প্রিয়াঙ্কা সরকার, লেখিকা, বর্ধমান: 

vivekananda is more learned than all our professors put together!

আত্মবিশ্বাসীর আবার মনের মতো স্থান লাগে নাকি!!  না তো! কিন্তু সম্যক উপলব্ধির স্রোতের টান জুড়ে থাকে অস্থি রেখা। আর স্থান যদি বিকারের বিভূতি হয়, তবে তো সে সরলকথায় কলাইয়ের ভূষি, যেন উষ্ণতার প্রতীকী। এমনটাই নির্জনের অতিথি হলেন নবীন সন্ন্যাসী, "বিবেকাননদ"। স্যানবোর্ণের খামারবাড়ির ব্রিজি মেডোজের অতিথি.. নিরিবিলি, প্রকৃতিময়..  অনেকটা বিভূতিভূষণীয় স্বপ্নভূমি৷ 

বাতাসে বনফুলের বনভূমি, নাম!!  বাতাসি তৃণভূমি। ঝিলমিল রোদের কানে নিস্তরঙ্গ পরিপূর্ণ দেবলোকের সান্নিধ্য বয়েই তো নিবিড় ভালোবাসা। না ব্যক্তি নয়, আধারের ভালোবাসা৷ সন্ধ্যায় অন্ধকারের মুখে ভাষা আনে বার্তা, এটাই বা কম কিসের!!  প্রদীপে সাজানো তুলসিভূমি, শাঁখ, যেন অতীতের " টাঁড়বারো " দেবতা মনে করিয়ে দেয়.. অনেকটাই  নস্টালজিক। 

তবে তখন তো রাস্তা ছাড়া তাঁর ঝুলিতে অন্য জায়গা নেই!! কে এনে দেবে যথার্থ স্থান!  করুণাঘন মগ্ন মুখখানি যে বিশ্বাসী ঈশ্বর তাঁর;  ত্রিভুবনেশ্বরী যখন সঙ্গে থাকেন তখন তো নির্বাসনের প্রশ্ন আসে না। অকম্পিত হৃদয়ের বুকে আত্মার সম্পর্ক যখন নিবিড় হয়, তখন আর চমক আসে না, কারণ সবটাই তো সাজানো৷ আলোর পৃথিবীতে তো বিভাজন থাকে না, আগ্রহের অপেক্ষা থাকে না, সবটুকু সৌন্দর্য সহৃদয় পরিবেশন। যাইহোক, এই আশ্রয়কে সাথে নিয়েই তিনি গড়ে নিলেন - উপাসনার ঘর। 

আধারের অঙ্গ যদি উপকরণের নিমিত্ত ব্যবহারিক হয়, তবে যে সে আঙ্গিকের মতো করেই বেদীর ব্যবহার। মৌন মগ্নতায় নৈঃশব্দের ধ্যানেই এক নতুন পরিবেশ সম্বৃদ্ধি পেলো। কিন্তু, ঐ যে গাছ সরল হলে প্যাঁচালো হয় প্রকৃতি - আহা! উপহাস নেহাতই৷ বিবেকানন্দ কেটি স্যানবোর্ণের আবেগকে বিশ্বাস করাতেই পারলেন না, যে, বিবেকানন্দ রাজা নন, সন্ন্যাসী।  আসলে কেটি কিন্তু, বুঝতে চান  না, তা নয় ; রাজা কি কেবল রাজসিক ধর্মে!!  ইসস!! তাই আবার হয় নাকি!!  রাজধর্ম মানেই তো সাত্ত্বিক, গুণী,  সত্যবাদী - যথার্থ ঐশ্বর্যময় ঐশ্বরিক। 

উষ্ণীষ তাঁকে বলে যে, সে তো পৃথিবীরই৷ কিন্তু সাধারণের মধ্যে থেকেও  এমন দীপ্ত চরণের পরিচয় বড়ো বাধা হয়েছিল, সাহায্যের হাত দিয়েছিলে শ্রদ্ধেয় অনাগারিক ধর্মপালা৷ কেটির বুকে তখন আলোর বিভূতি৷ নবীন সন্ন্যাসীকে দেখে তাঁর রাইটের কথা মনে পড়ে যায়৷ অ্যান্নিসকোয়ামে অধ্যাপক রাইটের ব্যাপ্তি নবীন সন্ন্যাসীকে বিস্মৃত করে৷ প্রজ্ঞাদীপ্ত, তেজদীপ্ত স্মৃতিযুক্ত গভীর বিশ্বাসে বিশ্বাসী আলোকবর্তিকা তো রতন চিনে নেবেই। অজ্ঞতা যদি চোখের বুকে পর্দা টেনে রাখে, তবে ভোরের সূর্য নিষ্ফলা হয়৷ কিন্তু সেই হৃদয় যখন নত হয়, অন্তর তখন প্রণম্য হয়ে ওঠে..."আমি তোমার শ্রীচরণের দাসী।"


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours