ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য ফিচার রাইটার দুর্গাপুরঃ রূপেন্দ্র প্রথমে স্হির করেছিলেন তাঁর বিদ্যায়তনে শুধুমাত্র মেয়েরাই লেখাপড়া শিখবে! সেক্ষেত্রে হিন্দু মুসলমান কোন ভেদ থাকবে না!
দুই সম্প্রদায়ের সমাজপতিরা মেয়েদের সেবাদাসী করে রাখতে চায়! তাঁরা চায় মেয়েরা অবগুন্ঠনবতী বা বোরখা পরিহিতা থেকে অসূর্যম্পশ্যা হয়ে থাকুক! পুরুষ শাসিত সমাজে নারী শুধুই ভোগ্যাপন্যা! সে বিনাপ্রতিবাদে পুরুষের সেবা করবে তার ইচ্ছামতো শয্যাসঙ্গিনী হবে,বংশ রক্ষায় সন্তানের জননী হবে! সন্তান প্রতিপালন করবে! আবার স্বামীর মৃত্যুর পর তার সাথে সহমরনে যাবে! মুসলমানদের সহমরন না ,কিন্তু পুরুষের ক্ষমতা আছে তালাক দেওয়ার! অর্থাৎ পুরুষের কাছে মেয়েরা তাদের সম্পত্তি!
রূপেন্দ্র চেয়েছিলেন নারীর মুখে প্রতিবাদের ভাষা যোগাতে! তিনি অনুভব করেছিলেন তাঁদের মুখে প্রতিবাদের ভাষা যোগাতে অক্ষর ঞ্জান আর শিক্ষা প্রয়োজন!এজন্য নিজের ভিটেতেই তিনি গড়ে তুললেন ' নারী বিদ্যা নিকেতন '!
কিন্তুছাত্রী সংখ্যা খুব কম! কারন রূপেন্দ্র জানতেন, গ্রামের ধর্মভীরু মানুষ খুব সহজে তাঁদের কন্যাদের বিদ্যালয়ে পাঠাবে না! কারন,কুসংস্কার মেয়েরা লেখাপড়া শিখলে অকাল বৈধব্য নিশ্চিত! আর কারনগুলি হ'ল, সমাজপতিদের রক্তচক্ষু এবং ধর্মান্ধতা!
অন্যদিকে তাঁদের পুত্রদিগকে চতুষ্পাঠিতে পাঠাতে চাইবেন! কালক্রমে বালিকা বিদ্যালয়টি ছাত্রদের চতুষ্পাঠীতে পরিনত হবে!এটা অনুভব করেছিলেন রূপেন্দ্র!আর একটি বিষয় যেটি রূপেন্দ্র ভাবিয়েছিল, একই বিদ্যালয়ে বালক ও বালিকা একত্রে অধ্যয়ন করলে, অনেক অবিভাবক তাঁদের কন্যাদের বিদ্যালয়ে পাঠাবেন না!এতে রূপেন্দ্রর মূল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে!
তাই তিনি জমিদার তারাপ্রসন্নকে অনুরোধ করলেন, তাঁর পুত্র শুভাপ্রসন্নরের উপযুক্ত শিক্ষার জন্য গুরু গৃহে প্রেরন করা যুক্তিযুক্ত! কিন্তু তারা প্রসন্ন রাজী হননি! কারন তাঁর স্ত্রী পুত্রকে অন্যত্র প্রেরন করবেন না! তখন রূপেন্দ্র তাঁর মূল উদ্দেশ্য যে নারী শিক্ষার বিস্তার সেটি ব্যক্ত করলেন!
(চলবে)
শুভকামনা রইলো
ReplyDelete