মোনালিসা মুখোপাধ্যায়, ফিচার রাইটার, হুগলি:
ঢাকে
কাঠি পড়ল বলে। সময় এগিয়ে আসছে। হ্যাঁ পুজো আসছে। আকাশে ইতিউতি শরতকালের
মেঘ। মনটা খুশী খুশী কমবেশি সবার। মনের মত সাজপোশাক আর প্রসাধনী সংগ্রহ
করার সময় এগিয়ে এল। তার সাথে নিজেকেও তরতাজা ঝলমলে করে নিতে দেব কিছু
টিপস।
প্রথমেই বলব চুলের
কথা। আপনার চুল যেমনই হোক তাকে প্রাণবন্ত করে তুলুন। একটা ঘরোয়া টোটকা বলি।
একটা ডিম খুব পাকা কলা একটা একচামচ মধু ভালো করে মিশিয়ে নিন। ম্যাসাজ করুন
হালকা হাতে। চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী পরিমাণ বাড়াতে পারেন উপকরণ
গুলির।একঘন্টা রেখে ভালো করে কোন মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। চায়ের
লিকার করে ঠান্ডা করে রাখুন। চুল ভালো করে ধুয়ে নিয়ে নিন। এটা চুলে
কন্ডিশনারের কাজ করে। সপ্তাহে একদিন চুলে নারকেল হট অয়েল ম্যাসাজ করুন।
তেলের সাথে ক্যাষ্টর অয়েল অলিভ অয়েল আর একটা ভিটামিন ই ক্যাপ্সুল মিশিয়ে
নিন। জল গরম করে তাতে ওই মিশ্রণটা, একটি বাটি করে বসিয়ে রাখুন।তেল হাল্কা
গরম হলে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন।পরের দিন শ্যাম্পু করে নিন। এটা রাত্রে
করবেন।
খুশকি থাকলে মেথি ভিজিয়ে পেষ্ট করে মাঝে
প্যাক হিসেবে মাথায় দিন। পরে শ্যাম্পু করে নিন। লেবুর রস ও লাগাতে পারেন।
খুশকি কমে যাবে। চুলের প্রকৃতি অনুযায়ী শ্যাম্পু চয়েস করুন।
এবার
আসি মুখের পরিচর্যাতে। স্কিন মূলত তিন ধরনের হয়। অয়েলি ড্রাই আর কম্বিনেশন
স্কিন।তিনধরনের স্কিনের জন্য তিনরকম কেয়ার দরকার । তবে ক্লিনজিং টোনিং
ময়েশ্চারাইজিং সব ধরনের স্কিনে রোজ দরকার। নিজের স্কিনের প্রকৃতি অনুযায়ী
এগুলো করবেন।আজকাল সব ভালো প্রোডাক্টসের গায়ে সেটা কোন স্কিনের সঙ্গে যাবে
সেটা লেখা থাকে। তবে আমি একটা ঘরোয়া রূপটান বলব। দুধে মুসুরডাল ভিজিয়ে দিন।
মিহি করে বেটে মুখে প্যাক হিসেবে লাগান।
শশার রস প্রাকৃতিক টোনার হিসেবে কাজ করে।
কাঁচা দুধ ক্লিনজার হিসেবে খুব ভালো কাজ দেয়।তুলো কাঁচা দুধে ভিজিয়ে সারামুখে বুলিয়ে নিন।
হাতের
কাছে টমেটো সবার রান্নাঘরে থাকে। টমেটোর রস কিন্তু প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে
কাজ করে যা রোদে পোড়া ত্বকের জন্য খুব কাজ দেয়।চোখে ডার্ক সার্কেল থাকলে
আলু কুরে তার রস লাগান ভালো কাজ দেয়। টক দইতে চালের গুঁড়ো দিন ভালো করে
মিশিয়ে নিন। মুখে ম্যাসাজ করুন দু মিনিট। মরা কোষ সরে গিয়ে মুখে গ্লো আসবে।
পাকা পেঁপে মধুর প্যাকও খুব ভালো। এটা সপ্তাহে একদিন করতে পারেন। আর আপনার
রোজের ব্যবহৃত ডে বা নাইট ক্রিমে একটা ভিটামিন ই ক্যাপ্সুল এর অয়েল মিশিয়ে
নিন। ভালো ফল পাবেন।
ঠোঁটের যত্নে মধু খুব ভালো কাজ দেয়।
এবার
বলি হাত ও পায়ের যত্ন। কোন নেলপলিশ বেশী দিন নখে রাখবেন না। তাতে নখ হলদে
হয়ে যায়। রিমুভার দিয়ে নেলপলিশ তুলে নখে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করুন। হালকা জলে
যে কোন শ্যাম্পু দিয়ে হাত ডুবিয়ে রাখুন।নরম ব্রাশ দিয়ে নখের চারপাশে ক্লিন
করুন। হাত ধুয়ে এবার যে কোন ম্যাসাজ ক্রিম দিয়ে দু'হাতের তালু দিয়ে দু হাত
ম্যাসাজ করুন। নেলপলিশ লাগাবার সময় যদি টপ আর বেস কোট লাগিয়ে নেন অনেকদিন
নেলপলিশ অবিকৃত থাকবে।
পায়ের যত্ন নিন অনেকটা এই
ভাবেই। ফুট বাথ নিন। পিউমিক স্টোন দিয়ে স্নানের সময় পায়ের গোড়ালি রোজ ঘষে
নিন। পা নখের চারপাশ নরম ব্রাশ দিয়ে ঘষে নিন। খুব ভালো হয় যদি ফুট স্ক্রাব
দিয়ে পায়ের পাতা সপ্তাহে একদিন পরিস্কার করে নিন। হাতের মত পায়ের যত্ন
নেওয়া জরুরী।
বিউটিপার্লার আছেই ফেসিয়াল বা হেয়ার স্পা বডি স্পা, মেনিকিওর পেডিকিওর ইচ্ছেমতো করতেই পারেন। তার আগে এগুলো চটজলদি ঘরোয়া রূপটান।
পুজোয় সেজে উঠুন নানারঙের মনের মত পোশাকে। ভালো কাটুক আনন্দে কাটুক পুজোর দিন গুলো। ঝলমলে হয়ে উঠুন রূপের আলোয় মনের আলোয়।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours