প্রিয়াঙ্কা সরকার, লেখিকা, বর্ধমান: 

প্রেমের উপলব্ধি  মাতৃভাবে যাপন করলে তা সঙ্কুচিত নয়, প্রসারিত হয়৷ আর যদি ঈশ্বরভাবে তা অবলোকন করি, তবে তা ঐক্যের সাধনা৷ নারী যে মা!  প্রকৃতির বিস্তৃতি, শক্তি, সাধনা সবটুকুই বন্ধনী৷ ক্ষণিক থেকে বিস্তার, ক্রমবর্ধমান ধারা। মাতৃভাবে উপলব্ধি তো ত্রিবেণী তীর্থপথ, মুক্তবেণী সম্মিলন। প্রাণ তো শক্তি, শত্রু নয়। তাকে পরাস্ত করা যায় না। 
একজন শিশুর জীবন গঠনে মাকে গ্রহণ করাটাই তো শ্রেয়;  অনুকরণে, অনুধাবনে মা অঙ্গী। মা যে জয়ধ্বনি, উপাসনার শরীরে তোরণের দ্বার। পুরুষ তো কোমল ভাবের জীবনাচরণের প্রতীকী নয়। মানুষের জীবনে ক্ষুদ্র স্বার্থান্বেষী মনের চাহিদায় এই কোমলতা যেন কোনোভাবেই কাজে না লাগে৷ পরা শক্তির নাম হলো আদ্যাশক্তি, যাকে যাপন করে আমরা নিজেকে লালন করি৷ 

উল্লেখ্য যদি শার্লিন স্প্রেটনাক দেখি, সার্বিক ভাবের উৎস নারী, কিন্তু কিছুক্ষেত্রে বিভেদকামী ভাবের প্রতীকী পুরুষ। তবে সার্বিক কিন্তু পুরুষ দায়ী নয়৷ Carroline sweetman বলছেন, "The connections between religion, culture, and the control of women are evident throughout the history of human development. The human development must rest on personal, and organisational, commitment to date. "

উপনিষদে বলা আছে,  "সত্য জ্ঞানামনন্তং ব্রহ্মা"। কিন্তু সত্যের উপলব্ধি কোথায়!!  তখন উপনিষদ বলছে নিজেকে জানার মধ্যেই আছে সেই সত্য। তাহলে নিজেকেই কষর্ণ করাটাই শ্রেয়। নিজেদের সচেতন রাখতে রাখতে আমদের  চেতনার মধ্যেও গভীর অন্তরতম সত্ত্বার বিকাশ ঘটে। আর প্রকৃতিই দিয়েছে সে শক্তি। প্রকৃতি নিজেকে আধার করে গড়েছে। দেহ মনের ক্ষমতাও তারই দান। 

 সেমিটিক ধর্মে, যেমন ইহুদী, খ্রীষ্টীয় ও ইসলামিক ধর্মে ঈশ্বরবাচক শব্দটি হলো পিতা। কিন্তু ভারতের ইতিহাসে বলা হয় প্রাক - বৈদিক মাতৃতন্ত্র আর বৈদিক যুগে পিতৃতন্ত্র। যদি ব্রহ্ম সত্য " সঠিক হয়, তবে তো "তৎ " শব্দটি লিঙ্গহীন৷ জার্মান কবি গোথের বিখ্যাত বই "ফাউস্ট" এর লিখেছেন, "The Eternal Feminine leads us on and on. " আলোচ্য বিষয় হলো পাশ্চাত্যের শিক্ষাধারায় ধর্ম ও বিজ্ঞানের মিলনক্ষেত্রগুলি সামান্য।  সেখানে ঈশ্বর জগতের বাইরে ও নিয়ন্তা। জ্বাজ্জল্য প্রমাণ হলো হিন্দুধর্মে ব্রহ্ম নামক দেবতা। 

অলৌকিকতা ও জগৎ বহির্ভূত ধারণা বিজ্ঞানকে দূষিত করে। সেক্ষেত্রে জগৎ উৎপত্তির ব্যখ্যা অদ্ভুত আলো আঁধারিয়া স্বরূপ। বিশ্বজগতের অনুশীলনের বিষয় হলো বুদ্ধি৷ রুবিক কিউব জগতের উৎপত্তির ক্ষেত্র হিসাবে বুদ্ধিকে গুরুত্ব দিয়েছেন।চিরন্তন নারীত্ব আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এই নারীত্ব জগতের অপসৃয়মান নেপথ্যে কাজ করে৷ তাই মাতৃহৃদয়ের স্পন্দন পরমাপ্রকৃতি, শক্তির আধার, পালিকা শক্তি ঈশ্বরী, পরম।
Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours