ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ

পশ্চিম বর্ধমান  জেলার  লাউদোহা  ব্লকের কুনুর  নদীর  দক্ষিনে  জেমুয়া  গ্রাম  হিন্দু  মুসলিম  দুই  সম্প্রদায়ের  শান্তিপূর্ন  সহবস্হান! আরো১ স্পষ্ট  করে  বলা  ভালো  হিন্দু - মুসলিমের  মিলনক্ষেত্র!
            গ্রামটি  দুর্গাপুর  মহকুমার  একটি  প্রাচীন  গ্রাম শহর  দুর্গাপুরের  মধ্যে  থেকেও  পঞ্চায়েত  এলাকাভুক্ত!
              গ্রামে  মুসলিম,সম্প্রদায়  ছাড়াও  হিন্দু  সম্প্রদায়ের প্রায়  সব  জাতির  বাস  আছে!গ্রামে  হিন্দুদের  প্রায় সব দেবদেবীর  মন্দির  আছে!
             গ্রামের  একটি  রাস্তার  দুপাশে  দুটি  অতি প্রাচীন  কালী  মন্দির  আছে! রাস্তার  পুর্ব  দিকে  মুখোপাধ্যায়  পরিবারের! আর  পশ্চিমে  রায়  পরিবারের! মুখোপাধ্যায়  পরিবারের  মা  কালীর  প্রতিষ্ঠাতা  কেষ্টকান্ত  মুখোপাধ্যায়!জনশ্রুতি, এই  দিলা মা  ছিলেন  বর্ধমানের  জমিদার  দেবপ্রসন্ন  মুখোপাধ্যায়ের  কুলদেবী! তিনি  স্বপ্নাদেশ  পাওয়ার  পর কেষ্ট চন্দ্র  মুখোপাধ্যাকে  তাঁর  গ্রাম  জেমুয়াতে  প্রতিষ্ঠা  করে  পুজা  করার  অনুরোধ  করেন!প্রায়  দু'শ  বছর  পূর্বে  কেষ্ট  চন্দ্র নিজ  গ্রামে  এই  কালী  প্রতিষ্ঠা  করে  পুজার  পত্তন  করেন! ১০৮  নর করোটি  দিয়ে  মায়ের  বেদী  নির্মান  করা  হয়!
      .
   মায়ের  নিত্য পুজা  হয়! কার্তিকী  অমাবশ্যায় নিশি পুজা  হয় ! ছাগ  বলি  দেওয়া  হয়  ! মায়ের  মহাভোগের  তিনি লাগে  ৩১  সের  দুধের পরমান্ন  আর  এক  কে,জি,  গাওয়া  ঘিয়ের  লুচি!পুজা  হয়  তন্ত্রমতে! প্রতিপদের  দিন  পংক্তিভোজের  আয়োজন  থাকে!পুজার  পরের  দিন  প্রতিমা  বিসর্জন  হলেও  'ঘট 'বিসর্জন হয় না ! সারা  বছর  ঘট  পুজা  হয়! পরের  বছর  পুজার পূর্ব দিন বারের  দিন  সেই  ঘট  বিসর্জন  করা  হয়!
              এই  গ্রামের  রায় পরিবারের  কালী পুজাও  প্রাচীন! মায়ের  শিলামুর্তি!  এই পরিবারের  গঙ্গা নারায়ন  রায় ১৩১০  বঙ্গাব্দে  মায়ের মূর্তি প্রতিষ্ঠা  ও  মন্দির  নির্মান  করেন! জনশ্রুতি, তিনি  ছিলেন  তান্ত্রিক! স্বপ্নাদেশে  মায়ের  শিলামূর্তি  প্রতিষ্ঠা  করে  তন্ত্রসাধনায়  সিদ্ধিলাভ  করেন! তাই  রায়  বাড়ীর  কুলদেবী  মা  সিদ্ধেশ্বরী  নামে  খ্যাতা! মায়ের নিত্য  পুজা  আরতি  হলেও , প্রতি বছর  কার্তিকী  অমাবশ্যায়  বিশেষ  পুজা  হয়!পুজা  হয়  তন্ত্রমতে নিশি ভোরে! মাকে  প্রথম পাঁচ  সের  এক পোয়া চিঁড়ে  ভোগ  দেওয়া  হয় ! পরে  পাঁচ  সের  এক পোয়া  দুধে  এক পোয়া গোবিন্দ ভোগ  চাল  দিয়ে  পায়েস  করে  ভোগ  দেওয়া  হয়!
            পুর্বে  বর্ধমানের রাজ বাড়ী থেকে  দুটি  পাঁঠার  দাম  দেওয়া  হতো! বর্তমানে  রাজাও  নেই  রাজ্যপাটও  নেই, তাই  রায়  পরিবারকেই  পাঁঠা  যোগাড়  করতে  হয়! ৭/৮ টি  ছাগ  বলি  দেওয়া  হয়! পুজার  পরের  দিন  ভোজের  ব্যবস্হা  থাকে! প্রতিপদে  ঘট  বিসর্জন  হয়!


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours