সহেলী চক্রবর্তী, ফিচার রাইটার, কলকাতা:
এই
বাংলা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের আঁতুড়ঘর, সশস্ত্র বিপ্লবের কেন্দ্রবিন্দু।
নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর শহরের আমিন বাজার এলাকায় অস্ত্রাগার মাঠের পাশে
ব্রাহ্মবাড়ি আছে, যা আসলে অগ্নিযুগের বিপ্লবী বীণা দাসের বাড়ি।
বীণা
দাস বাংলা ও বাঙালির গর্ব, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে উজ্জ্বল
একটি নাম। তিনি ছিলেন বিপ্লবী নারী সংগঠন 'ছাত্রী সংঘ'র সদস্যা। ১৯৩২ সালের
৬ ই ফেব্রুয়ারী বাংলার তৎকালীন গভর্নর ব্রিটিশ সাহেব স্ট্যানলি জ্যাকশনকে
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভোকেশন হলে গুলি করে হত্যা করতে চেষ্টা করেন।
তিনি লক্ষ্যভ্রষ্ট হন, ধরা পড়েন, ৯ বছরের কারাদণ্ড হয়। ১৯৩৯ সালে আগাম
মুক্তি পেয়ে তিনি জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনে সক্রিয়
ভাবে অংশগ্রহণ করেন। আবারও জেলে যান, ১৯৪২-১৯৪৫ সাল পর্যন্ত তিনি জেলেই
কাটান। পরবর্তী কালে তিনি বেঙ্গল প্রভিন্সিয়াল লেজিসলেটিভ এসেম্বলির সদস্যা
হন এবং স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলার বিধানসভার বিধায়িকা হন।
বীণা
দাসের জন্মদিন ছিল গত ২৪ শে আগস্ট। কিন্তু তিনি অবহেলিত, বাঙালি তাঁকে মনে
রাখেনি। দুঃখের কথা এলাকার মানুষ সেভাবে বীণা দাসের নাম জানেন না এবং
বাড়িটিও চেনে না। এ দায় সরকারের, এ দায় বাংলার সব রাজনৈতিক দলের, এ দায়
আপামর বাঙালির। তাঁর বাড়িটি অযত্ন ও অবহেলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বীরাঙ্গনা বাঙালি নারীদের কথা বাংলা তথা
ভারতের মানুষের কাছে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা আশু কর্তব্য।
রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপে বাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণ খুব জরুরী।
বাঙালিকে
নিজের নিজের ইতিহাস জানতে হবে, স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে হবে। বাংলার আনাচে
কানাচে কত মণি-মানিক্য অযত্নে পড়ে আছে- সেগুলো সংগ্রহ করে যথাস্থান দিতে
হবে বাঙালির মনে। অগ্নি যুগের বিপ্লবী বীণা দাসকে যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে
হবে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours