয়ার পর, অন্য দ্বন্দ্বগুলির কিছুটা হের ফের হলেও, প্রধান বিশ্ব দ্বন্দ্ব হিসেবেঃ
------ মেহনত এবং পুঁজির দ্বন্দ্বে কোন হেরফের হয় নাই। সে ক্ষেত্রে, তিরুনান্দপুরের পার্টী কংগ্রেসে, সম্ভবতঃ ১৯৯১ হবে, কোন রকম ভাবগত কিংবা বুনিয়াদী রাজনীতিতে আপোষের বিরোধীতা করে, জীবন রায় যে কথা বলেছিলেন, তাতে তিনি এখনো অনড়; তিনি উল্লেখ করেহিলেনঃ এসব ভাংন - মেহনত এবং পুঁজির সংঘাতের হেরফের হচ্ছে কই।তিনি বল্লেন - যা ঘটেছে, তা হোল 'সমাজতন্ত্রের সংকট, শ্রমিক শ্রেনী থেকে বিচ্ছুরিত এবং সঞ্চিত একটি আলোকস্থম্ভ ধ্বসে পরেছে মাত্র। তিনি বল্লেন - মজুর রয়েছে মেহনতের যান হিসেবে, পুজিও, ঘাবরানোর কিছু নেই, নতুন করে ঘর সাজানো হোক।
প্রশ্ন এখানে, তিরুনান্দপুরের পূর্বে সালকিয়া কিংবা বর্ধমানের সিদ্ধান্ত অথবা স্তালিন সম্পর্কীত সিধান্ত গুলিকে ঠিক মতো কার্য্যকরি করার মধ্যে দিয় সাম্যবাদীদের যে অংশকে মানুষ মেনেছিলো, সে অংশ নিজেকে সোজা হয়ে দাড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছিলো অথবা সেখানে দুর্বলতা দেখিয়ে,
------- একপ্রান্তে অতি বাম (যাদের আমরা নকশাল বলে চিনেছিলাম) বোধকে চাংগা করেছি, অন্যপ্রান্তে নিজের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দিয়ে, আমেরিকান অর্থনৈ্তিক এবং সামরিক চাপের কাছে এক দু; পা করে আপোষ করেছি এবং ১৯৬৪ সালের কর্মসূচীকে এমনভাবে বদল করেছি, যা শ্রমিক শ্রেনীর আন্তর্জাতীকতাকে নড়বড়ে করে দিয়ে,
------- দ্বিতীয় যুদ্ধে, যেখানে শেষ প্রতিরোধের স্থম্ভ হিসেবে কারখানা গেট কিংবা খনীমুখের প্রতিরোধের শক্তিকেও আত্মমর্য্যাদাহীনতায় ডোবানো হয়েছে। এইভাবে 'ভয়ের' ভাবাদর্শ যেমনভাবে শক্তি পেয়েছে, তেমনভাবে
আন্তর্জাতীকতার শীড়দাড়াকে অকেজো এবং অকর্মন্য করা হয়েছে।
পরিনামে শ্রমকে খন্ড বিখন্ড হয়েছে।
সোভিয়েত ভেংগে যাওয়ার পর, যেখানে সমাজতান্ত্রিকভাব সত্বা, সংস্কৃতি সৃজনীর সব ধারার অভিমুখগুলিকে যখন ভারত সহ তৃ্তীয় বিশ্বের দেশগুলিতে যখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো,
------ তখন যেখানে, স্তালিনের সেই বুর্জোয়া সংস্কৃতিকে এগিয়ে দেওয়ায় এক বিপ্লবী উদ্যোগকে ভারতীয় পরিপ্রেক্ষিতে রবীন্দ্র এবং তার পর কল্লোল বা আ পি টি এ ভাবনাকে ক্রমাগত এগিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রতিরোধের ভানাকে জাগরুক করা প্রয়োজন ছিলো তখন
------- হয়তো সাম্যবাদী বা ট্রেড ইউনিয়ন অভিমুখে 'সব কিছুই' হয়তো করা হয়েছে, কিন্তু ভাবপ্রবাহের বৈপ্লবিক সত্বা তো ডুবেছেই, এমন কী বিদ্রোহী সত্বাও। রবীন্দ্র তো দুরের কথা সাহিত্যে কল্লোল যুগকেও কদাচিত খুজে পাওয়া যাচ্ছে।
গতকাল এবং আজকের লেখা দুটির শিরোনামাকে এই লেখার পরিপ্রেক্ষিতটিকে খুজে নিতে হবে। সমাজ বিজ্ঞানে, কর্মসূচীগত দ্বন্দ্বগুলির ইতিবাচক এবং নেতীবাচক দিক দুটির উঠানামার পারস্পরিকতা নির্নয় হয়,
------ দুই মেরুর ভাবগত দ্বন্দ্বের পারদ উঠানামার মধ্যে রাজনৈ্তিক এবং ভাবাত্মক দিকের অন্তসম্পর্কটা তুলে ধরা, ভাবাত্মক দিকের দুর্বলতায় যখন রাজনৈ্তিক বিপর্য্য্যের কারন হয়ে দাড়ায়, তখন গন অংশ গ্রহনের প্রয়োজনীয়তার দিকটি তুলে আনায়
------- পাঠকদের অংশগ্রহনের দিকটিকে মাথায় রেখেই এই পর্বের লেখাগুলির সূচনা।গতকালের লেখায় ইংগীত দিয়েছি্ যদি আজ ভারতকে দাসত্বের গহ্বরে নিক্ষেপ করা হয়ে থাকে, সেখানে রাজনীতি বা অর্থনৈ্তিক দাসত্ব থেকেও, ভাবগত দাসত্বই প্রথমোক্ত দিক গুলিকে মরকের দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে।
----- ভাবের পুনোরোদ্ধারে, যদি আমরা যারা এতোদিন নিজেদের সাম্যের একমাত্র নির্নায়ক মনে করেছি, তারা যদি তেমন ভাবতে থাকেন, থাকুন না কেন
বিষয়টা যখন এখন ভাবাত্মক বিপর্য্যয়ে গিয়ে ঠেকেছে, মানুষকে নামতে হবে পথে। এই পথে নামার প্রথম কাজ, মানুষের মনের রঙ মহলকে খুলতে থাকা। বুঝতে সুরু করা, সেই রঙমহলের দরজা - জানালা, এক কিংবা এক শ' অথবা এক লক্ষে সিমীত নয়। ১৩০ কোটি মানুষের রঙমহলের ভাবপুঞ্জকে ধারন করার
------ মতো দরজা জানালাকে উন্মুক্ত করার মতো ভাবগত এবং সংগঠনগত শক্তি সংগ্রহের জন্য, একপ্রান্তে শিক্ষার জ্ঞানগত উত্তোরন, জ্ঞানের সৃজনে এবং সামাজিক একাত্মতার পথে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার
চেষ্টায় থাকতে হবে।
------ একে কেউ 'দাম্ভিকতা' বলে নিতেই পারেন, কিন্তু জীবন রায়, আত্মপ্রত্যয়ের তরঙ্গে উঠে এসেই, বার বার তার কমরেড এবং সহচরদের
বলেছেন, একজনের ভাব বলুন কিংবা মন অথবা আত্মা বলুন সেখানে যদি তরঙ্গ নির্মান করতে তিনি ব্যর্থ হন তবে তিনি কি করে তার অন্তরে ১৩০ কোটির সাতারের আয়োজন করতে পারবেন।
মার্ক্সের কাছে পৌছুনোর প্রয়োজন নেই, রবীন্দ্রনাথ পর্য্যন্ত যারা পৌছেছেন, তারাও মানবেন, মনের পবিত্রতা এখন শ্রেফ দুষিত নয়, বিষাক্ত হয়েছে, মনের বিষাক্ততাই, আজ প্রকৃ্তিকেও বিষাক্ত করছে।
কাজেই রাজনীতিকে যদি রাজনীতিহীনতা থেকে মুক্ত করতে হয়, তবে সেই মুক্তি যে আত্মা বা মনের মুক্তিতেই যে নিহীত সে কথাটাকে প্রথমে বুঝতে হবে, বুঝতে হবে এই মুক্তিতেই ইতিহাসের এবং সর্বশেষে প্রকৃতীর মুক্তি।
সব শেষে আমরা দিদীমা, যিনি আট ছেলে এবং এক মেয়ের মা ছিলেন - কোন দিন বিদ্যালয় শিক্ষা পেয়েছিলেন কী না খবর নেই। ছোট বেলায় তার একটা পরামর্শ বারবার মনে হয়, প্রাচীনত্বের কালেও 'মন'কে পার্থিব রুপেও দেখা হোত --
------ তিনি বলতেন - "আরে আত্মাকে কষ্ট দিতে নাই" । সেই কথার আধুনিক রুপটাই হোল - অজ্ঞানতা এবং সৃজনহীনতা থেকে আত্মা তথা চিন্তনের মুক্তি এবং এই মুক্তির নামই সাম্য।এইভাবেই মনের রঙমহলের উন্মুক্তির সংগ্রামের নামই সাম্য এর সংগ্রাম। এই সংগ্রামকের সাথে গনতন্ত্রের সংগ্রামের সেতুবন্ধন ব্যতিরেখে রাজনীতির মুক্তি নেই।
শুরু হোক তর্ক বিতর্ক, খুলতে থাকুক রঙমহলের দরজা-জানালা। (ক্রমশ)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours