দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

এবার পুজোয় শপিং  মলের দাপটে ধুঁকছে ছোট খাটো মাঝারি সব দোকান। মনে করিয়ে দিচ্ছে কৌশিক গাঙ্গুলির শঙ্কর মুদি সিনেমাকেই! 
তাই টোটোতে চাপলেই, টোটোচালক প্রশ্ন করেন,  ট্রেণ্ডি বাজার যাবেন? স্টাইল বাজার? কিম্বা কসমো? যে কোন শপিং মল সানঘাটা পাড়া থেকে ব্যাঙ্ক রোড হয়ে দেশবন্ধু রোডে যান, একটাই নাম প্লাজো, মন মাতানো সাজো! পারলে কামারপট্টি ছাড়িয়ে রঙ্গোলিতে যেতে পারেন! যদি পুরানো অভ্যেসে সায় দিয়ে হাটতলা বা ধারেপাশের দোকানেও ঢুঁ মারেন, সেই এক নাম প্লাজো! হাটতলার এক দোকানদার জানালেন, দাদা, এত মাল নামিয়েছি। মহাজনের টাকা শোধ দিতে পারবো না। অন্যবার অনেক সেল হয়ে যায় এতদিন। বাজার মন্দা, সব খেয়ে নিচ্ছে শপিং মল।  অনলাইনেও চলছে ব্যবসা। আমাজন, ফ্লিপকার্ট, মনত্রা কত্ত সব! 
অনেকেই মাছি ডাকাচ্ছে ব্যাঙ্ক রোডের অনেক দোকান। এক দোকানদার জানালেন, গ্রামের কিছু লোক আছে, যারা মলে যেতে ভয় পায়, তারাই আসে।
দেশবন্ধু রোডের এক অভিজাত বস্ত্রালয়ের মালিক বলেন, দেখুন রামপুরহাটে অনেক আগে থেকেই চল শুরু হয়েছে, বাইরে কাপড় কেনার। যাদের হাতে পয়সা আছে তারা কোলকাতায় বাজার করে। এবার মল হওয়ায় তারা রামপুরহাটে কিনছে। এতে আমাদের কোন অসুবিধা নেই। আমাদের খদ্দের ঠিক আছে। এবার দুরন্ত এক্সপ্রেস প্লাজোর সাথে, শার্ট, কুর্তি। ১৫ থেকে ৫০ বছরের মেয়ে ও মহিলাদের চয়েস এই পোশাক। 
 
রামপুরহাটের চার পাঁচটি শপিং মলের বিক্রেতারা একই কথা বলেন। তারা জানান, এবছর লেগিংস বাদ। তার জায়গায় জায়গা করে নিয়েছে প্লাজো। সুতির ভ্যারাইটি প্লাজো এসেছে। দাম ৬৫০ টাকার মধ্যে। এক কালার ও প্রিন্টের- দুই ধরণের পাওয়া যায়। সাধারণত এক কালারের কুর্তি নিলে, প্রিন্টের প্লাজো নেন ক্রেতারা। আবার প্রিন্টের কুর্তি নিলে, এক কালারের প্লাজো নেন। সেক্ষেত্রে ম্যাচিং নয়, কনট্রাস্ট কালারের হয়ে থাকে। হাঁটুর নিচ পর্যন্ত কুর্তি, আর  ঢিলেঢালা হয় প্লাজো। আর সেই কারণেই প্লাজো পসন্দ বলে জানান এক ক্রেতা! তিনি বলেন, আমার পছন্দ মল কারণ এখানে ক্রেডিট কার্ড সোওয়াইপ করে টাকা দেওয়া যায়। পেটিএমেও দেওয়া যায়। দেখুন বিল কমা বাড়া হতেই পারে। তাছাড়া এক জায়গায় পাওয়া যায়! 
আর এখানেই পড়ে পড়ে মার খাচ্ছে শঙ্কর মুদিওয়ালার মতো ছোট মাঝারি ব্যবসায়ীরা!



Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours