ব্রহ্মচারী শুভ্র, রামকৃষ্ণ আশ্রম, কলকাতাঃ

আত্মীয় বিয়োগের ক্ষত যে কত গভীর তা বিষাদ্গ্রস্ত ব্যক্তি ধারণা করতে পারেন না , কিন্তু
উপযুক্ত সুচিকিৎসক যখন তাকে সুস্থ করে তুলেন তখন তার বুঝিতে বাকী থাকে না যে এমন সুচিকিৎসক
ভিন্ন ইদ্রিশ রোগের উপশম হয় না। দ্বিতীয়বার শ্রীরামকৃষ্ণ সকাশে এসে গোপাল দাদা তাঁর ভালবাসার
টানে বাঁধা পরলেন। ঠাকুরকে তিনি তার ব্যাথার ব্যথী রূপে পেলেন ও তাঁর কৃপায় তিনি জানলেন যে মায়া
মরীচিকায় বদ্ধ জীবের পক্ষে বৈরাগ্যই একমাত্র মহৌষধ। তিনি আরো জানলেন যে সংসারের সকল
সম্বন্ধই মায়িক, একমাত্র শ্রীগুরুর যে চরণ স্পর্শ মানবক্কে এই ক্ষণভঙ্গুর সংসারের পরপারে নিয়ে
জায়,উহাই জীবনের একমাত্র সম্বল ও ভরসা। তাই গোপালদাদা এখন থেকে শ্রীরামকৃষ্ণেরই আশ্রয়
নিলেন। এই ঘটনায় শ্রীশ্রীঠাকুরের পুত সান্নিধ্যের মহিমা ছাড়াও গোপাল দার শুদ্ধ সত্ত্ব ভাবেরও
প্রমান পাওয়া যায়। কারণ স্ত্রী বা আত্মীয় বিয়োগ সংসারে অনেকেরই হয়, কিন্তু তার জন্যে সংসার ত্যাগ
করে ভগবানের জন্যে উন্মত্ত হওয়া সংসারে বড়ই বিরল। ঠাকুরের সাথে গোপালদার পরিচয় ক্রমে গভীর
শ্রদ্ধা ভক্তিতে পরিণত হওয়ায় গোপাল দা গৃহত্যাগ করে লাটু মহারাজের সহযোগে শ্রীরামকৃষ্ণ ও
শ্রীশ্রীমায়ের সেবায় আত্ম নিয়োগ করলেন। পুঁথিকার এই ঘটনার অপুর্ব বর্ণ্না করেছেন—
“রামকৃষ্ণ ভক্ত এক মহা-ভাগ্যবানে, হাজির করিয়া দিল প্রভু বিদ্যমানে।
গোপাল তাঁহার নাম উপাধিতে সুর, বয়সেতে পঞ্চাশত নহে বহুদূর।।
কাগজের বিকিকিনি আগে গুজরান, চীনিয়াবাজারে এক নিজের দোকান।।
হালে হইয়াছে হারা পত্নী প্রিয়তমা, সংসারীর সার বস্তু পরাণ প্রতিমা।।
সর্বদা উদাস মন রহে দুঃখভরে, কবিরাজ একদিন বলেন তাঁহারে।।
দক্ষিণশহরে আছে সাধু একজন, অবহেলে শান্তি মেলে কৈলে দরশন।।
গোপাল বিশ্বাস সহ আইলা দেখিতে, শান্তিদাতা রামকৃষ্ণ মহেন্দ্রের সাথে।
ধরাছুঁয়া কিছু নাহি দিলা ভগবান, গোপাল সেদিন কৈল ভবনে পয়ান।।
পথে কয় কবিরাজে হাস্য সহকারে, ভাল সাধু দেখাইলে ভুলিব না আর।
তদুত্তরে কবিরাজ বলেন তাঁহায়, একদিনে মহাজন বুঝা নাহি যায়।
কিছুকাল বার-বার কৈলে দরশন, অবশ্য পাইবে বার্ত্তা বুঝিবে তখন।।
পর দরশণে আর আসিতে না চায়, বহু জেদে কবিরাজ আনিল তাঁহায়।।
সেদিন দেখিলা কিবা শ্রীপ্রভুর ঠাঁই,,মুগ্ধ মন যায় আসে বন্ধ নাহি আর।।
পরিশেষে উদাসীন হইয়া সংসারে, শ্রীপদ সেবনে রহে প্রভুর গোচরে।।
সেবা ভক্তি প্রিয় তাঁর চরণে প্রনাম, বয়স্ক সেহেতু বুড়ো গোপাল নাম।।
গোপালদার খুব ইচ্ছে ছিল যে তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে দীক্ষা নেবেন, কিন্তু সাধারন অর্থে
গুরুগিরি ঠাকুর করতেন না বলে গোপালদার মনের ভেতর এক অভাববোধ কাজ করছিল।ঠাকুরের চতুস্পার্শে
বহু লোক সমাগমের জন্যে তিনি শ্রিশ্রীঠাকুরকে তাঁর মনের ইচ্ছার কথাও জানাতে পারছিলেন না। একদিন
দ্বিপ্রহরে আহারের পূর্বে ঠাকুরকে একাকী ভ্রমনরত দেখে গোপালদা তাঁর চরণে মনের অভিপ্রায় নিবেদন
করলেন। দূর থেকে লাটু মহারাজ দেখলেন যে, গোপালদা ঠাকুরের চরণ স্পর্শ করে খুব কাঁদিতেছেন।

কিছুক্ষণ পর শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁকে হাত ধরে তুললেন। এর পর কি হল তা লাটু মহারাজের অজ্ঞাত। কিন্তু এর
পর থেকে প্রতি সন্ধ্যায় গোপালদাকে বিষ্ণু মন্দিরে কীর্তনরত দেখা যেত। কথামৃত পাঠে জানা যায় যে
১৮৮৫ খৃষ্টাব্দের ১১ই ডিসেম্বর কাশীপুরে করুণাবতার ঠাকুর নিজে থেকেই গোপালদাকে কৃপা করেছিলেন।
আরেকদিন দুই সেবক গোপালদা ও লাটু মাহারাজকে নিয়ে ঠাকুর মজা করেছিলেন।সেদিন তিনি লাটু
মহারাজকে বলেন ‘’এখানকার কথা মানতে হবে।‘ সরল কাটু মহারাজ ঠাকুরকে এখাঙ্কার কথা বুঝিয়ে দিতে
বললেন। ঠাকুর গোপালদাকে ডেকে বললেন যে এ লাটু মহারাজের কেমন আব্দার,এখাঙ্কার কথা কি বোঝানো
যায়! গোপাল দা তদুত্তরে বলেন যে আপনার তো জানা আছে, বলে দিন। গোপালদাকে বিপক্ষে যোগ দিতে
দেখে বললেন “ওগো, তোমার একি রকম কথা, এখানকার কথা কি জানিয়ে দিতে আছে?” গোপালদা বললেন
এখানকার কথা জানার জন্যেই তো আমরা সবাই এসেছি, না বললে জানবো কি করে? হার মেনে স্মিত হেসে
ঠাকুর বললেন—“এখন এখানকার কথা নয়, সময় হলে একদিন তোমরা সব বুঝবে।“
গোপালদা খুব পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতেন ও অপরে তা থাকলে খুব আনন্দ পেতেন। ভগভদ ভাবে
বিভোর থাকলেও শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রতি কার্যে শৃঙ্খলা লক্ষিত হতো। তাই তিনি গোপালদার সেবা খুব
পছন্দ করতেন। কাশীপুরে ঠাকুরকে ঔষধ খাওয়ানোর ভার ছিল গোপালদার উপর।সেসময় ঠাকুরের
পার্ষদদের অক্লান্ত পরিশ্রম চলছে। একদিন ঔষধ খাওয়ানোর সময় পার হয়ে যাচ্ছে দেখে ঠাকুর হাত
নেড়ে জিজ্ঞাসা করলেন যে ওই বুড়ো লোকটি কোথায়। গোপালদা নিদ্রা মগ্ন শুনে ঠাকুরের খুব আনন্দ
হলো। তিনি বললেন – “ আহা, কত রাত জেগেছে, একটু ঘুমুক, তাঁকে আর জাগিও না , তুমি বরং ঔষধটা ঢেলে
দাও।“ শ্রীশ্রীমা ও তাঁর এই বুড়ো সন্তানের সাথে নিঃসঙ্কোচে কথা বলতেন, তাই গোপাল দা ডাক্তারের
কাছে ঠাকুরের বিশেষ পথ্য বানানোর প্রকৃয়া জেনে নিয়ে পরে তা মা কে বলে দিতেন।রোজ গোপালদা নিমজল
দিয়ে ঠাকুরের গলার ক্ষত পরিস্কার করতেন।একদিন ওই সময় ঠাকুর উঃ উঃ করে উঠলেন। ঠাকুরের কষ্ট
গোপালদা নিজের শরীরে অনুভব করে বলকেন থাক, আর ধোয়াব না। অমনি ঠাকুর বলে উঠলেন, তুমি ধোয়াও,
আমার কষ্ট হচ্ছে না।
শ্রীশ্রীঠাকুরের উপদেশ শুনে ও সেবা করে নিজেকে কৃতার্থ মনে করলেও গোপালদার বৈরাগ্যপূর্ণ
মন সাধনার জন্য ব্যকুল হতো। সেজন্য কখনও কখনও তিনি নরেন্দ্রাদির সাথে দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে
তপশ্চর্যা করতেন। ১৮৮৪ খৃষ্টাব্দের ৫ই এপ্রিল দক্ষিণেশ্বরে থাকা কালে গোপালদার মনে তীর্থ
ভ্রমনের খুব ইচ্ছা হয়েছিল, তখন ঠাকুর তাঁকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে “যতক্ষণ বোধ যে ঈশ্বর সেথা সেথা,
ততক্ষণ অজ্ঞান,যখন হেথা হেথা তখনই জ্ঞান। ঠাকুর আরো বলেছিলেন “যা চায় তা কাছেই, অথচ লোক
নানা স্থানে ঘোরে। যাহোক কাশীপুরে থাকাকালে গোপাল দা একবার তীর্থ দর্শনে গিয়েছিলেন।কাশীপুরে
থাকাকালে একবার কলকাতায় গঙ্গাসাগর যাত্রী সাধু সন্ন্যাসীদের দেখে তাঁর মনে তাঁদের গেরুয়া বস্ত্র,
রূদ্রাক্ষের মালা ও চন্দন দেবার ইচ্ছা হলো। আন্যান্য সেবকদের মুখে এই কথা শুনে শ্রীশ্রীঠাকুর উহা
তাঁহার ত্যাগী ভক্তদের দিতে বললেন। কারণ তাঁদের অপেক্ষা উচ্চস্তরের সাধু জগতে বিরল।ঠাকুরের
নির্দেশানুসারে গোপালদা দ্বাদশখানি গেরুয়া বস্ত্র ও সমসংখ্যক রুদ্রাক্ষের মালা ঠাকুরকে দিলে তিনি
সেসব নরেন্দ্রাদি ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করলেন। রামকৃষ্ণ সংঘে এটি একটি স্মরনীয় ঘটনা, কারণ এর
মধ্যেই ভাবী ত্যাগী সংঘের বীজ ক্ষুদ্রাকারে নিহিত ছিল। ত্যাগী ভক্তদের যাঁরা সেদিন এগুলো লাভ করেন
তাঁদের নাম—নরেন্দ্র, রাখাল, যোগীন্দ্র, বাবুরাম, নিরঞ্জন, তারক, শরৎ, শশী, গোপাল, কালী ও লাটু
মহারাজ। বাকী একখানি পরদিন শ্রীযুক্ত গিরীশ ঘোষ গ্রহণ করেছিলেন। পুঁথিকার লেখেছেন—
হাতে ছিল টাকাকড়ি ইচ্ছা এবে মনে, বস্ত্র কিনে বিতরণ করেন সাধুজনে।
গঙ্গাসাগরের যাত্রী বহু এই কালে, অতিথি সন্ন্যাসী নাগা শহর অঞ্চলে।
প্রভুদেব দেখাইয়া সেবকের গণে, বলিলেন দাও যদি দাও এই খানে।
শুনিয়া গোপাল তবে প্রভুর বচন, কিনিয়া আনিল দ্বাদশ বস্ত্র মনের মতন।
বস্ত্রমালা একে একে গোপাল এখানে, হাজির করিয়া দিল প্রভু সন্নিধানে ।
সন্ন্যাসের উপযুক্ত একাদশ জন, প্রত্যেকে বসন মালা কৈল বিতরণ।

একখানি বস্ত্র বাকী থাকে অবশেষে, পরদিন দান কৈল শ্রী গিরীশ ঘোষে।
গৃহহীন ও আত্মীয় স্বজন হতে বিচ্ছিন্ন গোপালদার একমাত্র আশ্রয় ছিল শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁর
সেবক ও ভক্তগণ। তাঁর সকল প্রকাল সুখ দুঃখ অনুভুতি গুরু ভ্রাতাদের সাথেই বিজড়িত ও আবেদনস্থল
ছিল শ্রীগুরুর পাদপদ্ম। শ্রীশ্রীঠাকুরের দেহত্যাগের পর তাঁর কোন নির্দিষ্ট বাসস্থান ছিল না তাই
বরানগর মঠ স্থাপিত হলে তিনি সেখানেই চলে আসেন। কথামৃতের মতানুসারে সেখানেই ১৮৮৭ সালের ২১শে
ফেব্রুয়ারীর পূর্বে তাঁর সন্ন্যাস হয় ও নাম হয় স্বামী অদ্বৈতানন্দ। বরানগরে মঠ স্থাপিত হলেও গোপাল
দা প্রায়শঃ তাঁর অন্যান্য গুরুভ্রাতাদের ন্যায় তীর্থদর্শন বা তপস্যায় বেড় হতেন। এসময়ের পূর্নাঙ্গ
ইতিহাস আমাদের কাছে নেই। স্বামীজীর পত্রাবলী অনুসারে ১৮৮৮ সালে গোপালদা কেদার ও বদ্রিকাশ্রম
দর্শন করেন ও এখানেই গুরুভ্রাতা গঙ্গাধর মহারাজের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তারপর কিছুকাল তিনি
বৃন্দাবনধামে বাস করেন। ১৮৯০ খৃষ্টাব্দে মীরাটে গঙ্গাধর মহারাজের সাথে তাঁর পুনরায় দেখা হয় ও উভয়ে
একসাথে হরিদ্বার কুম্ভে যান। ১৮৯৪ খৃষ্টাব্দে তিনি কাশীতে বংশী দত্ত মহাশয়ের বাড়ীতে থেকে তপস্যা
করছিলেন। সেসময় কালীকৃষ্ণ মহারাজ, ও সচ্চিদানন্দের সাথে তিনি পঞ্চকোশী পরিক্রমা করেন।
১৮৯৬ সালেও তিনি কাশীধামে বংশী দত্তের বাড়ীতে থেকে তপস্যা করছিলেন। তাঁর সাথে বাস করা
জনৈক ব্যক্তি স্মৃতিচারন করেছেন যে সেখানে তাঁর প্রাত্যাহিক সাধনা ও জীবন প্রণালী অত্যন্ত সুশৃঙ্খল
ছিল। সকল কার্যে তিনি যেন ঘড়ির কাঁটার মতই চলতেন। প্রচণ্ড শীতের মধ্যেও প্রত্যহ অতি প্রত্যুষে
গঙ্গাস্নান করে শ্লোক পাঠ করতে করতে তিনি বাসাতে ফিরতেন। মাধুকরীর দ্বারা যা পেতেন তা দিয়েই তাঁর
গ্রাসাচ্ছাদন হত। সমস্ত বাহ্যিক বিষয়ে সম্বন্ধ শুন্য হয়ে তিনি সাধন – ভজনে নিমগ্ন থাকতেন।
এসময় পায়ে কাঁটা ফুঁটে তিনি অশেষ কষ্ট ভোগ করেন। ১৩-৮-৯৬ তারিখে শ্রীযুক্ত প্রমদাদাস
বাবুকে লেখা স্বামী শিবানন্দজী মহারাজের একটি পত্রে এর উল্ল্যেখ আছে।তিনি পত্রে প্রমদাদাস বাবুকে
গোপালদাকে সর্বতভাবে সাহায্য করতে লিখেছেন। সেসময় গোপালদা কুচবিহারের কালীবাড়ীর পেছনে বাবু
সাগর চন্দ্র সুর মহাসয়ের বাড়ীতে ছিলেন। যাহোক সবার বিশেষ যত্ন ও সেবায় তিনি শীঘ্রই সেরে উঠেন ও
পুনরায় সাধনায় নিমগ্ন হন।
এদিকে পাশ্চাত্যের মাটিতে বেদান্তের বিজয় কেতন উড়িয়ে স্বামীজী অন্যান্য গুরুভ্রাতাদের
সাহায্যে শ্রীরামকৃষ্ণ সঙ্ঘ কে সুপ্রতিষ্ঠিত করবার কাজ আরম্ভ করেন। যদিও এই মুহুর্তেই সাধনা ও
কাশী ছেড়ে কলকাতা ফেরার কোনরূপ ইচ্ছে গোপালদার মনে ছিলনা, তবুও স্বামীজীর সপ্রেম আহবানে তিনি
শীঘ্রই আলমবাজার মঠে ফিরে আসেন। স্বামীজীর প্রতি তাঁর আনুগত্য এতটাই প্রবল ছিল যে তাঁর আদেশে
বৃদ্ধ বয়সে তিনি “লঘু কৌমুদী” অধ্যায়ন শুরু করেন। সেসময়ে সবেমাত্র বেলুড়ে জমি কেনা হয়েছে ও গৃহাদি
নির্মান ও তত্ত্বাবোধানের সুবিধধার জন্যে মঠ সেখানে স্থানান্তরিত হয়েছে। ১৮৯৮ এর প্রথম ভাগে মঠ
নীলাম্বর বাবুর বাগানে স্থানান্তরিত হয় ও বৃদ্ধ তপস্বী গোপালদার অক্লান্ত পরিশ্রম ও কর্মজীবন
আরম্ভ হয়।বেলুড়ের সংগৃহিত জমি আগে নৌকা ও জাহাজ সংস্কারের কাজে ব্যবহৃত হতো ও বড়ই বন্ধুর
ছিল। গোপালদার প্রথম কর্তব্য হল শ্রমিক দের সাহায্যে এই ভূমি সমতল করা। গোপালদা এই কাজকে
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের ভাব প্রচারের ভিত্তি বলেই গ্রহণ করেছিলেন। দ্বিপ্রহরে মঠে আহার করতে গেলে
যাতায়াতে অনেকটা সময় অপচয় হয় দেখে তিনি কার্যস্থলেই দুপুরের খাবার আনিয়ে খেতেন। এভাবে এই
বৃদ্ধ সন্ন্যাসীর একনিষ্ঠ পরিশ্রমের সুদৃঢ় ভিত্তিতেই রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের প্রথম স্থায়ী মঠ গড়ে উঠেছিল।
মঠের নুতন বাড়ীর কাজ শেষ হলে তিনি ওই বাড়ীতেই বাস করতে থাকেন। মঠের অভ্যন্তরে অনেক
কার্যের তত্ত্বাবোধান করতে হলেও তাঁর প্রধান কাজ ছিল মঠের সব্জীবাগান। মঠ নির্মানের পর দৈনন্দিন
অভাব যঠেষ্টই ছিল সূতরাং খাদ্য উৎপাদনও খুব দরকারী ছিল। এ সম্বন্ধে লাটু মহারাজের উক্তি –
“আরে, বুড়ো গোপালদা না থাকলে মঠের ব্রহ্মচারীদের ভাতের উপর তরকারি জুটত না। সব্জিবাগান করতে
বুড়ো গোপালদাকে কতই না খাঁটতে হয়েছে।“ ................................................ক্রমশ


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours