ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ


 দুর্গাপুরের  প্রাচীনতম  গ্রাম  বীরভানপুর! দুর্গাপুর -বাঁকুড়া  রোডের ধারে  দামোদর নদের  উত্তরপাড়ে  ' বীরভানপুর '! কথিত  আছে , একটা  সময়  জঙ্গল  অধ্যুষিত  বর্তমান  দুর্গাপুর  ছিল  শাল, পলাশ  পিয়াল, মহুয়ায়  ঢাকা বনভুমি আর  মাঝে  মাঝে  ছোট  ছোট  গ্রাম! রাতের  অন্ধকারের  বুক চিরে  জলন্ত  মশাল হাতে  হা-রে-রে  করে  ছুটে  আসতো ডাকাতের  দল! সেই  ডাকাত  দলের সর্দার  হতেন সাধারনতঃ একজন  ব্রাক্ষ্মন  এবং  বাকীরা  বাগদী,ডোম  বা  কেওট (জেলে)! এঁরা  নামে  ডাকাত  হলেও  প্রকৃত  পক্ষে  বাগী বা  বিদ্রোহী! নানা  জনহিতকর  কাজের  সাথে যুক্ত  থাকতো! এঁরা  একটা  আদর্শ  নিয়ে  চলতো, রাজী, নারী,শিশু  বা  ব্রাক্ষ্মনকে  কখনো  আক্রমন  করতো না ! তখন বীরভানপুর  গ্রামের  অন্য কোন  নাম  ছিল!  এই  এলাকায়  ভানুদেব  আচার্য্য  নামে একজন  পন্ডিত  ব্রাক্ষ্মন  গ্রামের  আঁকুড়ে  ডোমদের  নিয়ে  একটি  ডাকাত গঠন  করলেন!

        জনশ্রুতি,বর্ধমানের  মহারাজা  তেজচন্দ্র  দামোদর  নদ  অতিক্রম  করে  বাঁকুড়া  যাওয়ার  পথে সেই  ডাকাত  দলের  দ্বারা  আক্রান্ত  হওয়ার খবর পেয়ে  ভানুদেব  আচার্য্য, নিজের  ভুল  স্বীকার  করে ক্ষমা  চান!রাজা  ভানুদেবের  সাথে বলে  প্রীত  হ'ন এবং  তাঁর  নিবাস  জিজ্ঞাসা করেন! উত্তরে  ভানুদেব  তাঁর  গ্রামের  নাম  বলেন! রাজা  তৎক্ষনাত  নির্দ্দেশ  দেন, আজ  থেকে  গ্রামের  নতুন নামকরন  হ'লো ' বীর ভানুপুর ' অপভ্রংশ  হয়ে  বীরভানপুরে  রূপান্তরিত  হয়!

            এই  বীরভানপুর  গ্রামে  প্রাচীন কয়েকটি  শিব  মন্দির, দুর্গামন্দির, কৃষ্ন, বিষ্নু  মন্দির, রাসমঞ্চ  অবস্হিতি  প্রমান  করে  গ্রামের  প্রাচীনত্ব!  তা সত্বেও  গ্রামের  আর  একটি  বৈশিষ্ঠ  আছে! গ্রামের  দক্ষিনপ্রান্তে  দামোদরের  তীরে  প্রায়  আড়াই  হাজার  বছরের  প্রাচীন  ল্যটেরাইট  পাথরের  সূর্যমূর্ত্তি  'শঙ্খেশ্বরী ' দেবী  নামে  পুজিতা  হ'ন! কথিত  আছে  প্রায়  দেড়'শ  বছর  আগে  এক  শাঁখা  বিক্রেতা  একটি  ঝোঁপ  থেকে  এই  মূর্ত্তিটি উদ্ধার  করেন, তাই  মূর্ত্তিটি  শঙ্খেশ্বরী  নামে  পূজিতা  হ'ন!
       সারা  বছর  নিত্যপুজা  হলেও দুর্গা  নবমীর  দিন  বিশেষ পুজা  ও ছাগ  বলি  হয়! সূর্যদেবতা  এখানে  দেবী  দুর্গাঞ্জানে  পূজা  করা  হয়!
Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours