শেখ ফরিদ, প্রগতিশীল লেখক, বাংলাদেশ:

কাফেরঃ  স্যার, আল্লামা ইকবাল (১)

আনজুমানে হেমায়েতে ইসলাম এর জলসায়(অনুষ্ঠানে)  "শিকোয়া" পাঠ করলে (১৯১১ এপ্রিল)  স্যার আল্লামা মুহাম্মদ ইকবাল এর কবিতা জনপ্রিয়  হয়ে উঠে।অন্য দিকে মৌলভীরা তাকে কাফের ফতোয়া দেয়।

কাফেরঃ শাহ ওয়ালী উল্লাহ দেহলভী (২)

শাহ ওয়ালী উল্লাহ দেহলভী,   ইসলামী পন্ডিত ও ছাত্রদের কাছে জনপ্রিয়  ও সুপরিচিত নাম। তাকে ছাড়া ভারতবর্ষে ইসলামী আলোচনা এগিয়ে নেয়া যায় না।  অথচ তাকেই কাফের ফতোয়া দিয়ে নিজ এলাকা থেকে বের করে দেয়া হয়েছিলো! কারনটা খুবই হাস্যকর।কিন্তু  হাস্যকর বিষয় নিয়েই সে যুগের আলেমেরা শাহওয়ালী উল্লা দেহলভী কে এমন কোন অপমান নেই যে বাদ রেখেছিলো! এমনকি  ললহামলা মামলাও করা হয়ে ছিলো। সেসময়ের আলেমেরা তাকে অনেকবার হত্যা করার চেষ্টা করেছিলো।
তাহলে এবার শুনুন শাহ ওয়ালী উল্লাহ  দেহলভীর অপরাধ কি!
তিনি ১১ বছর গবেষণা করে আরবী ভাষার কোরআন ফার্সী তে অনুবাদ ও তাফসীর( "ফাতাহুর রাহমান") করেছিলেন!! ব্যাস আর যায় কোথায়, সে যুগের আলেম সমাজ তাকে কাফের ফতোয়া দিয়ে দিলেন!?

 কাফের  ইবনে সীনা  (৩)
প্রশ্ন করার কারনে ইবনে সীনাকে কাফের বলা হতো।
বু আলী ইবনে সিনা বহুমাত্রিক  প্রতিভাধর ছিলেন। গণিতজ্ঞ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং দার্শনিক,চিকিৎসাবিজ্ঞানী। 

পৃথিবীতে ইবনে সিনার অবদান অনস্বিকার্য। তাকে নিয়ে আজকের  মুসলিম সম্প্রদায় গর্বিত।কিন্তু জীবনের শেষ বছরটা তাঁকে কাটাতে হয়েছে ইস্পাহান কারাগারে ! 
ঈমাম আল - রাজী এবং আল - গাজ্জালী  ইবনে সীনাকে  কাফের  বলেছেন। ইবনে তাইমিয়াহ, ইবনে আল কাইয়িম এবং ইমাম আল দাহাবিরের মতো ইসলামিক স্কলারেরাও ইবনে সীনাকে কাফের বলে আখ্যায়িত করেছেন । বেশীর ভাগ উলামা তাকে কাফের ও নাস্তিক বলেছেন। এমনকি ইমাম গাজ্জালী তার কিতাব 'আল-মুনকিয মিনাজ জলাল' কিতাবে বলেছেন, উভয়ের অর্থাৎ ফারাবী ও ইবনে সীনার কুফরীর ব্যাপারে সন্দেহ নেই।

অথচ আজ বাংলাদেশে,  এই"  ইবনে সীনা" নাম দিয়ে একটি ধর্মীয় রাজনৈতীক দলের হসপিটাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

কাফেরঃ  জুলফিকার আলী ভূট্টো (৪)

পাকিস্তানের প্রতিটি মসজিদের জুম্মায় জুলফিকার আলী  ভূট্টোকে কাফের ফতোয়া দিয়ে খতীবরা বক্তব্য রাখতেন।
  জুলফিকার আলী ভূট্টো মনে করতেন, হযরত মোহাম্মদ (সা.) পৃথিবীর প্রথম কমিউনিস্ট। (জুলফিকার আলী ভুট্টো ও মওলনা ভাসানী "ইসলামি সমাজতন্ত্র " চাইতেন।) ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে এমন  বক্তব্যে দিলে পাকিস্তানের উলামায়ে কেরাম ভূট্টোকে  কাফের ফতোয়া দেয়।। পাকিস্তান জামাতে ইসলামির বড় নেতা মাওলানা কাওসার নিয়াজী এই ফতোয়ার সমর্থনে বইও তখন প্রকাশ করেছিলেন।
ভুট্টো আরো বলেছিলেন তিনি ওলামাদের দিয়ে বুট পালিশ কারাবেন। এতেও আলেম ওলামারা  চরম ক্ষুব্ধ হয় তার প্রতি। 
ভুট্টোকে ফাঁসীর মঞ্চে নেয়ায় আলেম ওমাদেরও ব্যাপক ভুমিকা ছিলো বলে মনে করা হয়।


কাফের ঃ মীর মোশারফ হোসেন (৫)

১২২৫ বঙ্গাব্দে  মীর মোশারফ হোসেন, "গোকুল নির্মূল আশঙ্কা " নামে একটি প্রবন্ধ লিখেন। 
" গো মাংস না খাইলে মোসলমানী থাাকিবে না.. এ কথা কোথাও লেখা নাই।... 
আরব দেশে আজ পর্যন্ত দোম্বাই অধিক পরিমানে বলি হয়। উটও বলি হইয়া থাকে। আরবে কেহই গরু কোরবাণী করে না।..... মুসলমান ধর্ম ভারতে আসিয়াছে সঙ্গে সঙ্গে কোরবানীও আসিয়াছে।... " 

লেখকের প্রবন্ধে এমন সব বাক্য  থাকার কারনে, মীর মোশারফ হোসেন কে, "আখবারে এসলামীয়া" পত্রিকা ও মৌলভীরা  তাকে কাফের ফতোয়া দেয়। 
অথচ মীর মোশারফ হোসেনকে মুসলিম লেখক হিসেবে সুপরিচিত  অনেকেই তাকে নিয়ে গর্ব করে।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours