ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার,দুর্গাপুর
তিলজলহাটি গ্রামের ঘোষাল পরিবার সম্পন্ন গৃহস্হ এবং একান্নবর্তী পরিবার!প্রায় বিঘা পঞ্চাশেক কৃষি জমি, মুদির দোকান ছাড়াও একচেটিয়া৩ নুনের কারবারি!
পাঁচকড়ি ঘোষালের পুত্র সৌম্যসুন্দর সান্নিপাতিক জ্বরে আক্রান্ত! রূপেন্দ্র যথা সময়ে উপস্হিত হয়েছে! চিকিৎসা বিলম্বে শুরু হলে হয়তো রোগীকে বাঁচানো যেত না!তবে এখনো রোগীর সংকট কাটেনি সেটা রূপেন্দ্র উপলব্ধি করে, রোগী সৌম্যসুন্দরের পিতাকে আড়ালে বললেন " আমাকে এতো দেরীতে খবর দিলেন কেন? রোগীর অবস্হা ভাল নয়, তবে আমি নিরাশ হচ্ছি না,বৈদ্যকে আশা ছাড়তে নেই! তবে সৌম্য সুন্দর অপুষ্টিতে ভুগছে, আপনার পরিবার সচ্ছল , তাই এমনটা হওয়ার কথা নয়!"
পাঁচকড়ি ম্লান হেসে বললেন,"আমার ভুলেই এটা হয়েছে গুরুগৃহে যাওয়ার পর থেকে ওর স্বাস্হ্য ভেঙে যাচ্ছিল, কিন্তু মেধাবী ছাত্র কিছুতেই গৃরুগৃহ ত্যাগ করতে রাজী হয়নি "
রূপেন্দ্র জিজ্ঞাসা করলেন, তার গুরু কে? ...নদীয়ার স্বনামধন্য পন্ডিত রামনাথ তর্কসিদ্ধান্ত জানালেন, পাঁচকড়ি !
রূপেন্দ্র দু হাত তুলে তাঁর উদ্দেশ্যে প্রনাম করে বললেন, আপনার সন্তানের পরম সৌভাগ্য গৌরমন্ডলের সর্বশ্রেষ্ঠ পন্ডিতের নিকট পাঠ নেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে!এরপর তিনি রোগীর মুখে প্রতি দন্ডে তরল ঔষধ দিয়ে নাড়ি পরীক্ষা করতে লাগলেন! গোধুলী বেলায় তিনি বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার পূর্বে রাতে কিভাবে ওষুধ দিতে হবে কবিরাজ মশাইকে বুঝিয়ে দিলেন! তিনি এখন বিদায় নিলেও পরদিন সকালে আবার রোগীকে দেখতে আসবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গৃহ অভিমুখে রওনা দেওয়ার পূর্বে পাঁচকড়ি ঘোষাল, বললেন, তিনি যা ভালো বোঝেন তবে বৈদ্যবিদায় নিয়ে যেতে অনুরোধ করলে রূপেন্দ্র বলেলেন, তিনি একমুষ্ঠি আতপ চাল আর পাঁচটি কড়ি নেবেন!রোগী সুস্হ হলে তিনি বৈদ্যবিদায় নেবেন!
রূপেন্দ্রর বাড়ী থেকে তিলজলহাটির দুরত্ব মাত্র তিন ক্রোশ! রূপেন্দ্র তাঁর অশ্ব সৈনগুপ্ত কে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন! পথে প্রচন্ড কালবৈশাখীর ঝড়বৃষ্টির মধ্যে যখন বাড়ী ফিরলেন তখন সন্ধ্যা গড়িয়ে প্রায় রাত্রি হয়েছে সারা গ্রাম গহন অন্ধাকারে ডুবে গেছে
(চলবে )
Post A Comment:
0 comments so far,add yours