জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:
পড়ছিলাম,
 অধ্যাপক হীরেন মুখার্জীর 'হাতীর দাতে খুত কিসের? শিরোনামায় যোসেফ 
স্তালিনের উপর লেখা পুস্তকে। হীরেন বাবুর বুকের পাটা এবং প্রাজ্ঞতা এখানেই,
 তিনি দল ভাগ হওয়ার পর, সি পি আই সদস্য হিসেবেই বই টা লিখেছিলেন।
 প্রসংগত
 বলে রাখি, সি পি আই স্তালিন প্রশ্নে  সরকারিভাবে ক্রুশ্চভের সাথে একমত 
ছিলেন। অন্যপ্রান্তে, সি পি আই এম  ক্রুশ্চভের পুরোলাইন বাতিলের সাথে সাথে,
 স্তালিনকে অপদস্ত করার লাইনকেও বাতিল করে দেন। সেই সুত্রেই বুঝে নেওয়া 
দরকার, সেকালে এই লাইনই প্রথম ভারতের সাম্যবাদী আন্দোলনকে সোভিয়েত নিরপেক্ষ
 ভাবে এক স্বাধীন ভাবাদর্শগত অবস্থান নিতে পেরেছিলেন।
---- 
 অবশ্য ভারতের 'সুবিবেচক'  সংবাদ মাধ্যম সেদিন, ক্রুশ্চভ লাইন বাতিল হয়ে 
যাওয়ায়, সি পি আই এমকে চিনের অনুসরনকারি দল হিসেবে সিলমোহর লাগাতে শুরু 
করেন। ইতিমধ্যে চিন-ভারত সীমাান্ত যুদ্ধের কারনে, মানুষকে বিষয়টা 
'খাওয়াতেও' সমর্থ হয়েছিলো।সেকালে সংবাদ মাধ্যম, কংগ্রেসের রাজনৈতিক নেতা 
(উপর থেকে নিচ  পর্য্যন্ত) সাম্যবাদীদের চিনের চর নয়  - কার্য্যতঃ 
'অসামাজিক জীব হিসেবে চিহ্নিত করছিলো। একে ঢাল হিসেবে কাজে লাগিয়ে, পুলিশ 
এবং কল-কারখানায় প্রশাসনিক আক্রমনকে সরাসরি, ভাবাদর্শের দিক থেকে পতিত, 
সাম্যবাদী আন্দোলনে বাতিল হয়ে যাওয়ারাও রাষ্ট্র এবং গুন্ডা শক্তিকে সাহায্য
 করতে দেখা গেছে। অন্যথায় সেকালে রাতারাতি এতো বিপুল সংখ্যাক কমরেডদের 
চিহ্নিত করে জেলে ঢোকানো সম্ভব ছিলো না। 
 
 সাধারন মানুষ তো বটেই, দুর্গাপুরে সি আই টি ইউ এর এক কমরেডের একটি  
লেখাতেও, দলের বিভাজিত হওয়ার প্রশ্নে চিন-ভারত যুদ্ধকে চিহ্নিত করায় আতকে 
উঠেছিলাম। 
যাইহোক, 
সেদিনকার সেই স্বাধীন লাইন, যে লাইন ১৯৬৯ সালের  বর্ধমান প্লেনামে অনুমোদিত
 হয় । প্রসংগত উল্লেখ্য ১৯৬৪ সালের পার্টি কংগ্রেসকে যখন দলকে মূলতঃ সি পি 
আই এর শ্রেনী নেতৃত্বহীনতার লাইনকে লড়তে হোল, প্লেনামে এসে তাদের লাইনকে 
লড়তে হোল, যারা সেদিন শ্লোগান তুলেছিলেন, 'চিনের চ্যায়ারম্যান আমাদের 
চ্যায়ারম্যান'। 
এইভাবে ১৯৬৪ এবং ১৯৬৯ দুই এ মিলে সি পি আই এমকে
-----
 , ভারতীয় পরিপ্রেক্ষিতে একটি সৃজনমুখীনতার দিক থেকে এক স্বাধীন 
মার্ক্সবাদি-লেনিনবাদী দল হিসেবে নিজের অস্তিত্ব নিয়ে  মাথা উচু করে 
দাড়ানোর সুযোগ পেয়ে গেলো।মানুষ শত অপপ্রচারকে ভেদ করে, দলকে প্রকৃত 
রুপান্তরকামী নেতৃ্ত্ব বলে মেনেও নিলো দলকে। 
এই
 সুত্রেই বুঝে নেওয়া দরকার,  যদিও  সৃজনমুখীন লেনিনবাদের সেই প্রাথমিক 
শ্রোতে , সরকারিয়ানা ঢুকে যাওয়ায় সেদিনের সেই স্বাধীন ভাবনায় অনেক জল 
ঢুকেছে  পরবর্তী পঞ্চাশ বছরে, তথাপী ফিরে আসার পথ খুজতে সেই প্রাথমিক 
সাফল্যের অভিমুখেই ফিরে আসার চেষ্টা করতে হবে বার বার।
------ 
 ঘটনা এখানেই যে, ১৯৬৪ সালের পার্টী কর্মসূচী এবং ১৯৬৯ সালের প্লেনাম দলিল,
 একপ্রান্তে ভারতীয় গনতান্ত্রিক বিপ্লবের রুপরেখা এবং নেতৃ্ত্বদায়ী 
অবস্থানে, অন্যপ্রান্তে আন্তর্জাতীক প্রশ্নে একটা সম্পুর্ন স্বাধীন লাইন 
গ্রহন করেছিলো।ভারতের সাম্যবাদী আন্দোলনের এটাই বোধ হয় সব থেকে গৌরবের, যে 
সে ভারতে প্রথম - মার্ক্স-লেনিনবাদের পরিপ্রেক্ষিতে একটা স্বাধীণ লাইন নিতে
 পেরেছিলেন।
আজকের 
প্রজন্মের সাম্যবাদীদের যদি সাম্যের পথে ভারতীয় জাতিসত্বাকে মুক্তির পথে 
এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়,  এই বিন্দু থেকেই গবেষনার কাজকে শুরু করা প্রয়োজন হবে।
 এই সুরুর প্রশ্নে, অবিভক্ত দল থেকে শুরু করে, শ্রমিক আন্দোলনের অতলে 
গিয়ে, 
------  বাধ্যবাধকতাতেই, সৃজনমুখীনতার সাথে যুক্ত হতে পারার সৌভাগ্যে, গবেষনার প্রাথমিক দুটি সুত্র তুলে আনা যেতেই পারে।
প্রথমতঃ
 যদিও আন্তর্জাতীক এবং জাতীয় প্রশ্নে শুধু ভাবাদর্শগত বিষয়েই নয়, বিপ্লবের 
স্তর এবং বিভিন্ন শ্রেনীর অবস্থান সম্পর্কে যে সিদ্ধান্ত হয়েছিলো সেখানে, 
--- 
 যেখানে উল্লেখিত  উভয় লাইন পরস্পরের  পরিপুরক, সেখানে কাজটা, দলের মতামতের
 বাইরে গিয়েও কমরেড হীরেন মুখোপাধ্যায় যে কাজটা করার হিম্মত দেখিয়েছিলেন, 
আজ  দলের নেতৃ্ত্ব দায়ী অবস্থানের বিভিন্ন স্তরে সৃজনমুখীনতা ভোতা হয়ে 
যাওয়ার কারনে,  আন্তর্জাতীকতার লাইন আপোষ হয়ে যাওয়ায় যদি একজনকেও সোজা হয়ে 
ভাবাদর্শগত অবস্থান নেওয়ার প্রশ্নে সাহস না দেখাতে পারেন, সম্ভবত সেখানেই 
দল এবং জাতীর সংকটের কারন হয়ে দাড়ায়।
-----  আজ 
নিশ্চিতভাবে মানতে হবে,  কালের যাত্রায় যখন থেকে কর্মসূচীর উপরে সরকারিয়ানা
 প্রাধান্য পেতে শুরু করেছে, তখন থেকেই  আভ্যন্তরীন ক্ষেত্রে নেতৃ্ত্বগত 
অবস্থানটি আপোষ হয়েছে। এই আপোষের কারনে যখন আন্তর্জাতীক লাইন আপোষ হতে শুরু
 করেছে, তখন ঠেকেই , অন্যপ্রান্তে   নকশাল আন্দোলনকে এগিয়ে দিতে সাহায্য 
করেছে। আন্তর্জাতীক লাইনে, স্তালিন সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্বেও, 
শেষ পর্য্যন্ত তাকে পেছনে রেখে,  অন্য আন্তর্জাতীক বিষয়গুলিতেও সি পি আই এম
 এর অবস্থানকে, বাতিল করা হয় নাই ঠিক, সেগুলিকে চলমান পুজিতান্ত্রিক 
বিশ্বশ্রোতে ভেষে যেতে দেওয়া হয়েছিলো নিঃশব্দে।
দ্বিতীয়তঃ 
 আন্তর্জাতীক লাইনকে , দেখেও না দেখার  ভান করায়, পার্টী প্রগ্রামে যেভাবে 
 আন্তর্জাতীকতা আপোষ হয়েছ্  সেখান থেকেই সরকারীয়ানা এবং শ্রমিক শ্রেনীর 
নেতৃ্ত্ব যেমনভাবে  আপোষ হয়েছে,তেমনভাবে কেন্দ্রিকতা দুর্বল হয়েছে। 
-----
 আরো একটু গভীরে গিয়ে যদি দেখা যায়, সেখান থেেকেই কমরেড স্তালিনের সেই 
অবিস্বরনীয় বিশ্ব মুল্যায়ন থেকে আমর সরে আসতে শুরু করেছিলাম। পরিনামে, 
আমাদের কাছে,  যদিও লিখিতভাবে বর্ধমান প্লেনামের সিদ্ধান্তগুলির বদল করা হয়
 নাই, কার্য্যতঃ  এখন আর আমেরিকার মিলিটারীতন্ত্র বিশ্বের প্রধান শত্রু নয়।
 অবশ্য সাম্রাজ্যবাদ বিরোধীতার সাধারন লাইন থেকে সরে আসা হয় নাই, কিন্তু 
সাম্রাজ্যবাদী চুড়ামুনিকে চিহ্নিত করতে আমাদের এখন চরম অনাগ্রহ। 
-----
 এইভাবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়,   আন্তর্জাতীক ক্ষেত্রে  ভাবাদর্শগত অবস্থান 
প্রোদোষিত হওয়ার কারেনেই,  বাংলা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার প্রশ্নে প্রধান সংযোজক
 হিসেবে যারা, ভারতে ধর্মান্ধদের সমর্থনে যারা রাষ্ট্রের ভেতরের, বাইরের 
এবং ইসরাইলের মতো বিশ্ব শক্তিকে এক করেছে, বছরের পর বছর - তাকে আমরাও 
পর্দার অন্তরালে থাকতে দিয়েছি।                  
বিপরীত
 দিকে যখন সাধারন আন্দোলনের ধারা তো বটেই, সেই দলের জলে সাঁতার কেটে টিকে 
থাকার অদমা আত্ম সমর্পনের ধারায়,  শ্রমিক সাম্যবাদীরাও কদাচিত বুঝেছেন
----
 শ্রমিক আন্দোলনে লেনিনবাদের বর্জনের অর্থ সৃজনমুখীনতার ধারাকে স্তব্ধ করে 
দেওয়া। সে বুঝতেই  পারে না, সংগঠিত শিল্পের শ্রমিক আন্দোলনের গনতন্ত্রে, 
যখন এই সৃজনী স্তব্ধ হয়ে যায়, তখনে সে অবলিলা ক্রমে দলের কেন্দ্রিকতা কিংবা
 আন্তর্জাতিকতা রইলো কিনা তাতে মাথা ঘামায় না
----- 
লেনিনবাদের সেই অতি গুরুত্বপূর্ন বিষয়টিও বুঝতে চায় না, যেখানে বলা হয়েছে, 
ট্রেড ইউনিয়ন গনতন্ত্রের প্রথম কাজ, দলে শ্রমিকদের যোগানের কাজটা সে যদি 
একটা পরম্পরাগতভাবে চালিয়ে না যায়, তবে 'কেন্দ্রিকতা' এমনিতেই 'ভেতরের 
অশ্রেনী নিয়ন্ত্রনকারীদের হাত ধরে বাতিল হয়ে যাবে। 
----- 
 সেটি যখন  ঘটতে থাকবে, তখন ভেতর থেকেই সৃজনীর অভিমুখ সংকুচিত হতে থাকার 
কারনে, কেন্দ্রিকতাহীন ব্যবস্থায় এমনিতেই, আন্তর্জাতীক লাইনগুলি বাতিল হতে 
থাকবে, তার সাথে সাথে কর্মসূচীর গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলিও অকেজো হতে থাকবে। 
---- 
  সেই বিপর্জয়কালে, বাইরের কিঞ্চিত চাপ ভেতরটাকে ভাংবে এবং দলের ভেতরে যে 
কেন্দ্রগুলি  আন্তর্জাতীকতা এবং ভাবাদর্শের কেন্দ্রগুলিও ভাংগতে শুরু করবে।
 অথচ,
 ভারতীয় মনন সত্বা যখন একপ্রান্তে   আপাদমস্তক আদিভৌতিকবাদে কর্দমাক্ততাতে 
আচ্ছাদিত এবং সেখান থেকেই  ভারতীয় রাজনীতির অতি দক্ষীন দিকের মেরুটি , 
নিয়ন্ত্রিত
---- সেখানে অন্যপ্রান্তটি যেখানে  ট্রেড 
ইউনিয়ন আন্দোলনে শ্রমিকদের সর্বাত্মক ঐক্যের অভিমুখে, সৃজনমুখীনতায়, ক্রম 
শক্তিশালী দলিয় কেন্দ্রিকতা এবং শ্রেনী আন্তর্জাতীকতায় নিয়ন্ত্রিত
-----
 তখন কেন যে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দিয়ে বিশ্বপুজি ভারতের মতো একটা দেশের 
সাম্যবাদী আন্দোলনের দুটি বাহূ শ্রমিক আন্দোলনের সৃজন মুখীনতা এবং 
সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রিকতা ও আন্তর্জাতীকতাকে ভেংগে দেওয়াটাকেই , 
ফ্যাসিবাদ নিয়ে আসার প্রথম দায়  বলে মেনেছেন তা সহজেই অনুমেয়। 
--------
 মজার বিষয়, যারা গভীরভাবে, কেন্দ্রিকতা এবং আন্তর্জাতীকতা ভেংগের পরার 
সামন্তরালভাবে ট্রেড ইউনিয়ন গনতন্ত্রে সৃজনমুখীনতা চলে যাওয়ার বিষয়টিকে 
একসুত্রে বাধতে চাইবেন, 
-------   তারা শ্রমিক 
আন্দোলনের নেতৃ্ত্ব শ্রোতেও, আন্তর্জাতীকতাকে, সচেতন কিংবা অবচেতনভাবে মুছে
 ফেলার প্রকৃয়াকেও চিহ্নিত করতে পারবেন। দেখবেন, গর্বাচভের পেরোস্ত্রোয়ীকা 
আসার পূর্ব পর্য্যন্তও, কিঞ্চিত অর্থে আন্তর্জাতীক লাইনগুলি কাজ করেছ 
শ্রমিক আন্দোলনে
------   তারপর থেকেই ধীরে ধীরে 
ভারতের আধুনিক শ্রমিক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতাই নিজ নামে নির্মিত আবাস ঠেকেই 
ধীরে ধীরে বিতারিত। সেখানে জীবন রায়েরা তো ছায়া বই কিছু নয়।
ভাবের
 আলোচায়ার অন্য একটি মজা রয়েছেঃ সেখানে কোন মতে যদি সাম্যবাদী ভাবাদর্শে 
দোলাচল দেখা যায়, নেতা কর্মীদের অধিকাংশ অতীত হয়ে যাওয়া ব্রাহ্মন্যবাদী 
প্রবাহ থেকে উঠে  আসার কারনে, তারা সুযোগ পেলেই অতীত মনন সত্বায় ফিরে আসতে 
চায়। 
---- এই পরিস্থিতি যখন ঘটতে থাকে, তখন ' ভাবের 
 বিশ্ববিক্ষা' কিংবা সংগঠনের দিক থেকে সব থেকে মহার্ঘ তিন বস্তুঃ ট্রেড 
ইউনিয়ন গনতন্ত্রের আকাশ্চুম্বি অধিস্টান, দলের কেন্দ্রিকতার সাথে 
প্রথোমোক্তের বিন্যাস এবং আন্তর্জাতীকতাকে, আপদ বলে মনে হতে থাকে। 
-------এমনটি
 ঘটে বলেই, ছোট ছোট প্রশ্নে যখন মিডিয়া সাম্যবাদী আন্দোলনে উল্লেখিত  
'কেন্দ্রিকতা এবং আন্তর্জাতীকতার' যুগলবন্দিকে ছিন্নভিন্ন করার চেষ্টা করে,
 বুঝতেই অক্ষম হয় যে, ঘনায়মান বিপদ মাথার উপরে। 
যারা 
 বিশ্বের সর্বাধুনিক বিশ্ববিক্ষাকে কিঞ্চিত আবিস্কার করেছেন, তিনিও বুঝতে 
পারতেন, বাংলার সংবাদ মাধ্যম যখন  সেই প্রধান মন্ত্রীত্বের প্রশ্নে ক্রমাগত
 মরাকান্ন কাঁদছিলেন 
----- তাদের সাম্যবাদ, কিংবা 
বাংলা দেশ অথবা ভারতের গনতন্ত্রের প্রতি বিন্দুবিষর্গ মমতাবোধ ছিলো না। তাই
 যদি থাকতো তবে, আজকে বাংলার যে বিপর্য্যয় চলছে, তাতে শ্রীমতি এবং 
শ্রীমানের পারস্পরিক ভারসুত্রে সুঁতোয় ট্রাপিজীয়ম খেলতো না।  আরো মজার, 
বাংলা থেকে যে অধিকাংশ ডেলিগেট কমরেডরা কেন্দ্রিয় সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে 
মতামত দিয়েছিলেন তাদের কদাচিৎ দেখাগেছে, দলের কেন্দ্রিকতার সমর্থনে 
প্রকাশ্য  অবস্থান নিতে। প্রসংগত আবারো জানিয়ে রাখি, লেখক প্রকাশ্যভাবেই  
ভিন্ন মত পোষন করলেও - যারা মনে করছেন, কেন্দ্রিয় কমিটির বিপরীতে গেলে ভালো
 হোত, তারা দীর্ঘকালিন পরিপ্রেক্ষিতের মানচিত্রটি নির্মান  না করেই 
বলছিলেন।
আর লম্বা না করে,
 যেখান থেকে শুরু করেছিলাম, সেখানে এসেই শেষ করি। অধ্যাপক হীরেন 
মুখোপাধ্যায়, মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদকে, ভারতের মতো একটা অতি জটির ভাবময়তায়,
-----
 যেখানে সৃজনী একটু এগুতে গিয়েই বার বার বাধা খেয়ে ফিরে আসে, সেখানে 
ঠোক্কোর  খেতে খেতেই চলমাণ ব্রাহ্মন্যবাদী ধারা থেকে বেরিয়ে এসে চিন্তন 
মুক্তির সন্ধান করতে হবে। 
 তিনি সেই প্রসংগেই ১৯৪৮ উত্তরকালের অবিভক্ত কমিউনিষ্ট পার্টীর সম্পাদক পি সি যোশির একটি বক্তব্য উল্লেক করে বলেছেন
------
 তিনি নাকি বলছিলেন, মার্ক্সকে পড়েই তো তাদের প্রজন্মের পক্ষে মার্ক্সকে 
বোঝা সম্ভব ছিলো না। তাদের লেনিন পর্য্যন্ত বা অক্টোবর বিপ্লব পর্য্যন্ত 
অপেক্ষা করতে হয়েছে। আরো গুরুত্বপূর্ন, পি সি যোশি লেনিন এবং সৃজনীর 
প্রশ্নে যা বলেছিলেন, সেটা আজকের প্রজন্মের সাম্যবাদীদের নিশ্চিত   শিক্ষা 
নিতে হবে। তিনি বলছেন লেনিনবাদকে বুঝতে গিয়ে, তাকে স্তালিনের লেখা 
পর্য্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।
শেষ লাইনে বলে রাখি, 
জীবন রায় যদি লেনিনকে কিঞ্চিত পেয়ে থাকেন, কমরেড স্তালিন এবং কিছুটা 
মাও-সেতুং এর হাত ধরে...। সেই সুত্রেই বলি এখন যা লিখছি সেগুলিকেও সেই 
কথনের সুত্র ধরেই বুঝে চলবেন পাঠকরা
----- "চোর চলে গেলে, বুদ্ধি খোলে" (ক্রমশ)





Post A Comment:
0 comments so far,add yours