জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা:

উদারবাদের বিপর্য্যয়, বৌদ্ধিক দিক দিয়ে, সাম্যবাদী এবং  অতি দক্ষিনীর ভেতরকার ফাঁকা যায়গাটুকুর অনেকটাই শেষ  হয়ে যাওয়ায়, এতোদিন যে সব বুর্জোয়া ব্যবহারিক প্রয়োগকে সাম্য বলে মনে হয়েছে, সেগুলি এখন সাম্যে কিংবা মানুষের কোন দিকে, আর লাভ হওয়ার সুযোগে নেই।
----- সে পথে মানুষ কিছু সুবিধাও পেয়েছে, কিন্তু যারা সমাজ বিজ্ঞানকে সামনে রেখে যারা শ্রমিক কিংবা সাম্যবাদী আন্দোলনের সামনে আসার সুযোগ পেয়েছেন, তারা অবগত, 
----  যে সব সুযোগ সুবিধা মানুষ পেয়েছে, সেগুলি যেমন খন্ডিত জ্ঞানের থেকেও সংকীর্ণ  ইতিহাস বোধের ফসল,  সেজন্তেয সে সব সুবিধা স্বল্পকালীনতার দেওয়া ভেংগে দীর্ঘকালিন অস্তিত্বের সাথে সেগুলি যুক্ত হতে পারে নাই। 
----- শ্রমের গুনগত উত্তরনের সাথে, সে সব সুবিধার আন্দোলন যুক্ত না থাকার কারনে, আজ সব ধ্বসে যাচ্ছে। অনুরুপভাবে লক্ষনীয়, এখানে যারা সাম্যবাদী আন্দোলনের পত্তন করেছিলেন এবং ১৯৬৪ সালে দলের বিভাজনের পর যারা, নতুন করে কর্মসূচী নির্মানের পাশাপাশি দল ও ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন,
----- তার পরবর্তীকালে, যারা কোলকাতায় এবং দিল্লীর দায়ীত্বে এলেন তার মূলতঃ ছাত্র আন্দোলন থেকে আসা এবং নেতৃ্ত্বের সাথে 'শ্রমের' বিবর্তনের উচ্চতর ধাপে উত্তোরনের মধ্য দিয়ে যে শিল্প সম্পর্ক নির্মান হয়েছিলো, সে সবের সাথে কোন পরিচিতি নির্মান না হওয়ায়
-----  তারাও একপ্রান্তে, শ্রেনীবোধ বা লেনিনবাদ সম্পর্কে ধারনা অতি নিম্ন মানে থেকে যাওয়ার কারনে, তারাও বুর্জোয়া ভাবসত্বার বাইরে গিয়ে কালকে কিঞ্চিৎ পরিমানে দেখতে পেরেছেন। বিগত ৭০ বছরে, শ্রমের কিংবা শিল্প সম্পর্কের, বিশেষতঃ ৭৭ এর পর যে সব বদল হয়েছে, সেগুলি কিঞ্চিত আয়ত্ব করতে পেরেছেন।
-----  কাজেই নিশ্চিত করে বলা যায়, উদারবাদী ধ্বস ঘটার সাথে সাথে, ভারতীয় সাম্য, যেমনভাবে  ফ্যাসিস্তদের  মুখোমুখি হচ্ছে, যাকে বলা যাবে হেড অন কল্যুশান হচ্ছে, তেমনভাবেই মাঝামাঝি সময়ের ছাত্র নেতৃ্ত্ব নিজেদের প্রাসংগীক করতে না পারায়, কার্য্যতঃ ভেংগে পরছেন। 
-----  ইতিমধ্যে একটা লেখায় উল্লেখ করেছি, সমাজ বিজ্ঞানের নজরে দেখলে,  শ্রীমতি মমতার সরকারকে, বাম এবং ফ্যাসিস্ত শাসনের একটা অন্তর্বর্তী শাসন হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। অনুরুপভাবে, দক্ষিন এবং উত্তরের তথাকথিত সামাজিক ন্যায়ের আন্দোলনে যে চঞ্চলতা দেখা যাচ্ছে, সেগুলিও মুলঃ সামাজিক দ্বন্দ্বে (সাম্যের অভিমুখে শ্রমিক শ্রেনী বনাম ধর্মান্ধতা নিষ্ঠুরতার অভিমুখে বিশ্ব ফ্যাসিস্তদের স্বরযন্ত্র)  যে অস্তিরতা চলছে তারই প্রতিবিম্ব। শোনা যাচ্ছে মহারাষ্ট্রে আম্মেদকরকে সামনে রেখে আহ্মমেদকারের ছেলে যে দল চালাচ্ছেন, এই দোলাচলে কার্য্যতঃ ফ্যাসিস্তদেরকেই সাহায্য করছেন প্রকারান্তরে।  সেখানেও ব্রাহ্মন্যবাদের সাথে দলিতদের লড়াইটাই যে প্রধান সেটা সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রতিবিম্বিত হচ্ছে। 
------- যাইহোক, সব মিলিয়ে, যা দাড়াচ্ছে, তার মর্মার্থ একটাই। শ্রমিক আন্দোলন নিজেকে যদি, পুরানো হ্যাংগওভার থেকে নিজেকে বের করে আনতে, লেনিনবাদে ফিরে এসে, ভারতীয় শ্রমিক শ্রেনী এবং শিল্প ও সামাজিক সম্পর্কগুলিতে, বর্ণাশ্রমক নিশ্চিন্ন করে
------    প্রকৃত অর্থে, শ্রমে উন্নত ধাপকে ঘিরে যে সব সম্পর্ক নির্মান হয়েছে, সেগুলিতে শ্রেনী রাজনীতির উপাদানগুলিকে নিয়ে আসার মতো,
চৈতন্যে নেতাদের ফিরে আসতে বাধ্য করা না যায়
-------    এ দেশের গনতন্ত্রীদের কালের চক্রে একটা চক্রকে 'ফ্যাসিতন্ত্রের কাছে নিবেদন করেই, আগামী কয়েকটি দশকের কার্য্যক্রম নির্নয় করা উচিত হবে। 
--------   অন্যপ্রান্তে যদি প্রকৃ্ত অর্থে, নেতারা মুক্তির বিষয়টিকে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে চান তবে, (ক) শ্রমিকদের সর্বাত্মক একতা এবং আকাশ চুম্বি গনতন্ত্র (খ) অন্যপ্রান্তে আন্তর্জাতিকতার উভয় প্রান্তে (১) শ্রমিক শ্রেনীর আন্তর্জাতীক সৌভ্রাতৃত্ব (২) আমেরিকা মিলিটারীতন্ত্রের নেতৃ্ত্বাধীন সাম্রাজ্য বাদ বিরোধীতার কারনে
--------- যে সাংগঠনিক, রাজনৈ্তিক এবং ভাবাদর্শগত পূনঃর্গঠনের সাথে সাথে সাথে চিত্ত জগতে ইতিহাস বোধের বিকাশের জন্য, জ্ঞানের অখন্ড সত্বা, সংস্কৃতির ধারাবাহিকতায়
-------    শ্রম এবং শ্রমিক আন্দোলনকে, আন্তর্জাতীক এবং ভারতীয় পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ভাবে আবিস্কার করা প্রয়োজন হবে। (ক্রমশ)
 
Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours