জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:

মহাকাবিকতা থেকে যুক্তিবাদে, কিংবা উদারবাদের অপ্রাসংগীকতার কালে উদারবাদীদের নেতত্বে যুক্তিবাদ, নিজে থেকে সাম্যবাদীদের পালের হাওয়া ব্যতিরেখেই
------  ভারতীয় ব্যবস্থা ভাবের দিক থেকে  পাচঁ-হাজার বছরের পুঁজ-রক্ত ঠেলে , মুক্ত বিহংগ হয়ে উঠবে, সেটা ২০১৯ এর অভিজ্ঞতার পর এখনো যারা কল্পনায় রেখেছেন, তারা নিশ্চিত ভাবে মূর্খের- স্বর্গ বিহারে বিরাজমান রয়েছেন। নির্বাচনের পর, রাহুল গান্ধী যদি, নিজেকে বিচ্ছিন্ন মনে করে থাকেন, তার কারন, তিনি যা কিছু করেছেন, তাকে কিঞ্চিত হলেও, কিছু কথা অধিবিদ্যা বিরোধীতায় গিয়ে ধাক্কা দিয়েছে অন্য কারুর ভাষন কিংবা কথনে আসে নাই। ঊনার দাদু, দলে সর্দারের নেতৃত্বে আর এস এস পন্থীদের দ্বারা ঘেরাও হয়ে গেলেও, নিজের পায়ের নিচে যে  মাটি ধরে রাখতে পেরেছিলেন, সেটা নাতির খুজে পাওয়ার কথা ছিলো না।
-----   অনেকে যারা পরিবার পরিবার বলে চেচায়, তাদের তাকিয়ে দেখা উচিত। যে মুহুর্তে পরিবারেরে হাত থেকে কিঞ্চিত সুতো সিথিল হয়েছে সেই মুহুর্ত থেকেই,  (ক) 'সন্ত্রাস দমনের নামে বিনা বিচারে আটিক আইনে কংগ্রেসে সিলমোহর। এই আইনকে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতায়, 'ধরো আর জেলে ঢোকাউ আইন বলে উল্লেখ করেছি। কারুর আদর্শগত মতামতা থাকার জন্য জেলে ঢোকানো যায় না, এই মর্মে সুপ্রিম কোর্টের রুলিন থাকা সত্বেও সারা দেশ থেকে বুদ্ধিজীবিদের গ্রেফতার করা হয়েছে, মাও বাদে বিশ্বাস করেন, এই অজুহাতে। বোম্বে হাইকোর্ট তো, মার্ক্সের আমলে লেখা লিও তলস্তয়ের বই 'যুদ্ধ ও শান্তি' কে আদালতে সামিল করা হয়েছে, বলে 'বুদ্ধিজীবিকে' তিরস্কার করেছেন। সে পুস্তক তো আমার আলমারিতে অন্ততঃ তিন কপি রয়েছে। ভেবে কুল পাচ্ছি না কি খবে। (খ) রাজস্থানে তো, লিঞ্ছিং এক হত্যাকে, হত্যা হিসেবেই দেখতে আপত্তি জানিয়েছেন এবং সব আসামীকে সগৌ্রবে মুক্তি দিয়েছেন। (গ) মধ্যপ্রদেশে, একজন সাম্যবাদী ৩৭০ ধারার প্রয়োগের বিরুদ্ধে একটি পুস্তক বিক্রি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পরেছেন।
------  বিষয়টা এখানে কোন পরিবার নয়। যে সময়ে ভারতকে,  উৎপাদন  নীতি এবং কাঠামোর দিক দিয়ে, স্তালিন-নেহেরু চুক্তি উল্টো যাত্রাকেই ভোটে পাশ করিয়ে নেওয়া হয়েছে, এমন এক মননসত্বায় দেশকে চুবিয়ে মারা হয়েছে, যেখানে 'বিজ্ঞানের উপর অধিবিদ্যার লাঠি চলানাকে, ইতিহাসের বিশ্ব-বিক্ষাত ব্যক্তিত্ব সমুহহে লাঠি মেরে তারানোর নীতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হচ্ছে না,
-----   তখন একটা কথাই বলতে হবে উদারবাদের দিন খতম।রেনেঁশা যে তলানীতে গিয়ে আছড়ে পরছে, সেখানে উদারবাদীরা এক'শ ক্রেন লাগিয়েও তুলতে পারবে না। সেখানে  পালটা কথাটি - কারখানা বা অফিস গেট কিংবা  খনিমুখ থেকেই উঠে আসবে বলে নিশ্চিত মেনে নীতে হবে। 

----   এই পরিস্থিতিতে, উদারবাদীদের মধ্যে যে সব ব্যক্তি বা পরিবার কিঞ্চিতাধীক 'মেহনতের' সাথে থেকেছেন বা মেহনতিদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন, সে সব ব্যক্তি কিংবা পরিবারই - 'মিথ্যা' বলতে চাইলেও, কিঞ্চিতাধীক সত্য এবং মেহনতের সাথে থাকবেন। নেহেরুর কালে, উনি ছাড়া কে এমন ছিলেন যারা মেহনতের কিঞ্চিত প্রশ্রয় দিয়েছেন। তিনি ছিলেন তাই, কংগ্রেসের মধ্যে থেকেও কমিউনিষ্ট কিংবা সমাজন্ত্রীরা কিছুটা জোট বেধে থাকতে পেরেছেন। 
----- এই সুত্রেই বুঝতে হবে, এক'জন দু'জন কিঞ্চিত উদারবাদীতায় বেচে থাকাটা সমাজের অস্ত্বিত্বের প্রশ্নে নিশ্চিত ভালো, দলের মধ্যেও কাউকে অবলম্বন করে যদি কিছু মানুষ টিকে থাকেন সেটাও ভবিষ্যতের দিক থেকে ভালো।
----- কিন্তু যারা সেটা মানেন নাই, উদারবাদীতার হাতে সাম্য কিংবা মেহনতিদের অস্তিত্বই যখন দূর অস্ত
----- তখন এমন কল্পনাম স্বপ্নবিলাশ হতে বাধ্য -  যেন এদের হাত ধরে - অর্থনীতিতে,জ্ঞানে,  রাজনীতিতে সংস্কৃতিতে সমাজ আবার সংগিতময় কবিতা হয়ে উঠতে পারবে এবং সেই ছায়াপথে মা নুষ সেই কবিতাকে অন্তরের  রাজ সিংহাসনে রেখে নিজেকে রুপ-সৌন্দর্য্যের অধিস্বর বলে উপভোগ করতে পারেব। 
কাজেই, সাম্যই যে শেষ গতি এবং সাম্য যদি হয়, পুজিতান্ত্রিক সম্পর্কের  মানবিক উত্তোরনের প্রথম ধাপটাই হোল 'সাম্য'  এবং সেখানে উদারবাদের পতনের পর , sine  Labor stands the only  vehicle  for both the  highest form of labor technique and its social behavior, hence the communism
----- কারখানা বা অফিস গেট, কিংবা খনি বা বন্দরের মুখই হবে  সামাজিক প্রগতির  অভিমুখ।

এই সুত্রগুলি থেকে উপরের শিরোনামায় পৌছুনোর চেষ্টা করতে হবে মেহনতের ভিকিল্ বা বাহক হিসেবে শ্রমিক শ্রেনীকে। সেখানেও ইতিহাসের সেই নিয়মটা মানতে হবে, যা মেনে উদারতন্ত্র এককালে বিশ্বের অধিস্বর হয়েছিলো।  
 সমাজ বিকাশের যে ধাপে গিয়ে, উদারবাদীদের স্বার্থ  রেনেশাকেঁ এগিয়ে দেওয়ার পরিনতির মধ্যে বিরোধ দেখা দিলো এবং রেনেশার যাত্রাকে বন্ধ করে দিয়েই, অতি-দক্ষিনী  নিধনের নামে, আকাশে গদা ঘুরাতে শুরু করলো
-------- সেখান থেকেই  রেঁনেশাকে এগিয়ে চলার উদারবাদী স্খালন সংশোধনের পথেই মেহনতিদের গনসত্বার সাথে একাত্ম হওয়ার সংগ্রাম পরিচালনায় সারথীর দায় মাথায় নেওয়া প্রয়োজন হবে।

এ যাত্রাপথ তো অতীতের সব সামাজিক উত্থান থেকে একেবারে পৃথক, ইতিহাসের একেবারে পেছন দিকটাকে
----- উৎপাদনের সামাজিক চরিত্র সত্বেও বন্ঠনের চরিত্রকে ব্যক্তিগত লুন্ঠনের আধারটিকে উলটে দেওয়ার সংগ্রামের পথ। অতীতে শারিরীক সংঘাত কিংবা গায়ের জোরে দাবিয়ে রাখার নীতির একেবারে উল্টো পথ। 
'পায়ের নিচে মেহনতের আত্মমর্য্যাদা বিসর্জন দেওয়া করাতে বাধ্য করার পর, ছিটে ফোটা (পুজিতন্ত্রের ভাষায় Tinkling content of exploitation', মেহনতিদের মধ্যে ছিটিয়ে দেওয়ার 'উদারবাদী দয়া' নীতির সম্পুর্ন বিপরীত ধারা।

এখানেই বলা হচ্ছে নতুন পথের নিরবিচ্ছিন্নতার কথা, শ্রমিকদের রাজমুকুটের নব নির্মানে,  রাজনৈতিক এবং ভাবাদর্শগত প্রশিক্ষনের বিষয়টিকে ময়দানী সংগ্রামের সাথে একাত্মকরার নিরিবিচ্ছিন্ন করার কথা, যাকে লেনিন বল্লেন নিরবিচ্ছিন্ন বিপ্লব।  শেষমেষটিকেও 
----- সংগ্রামের এই নিরবিচ্ছিন্নতার সাথে যুক্ত করে দেখানো হোল লেনিনবাদে। সেটা কী? স্তালিন বোঝালেন, সেটি হোল - রেনেশার মুক্তি। রেনেশার মুক্তি
-----  উদারবাদী বিশ্বাসঘাতকতার পর,শ্রমের হাত ধরে রেনেশার মুক্তি।
স্বাভাবিকভাবে বুঝতে হোত, এই মুক্তি অর্থনীতিকে বন্ঠনের সন্তুললনের শৃ্ংখলায় এনে মুক্তি, অনুরুপভাবে প্রকৃ্তিকে মনুষ্য উৎপাদন কাঠামোর সন্তুলনে এনে প্রকৃ্তি এবং উৎপাদন কাঠামোর সৃজনমুখিনতার মুক্তি।
এই মুক্তি শ্রমের দাসত্ব থেকে মুক্তি। এই মুক্তি হোল নারীকে বানিজ্যিক পন্যের বিজ্ঞাপন হিসেবে পণ্য বানিয়ে দিয়ে, তাকে সামাজিকভাবে ভোগ্য বানিয়ে দেওয়ার দাসত্ব থেকে মুক্তি।

এই সুত্রেই আরো একটি বিষয়কে, সাম্যবাদী এবং শ্রমিক থেকে উঠে আসা নেতাদের বুঝে নিতে হবে
------- আদিম সাম্য কিংবা অভিজাত তন্ত্রের দাসত্ব থেকে সামন্তবাদীরা যদি , বিশ্বে সামাজিকভাবে উৎপাদকে ব্যক্তিগতভাবে ভোগ করাকে সামাজিকভাবে স্বিকার করিয়ে নেওয়ায়, 'বিশ্বাস' নামক একটা আদিম অনুরননকে ব্যবহার করে থাকে অতীত থেকে পাওয়া নিজ 'বিশ্বাসের কারনে, পুজিতন্ত্রিরা 'সত্যটা' যে উল্টো সেটা জেনে বুঝেও, 'অতীতের বিশ্বাস'কে লৌহদৃঢ় নিয়মে বদলে দেওয়ার পথেই 'রেনেঁশার' গংগাযাত্রা করিয়েছেন।
সে কারনেই মেহনত যখন অপ্রাসংগীক হয়ে যাওয়া উদারবাদীদের হাত থেকে, যখন  'শক্তি' বা 'রাষ্ট্রের' হাল নিজের হাতে নেবেন,
---- সত্যটাকে নতুন করে আবিস্কার করবেন। অভিজাততন্ত্র থেকে গড়িয়ে আসা 'বিশ্বাস গুলিকে' ভৌত এবং ফলিত বিজ্ঞানের আগুনে যাচাই করে নিয়ে, যতটুকু 'সত্য' বলে মেনে নেবেন, গ্রহন করবেন, বাকি টুকু 'ছোবরা' হিসেবে পরিত্যাগ করবেন
----- যুগপদ মানবিকতার ইতিহাসের সত্যকে  ইতিহাসের আলোতেই নতুন করে আবিস্কার করবেন।
এই সুত্রেই শিরোনামার শব্দ বন্ধনীকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। এই বন্ধনীর মতে মেহনতিদের 
------ একপ্রান্তে ভৌত বিজ্ঞানের অভিমুখটিকে বিজ্ঞানের ইতিহাসে, একেবারে পেছনে গিয়ে  নিউটনের মধ্যাকর্ষন থেকে, ডারউইনের প্রান্তিতত্ব থেকে ইতিহাসের শ্রীমোদি পর্য্যন্ত অন্বেষন করেই,
-----  ইতিহাসের সম্পর্কগুলিকে দ্বান্দ্বিক প্রকৃয়া চিহ্নিত করতে করতেই 
আজকের সত্যে পৌছুনো প্রয়োজন হবে।
কার্ল মার্ক্সের আবিস্কারটাই , মানুষকে 'বিশ্বাসতন্ত্র' থেকে যুক্তি এবং বিজ্ঞানে উত্তোরন ঘটিয়ে ইতিহাসের মানবিকতার উৎসপথ কে
খুজে পাবে । এইভাবে অতীত থেকে বর্তমান পৌছে, বর্তমান ধরে অতীতের বিশ্লেষ করেই, নতুনের পথ চিহ্নীত করবে। (ক্রমশ)
 
Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours