প্রিয়াঙ্কা সরকার, লেখিকা, বর্ধমান: 

অ্যানির জীবন যেন অশরীরী ফ্রেমে বন্দি। হ্যাঁ, আমি উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের স্ত্রীর কথা বলছি। অ্যানের জীবনে শব্দের মালি হয়েই তো উপবাসী নারী যন্ত্রণা। লাল সুরার মতো অসময়ের কান্নার ঝড়ে একা।
খুব বলতে ইচ্ছা করছে - 

তুমি বলেছিলে অনাদর তো মস্ত স্বাধীনতা৷ স্বাধীনতা মুক্ত করে প্রাণ৷ বয়সের ভার কমিয়ে যেটুকু পাওয়া যায়,  তাই তো সামগ্রীর মূল্য - আগলে নিতে হয় সবুটুকু। বন্ধনহীন শিশুর তো অভিমান আহুতিমন বলো!!  তুমি যে আমার পুরুষযাত্রাপথ। খননশেষে ইতিহাস ছুঁয়ে কুয়াশা ভেজা আলিঙ্গন যেন মধ্যমার মুদ্রা।

অর্ধকুম্ভ স্নানে যেদিন দুলতে দুলতে সমুদ্রমন্থন দেখেছি, সেদিন অমৃতময় আশ্বাস বুকে আসে নি.. একটা শব্দ পরিহাস করেছিল...স্বাধীনতা!  

জনসমুদ্রের মাঝে এক বিন্দু ভাসা উদ্দেশ্য মুক্তি, নাকি মুক্ত, কি বলবেন ভেবে নিয়েছেন তো। 

কল্লোলের কলরোলে কথিত অবগাহনের সন্ধান কোথায় সেই মুক্তি!!  আচ্ছা!! "we are born free "..  সত্যি বুঝি!!  জীবন্ত সাত্ত্বিক আঙিনায় বাঁচার সূত্র ধরেই কি ডাস্টবিনের খাবার লড়াই করতে হয়!!  আখড়ায় সিদ্ধ পুরুষের মতো পৌরষত্বের সন্ধান করতেই কি ঘরের মেয়ের কাপড় হারিয়ে যায়!!  উফফ! ক্ষণিকের সংসারে আমার চোখে, স্বাধীনতা। 

আচ্ছা! শ্রদ্ধায় যখন অগণিত মানুষের কান্নায় চরম ঔদার্য নিয়ে শিক্ষিত বেকারের ঘুম ভাঙে,  যখন টিশনের বাড়িতে বাড়িতে দুই ঘন্টার হিসাবে পড়ার পাতারা ব্যক্তিপুরুষ হয়ে নিরঞ্জনী ইষ্টদেবতা হয়ে ধরা দেয়...তখনই কি নাম "স্বাধীনতা "!

ঘরের মেয়েটা যখন পর ভাতী থেকে পর ঘোরী হয়ে ওঠে, তবেই কি কঠোর নিরাসক্তির ছাইমাখা রুক্ষ্ম দেহতা কেঁদে ওঠে...উফফ! আজ তো স্বাধীনতা দিবস!

আধো মুখোশের আড়ালে যৌন সুড়সুড়িটা যখন কেবলই বৃক্ষ হয়ে রসের স্রোতে হানা দেয়,  তখনই নিকোনো নির্জন উঠোনে নষ্টা হয়ে ধরা দেয়...নাম " স্বাধীনতা...হয় কি!  

ধর্মের ভেদাভেদ,ভাঙা ঘরে পুঁটলির মতো করে আবর্জনার যোজন সংসার মাথা চাড়া দিয়ে বিদ্রোহী হয়ে যায়...এও কি স্বাধীনতা৷ আসলে সচেতনে সদ্যস্নাত হয়ে চিরকেলে সমমূল্যবোধের সমর্পণ...স্বাধীনতা চাই। অন্তরের সুধার মতো গরল দমন করে, জটাজুটের আড়ালে বোধগম্যের অবগুন্ঠন উন্মোচন... স্বাধীনতা! ভুল বলছি, 
"এক সত্যিকারের স্বাধীনতা"।

মানুষ চেনা দায়ে বড্ড বেরোসিক হতে হয়। তবে কি স্ট্রেংথ, প্যাশন অবাক করবে!!  আসলে যন্ত্রণা ছাড়া প্যাশন আসে না ; সাফারিং ছাড়া এটা নৈব নৈব চ৷ কিন্তু বিদ্রুপের দায়বদ্ধতা নতি স্বীকার করলে,  মুখের মায়াবী লজ্জার রাঙা ফ্রেম অবাক হয়ে আসে,আদুরে হয়ে বশ্যতা স্বীকার করে নেয়৷  কোথাও যেন বলতে মন যায়, উচ্চারণের গায়ে বদনামের নোনা শব্দ লাগিয়ো না, অভিনেতা হতে আর পারবো না৷ 

ঔরসের জোয়ান বুকে স্নেহ ছেড়ে যখন কাঙ্ক্ষিত  উপলব্ধির বীজ বপন করা হয়েছিল, তখন আর দোটানায় ভূমি গড়ে ওঠে নি বরং জীবনবোধ জেগে ওঠে৷ জীবনের কলম প্রজ্ঞাবান হয়, কিন্তু আহূতি... 
ও বড়ো আত্মিক, ভিন্নতায় বেহিসাবী৷ 

শরীরের গভীরে চিরকালের হরিণ ছুট। বেহিসাবি চিরকেলের অনিত্য ত্রাসই মাঝে মাঝে প্যাশনকে আঁকড়ে ধরতে চায়৷ তবু চিরকালের খোঁজে দ্যুতিময় আলোর সঞ্জিবনী...সমর্পণ সব।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours