গৌতম দাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার, রাজ্য আবগারি দফতর ও লেখক, কলকাতা:

স্বামী বিবেকানন্দকে তাঁর শিষ্যরা একবার প্রশ্ন করেছিলেন, যদি তিনি  হজরত মহম্মদের যুগে জন্মাতেন তাহলে কি করতেন? বিবেকানন্দ বলেছিলেন "আমি তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করতাম"।শিষ্যদের আবার প্রশ্ন ছিল যদি তিনি যিশু খ্রিস্টের যুগে জন্মাতেন ? বিবেকানন্দের উত্তর ছিল - "চোখের জলে নয় বুকের রক্ত দিয়ে তাঁর পা ধুয়ে দিতাম"....                                              
এত ভেদাভেদ! এত সাম্প্রদায়িক রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম! এতো ঘৃনা! এতো দ্বেষ! এতো হিংসা! তার একটাই কারণ আমরা কিছুতেই 'আল্লা' কে 'শ্রীকৃষ্ণ', 'খ্রিস্ট' কে 'বুদ্ধ', মহাবীর কে 'আল্লা' মতো ভাবতে বা একই রকম শ্রদ্ধা করতে শিখতেই পারিনি বা বলা যায় আমদের অন্য ধর্মের মানুষকেই শুধু নয় অন্য ধর্ম এবং অন্য ধর্মের ঈশ্বরকে ও ঘৃণা করতে এই সমাজ শিখিয়েছে, জন্মের পর থেকে মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে তোমার ধর্মই একমাত্র শ্রেষ্ঠ ধর্ম বাকি সব মিথ্যে এবং অন্যায়। আমরা যদি ছোটবেলা থেকেই সঠিক ভাবে ধর্ম শিক্ষা পেতাম, অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে শিখতাম, ঈশ্বর কে ভাগ করতে গিয়েই তো এতো অশান্তি, অবিশ্বাস, ধর্মের নামে এতো হিংসা হানাহানি।    

আমি রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবকে আদর্শ ধর্মগুরু মানি, কারণ তিনি হিন্দু এবং মা কালির একনিষ্ঠ ভক্ত হয়েও কিন্তু সব ধর্মেই দীক্ষা নিয়ে ছিলেন, সব ধর্মকে সমান দৃষ্টিতে দেখেছিলেন, তিনি খ্রিস্টীয় মতে সাধন করেছেন আবার ইসলামীয় মতেও সাধন করেছেন। ওনার প্রিয় শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন 'শিক্ষা', 'শিক্ষা' আর 'শিক্ষা'...শিক্ষাই মুক্তির পথ, আত্মবিকাশের উপায়, আমাদের সব ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার মূলেই আছে অজ্ঞতা, শিক্ষার আলোয় সব অজ্ঞতা দুর করতে হবে...                                  

আমার জীবনের মূল মন্ত্র:- "সবার উপরে মানুষ সত্য,  তাহার উপর নাই"।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours