অঙ্কিতা রায়, ফিচার রাইটার, মন্তেশ্বর, পূর্ব বর্ধমান:
পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমার অন্তর্গত মন্তেশ্বর একটি অতি প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী ও বর্ধিষ্ণু গ্রাম। আর এই গ্রামের মাইচপাড়ায় আনুমানিক প্রায় আটশো বছর ধরে দেবী চামুণ্ডার বাস। গ্রামবাসী এই দেবীকে মাতৃরূপে পূজো করে আসছে বছরের পর বছর ধরে।তবে এটি কষ্ঠি পাথরের উপর খোদাই করা একটি মূর্তি। যে পাথরের মূল্য বর্তমান বাজারে বেশ কয়েক লাখ হবে এবং মূর্তিটি দেখতেও বেশ একটু অন্যরকম। মূর্তিটি ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, দেবী চামুণ্ডা তার বাম হাতের অনামিকাকে নিম্ন ওষ্ঠের একটু বাম পার্শ্বে ছুঁয়িয়ে আছেন। এই রকম অদ্ভুত ভঙ্গীমার জন্য গ্রামবাসীর কাছে ভিন্ন স্বাদের অনেক পৌরানিক কাহিনীও শোনা যায়। তবে এখানে এই দেবীর গুরুত্ব এতটাই বেশি যে এখানে আলাদা করে কোনো দুর্গার মূর্তি পূজো বা কালীর মূর্তি পূজো করা হয় না। অর্থ্যাৎ পাথরের এই মূর্তিটিই কখনো দুর্গা রূপে আবার কালী রূপে পূজিত হয়।
প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান সময় অবধি আমরা যেটা বলে আসছি 'যাহা দুর্গা তাহাই কালী' তারই উদাহরণ স্বরূপ এই গ্রামের চামুণ্ডা দেবীর কথা উল্লেখ করাই যায়। গ্রামবাসীদের মতে, মা চামুণ্ডাই তাদের একমাত্র বিশ্বাসের জায়গা। তাই
দুর্গা পূজো হোক বা কালী পূজো এই পাথরের মূর্তিটিকেই নিয়মমাফিক পূজো করা হয় সোনার গয়না ও লাল বেনারসিতে সাজিয়ে। মন্দিরের চারপাশ তখন রকমারি আলো ও প্রদীপের শিখায় আলোকিত হয়ে ওঠে, সঙ্গে দর্শনার্থীর ভিড়। যদিও বর্তমানে গ্রামের বাজারের দিকে দু-একটা ক্লাবের আলাদা করে পূজো হলেও আটশো বছরের এই পরম্পরা কিন্তু একইভাবে বহন করে চলেছে গ্রামবাসীরা, বজায় রেখেছে এই বিশেষ ঐতিহ্যকে,বাঁচিয়ে রেখেছে নিজস্ব সংস্কৃতিকে।
তবে, দেবী চামুণ্ডার মহাপূজো হলো এই গ্রামের সবথেকে বড় ও সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব।যা প্রত্যেক বছর বৈশাখ মাসে দীর্ঘ চারদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours