Jounyo sonkranto byadhi
শ্রাবণী মজুমদার, লেখিকা, বীরভূম:

শ্রী হর্ষ নল- দময়ন্তী শৃঙ্গার রসের বর্ণনা ছাড়িয়ে গেছে কালিদাস- বাল্মীকি ও ব্যাসকেও। তবে কালিদাসের কুমারসম্ভবের সপ্তদশ সর্গে হরগৌরীর শৃঙ্গার রসের বর্ণনা কম  কিসে!
কবি ভর্তৃহরি বলেছেন, নারী তো নয় বন। তাই 
শ্রোণীভার, সুডৌল বক্ষ দিয়ে নারীকে পাওয়া এত সহজ নয়। দরকার মানসিকভাবে সুসম্পর্ক।   তবে  যৌনতা বিবাহিত জীবনে জরুরি।  অনেক নারী তাদের বিবাহিত জীবনকে যন্ত্রণাময় মনে করে। কারন কি? 

এক আমেরিকান মহিলা হ্যানা ভ্যান ডি পিয়ার বলেন, আমার শরীর আমাকে সেক্স করতে দেয় না এবং আমি যখন সেক্স করি, তখন এমন মনে হয় যে কেউ আমাকে ছুরিকাঘাত করছে।"
এই কথাগুলো বলছিলেন , যার যৌনমিলনের সময় যন্ত্রণা হওয়ার এক রোগ রয়েছে।  নামের এই ব্যাধি সারা বিশ্বের নারীদের জীবনকে প্রভাবিত করে থাকে।

"আমি এমন অনেক নারীর সাথে কথা বলেছি যারা এই সমস্যায় ভুগেছেন। তাদের প্রায় সবার থেকে একটি অভিজ্ঞতার কথা জানতে পেরেছি, আর তা হল তারা খুব একাকীত্বে ভোগেন," হ্যানা বলেন।

ভ্যাজাইনিসমাস কি? এই রোগের ফলে হঠাৎ যোনির সংকোচন ঘটে। আর সে কারণেই সঙ্গমে খুব কষ্ট হয়। যাদের ভ্যাজাইনিসমাস আছে, তাদের যোনিপথের পেশিগুলো শক্ত হয়ে যায় এবং এর ওপর ওই নারীদের কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না। প্রায় একই ধরনের রোগ ডিসপ্রুনিয়া। এই রোগের ফলে যোনি শুষ্কতার রোগ হয়। সঙ্গম হয়ে ওঠে যন্ত্রানময়। 

এর ফলে কিছু ভুক্তভোগীদের যৌনমিলনের জন্য অনেক কষ্ট পেতে হয়। এসময় তাদের জ্বালাপোড়া এবং কাটা দেয়ার মতো যন্ত্রণা হয়।অনেকের পক্ষে ট্যাম্পন প্রবেশ করানোও বেশ কঠিন হয়ে যায়।

হ্যানার বয়স এখন ২১ বছর। তিনি তার প্রথম যৌনমিলনের অভিজ্ঞতার কথা মনে করতে গিয়ে বলেন: "আমাকে সবসময় শেখানো হয়েছিল যে কুমারীত্ব হারানো যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে। কিন্তু প্রথম যৌনমিলনের সময় আমার মনে হয়েছিল কেউ আমার ভেতরে ছুরি ঢুকিয়ে চারপাশে মোচড়াচ্ছে।"

যুক্তরাজ্যের কনসালট্যান্ট গাইনোকোলজিস্ট লেয়লা ফ্রডশাম বলেছেন , এই রোগের ফলে যৌনতার জীবন যন্ত্রানময় হয়ে ওঠে।  

হ্যানা বলেন, "প্রথমবারের যৌনমিলন নিয়ে চিন্তিত হওয়াই স্বাভাবিক, এবং সম্ভবত আমরা সবাই এই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। তবে ভ্যাজাইনিসমাসে আক্রান্ত নারীরা আজীবন এই জাতীয় অনুভূতি নিয়ে বেঁচে থাকতে পারেন।"
আমিনার বয়স কুড়ি বছরের কিছু বেশি এবং তিনি ভ্যাজাইনিজমাসে আক্রান্ত। তিনি বলেছেন যে এই বিষয়টি তার জীবন চিরতরে বদলে দিয়েছে।

এই আমেরিকান মহিলা বলেন, "ভ্যাজাইনিসমাস আমার বিবাহিত জীবনের আনন্দকে গ্রাস করেছে। আমি কখন সন্তান নিতে চাইব সেটা বেছে নেওয়ার ক্ষমতাও আমার নেই।"

জানা গেছে, এই অবস্থা নারীর জীবনের যে কোন সময় ঘটতে পারে। যৌন রোগ থেকে শুরু করে সন্তান প্রসব বা যৌনতা নিয়ে কোন মানসিক আঘাত কিংবা মেনোপজ - এই সময়গুলোতে যে কোন অভিজ্ঞতার কারণে এই ব্যাধি নারীর জীবনে দেখা দিতে পারে।
ডাঃ লেয়লা ফ্রডশাম বলেন,"এসব মন্তব্যের একটি হল, আপনার বিয়ের রাতে যৌনমিলন খুব যন্ত্রণাদায়ক হবে এবং কুমারীত্ব প্রমাণের জন্য আমরা দেখতে চাই যে মিলনের পর কিছু রক্ত বয়ে গেছে।

এজন্য মনস্তাত্ত্বিক পরামর্শ বা সাইকো সেক্সুয়াল কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে যৌনমিলনের মানসিক ভয় দূর করার চেষ্টা করা হয়। গ্লাসগো'র কুইন এলিজাবেথ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ ভেনেসা ম্যাককে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে - "এটি একধরণের কথা বলার থেরাপি, যা আপনার শরীরের ব্যাপারে আপনার অনুভূতিগুলো আরও বেশি করে বুঝতে এবং কিছু নেতিবাচক চিন্তা পরিবর্তন করতে সহায়তা করে।"

হ্যানা জানাচ্ছেন যে তার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, তবে যৌনমিলন এখনও তার কাছে কঠিন মনে হয়। ভারতীয় শাস্ত্রীয় দৃষ্টি কোন থেকে এব্যাপারে একটু সাহায্য পাওয়া যেতে পারে।  বৈষ্ণব রসতত্বে ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে বিপ্রলম্ব প্রেম কাজে আসতে পারে। বিপ্রলম্ব প্রেমের চার স্তর--পূর্ব রাগ, মান, প্রেম বৈচিত্র ও প্রবাস। এই বিপ্রলম্ব কাজে আসে, যখন দৈহিক মিলন ব্যর্থ হয়।  মনে হয়, 
"আমার মিলন লাগি তুমি
 আসছ কবে থেকে।"


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours