প্রিয়াঙ্কা সরকার, লেখিকা, বর্ধমান:
রটেছে বদনাম, আলগা হয়েছে বন্ধন। একটু আঁচ আলগা হতেই রাণু শরীর বেয়ে অসাড়তা, অপমান কান্না দেয় বৈকি! রবীন্দ্রনাথ তখন পেরুর দিকে যাত্রা করেছেন। মনের চিন্তন তো শরীরেও ক্রিয়া করে। হৃদযন্ত্রে অকস্মাৎ সমস্যা। তার তখন একমাত্র সঙ্গী লিওনার্ড এলমহার্স্ট। আর সেইমুহুর্তে বিশ্রামের ঘরে স্থান করে নিলো ওকাম্পোর আধার৷
ভিক্তোরিয়া আবির্ভাব তখন নিঃসঙ্গ। চৌতিরিশের জীবনে তেষট্টির মননশীল ডাক। গভীর কৃতজ্ঞতায় সে তখন বিক্ষত বিবাহিত জীবনে সম্পৃক্তের যাপনে অনুসঙ্গ করে অতিবাহিত করছে, তাঁর প্রেম, তাঁর নির্বেদ৷
Reading Tagore, thinking of Tagore, waiting for Tagore.
বিদুষী ভিক্তোরিয়া চরম সংকটে৷ তাকে স্পর্শ করা যায় আর প্রেমের আদরে ভরে দেওয়া যায় কিন্তু, ভূমি দিচ্ছে না প্রত্যয় ; না তো প্রুস্ত থেকে রাস্কিন থেকে গাঁধি, আশ্রয় দিতে পারেনি - বিপন্ন মনের করণ৷ বড়ো ব্যথার বুকে মাথা রেখে আজ প্রশ্ন করছে প্রশ্নের উত্তর আর বিশ্বাসের বীজ। অস্তিত্বের যন্ত্রণা ছুঁয়ে আছে পথ, বিশ্বাসের মধুর রসে ধারাপাত নাকি আশ্রয়৷ বাসনাব্যাকুল লাতিন নারীর কি চেয়েছিলেন তোমায়!! কি বলেছিলেন, প্রেমিক! উপদ্রেষ্টা নাকি গুরুদেব। এ যেন এক অনিকেত পারদধর্মিতা শ্বেতপোশাক ধারিণী কন্যা। সে নতজানু হয়েছে বহুবার। আচ্ছা কেন! এ কি বাসনার অভিমান! নতজানু নিবেদনে বীজ নিহিত হলো ; কল্পনারা ঘুমিয়ে থাকে, ক্ষণে ক্ষণে মাধবীরাত্রির কান পাতা আশ্বাস - কন্ঠস্বর।
সময়টা ১৯২৪; রবীন্দ্রনাথ তখন দ্বিধাবোধ করছেন। সুগন্ধির হাওয়ায় গোধূলিরাঙা দূর বঁধুর সন্ধান। কি বার্তা আসবে উদ্ভাসিত অন্তরের দিক বেয়ে! সে আসবে! প্রথম দর্শনেই প্রেম; এলেন, জয় করলেন সহজেই৷ মনে হলো, এতো নতুন নয়! সান ইসিদ্রোর অপূর্ব বসন্ত মনে পরে গেলো। শরীর নয়, বাঙ্ময় দুই হাতের সান্নিধ্যে শরীর অবশ হলো। কিন্তু, বুয়েনোস আইরেসের অসুস্থতায় রবীন্দ্রনাথকে যে চলে যেতে হবে। মিরালরিও "নামক বাড়ি ঠিক হলো। এই তো সেই স্বর্গ সুখ ; যাপনের বুকে পরিপূর্ণের পান তৃষ্ণা৷
কবি, তখন অর্ঘ্যদান করলেন। এ যে, বিদেশী ফুল, হাসিতেই তো পরিচয়। প্রবাসের নিবেদনে আরো একবার, প্রবাসের পরিপূর্ণ নারী। এতো সুধা মধুর। স্নিগ্ধ হাসে অভ্যর্থনা...এ আলোকিত বাণী, কেবল তার। এই অভিসারিকার বাণীহীন প্রতীক্ষার জাগরণে মহাসমুদ্র আহ্বান।
"কোথা তুমি, শেষবার যে ছোঁয়াবে তব স্পর্শমণি আমার সংগীতে ;
মহানিস্তব্ধের প্রান্তে কোথা বসে রয়েছ রমণী নীরব নিশীথে।"
কবির বুকে তখন তৃষ্ণা৷ রবীন্দ্রের দীর্ঘ জীবনযাত্রা৷ বিচিত্রের দ্বারে দীপখানি তুলে কবিই তো চিনেছে তাঁকে। তবে একি প্রেম থেকে অন্য প্রেমের ক্রমান্বিত যাত্রা, ব্যক্তিমূল্য যে ছায়াচ্ছন্ন উপলব্ধি- নারী প্রেম আজ । ভিক্তোরিয়াও কি চুপ! প্রাণে প্রাণ ছুঁলেই তো আরো এক প্রাণ কথা বলে৷ সময়ের আড়ষ্টতায় বিব্রত হয়েই চাহিদার বিপরীতে সাড়াহীন পদস্খলন। উদ্দাম জন্তুর মতো বিকারের হাতে গুরুদেব ধরা দিলেন না৷ তাই একবার ক্ষোভ আসবে না, এটা তো হয় না। কোথাও বলে গেলেন...চিঠির শব্দে,
"I have gone through such joy and such sufferings all these days. joy because I felt near You, suffering because You ignored my nearness!"
মায়াবিনী রঙে রাঙিয়ে আছে ভালোবাসারা৷ যুগান্তরের যবনিকা আজ যে ভাষাহীন। বিহ্বলতার চোখের রঙিন আবেশে রিক্ত অনাদর, অবহেলা।তবুও সংশয়ের দানা বাঁধা বেদনায় সম্ভ্রম দূরত্ব,আজ সজাগ।
রটেছে বদনাম, আলগা হয়েছে বন্ধন। একটু আঁচ আলগা হতেই রাণু শরীর বেয়ে অসাড়তা, অপমান কান্না দেয় বৈকি! রবীন্দ্রনাথ তখন পেরুর দিকে যাত্রা করেছেন। মনের চিন্তন তো শরীরেও ক্রিয়া করে। হৃদযন্ত্রে অকস্মাৎ সমস্যা। তার তখন একমাত্র সঙ্গী লিওনার্ড এলমহার্স্ট। আর সেইমুহুর্তে বিশ্রামের ঘরে স্থান করে নিলো ওকাম্পোর আধার৷
ভিক্তোরিয়া আবির্ভাব তখন নিঃসঙ্গ। চৌতিরিশের জীবনে তেষট্টির মননশীল ডাক। গভীর কৃতজ্ঞতায় সে তখন বিক্ষত বিবাহিত জীবনে সম্পৃক্তের যাপনে অনুসঙ্গ করে অতিবাহিত করছে, তাঁর প্রেম, তাঁর নির্বেদ৷
Reading Tagore, thinking of Tagore, waiting for Tagore.
বিদুষী ভিক্তোরিয়া চরম সংকটে৷ তাকে স্পর্শ করা যায় আর প্রেমের আদরে ভরে দেওয়া যায় কিন্তু, ভূমি দিচ্ছে না প্রত্যয় ; না তো প্রুস্ত থেকে রাস্কিন থেকে গাঁধি, আশ্রয় দিতে পারেনি - বিপন্ন মনের করণ৷ বড়ো ব্যথার বুকে মাথা রেখে আজ প্রশ্ন করছে প্রশ্নের উত্তর আর বিশ্বাসের বীজ। অস্তিত্বের যন্ত্রণা ছুঁয়ে আছে পথ, বিশ্বাসের মধুর রসে ধারাপাত নাকি আশ্রয়৷ বাসনাব্যাকুল লাতিন নারীর কি চেয়েছিলেন তোমায়!! কি বলেছিলেন, প্রেমিক! উপদ্রেষ্টা নাকি গুরুদেব। এ যেন এক অনিকেত পারদধর্মিতা শ্বেতপোশাক ধারিণী কন্যা। সে নতজানু হয়েছে বহুবার। আচ্ছা কেন! এ কি বাসনার অভিমান! নতজানু নিবেদনে বীজ নিহিত হলো ; কল্পনারা ঘুমিয়ে থাকে, ক্ষণে ক্ষণে মাধবীরাত্রির কান পাতা আশ্বাস - কন্ঠস্বর।
সময়টা ১৯২৪; রবীন্দ্রনাথ তখন দ্বিধাবোধ করছেন। সুগন্ধির হাওয়ায় গোধূলিরাঙা দূর বঁধুর সন্ধান। কি বার্তা আসবে উদ্ভাসিত অন্তরের দিক বেয়ে! সে আসবে! প্রথম দর্শনেই প্রেম; এলেন, জয় করলেন সহজেই৷ মনে হলো, এতো নতুন নয়! সান ইসিদ্রোর অপূর্ব বসন্ত মনে পরে গেলো। শরীর নয়, বাঙ্ময় দুই হাতের সান্নিধ্যে শরীর অবশ হলো। কিন্তু, বুয়েনোস আইরেসের অসুস্থতায় রবীন্দ্রনাথকে যে চলে যেতে হবে। মিরালরিও "নামক বাড়ি ঠিক হলো। এই তো সেই স্বর্গ সুখ ; যাপনের বুকে পরিপূর্ণের পান তৃষ্ণা৷
কবি, তখন অর্ঘ্যদান করলেন। এ যে, বিদেশী ফুল, হাসিতেই তো পরিচয়। প্রবাসের নিবেদনে আরো একবার, প্রবাসের পরিপূর্ণ নারী। এতো সুধা মধুর। স্নিগ্ধ হাসে অভ্যর্থনা...এ আলোকিত বাণী, কেবল তার। এই অভিসারিকার বাণীহীন প্রতীক্ষার জাগরণে মহাসমুদ্র আহ্বান।
"কোথা তুমি, শেষবার যে ছোঁয়াবে তব স্পর্শমণি আমার সংগীতে ;
মহানিস্তব্ধের প্রান্তে কোথা বসে রয়েছ রমণী নীরব নিশীথে।"
কবির বুকে তখন তৃষ্ণা৷ রবীন্দ্রের দীর্ঘ জীবনযাত্রা৷ বিচিত্রের দ্বারে দীপখানি তুলে কবিই তো চিনেছে তাঁকে। তবে একি প্রেম থেকে অন্য প্রেমের ক্রমান্বিত যাত্রা, ব্যক্তিমূল্য যে ছায়াচ্ছন্ন উপলব্ধি- নারী প্রেম আজ । ভিক্তোরিয়াও কি চুপ! প্রাণে প্রাণ ছুঁলেই তো আরো এক প্রাণ কথা বলে৷ সময়ের আড়ষ্টতায় বিব্রত হয়েই চাহিদার বিপরীতে সাড়াহীন পদস্খলন। উদ্দাম জন্তুর মতো বিকারের হাতে গুরুদেব ধরা দিলেন না৷ তাই একবার ক্ষোভ আসবে না, এটা তো হয় না। কোথাও বলে গেলেন...চিঠির শব্দে,
"I have gone through such joy and such sufferings all these days. joy because I felt near You, suffering because You ignored my nearness!"
মায়াবিনী রঙে রাঙিয়ে আছে ভালোবাসারা৷ যুগান্তরের যবনিকা আজ যে ভাষাহীন। বিহ্বলতার চোখের রঙিন আবেশে রিক্ত অনাদর, অবহেলা।তবুও সংশয়ের দানা বাঁধা বেদনায় সম্ভ্রম দূরত্ব,আজ সজাগ।
অনবদ্য লেখনী শৈলী। মুগ্ধ হলাম তোমার লেখায় সুধী। "কোথা তুমি, শেষবার যে ছোঁয়াবে তব স্পর্শমণি আমার সংগীতে ;
ReplyDeleteমহানিস্তব্ধের প্রান্তে কোথা বসে রয়েছ রমণী নীরব নিশীথে।। "
খুব সুন্দর লাইন পড়ে খুব ভালো লাগল। তোমার প্রতিদিন লেখা চাই। এই ভাবেই লিখতে থাকো প্রতি মুহূর্ত।