শেখ ফরিদ, প্রগতিশীল লেখক, বাংলাদেশ:
২০১৬
সাল। ব্যাঙ্গালুরুতে নারায়না হেলথ সিটির, নারায়না হুরুদয়ালয়া হাসপাতালে
তথা দেবী শেঠীর হাসপাতালে ত্রিপুরার একজন বাঙালি মহিলার সাথে আমার পরিচয়
হয়। আমি একজন রোগীর এটেন্ডেন্ট ও দোভাষী হিসেবে সেখানে গিয়েছিলাম।
আামাদের
সকলের সাথে ত্রিপুরার ঐ মহিলা এবং তার পরিবারের লোকজনদের সাথে আমাদের খুব
ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে এক সপ্তাহে। বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলার সময়, একবার
প্রশ্ন করেছিলাম ; দিদি, যদি বাংলাদেশে কখনো এমন পরিবেশ তৈরী হয়, আর আবার
৭১ এর মত আমাদের আশ্রয় দিয়ে হয়। আপনারা আশ্রয় দেবেন। তিনি তড়িৎ গতিতে বলে
উঠলেন, " না বাবা, না আর ভুল করবো না! বাংলাদেশীদের আর জায়গা দেবো না।" আমি
একটু অবাক হলাম তার এত দ্রুত উত্তর দেয়ার কারনে। আমি আবার বললাম,
হিন্দুদেরও জায়গা দেবেন না? তার সাফ জবাব, ত্রিপুরাতে হিন্দুদেরও জায়গা
দেবে না। ত্রিপুরা প্রতি আমার পৃথক একটা টান অনুভব করি। সত্যি বলতে কি আমি
ত্রিপুরায় কখনো নিজেকে পরদেশি মনে হয়নি। কোলকাতা মানুষদের থেকে ত্রিপুরার
মানুষ বাংলাদেশীদের বেশি আপন মনে করে। যদিও ব্যবসা,বানিজ্য ও ভ্রমন
কোলকাতাতেই বেশি। সেই ত্রিপুরার মানুষই যদি বাংলাদেশীদের পুনরায় আশ্রয়
দিতে অস্বীকার করে। তাহলে কোলকাতায় কি অবস্থা তা বুঝা কঠিন কিছু নয়।
বাংলাদেশের নাগরিকদের ভারত বিরোধীতার বিষয়ে ভারতীয়রাও যে অবগত তা অনুমান
করা যায়।
সকল আওয়ামী লীগ নেতা কর্মি ভারতের পক্ষের
নয়। তবে সকল আওয়ামী লীগ বিরোধী ব্যাক্তি ও সংগঠন কেবল আওয়ামী লীগ বিরোধী
নয়, সাথে ভারত বিরোধীও। কথাটা আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বললাম। স্বাধীন
বাংলাদেশে যে কোন সময়ের চেয়ে ভারত বিরোধীতা এখন বেশি। কেন এই ভারত
বিরোধীতা? সীমান্তে বিএসএফ বাংলাদেশীদের হত্যা করে বলে? ফেনসিডিল
চোরাকারবারী করে বলে? তিস্তার জল দেয় না বলে? আসলেই কি তাই? এই সকল কারনে
ভারত বিরোধীতা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে? এসব কারন তো অজুহাত মাত্র। ফেনসিডিল
কি ভারতীয়রা হেলিকপ্টার দিয়ে আকাশ থেকে ফেলে যায়? ঢাকা থেকে কি মানুষ ধরে
নিয়ে তারপর ভারত সীমান্তে গুলি করা হয়? রাতের তিনটা সময় যদি কেউ কারো বাড়ির
দেয়ালও টপকাতে চায় তাকে হয় ডাকাত বলা হবে, নিদেন পক্ষে চোর। আর কেউ যদি
কোন দেশের সীমান্ত টপকে যেতে চায় তবে তো সে দুই দেশের আইনেই গুরুতর অপরাধী।
এটা বুঝতে কারো অপরাধ বিশেষজ্ঞ হতে হবে না। যদি কেউ রাজনৈতিক ফায়দা
হাসিলের জন্য কুতর্ক না করে। তিস্তার জল দিতে চায় না বলে যারা আজ ভারতকে।
গালি দিচ্ছে অথচ তাদের চোখেই আবার মমতা ব্যানার্জী 'হিরো"! মমতা
ব্যানার্জীর ঢাকায় এই হিরো হওয়ার কারন, তিনি কোলকতায় মুসলিম সম্প্রদায়ের
পক্ষে শক্ত অবস্থান নেন। যদিও কারো কারো মতে তা মুসলিম তোষন। অথচ
মুখ্যমন্ত্রী মমতার বাধায় ঢাকা- দিল্লীর তিস্তা আলোচনা ভেস্তে যায়। তবুও
তিনি "ভালো"!
আরো একটু
পেছনে যেতে হবে। এবং অপ্রিয় হলেও সত্য ভারত বিরোধীতার মূল কারন, ১৯৭১ এ
মুক্তিযুদ্ধে, মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতা করায় ভারতের প্রতি স্বাধীনতা
বিরোধীদের রাগ-গোস্বা ছিলো আছে এবং থাকবেও। আর কিছুটা সাম্প্রদায়িক
কারন।সাম্প্রদায়িক কারনটা যেমন তেমন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৭১ এ ভারতের
ভুমিকা এ দেশের অনেককেই খুশি করতে পারেনি। ৭১ পাকিস্তান ও পাকিস্তানপন্থীরা
পরাজিত হলেও তারা এবং তাদের প্রজন্ম সে ব্যাথা এখনো ভুলতে পারছে না। তাই,
যে কোন ছুঁতায় ভারত বিরোধীতা করা তাদের স্বভাব।।আবার ভারত বিরোধীতা করা
কারো কারো রোগে পরিনত হয়ে গেছে৷
এই
ধরনের ভারত বিরোধী রোগীরা নিয়মিত, আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব , শেখ
হাসিনাকে "গালগালি" করে থাকে। ইহাতক পর্যন্ত হলেও কথা ছিলো! কেননা, ধরে
নিলাম গনতন্ত্রে সমালোচনা নাগরিকের অধিকার। যেহেতু এরা সমালোচনা করতে
শিখেনি। তাই গালাগালিই তাদের সম্বল। তবে এরা আবার নিজেরা এক বিন্দু
সমালোচনা শুনতে আগ্রহী নয়। সে কথা এখন আলোচনার আনছি না। কোন দল ও ব্যাক্তি
গালি দিয়েও এরা তৃপ্ত নয়। শেষ পর্যন্ত বাঙালির অর্জন মহান
মুক্তিযুদ্ধকে "চুক্তিযুদ্ধ" বলার মত দুঃসাহস দেখায়। নানান অজুহাতে ভারত
বাংলাদেশের শত্রুতা তুলে ধরবে। তবে, তারা ৭১ এ ৩০ লাখ মানুষ হত্যা ও তিন
চার লাখ নারী ধর্ষনের কথা তুলে ধরে একবারও বলবে না। তারা বলবে না
পাকিস্তান শত্রু ছিলো বা তাদের সাথেও শত্রুতা হতে পারে। অবশ্য "ভারত শত্রুু
' তা বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলে।
আমরা
খেলাধূলা থেকে বিশ্ব রাজনীতিতে দেখি বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষের স্পষ্ট
ভারত বিরোধীতা। আগেই বলেছি, এক নম্বর কারন মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষ
নেয়া দুই নম্বর সাম্প্রদায়িকতা। আরেক শ্রেনীর মুষ্টিমেয় কমিউনিষ্ট রয়েছেন,
যারা ৭১ মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকে বলতেন "দুই কুকুরের কামড়া
কামড়ি!" অদ্ভূত বিষয় হলো, এই দুই কুকুরের কামড়া কামড়িওয়ালা,আবার ঢাকা থেকে
কাশ্মীরের জেহাদীদের পক্ষে পারলে এখনি ভারতের বিপক্ষে যুদ্ধে নেমে যেতো!
এরা এবং এদের শিষ্যত্ব গ্রহনকারী কিছু ব্যাক্তিও আদাজল খেয়ে ভারত
বিরোধীতায় মত্ত।
সর্বশেষ ভারত বিরোধীতায় যোগ হয়েছে
ভারতের চন্দ্রযান - ২। যাতে ভারত শত ভাগ সফল হয়নি। এতে এদেশে যেন কারো
কারো চোখে ঈদের আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। তাহলে বুঝা গেলো ভারতের
অগ্রযাত্রায় এ দেশে অনেক মানুষের হৃদয় ভেঙে যাবে। তারা কারা? কেনই বা
বিরোধীতা করছে? প্রশ্ন থাকলো। ভারত হয়তো আজ সফল হয়নি এক সময় তো হবেই। তখন
এরা ফেসবুকে কি লিখবে আল্লা মালুম। কারো বিরোধীতা করতে গেলে নিজেকেও
যোগ্য হতে হয়, আজকালের ফেসবুক বিশেষজ্ঞরা তা ভুলেই গেছে। অন্যের অর্জনে
প্রতিহিংসা না করে সাধুবাদ জানাতে হয়। এবং নিজেদের তৈরি করতে হয় আগামী
দিনের জন্য। ভারত বিজ্ঞানের অনেক বিষয়ে সফল হয়েছে। আরো অনেক কিছুতেই সফলে
হবে। যারা চন্দ্রযান - ২ শতভাগ সফল না হওয়ায় বেজায় খুশি। তাদের এটাও বুঝা
উচিত চন্দ্রযান ১ সফল হয়েছে নিশ্চয়। এটাও হবে। বিজ্ঞান সব বিষয়েই প্রথমেই
সফল হতে হবে এমন কোন কথা নেই। অার যারা ঢাকায় বসে ভারতের চন্দ্রযান শতভাগ
সফল না হওয়ায় সমালোচনা করছি তাদেরও বুঝা উচিত বিজ্ঞানে আমাদের অগ্রসরতা
কতটুকু! পাকিস্তান প্রমে মাতোয়ারা হয়ে, ভারতের চন্দ্রযান -২ শত ভাগ সফল না
হওয়ায় যারা উল্লাস করছি তাদের চন্দ্রাযান বিষয়ে কতটুকু সফলতা আছে তা তো
একবার আয়নায় মুখ দেখাে দরকার। অন্যকে সমালোচনা করতে গিয়ে নিজেকেেই হাস্যকর
বিষয়ে পরিণত করা সমঝদার লোকের কাজ নয়।
কোন দেশের
জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্নতি কেবল সে দেশের নয়। তা পৃথিবীর সম্পদে পরিনত হয়ে
যায়। এতটুকু বোধ যদি না থাকে তবে তোৃতাদের সাথে আলোচনাই চলে না।
বাংলাদেশে
ফেসবুকে পাকিস্তান বিরোধী কোন পোষ্ট দিলে আইডি গায়েব হয়ে যেতে পারে।
লাইকও পরবে খুব কম। আর ভারত বিরোধী একটা পোষ্ট দিন দেখুন। লাইক কমেন্টের
বন্যা বয়ে যাবে। ভারতের জেনারেল বলেছিলেন; যদি আবার যুদ্ধ হয় তবে ৭১ এর
চেয়ে ভয়ানক শিক্ষা দেয়া হবে পাকিস্তানকে। সেই নিউজ ফিডে বাংলাদেশীদের
কমেন্টস্ গুলো পড়ুন। তাহলে এ দেশের তরুন প্রজন্মের ভারত বিরেধীতা স্পষ্ট
দেখতে পাবেন। বুঝতেই পারবেন না, এরা বাংলাদেশের নাগরিক নাকি পাকিস্তানের!
আরো জানা যায়, আতীতের ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের ইতিহাস ও ফলাফল সম্পর্কে এই
প্রজন্মের কি করুন অজ্ঞতা। ভারত বিরোধীতা করতে গিয়ে কেউ কেউ বলে থাকেন,
ভারতে মুসলিম নির্যাতন হচ্ছে। এবার তিস্তার জল, সীমান্ত হত্যা ফেনসিডিল
থেকে সোজা" মুসলমান' শব্দ নিয়ে এলো। সৌদী আরবে বাংলাদেশী নারীদের ধর্ষন ও
নির্যাতনের বেলায় এরাই আবার নিরব! আবার কাশ্মীরীদের নিয়ে আসে সামনে; যেন
কাশ্মীর কেবল মুসলিমদেরই। যদি এই শ্রেনীর ভারত বিরোধীদের বলা হয়,
বেলুচিস্তানে কি ; পাকিস্তান "ইহুদী খৃস্টান" মারছে ৭০ বছর ধরে? তখন কেউ
কেউ মুখে কুলুপ দেন। আর এদেরই কিছু অংশ বলে বেলুচিস্তান কোথায়? বুঝা
গেলো এই যে "মুসলিম প্রেম' আসলে তা ভারত বিরোধীতার অস্ত্র, মুসলিম প্রেম
থেকে তারা তা বলেনি। তাহলে, জীবনে একবারও বেলুচ মুসলিমদের হত্যা,গুম,খুন
ধর্ষনের দায়ে পাকিস্তানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতো। পাকিস্তানকে কেনই, কাঠগড়ায়
দাঁড় করাবে এই শ্রেনীর ভারত বিরোধীরা। পাকিস্তানই তো প্রোপাগান্ডা চালিয়ে,
অর্থ ঢেলে এই রকম ভারত বিরোধী শ্রেনী তৈরী করে থাকে।
১৯৭৩
সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচনে মধুপুরের শ্রী মহেন্দ্র লাল
বর্মন নৌকা প্রতিক নিয়ে জসাদের প্রার্থীর নিকট প্রায় চার হাজার ভোটের
ব্যাবধানে হেরে যান। যা কেউ তখন কল্পনা করেনি। বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ মনি,
মহেন্দ্র লাল বর্মনের নির্বাচনী প্রচারনা জনসভায় মধুপুরে ( আজকে
টাঙ্গাইল জেলায়) এসেছিলেন।
তখন,
একটি গুজব ছড়ানো হয় নৌকায় ভোট দিলে, মহেন্দ্র বাবু জিতে গেলে মধুপুর ( তখন
ময়মনসিংহ মহকুমার অংশ) ভারতের নিকট বিক্রি করে দেবে! এখানে একই সাথে ভারত
বিরোধী প্রোপাগান্ডা সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি সোনায় সোহাগার মত মিলে
যায়। জাসদের প্রার্থী আব্দুস সাত্তার মশাল প্রতিকে বিজয়ী হন। বলার অপেক্ষা
রাখে না মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীরা সবাই তখন জাসদের ছাতায় তলায় ছিলো। আর তখন
জাসদের মূল শ্লোগানই ছিলো ভারত বিরোধীতা করা। তাদের সমাজতন্ত্রের লড়াই
শ্রেফ ভারত বিরোধীতার লড়াইয়ে গিয়ে ঠেকছিলো।
আজকের
মধুপুরে কোন অবস্থাতেই নৌকা প্রতীকের সাথে সূষ্ঠূ ভোটেও হারানো সম্ভব নয়।
কেননা, মধুপুর আসনটি আওয়ামী লীগ ও নৌকার ঘাটি। ৭৩ সাল ব্যাতিত কখনো নৌকা
প্রতিক হারেনি, ভবিষ্যতেও হারবে না। একথা,আমার যারা এ অঞ্চলে বা আশেপাশে
বাস করি তারা সকলেই জানি। অথচ ১৯৭৩ সালে হেরে গেলো! কারন ঐ যে ভারত
বিরোধীতা ও সাম্প্রদায়িকতা।
আজো
ভারত বিরোধীতা কমেনি। কারন ঐ একটাই তা হলো মুক্তিযুদ্ধ। মানবতা বিরোধী
অপরাধের দায়ে স্বাধীনতা বিরোধীদের ফাঁসী সহ বিভিন্ন সাজা দেয়ায় আওয়ামী লীগ
সরকার ও ভারত বিরোধী মনোভাব বেড়ে গেছে। ভারত ও আওয়ামী বিরোধীদের ধারনা
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে ভারত। যার কারনে নানান অজুহাতে
ভারত বিরোধী মনেভাব প্রকাশ করে চলছে ফেসবুকে । যদিও অনেক আওয়ামী লীগ নেতা
কর্মীও ভারত বিরোধী মনেভাব পোষন করে। তবে, পাকিস্তান প্রেমী ভারত বিরোধী আর
এদের মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যাবধান রয়েছে। আওয়ামী লীগের ভারত বিরোধী অংশ ভারত
বিরোধীতা করলেও তারা কোন অবস্থাতেই পাকিস্তানের পক্ষে নয়। এছাড়া যারা ভারত
বিরোধী তারা অধিকাংশই গোপনে ও প্রকাশ্যে পাকিস্তানের পক্ষে। ভারত যদি
তাদের জন্য মক্কায় হজ্ব করার টিকিটও দেয় তবুও এই দেশের "পাকিস্তান প্রেমী
ভারত বিরোধীদের" মন পাবে না। তারা কেবল, সাম্প্রদায়িক দৃষ্টি থেকেই ভারত
বিরোধীতা করে না। তাদের সামনে রয়েছে পাকিস্তান ভাঙ্গার বেদনা। তাদের সে
বেদনা কোন ওষুদে উপশম অসম্ভব।
তবে,
বিভিন্ন ব্যাক্তি ও রাজনৈতিক দলের ভারত বিরোধী প্রচারনা কেবল ভারতের জন্য
বিপদজনক নয় বাংলাদেশের জন্যও ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়াবে। তবে শেষ পর্যন্ত,
পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত প্রোপাগান্ডা মুখথুবরে পরবে। যেমন, ৫২
তে ৭১ এ পাকিস্তানি প্রোগান্ডা ব্যার্থ হয়েছে। পাকিস্তানিরা এমন বেঈমান যে ;
বিহারীরা ৪৭ এ বিহারে দাঙ্গা বাধিয়ে হিন্দু কেটে পুর্ব পাকিস্তানে এসে
বসতি গড়ে। পাকিস্তানের জন্য শ্লোগান ধরে "হাত মে লোটা মু মে পান- লরকে
লেঙ্গে পাকিস্তান " বলে পাকিস্তান কায়েম করেছিলো। ৭১ বাংলার মাটিতে থেকে
বাংলার মানুষকে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সাথে হত্যাযজ্ঞ ধর্ষনে মেতে ছিলো
তারাও কিন্তু আজো পাকিস্তানে জায়গা পায়নি। পাকিস্তান তাদের দোসর
বিহারীদের পাকিস্তানে জায়গা দেয়নি। এমন কি যে চায়না ৭১ এ তাদের পক্ষে ছিলো;
সেই চায়নিজপন্থী পঞ্চাশ জন কমিউনিস্টদেরও তালিকা করে হত্যা করে। যার কারনে
শেষ পর্যন্ত চায়না আর পাকিস্তানে পক্ষে থাকেনি।
আমরা
বাংলাদেশী এবং ভারতীয়ারা যতই পরস্পরের বিরোধীতা করি না কেন; ঢাকা দিল্লী
পরস্পরের সহযোগীতা ছাড়া চলা কঠিন। আমাদের সাথে রয়েছে বানিজ্যিক সম্পর্ক।
আর বাংলাদেশ অস্থিতিশীল হওয়া মানেই তা ভারতের নিরাপত্তার হুমকি। অনেক
কিছুই পাল্টানো যায়, প্রতিবেশি দেশ পাল্টানো যায় না। সাম্প্রদায়িক ও
দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে কোন দেশ গড়া যায় না। শান্তিতেও থাকা যায় না।
তাহলে পাকিস্তান ভাঙ্গতো না। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ হতো না; অস্থির থাকতো না।
আফগান পাকিস্তান সম্পর্ক তলানীতে যেতো না। সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে
এবং তৃতীয় কোন দেশের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে কোন দেশ ও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে
যাওয়া আর নিজের দেশের পক্ষে কথা বলা এক নয়।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours