জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:

লেখাটা লিখতে গিয়ে, বিদ্যালয় পড়াশুনার বর্তমান অবস্থায় যে  শূণ্যতা নির্মান হয়েছে, তার পুরনে গনশিক্ষার বিস্তারের গুরুত্ব এবং সেখানে দেশের একমাত্র সংগঠিত সামাজিক শক্তি হিসেবে, ট্রেড ইউনিয়নের ভূমিকা নিয়েই মূলতঃ আজকের লেখা।

লেখাটি হাতে দিয়েই, সেকালের এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রির দিল্লীর রায়সিনা বিদ্যালয়ের ছাত্রদের কাছে দেওয়া একটা ভাষনের কথা মনে পরে গেলো। শ্রীমতি ইন্দিরার সময়কাল থেকে নরসিমহা রাও পর্য্যন্ত, যিনি কেন্দ্রিয়
মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ন বিভাগের মন্ত্রীত্ব চালিয়ে গেছেন, তাকে ডাকসাইটে রাজনীতিবিদ বলে মানতে হবে।

এই লেখক যখন রাজ্যসভায় ছিলেন, তিনি নরসিমহা মন্ত্রীসভার ইস্পাত এবং ভারী দপ্তরের মন্ত্রী। লেখক যেহেতু, সংসদে শিল্প এবং শ্রমিক সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখতেন, তার সাথে নিজে ইস্পাত শ্রমিক ছিলেন, সেসব সুত্রে সেই মন্ত্রীর সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্কটা মোটামুটি চলসই হওয়ারই কথা তখনই মানুষকটা রসিক।
ইনি আর কেঊ নন, শিলচর থেকে আসা প্রয়তঃ সন্তোষ মোহন দেব। তার কন্যা পরে, তার আসন থেকে সাংসদ হয়েছিলেন। তখন কেন্দ্রীয় সরকার ইস্কোর নিজিকরনের জন্য উঠেপরে লেগেছেন। আজ বলতে বাধা নেই, বাংলার রাজ্য সরকারো অনেকটাই উপায় নেই বুঝে ভবিতব্যকে মেনেই নিয়েছিলেন। জীবন রায় তখন সংসদে, ট্রেড ইউনিয়নগুলির প্রতিনিধীত্ব করছেন, একে আটকে দিতে। মণে সে সময় কম করেও বারোবার রাজ্যসভায় তিনি বিরাষ্ট্রীয়করনের বিরুদ্ধে ভাষন দিয়েছেন।
---- সে সময়ে ইস্কোর উপরে জীবন রায়ের লেখা একটা পুস্তক পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিলও। বইটা যে তিনি পড়েছিলেন, তার লেখা পাল্টা চিঠিটির ভাষা থেকেই আজকের লেখক বুঝেছিলেন, মানুষটা খুবই রসিক ছিলেন।
----- তিনি লিখলেন, "জীবন বইটা তো খুব সুন্দর হয়েছে, কিন্তু ভিলেনটা যে কে  সেটা বোঝা গেলো না।"

যাইহোক বিষয়ে আসা যাক,
সন্তোষ বাবু, রায়সিনহার ছাত্রদের বলতে বলতে এক যায়গায় এসে থামলেন, তার পর একটু দম নিয়ে একটু হাসতে হাসতে বলতে শুরু করলেন সরাসরি ছাত্রের পড়াশুনার ব্যক্তিগত ভূমিকায় জোর দিয়ে
তিন চার কথায় তিনি যা বল্লেন খুব প্রনিধান যোগ্যঃ

---- " -শোন বাবা,দিনকাল খুব খারাপ। পড়াশুনা আত্মস্ত করে যদি মোটামুটি জ্ঞানি যদি হতে না পারো, তবে জীবনের কোথায়ো দাড়াতে পারবে না।" 
এরপর যে কয়েকটি কথা বল্লেন, তাতে যেম শ্লেষ, তেমনি অসাধারন রসিকতা। সেকালের রাজনীতিকদের সত্যকথনের সাহস এবং বুদ্ধির কেরামতি দেখার মতো। তিনি বল্লেনঃ
----- "দেখো বাবা, এতোদিন পর্য্যন্ত পড়াশুনা না করা যুবকদের একটা আশ্রয় ছিলো, সেই আশ্রয়টাতেই "  নিজের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বল্লেন
"  আমি নিজে টিকে আছি" । আরো একটু এগিয়ে গিয়ে বল্লেন
---- "আজকাল সেখানেও ভিষন প্রতিযোগীতা, ঠেলাঠেলি করেও ঢুকতে পারবে না" 
নিজেকে সকাল থেকেই প্রশ্ন করে চলেছি, আজ যদি এভারেজ ছাত্রদের ভবিষ্যত সম্পর্কে বলতে হয়, সেটাই ভাবছিলাম।
----- অবশ্য অন্য একটি ঘটনায় একটা জবাব খুজেও পেয়েছি।সেটায় পরে আসছি। পড়াশুনার অবস্থার সাথে রাজনীতিক হওয়ার সমস্যা নিয়ে যদি বলতে হয়, প্রথমেই বলতে হয়, সেকালে তথাপী পড়াশুনা জানা অনেকেই রাজনীতিতে আসতেন। লেখকের সময়েও, সব দলের অনেক নেতা ছিলেন, ভাষনে কথনে সংসদ এবং বিধান সভাগুলিকে মাতিয়ে রাখার
যোগ্যতা রাখতেন, দলমত নির্বিশেষে সবাই শুনতেন।
---- আজ একপ্রান্তে, বিদ্যালয় ব্যবস্থায়, যিনি শিক্ষাকে জ্ঞান রুপান্তরনের দায়বদ্ধতা নিয়ে পড়াবেন, তাকে একপ্রান্তে ছাত্র-অভিবাবক মেরে তাড়াবে, শিক্ষার জন্য যারা দায়বদ্ধ, তারাও নাকশিটকাবেন।
-----  অন্যদিকে,যখন রাজনীতির নিয়ন্ত্রক হিসেবে যারা উঠে এসেছেন, তারা সবাই সেসবের অভিবাবক,
------ যারা বিগত পাচ হাজার বছরের অজ্ঞানতা এবং অনুমান ধর্মীদের প্রেতাত্মা, সুযোগ পেয়ে মাটিখুরে উপরে উঠছেন এবং একখন্ড গেরুয়া কাপড় গায়ে চড়িয়ে সংসদে ঢুকে পরছেন। এই ভাবে  জ্ঞানিগুনি নিবেদিত প্রানদের ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে, রাস্তায় দাড় করিয়ে দেওয়ার সব ব্যবস্তা পাকা করে ফেলেছেন।
----- রাজনীতির এই চুড়ান্ত বিপর্য্যয়, একপ্রান্তে অন্যান্য লিবারেল বুর্জোয়া দলগুলি তো বটেই, সাম্যবাদী দলগুলির প্রতিনিধীত্বের গুনকে ক্রমাগত নিম্ন মানে এনেছে।আজকাল তো, কলেজে ছাত্র নির্বাচন কিংবা ভর্তিতে যা হচ্ছে, সংসদ কিংবা বিধান সভার নির্বাচনো বাহূবলিদের ণিয়ন্ত্রনে চলে গেছে।
অন্যপ্রান্তে বিদ্যালয় শিক্ষায় নিচু ক্লাসগুলিতে,'ইংরাজী ওয়ালাদের' প্রচন্ড আক্রোশের মুখে, প্রকৃ্তি বিজ্ঞান সংক্রান্ত পড়াশুনা কার্য্যতঃ বন্ধ। অথচ, আমরা এককালে আকাশে নক্ষত্র মন্ডলী হিসেবে নিয়ে একাধারে অংক শিক্ষার হিসেবে-কিতেব করেছে, অন্যদিকে বিচার বুদ্ধির প্রাথমিক সোপানগুলি সেভাবেই অতি্ক্রম করার সুযোগ পেয়েছি।গড়     ছেলে-মেয়েরা গড়িয়ে গড়িয়ে যখন উপরের ক্লাসে উঠছে, তখন শিক্ষা  পর্ষদ লাঠি নিয়ে রোজ হূকুম করছে, যাতে সব ছাত্র-ছাত্রীদের পাশ করিয়ে দেওয়া হয়। সে মাপেই প্রশ্নপত্র , নম্বর ইত্যাদি। সব সময় এমন ভাব যেন, ফেল করাটা মহাপাতকের কাজ।  আজকাল আবার নাকি বলা হচ্ছে - সব বিষয়ের সন্তুলিত শিক্ষার প্রয়োজন নেই। গড়িয়ে গড়িয়ে চার'পাচটায় পাস করে গেলেই ছেলে-মেয়েরা , 'সেকেন্দর'।

IN THE  CONTEXT OF SCHOOL EDUCATION, IF SOME ONE RAISE  DOUBT ABOUT
------ WHETHER THERE IS SINGLE SCHOOL IN THE     WHERE EDUCATION IN NATURAL SCIENCE IS IMPARTED IN THE CONTEXT OF UNFURLING OF HISTORY AND
------ LITERATURE IS SOUGHT TO BE MADE CREATIVE WHILE ENRICHING IT ALONG THE CREATIVE DEVELOPMENTS KNOWLEDGE  IN THE AREAS HISTORY,SOCIAL SCIENCE AND NATURAL SCIENCE
----- .এই লেখক সাথে সাথে প্রশ্ন করবে, দেশের রাজনীতিকরা বিশেষ করে যারা রুপান্তরকামী বলে নিজেদেরকে এখনো শ্লোগান সর্বস্বতায় ডুবে আছেন তারা কি বুঝছেন
------- অন্য কারনে না হোক, বিদ্যালয় শিক্ষাকে যখন গরু-গাধাঁ  বানানোর, যন্ত্রে বদলে দেওয়া হচ্ছে এবং অভিবাবকরা পরম ভক্তিভড়ে এনে নিচ্ছেন,
তখন বিপ্লবীবা কী বুঝতে পারছেন না , শ্লোগান ধর্মীতাকে জ্ঞানে বদলের কর্মসূচীর স্বার্থেই, বিদ্যালয় যেখানে ডুবছে, সেখান থেকে গনশিক্ষাকে এগিয়ে দিতে না পারলে, তারা নতুন ভূমিতে তো পা' রাখতেই পারবে না,
---- সম্পদে যা রয়েছে, সেগুলিও ফ্যাসিস্তদের ভান্ডে চলে যাবে।

এইভাবে জ্ঞান এবং সৃজনের বিষয়টি, গনশিক্ষা এবং সামাজিক রুপান্তরের অভিন্ন কর্মসূচীর সাথে একাত্ম হচ্ছে।
----- বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে বুদ্ধিমানদেরকেও,আজকের শিক্ষায়তনে জ্ঞানর যে সবযাত্রা চলছে তার আর্থ-সামাজিক কারন সম্পর্কে উত্তর  খুজতে দেখা যাচ্ছে না । তাই এই লেখকের মতো 'মোটা মাথাদেরকেই জবাব খুজতে হচ্চছে।

সন্তোষ মোহন বাবুদের সময় অভিযোগ উঠতো, বিদ্যালয়গুলি নাকি 'সৃজনমুখীনতার' নতুন প্রয়োজনীয়তার দাবী না মিটিয়ে,   সেই ঔপনিবেশিক কালের কেরানী নির্মান করে চলা হচ্ছে
---- এই লেখককে প্রশ্ন করতে ইচ্ছা হয়, তখনো - সাধারন ছাত্র-ছাত্রীরাও গলা উচিয়ে দাবী করতো
------ ডিস্ট্রিক মেজিস্ট্রেট হবো,  ডাক্তার হবো কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হবো। গল উচিয়ে বলতে পারতো --- দিল্লী যাবো ,বোম্বে যাবো এবং সেখান থেকে রোম, রোম থেকে ভেনিস, প্যারী হয়ে, যাবো চিনের ফরবিডেন সিটিতে।

আজ কি চাইছে, সাধারন ছাত্র-ছাত্রীর, অন্তত রূপান্তরকামীরা তো খবর নেবেন।যদি মেনেও নেওয়া হয়, দেশ আগামী ১০০ বছর জাহান্নামে থাকবে, তবু তো কেন আজ এই অবস্থা সেটা তো
----- বিদ্যালয় শিক্ষার বিকল্প হিসেবে গনশিক্ষার প্রয়োজনীয়তাটা বুঝিয়ে দিতে হবে।আসলে পরিস্থিতি আজকে ঔপনিবেশিক কাল থেকে ভয়ংকর।
---- কেন? দেশে শিল্প পুজির ক্যাপিট্যাল গুডস ইন্ডাস্ট্রি শেষ হবে বানিজ্যিক পুজিতে বদলে গেছে। আমদানী নির্ভর শিল্প, রপ্তানী হচ্ছে রক্তমাংসের শ্রম। সিংগুর এবং জিন্দল বন্ধের পর, রাজ্যে একটাও ক্যাপিট্যাল গুডসের কারখানা হয় নাই।
----- দুনিয়া, প্রযুক্তির স্তরে। কিন্তু ভারতের প্রযুক্তি শ্রমিকের প্রয়োজন নাই। দাস হলেই চলবে। তাই নারী নির্য্যাতন এখন প্রাতিষ্ঠানিক হয়ে গেছে। আমরা দুনিয়ার সব থেকে ক্ষুদিত লোক। আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশের মাটিতে গিয়ে, বিদেশীর নির্বাচনি প্রচার করে সুবিধা আদায় করতে হয়। ,
POOR AND MIDDLE- CLASS INDIA NEEDS NO DOCTOR, NO ENGINEER, NO DISTRICT MAGISTRATES, NOT EVEN CLERKS.
-----আমাদের এখন প্রয়োজন দাস - দাস আর দাস। অল্প বয়সি দাস। আদিবাসি কিংবা দলিতদের থেকে পেলে ভাল হয়। আর নারীদের দায়ীত্ব নিতে হবে, 'সামাজিক নারী হিসেবে' । তাই এক মহিলা এম পি যখন বলছেন --- 'বলাৎকার নাকি' দেশের প্রাচীন ঐতিহ্য। সেকারনে নাকি একে আটকানো যাবে না - এসবে জাতী এখন লজ্জ্বা বোধ করে না।

যাইহোক, সাম্যবাদীদের তো সেই জবাবটা খুজতে হবে, কি হতে চাইছে আজকের দিনের ছাত্ররা, সাধারন ঘর থেকে আসা ছাত্ররা।

লেখক নিজেও ধন্দ্বে ছিলেন। আজ সকালে হটাৎ একটা চিত্র দেখে ঝিলেখ খেলে গেলো মাথায়ঃ
আমি স্ত্রীর সাথে বাড়ী সামনের সিনেমা হলের সামনা দিয়ে সিটি সেন্টারের বাস স্টেন্ডে যাচ্ছিলাম। দেখালাম লাইন দিয়ে 'টোটো' যাচ্ছে। 
------হটাৎ চোখটা গিয়ে পড়লো, একটু ফুটফুটে ছেলের চোখে। বয়স ১৪ কি পনেরো হবে।চোখ দিয়ে যেন বিদ্যুৎ খেলছে। হাতে টোটোর স্টীয়ারিং।
আমি মণে মণে চেচীয়ে উঠলাম
----- পেয়ে গেছি, পেয়ে গেছি।
আজেকের ভারতের নবযৌবনের দাবী
----- আমি টোটো চালক হবো।
----- কেন্দ্রিয় সরকারের স্বচ্ছ অভিযানে রেল স্টেশানের ঠিকা শ্রমিক হবো, প্লাস্টিক পিছু পয়সা পাবো। 
----- ট্রেনে বিছানা পেতে দেওয়া, খাবার দেওয়া এবং পায়খানা পরিস্কার করার বিনা পয়সার চাকর হবো। পেসেঞ্জার দের  টিপ্সের পয়সাতেই চলে যাবে। 
---- অনেকদিন ট্রেনে থাকতে হয় টানা, এছাড়া অসুবিধার কিছু নেই। 

কিন্তু কি মজা, পড়াশুনা নাই। মাথা ঘমানোর কিছু ব্যাপার নেই । সব সোজা। দাস সাম্রাজ্যে একজনের দাস বনে যাও এবং সেই জোরে
আরো কুরিজন নিজের চামচা বানিয়ে নাও।
ভারত বেচে গেলো। (ক্রমশ)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours