ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ   কিন্তু  নিয়তির  কি  নিষ্ঠুর  পরিহাস! রূপেন্দ্রনাথ  ' নারী  শিক্ষা '' প্রসারের  জন্য  যখন  সকলের  কাছে  কোন  সহযোগীতা  না  পেয়ে  হতাশাচ্ছন্ন  তখন  চিকিৎসা  করতে  এসে  সাক্ষাৎ  পেলেন  এক  পরম  সুহৃদ  যিনি  আধুনিকতায়  রূপেন্দ্রর  থেকে  কয়েক  যোজন  এগিয়ে! তিনি  তাঁরই  গুরুদেব   জগন্নাথ  তর্কপঞ্চানের  ভাগিনেয়  ঘনশ্যাম  সার্বভৌম! তিনি  বর্তমান  হিন্দু সমাজের  কুসংস্কারগুলির  ঘোরতর  বিরোধী  ছিলেন! নারী শিক্ষায়  সপক্ষে  জোরালো  সমর্থন  ছিল  তাঁর! তিনি  পারিবারিক  অশান্তির  কারনে  মাত্র  চল্লিশ  বছর  বয়সে  আত্মহত্যা  করেন! মৃত্যুর  পর  তাঁর  দ্বিতীয়া  স্ত্রী  যাতে  সহমরনে  বাধ্য  না  করা  হয়  তার  জোরালো  যুক্তি  দিয়ে  বন্ধু রূপেন্দ্রকে  একটি  পত্র  লেখেন! ঐ  পত্রে  অনুরোধ  করা  হয়  তাঁর  শ্রাদ্ধ  শান্তি  যেন  তাঁর  দ্বিতীয়া  স্ত্রী  করেন!
       
    তাঁর  ইচ্ছানুসারে   জগন্নাথ  তর্ক পঞ্চাননের  বাড়ীতে  তাঁর  দ্বিতীয়া  স্ত্রী  তাঁর  শ্রাদ্ধ  করেন! এটিই  সম্ভবতঃ  প্রথম  কোন  স্ত্রী  তাঁর  স্বামীর  শ্রাদ্ধ  করার  প্রথম  ঘটনা!
          এই  শ্রাদ্ধ বাসরেই হঠাৎ পিতা-পুত্রীর  প্রথম  সাক্ষাৎ  ঘটল! রূপেন্দ্র  চিন্তান্বিত,তিনি  বলিকাদের  জন্য  যে  শিক্ষায়তন  গড়বেন, সেখানে  কি  শুধুই  ব্রাক্ষ্মন  কন্যারাই  পড়ার  অধিকার  পাবে? তাহলে  শুদ্র  কন্যারা  কি  শিক্ষার  সুযোগ  পাবে  না?
      রূপেন্দ্রর  চিন্তাসূত্র  ছিঁড়ে  একদল  ছোট ছোট  প্রজাপতির কলতানে!  বালিকাদের  বয়স  কত  হবে? তিন  চার  বছর! মনে  হয়  যেন  এক  ঝাঁক  প্রজাপতি! এর  মধ্যে  একটি  বালিকাকে  রূপেন্দ্রর  অনেক  দিনের  চেনা  মনে  হল! নাকে  মুক্তোর  নোলক,কপালে  টায়রা, গলায়  সোনার  হার, যেন  ফুটফুটে  পরী! রূপেন্দ্র  বাকিকাকে  দেখে  চমকে  উঠল, গৌরবর্না, দীঘলকালো  চোখ,দেবীপ্রতিমার  মতো  মুখ  মন্ডল! এতো  খুব  চেনা  মনে  হয়  তাঁর...রূপেন্দ্র  জিজ্ঞাসা  করেন," কি  চাই মা,?"
    "  তুমি আমাদের  সাথে  খেলবে?" বলেই  খিলখিল  করে  হেসে  উঠল  বালিকার  দল, যেন  ঝর্না  বয়ে  গেল! এই  হাসিও  তার  খুব  চেনা!
   " কি নাম  তোমার?" রপেন্দ্র  জিজ্ঞাসা  করেন
"হটী " উত্তর  দেয়  মেয়টি!                             (চলবে)




Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours