অঙ্কিতা ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, পূর্ব বর্ধমান:

(একটিবার মেয়ে বলো প্লিজ)

আমার এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করলাম আমরা নিজেরা।কারণ পুলিশ প্রশাসন আমাদের এই সমস্যায় কোন প্রকার সাহায্য করছিলেন না।গরিমার থেকে পাওয়া আমার ভোটার আই কার্ড এবং একটি জন্ম সার্টিফিকেট ও আমার কিছু স্কুল সার্টিফিকেট এই নিয়ে তদন্ত শুরু।যে জন্ম সার্টিফিকেট আমাকে গরিমা দিয়েছিলেন সেটি আমার স্বামী ইন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য দেখলেন এবং আমার স্কুল সার্টিফিকেট দেখলেন।জন্ম সার্টিফিকেটে জন্ম তারিখ এবং সাল ও স্কুল সার্টিফিকেটে জন্ম তারিখ ও সাল দুটি বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করলেন।স্কুল সার্টিফিকেটের জন্ম তারিখ ও সালের সহিত জন্ম সার্টিফিকেটে জন্ম তারিখ ও সালের  কোন মিল পাওয়া যাচ্ছে না।আমার স্বামী ইন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য আমার স্কুল সার্টিফিকেট এর জন্ম তারিখ অনুসারে আরো একটি জন্ম সার্টিফিকেট বের করলেন। আপনারাই বলুন একটি মানুষের দুটি জন্ম সার্টিফিকেট কি কোনো ভাবে কোনো প্রকার হতে পারে?? প্রথম জন্ম সার্টিফিকেটে আমার জন্ম তারিখ ও সময় আছে ইং 24/06/1990 সময় 02:05 PM. সবথেকে অবিশ্বাস্যকর ঘটনা ওই জন্ম সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন তারিখ সদ্য দিনে অর্থাৎ 24/06/1990.এবার আপনারাই বলুন কিভাবে একটি বাচ্চার যেদিন জন্ম হয় ঠিক সেই দিনেই তার জন্ম সার্টিফিকেট কিভাবে তৈরি হয়! এইবার আসছি দ্বিতীয় জন্ম সার্টিফিকেটের কোথায়।দ্বিতীয় জন্ম সার্টিফিকেটে দেখানো হয়েছে আমার জন্ম 28/08/1991. এবার আপনারাই দেখুন এক বছরের মধ্যে আমার দুই দুইবার জন্ম হয়েছে। ভগবানের অশেষ কৃপা তাই আমাকে এই পৃথিবীতে দুই বার জন্ম গ্রহণ করতে হয়েছে।
দ্বিতীয় জন্ম সার্টিফিকেট ডিজে ডাক্তারবাবুর অধীনে আমি হয়েছি সেই ডাক্তারবাবুর নামের সাথে তার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার এর কোন মিল পাওয়া যাচ্ছে না। রেজিস্ট্রেশন নাম্বার খোঁজ করলে অন্য ডাক্তারের নাম পাওয়া যাচ্ছে ‌ উনি কলকাতার বেহালা অঞ্চলের ডাক্তার উনার নাম নিরঞ্জন কুমার মিস্ত্রী। এবং দ্বিতীয় জন্ম সার্টিফিকেট বানানোর জন্য একটি কোর্টে এফিডেভিট প্রয়োজন হয়। এটি ( কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের নিয়ম অনুসারে)। সেখানে দেখা যাচ্ছে গৌরী মার বয়স ১০ বছর কম। গৌরী মার জন্ম ইংরেজির 1953 সালে।
এবং এর সাথে গৌরী মা দিয়েছিলেন আমার পোলিও কার্ড। পোলিও কার্ডে আমার নাম আছে অর্পিতা। এটাও ভাবার বিষয়। এই পোলিও টিকা দিয়েছিলেন স্বনামধন্য শিশু চিকিৎসক অলোক দত্ত মহাশয়। আমার যদি জন্ম সার্টিফিকেটে নাম অঙ্কিতা থাকে তাহলে পোলিও কার্ডে নাম থাকা উচিত অঙ্কিতা। অর্পিতা কি করে লিখলেন ডক্তার অলোক দত্ত মহাশয়। যদি জন্ম সার্টিফিকেট না থাকতো তাহলে আমরা জানি পোলিও কার্ডে এই ভাবেই লেখা হয় Baby of Gouri Bhattacharya. পোলিও কার্ডে আরো একটি লক্ষ্য করার বিষয় আমার যখন জন্ম হয় (24/06/1990) দেখানো হয়েছে আমি প্রিম্যাচিওর বেবি। আমার ওজন মাত্র ১ কেজি ৫০০ গ্ৰাম। এবার সবথেকে ভাববার বিষয় আমার জন্মের মাত্র চার মাস পর(21/10/1990) আমার ওজন ৩ কেজি ৫৫০ গ্ৰাম। একটি প্রিম্যাচিওর বেবি মাত্র তিন মাসে এত শতাংশ গ্রোথ কিভাবে হতে পারে?কারণ আমি যখন জন্মে ছিলাম তখন তো প্রিম্যাচিওর বেবি হওয়ার জন্য ভালোভাবে খেতেও পারতাম না! এবার আপনারা  দেখুন আমার জন্ম নিয়ে এই ধরনের নোংরামি করা হয়েছে পরিচয় লুকানোর জন্য। আমিতো জানি আমার জন্মদাতা পিতা জর্জ বেকার। আমার জন্মদাত্রী মা তসলিমা নাসরিন।আমার যদি জন্ম সার্টিফিকেট দুটি নকল হয়ে থাকে তাহলে আমার ডি এন এ পরীক্ষা করা হোক। ডি এন এ পরীক্ষার মাধ্যমে আমার জন্মদাতা পিতাজর্জ বেকার পিতৃপরিচয় ও জন্মদাত্রী মা তসলিমা নাসরিনের মাতৃ পরিচয় আমি ফিরে পেতে পারি। যদি আমার পিতা জর্জ বেকার এর সহিত ও আমার মা তসলিমা নাসরিনের সহিত ডিএনএ না মেলে তখন আদালত যা শাস্তি দেবে আমি মাথা পেতে নেব। (ক্রমশ)

(প্রতিবেদনের যাবতীয় দায় লেখিকার)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours