অঙ্কিতা ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, পূর্ব বর্ধমান:

(জন্মের স্বীকৃতি কেন ছিনিয়ে নিলে)

যথারীতি আমার বিবাহের দিন ধার্য হয়। ইংরাজি 27 শে মে 2016 সালে।দিন ধার্য করার সময় সমস্ত কথাবার্তা বা দায়িত্ব নিয়ে অর্পিতা বেকারের দাদা রঞ্জিত চক্রবর্তী ঠিক করলেন। কিন্তু উল্লেখ্য বিষয় আমার বাবা সেজে থাকা ভদ্রলোকটি কোনো কথা বলেননি। প্রথমত কথা ছিল কলকাতা থেকে বিবাহ হবে। কিন্তু রঞ্জিত চক্রবর্তীর কথা অনুসারে বিবাহ পূর্ব বর্ধমানে সর্বমঙ্গলা কালীবাড়ি থেকে। আমাকে কলকাতা থেকে রাতারাতি তুলে নিয়ে এসে পূর্ব বর্ধমানের মন্দিরে বিবাহ দেন। এর প্রধান উদ্যোক্তা অর্পিতা রঞ্জিত চক্রবর্তী।আমার বিবাহ যথারীতি হয়ে গেল এবং বিবাহের পর আমার পরনে অধিকাংশ সোনার গহনা আমাকে আমার গা থেকে খুলে দিতে হলো। আমাকে বলা হলো এইসব গহনা অনেক ভারী তাই এই গুলি আবার নতুন করে তৈরি করে সংখ্যায় বাড়িয়ে দেবো।আমি তখনও কোন প্রকার প্রতিবাদ করতে পারিনি তার কারণ বিবাহ পূর্বে আমাকে আবার ঔষধ প্রয়োগ করা হয়েছিল। যে ঔষধ আমাকে ছোট অবস্থায় দেওয়া হয়েছিল। ওই ঔষধ প্রয়োগ করলে আমি সব আলোচ্য কথা শুনতাম কিন্তু কোন প্রকার প্রতিবাদ করতে পারতাম না। তাই আমার বিবাহের সময় একি হয়েছিল কিন্তু এই ঘটনা আমার স্বামী একটু বুঝতে  পেরেছিলেন।
তারপর থেকেই আমি আমার স্বামীর ভালোবাসায় ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সেবা শুশ্বসায় আমি সুস্থ হয়ে উঠি। কিন্তু আমার স্বামী উপদেশে আমি জানতে দিই না যে আমার সবকিছু মনে পড়েছে। এরপর থেকে যখন তখন রঞ্জিত চক্রবর্তী আমাকে ফোন করতেন। এবং আমাকে চেষ্টা করতেন আমি যেন রঞ্জিত চক্রবর্তীর কথা অনুসারে চলি। কিন্তু সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হলো।আমার স্বামী আমার মোবাইল ফোনটি আমার কাছে থেকে নিয়ে নিলো। তখন রঞ্জিত চক্রবর্তী পুনরায় মোবাইল ফোন পাঠানোর কথা বলেন। কিন্তু আমার স্বামী রঞ্জিত চক্রবর্তীর কথায় তীব্র প্রতিবাদ করেন। এখানে আরেকটি কথা উল্লেখ রাখি আমার বিবাহের সময় আর দুইজন অতিথি এসেছিলেন তাদের নাম বাদল চক্রবর্তী/খোকন চক্রবর্তী ও দীপা চক্রবর্তী/নিয়তি চক্রবর্তী। ওনারা পূর্ব বর্ধমানের বড়শূলের বাসিন্দা। এরপর রঞ্জিত চক্রবর্তী বুঝতে পারেন যে আমার স্বামীর রহস্যের গন্ধ পেয়ে গেছে।তার জন্য আমার পালক মা গৌরী দেবী চিরঞ্জিত চক্রবর্তী ও অর্পিতা বেকারের আত্মীয়রা নানানভাবে চাপ সৃষ্টি করতেন। যাতে করে আমাকে কোন ভাবে কোন প্রকারে আমার শশুর বাড়ি থেকে নিয়ে আসা যায়। কিন্তু আমি ভালোবাসা বুঝতে পারি। যতই হোক আমার বুদ্ধি আছে যথেষ্ট। তাই আমি আমার শ্বশুর বাড়ি ছাড়তে অস্বীকার করি। আমি ছোট থেকেই সন্ধানে ছিলাম কোথায় একটু নিঃস্বার্থ ভালোবাসা পাওয়া যায়। অবশেষে সেই ভালোবাসা পেলাম আমি শ্বশুর বাড়ি থেকে। শ্বশুরবাড়ি থেকে আমি প্রকৃত ভালোবাসা কি সেটা জানতে পারলাম।আর তাছাড়া বড় কথা হলো আমার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা একটু অন্য ধরনের মানুষ। যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানে। অতঃপর আমার স্বামী আমার পালক মা গৌরী দেবী কে আমার পরিচয় পত্র চাইলো। কিন্তু গরিমা আমার পরিচয় পত্র দিতে রাজি হলেন না।তাহলে কি গৌরী মা আমাকে ছোট থেকে বড় করার জন্য আমার প্রতি মায়ার বন্ধনে জড়িয়ে পড়েছিলেন? আমি এটাও দেখেছি আমাকে নিয়ে যাবার জন্য আমার মাসি রূপে তসলিমা নাসরিন অনেক ঝগড়াঝাঁটি করেছিলেন পালক মা গৌরী দেবীর সাথে।আমি যদি প্রকৃতই গৌরী মার নিজের মেয়ে হতাম তাহলে আমাকে হারানোর কিসের ভয় ছিল গৌরী মায়ের? আমি যদি প্রকৃতই গৌরী মায়ের কন্যা হতাম তাহলে কি গৌরী মা আমার সাথে এই ধরনের মানসিক অত্যাচার করতেন? বা অন্য কেউ আমার সাথে অত্যাচার করলে তা প্রশ্রয় দিতেন? তাই প্রত্যেক বাচ্চার নিজের মাতা পিতার ভালোবাসা বা পরিচয় দরকার। আমার সব সময় একটাই দাবি আমার পিতৃ পরিচয় ও মাতৃ পরিচয়। সমাজের সামনে আমার জন্মদাতা পিতা হিসাবে জজ বেকার ও জন্মদাত্রী মাতা হিসাবে তসলিমা নাসরিন। এই অধিকার ডি এন এ পরীক্ষার মাধ্যমে আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। (ক্রমশ)

(প্রতিবেদনের যাবতীয় দায় লেখিকার)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours