সাজিয়া আক্তার, ফিচার রাইটার, বাংলাদেশ:

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার কড়িয়াটাআটা গ্রামে ধুমধাম করে বিয়ের এগারো দিন পরেই বর মোনছের আলী শ্বশুর বাড়ি এসে নববধূ মালেকাকে তালাক দিয়ে শাশুড়ি মাজেদা বেগমকে বিয়ে করেন। দুদিন আগের শাশুড়ি মাজেদা এখন মোনছের আলীর স্ত্রী।
মোনছের আলী ধনবাড়ী উপজেলার হাজরাবাড়ী পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর পুত্র। সে গত ২ অক্টোবর গোপালপুর উপজেলার কড়িয়াটা গ্রামের মালেকাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরদিন শাশুড়ি মাজেদা বেগম মেয়ের বাড়ি বেড়াতে যান। মেয়ের সঙ্গে এক সপ্তাহ বেয়াই বাড়ি থাকার পর গত শুক্রবার বর-কনেসহ নিজ বাড়ি ফেরেন।

শনিবার সকালে কোনো এক কারণে নূরন্নাহার বরের সংসার করবেন না বলে জানান। শুরু হয় পারিবারিক কলহ। এ সময় শাশুড়ি মাজেদা বেগম নতুন জামাতার সংসার করবেন বলে জানান। এমতাবস্থায় অসহায় শ্বশুর মাজেদা বেগমের স্বামী গ্রাম্য সালিশ ডাকেন। 

হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের তালুকদার, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামসহ এলাকার গণ্যমান্যরা বৈঠকে বসেন। সামাজিক বিচারে মাজেদা বেগম ও মোনছের আলীকে লাঞ্ছিত করা হয়। এরপর পুরো পরিবারের সম্মতিতে স্ত্রী মাজেদা বেগমকে তালাক দেয়া হয়। 

পরে বর মোনছের আলী নববধূ ওই তরুণীকে তালাক দেন। এরপর একই অনুষ্ঠানের সবার উপস্থিতিতে মোনছের আলীর সঙ্গে মাজেদা বেগমের এক লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে হয়। এই কাজ গুলো সম্পন্ন করেন হাদিরা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্টার কাজী জিনাত।

কাজী জানান, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রাম্য মাতব্বর এবং ওই পরিবারের সকল সদস্যের সম্মতিতে দুটি তালাক এবং একটি বিয়ের কাজ একই অনুষ্ঠানে সম্পাদন করা হয়।

ইউপি মেম্বার নজরুল ইসলাম জানান, শাশুড়ি বিয়ে করার ঘটনায় আপত্তি থাকায় গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতে মোনছের ও মাজেদাকে শাস্তি দেয়া হয়। তবে পুরো কাজটি হয়েছে ওই পরিবারের সম্মতিতে। 

হাদিরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের তালুকদার জানান, শাশুড়ি বিয়ের খবরে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী বাড়ি ঘেরাও করে মারপিট শুরু করেন। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান।

সংসার না করার কারণ জানতে চাইলে ওই তরুণী জানান, মা এমনটা করবে ভাবিনি। বিয়ের সময় বাবা বেশ কিছু যৌতুক দিয়েছিলেন। সে গুলো আমাকে ফেরত দেয়া হোক। নাহলে আমি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবো।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours