অঙ্কিতা ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, পূর্ব বর্ধমান:

(আমি তোমাদের মেয়ে)

রঞ্জিত চক্রবর্তী যখন কোন প্রকার কোন ভাবে কিছু করতে পারলেন না, তখন আমার বাবা সেজে থাকা ভদ্রলোকটিকে আমার শ্বশুর বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিলেন। যাহাতে আমার ও আমার স্বামীর কার্যকলাপ বুঝে উঠতে পারেন। যথারীতি আমার স্বামী আমার বাবা সেজে থাকা ভদ্রলোকটিকে আমার শ্বশুর বাড়ি নিয়ে আসেন।আমার শ্বশুরবাড়ি থেকে ভদ্রলোকটি প্রত্যহ যাতায়াত করতেন কলিকাতায় এবং আমাদের কার্যকলাপ ও গতিবিধি নজর রেখে রঞ্জিত চক্রবর্তী দের জানাতেন।আমাকে টাকার বিনিময়ে চুপ থাকার কথা বলেন আমার বাবা সেজে বসে থাকা ভদ্রলোকটি।আমি এই বিষয়ে রাজি না হওয়ার জন্য আমাকে আমার বাড়িতে থেকে আমার স্বামীকে প্রাণে মেরে ফেলার কথা বলেন। এইজন্য আমি আমার বাবা সেজে থাকা ভদ্রলোকটিকে আমার শ্বশুরবাড়ি থেকে বিতারিত করি। উনি যখন চলে যান তার কিছুদিন পূর্বে আমার স্বামী বেহালার সুরশুনার বিষূ বলে এক ভদ্রলোককে টেলিফোন করেন, কিছু কথা জানার জন্য। এই বিষূর ফার্নিচারের দোকান আছে।বিষূ আমার পালক ছোটমামা সত্যজিৎ চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বিষূ বলেন "নির্মল দা কে তুমি চেনো,জানো, দেখেছো কোনদিন? আমার স্বামী আমাকে বিবাহ যখন করেন, আমার বাবা হিসেবে দেখানো হয়েছে নির্মল ভট্টাচার্যকে।
আমাদের বিবাহের সময় আমার বাবা সেজে থাকা ভদ্রলোকটি উপস্থিত ছিলেন তাহলে ওই বিষূ বলে ভদ্র লোকটি এই কথা বললেন কেন? নির্মল দা কে চেনা জানার কথা।এরপর আমরা আমাদের স্থানীয় থানায় ভারপ্রাপ্ত অফিসার কে সমস্ত ঘটনা জানায়।কিন্তু ভারপ্রাপ্ত অফিসার খোঁজখবর নিয়ে বলেন এই ঘটনা আমাকে বের করতে হলে,আমাকে সুসাইড করতে হবে। এরপর আমি নবান্নে চিঠি করি এবং আমাদের মুখ্যমন্ত্রী দিদির কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে অভিযোগও করি। তারপর আমার বাবা জর্জ বেকার কে টেলিফোন করে কথা বলার চেষ্টা করি। আমি যতবারই বাবার সাথে টেলিফোনে কথা বলার চেষ্টা করি আমার বাবার টেলিফোন অর্পিতা বেকার তোলেন। হঠাৎ করে একদিন আমার বাবা জর্জ বেকার আমার টেলিফোন তোলেন। আমার সাথে ঠিক এই ধরনের কথা হয় পনেরো মিনিট ধরে। আমি আমার বাবাকে বলি, আমি তোমার মেয়ে। আমার বাবা বলেন তোমার বয়স কতো? আমি আমার জন্ম সার্টিফিকেট অনুসারে বলি আমার বয়স।কিন্তু আমার বাবা বলেন আমার মেয়ের অতো বয়স হতে পারেনা।আমি বাবাকে বলি তুমি যদি আমাকে মেয়ের স্বীকৃতি না দাও তাহলে আমি তোমার সাথে ডি এন এ পরীক্ষা করাবো। আমার বাবা বলেন তোমার সম্মান আছে।তোমার শ্বশুর বাড়ির শ্বশুর-শাশুড়ির একটা সম্মান আছে। তুমি এইসব করবে না। আমি মানতে রাজি হইনি। তখন আমার বাবা বলেন ডি এন এ পরীক্ষা করার পর তোমার বাড়ি থাকবে তো? তোমার শ্বশুরবাড়ি উড়িয়ে দেব। তার কিছু পর আমার বাবা আমাকে বলেছিলেন তুমি এসব কথা কাউকে বলো না। আমি তোমার সাথে দেখা করবো। আমার প্রচুর কাজ থাকে তাই একটু সময় লাগবে। এই কথা বলে আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। কিন্তু এই কথা বলার সময় অর্পিতা বেকার উচ্চস্বরে বলে ওঠে "ওই মেয়ের মেরে নাক মুখ ভেঙ্গে দেব"। আমিতো অর্পিতা বেকারকে মা হিসাবে দাবি করছি না। তাহলে উনি আমার ওপর এত রেগে যাচ্ছেন কেন। অর্পিতা বেকার এর জন্য আমি কেন পিতৃপরিচয় পাবো না কেনইবা আমি আমার বাবার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত থাকবো। কোন মানুষ জন্মদাতা পিতা ও মেয়ের মধ্যে বাধা সৃষ্টি করতে পারে না। তাহলে অর্পিতা বেকার কেন আমার ও আমার বাবার মধ্যে বাধা সৃষ্টি করছেন? আমি আমার পিতৃ পরিচয় ও মাতৃ পরিচয় পাওয়ার জন্য ডি এন এ পরীক্ষা করতে চাই। এই পরীক্ষার করে  আমার পিতৃ পরিচয় (জর্জ বেকার) ও মাতৃ পরিচয় (তসলিমা নাসরিন) ফিরিয়ে দেওয়া হোক। (ক্রমশ)

(প্রতিবেদনের যাবতীয় দায় লেখিকার)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

1 comments so far,Add yours