সাজিয়া আক্তার, ফিচার রাইটার বাংলাদেশ:

অল্প কিছুদিন আগে বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিত ব্যানার্জি অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন । নোবেল বিজয়ী চতুর্থ বাঙালি তিনি। অভিজিত নোবেল বিজয়ের পর তসলিমা নাসরিনের একটি সোশ্যাল সাইটের স্ট্যাটাস নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল। পরে তিনি নিজেই আরেকটি স্ট্যাটাসে স্বীকার করেছেন যে, আগের স্ট্যাটাসটা সকলের বোধগম্য নয়। উল্লেখ্য, অনেকেই মনে করেন তসলিমা একদিন নোবেল পাবেন। কিন্তু প্রখ্যাত এই লেখিকা নিজে কী ভাবছেন?

ভারতে নির্বাসিতা এই লেখিকা রোববার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে লিখেছেন, 'কাল দিল্লিতে এক প্রচণ্ড ধনী লোকের বাগানবাড়িতে গান শোনার এবং রাতের খাবার খাওয়ার নেমন্তন্ন ছিলো। ধনী লোকদের সঙ্গে আমার ওঠাবসা একদম নেই। আমার চারপাশে সব নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত। আমন্ত্রিত সকলেই ভারতীয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আমাকে নামে চেনেন, কেউ কেউ বই-টই পড়েছেন আমার বা আমার সম্পর্কে যে খবর টবর মাঝে মধ্যে বেরোয়; সেগুলো পড়েছেন। প্রায় সকলেই আমাকে নিয়ে উদবিগ্ন, তারা বুঝে পাচ্ছেন না, কেন আমি এই দেশের নাগরিক না হয়েও এই পোড়া দেশে পড়ে আছি!'

'এখানে কাউকে বিশ্বাস করা যায় না, এখানের মানুষ টাকা ছাড়া আর কিচ্ছু বোঝে না, সহযোগিতা, সমমর্মিতা বলে কিছুরই অস্তিত্ব নেই, যুক্তি নেই, বোধ নেই, বিবেক নেই। আর ওখানের মানে ইউরোপের মানুষ মানুষকে সম্মান করে। ওখানে মানুষকে বিশ্বাস করা যায়। এদেশে থেকে দুদিন পর পর ভিসার সমস্যা নিয়ে কেন নিজেকে ভুগতে দিচ্ছি। জীবনটা খুব ছোট। আমার উচিত এই দুর্নীতিবাজ, ঠগবাজ, আর বিশ্বাসঘাতকদের দেশ ছেড়ে চলে যাই, অন্য কোথাও অন্য কোনওখানে গিয়ে বিশুদ্ধ বাতাস নিই ফুস্ফুস ভ'রে। এখানে কোনও দ্রব্য বিশুদ্ধ নয়, জল বাতাস সব কিছুতে বিষ। আমি বলেছি, আমার বেড়ালকে ছেড়ে আমি তো কোথাও যেতে পারবো না। তারা আমার উত্তর শুনে বিরক্তই হলেন।'

'আর একজন বললেন, এই দেশে থাকলে আমার জীবনে নোবেল পাওয়া হবে না। নোবেল? আকাশ থেকে পড়লাম। নোবেল কেন পেতে যাবো আমি! এইসব প্রশ্নের সামনে আমি খুব অপ্রস্তুত বোধ করি। আমি সঠিক কোনও উত্তর খুঁজে পাই না। এরপর এমন প্রশ্ন করলে ভাবছি আমি তাদের কাছে জানতে চাইবো, তারা কেনো এই দেশে থাকেন! তারা তো চাইলেই এই দেশের চেয়ে ভালো ভালো দেশে গিয়ে বাস করতে পারেন। তারাই বা বিষাক্ত বাতাস ফুসফুসে নিচ্ছেন কেন!'


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours