Old temple
ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুরঃ   দীর্ঘদিন  ধরে  সোঁয়াই  গ্রামের  প্রধান  সমাজপতি ' নারী -শিক্ষা ' নিয়ে  বাড়াবাড়ি  করায় রূপেন্দ্রর  প্রতি  রাগে  ফুঁসছিলেন! রাগের  আরও  একটি  কারন,গ্রামের  সদ্য  বিধবা যুবতীকে  'সহমরনে ' পাঠানোর  জন্য  সব  ব্যাবস্হা  করে পাঁচ  খানি  গ্রামের  মানুষকে  শ্মশানে  হাজির  করে ও রূপেন্দ্রর  বাধায়  সে  যাত্রায়  রনে  ভঙ্গ  দিতে  হয়েছিল  সমাজপতিদের! রূপেন্দ্র  যুক্তি  ছিল সদ্য  বিধবা  সন্তান সম্ভবা,তাই হিন্দু  ধর্মের  নিয়ম  অনুযায়ী  সন্তান  সম্ভাবা ' সতী' হতে  পারেনা!
         সমাজপতিরা  প্রমাদ  গনলেন  আর  একটি  কারনে, প্রায়  প্রতিটি  ঘরের  গৃহবধুরা  রূপেন্দ্রর  ' নারী - পাঠশালায় ' যেতে  চায়! তাঁরা  ঘরে  ঘরে  বোঝাতে  শুরু  করলেন! ঘরের  বৌরা  যদি  'বিদ্যেধরী'  হয়, গৃহকর্মে  তাদের,মন  থাকবে  না! পতিসেবা  তো  করবেই  না, ছেলে মেয়েদের  লালন  পালনও  পুরুষদের  করতে  হবে! ঘরে  ঘরে  ব্যভিচার শুরু  হবে! হিন্দু  ধর্ম  রসাতলে  যাবে! তাই  একটা  ব্যাবস্হা  এখনই  করা  দরকার!
           গ্রামের  যুবকদের  এমন  ক্ষ্যাপানো  হ'লো, কেউ  কেউ  নিদান  দিল  বাপ  বেটিকে  পুড়িয়ে  মেরে  ফেলাই  উচিত! নন্দ  চাটুজ্জ্যে  নিদান দিল , রূপেন্দ্রর  ঘর  পুড়িয়ে  দেওয়াই  উচিত!
   
        রুপেন্দ্রর  বিরূদ্ধে  ব্যবস্হা  নেওয়ার  জন্য গ্রামের  চন্ডীমন্ডপে ' গ্রাম - ষোল  আনা ' অর্থাৎ  পঞ্চায়েতের  ডাক  দেওয়া  হ'লো!
              অনেকেই  আশঙ্কা  করেছিলেন, একবগ্গা  রূপেন্দ্র  সম্ভবতঃ চন্ডীমন্ডপে  গ্রাম  ষোল আনার  ডাকে  আসবেন  না! কিন্তু  তাঁদের  ধারনা  অমূলক  প্রমানিত  হ'ল  নির্দিষ্ট  সময়ে  শিষ্য  জীবন  দত্তকে  সাথে  নিয়ে অষ্টাদশ  শতকের  গ্রামীন  বিচারালয় ' জনতার  আদালতে 'হাজির  হ'ল  একবগ্গা  রূপেন্দ্র!


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours