Mukul rayer birudhye todonte
কাজল ভট্টাচার্য, সিনিয়র জার্নালিস্ট, কলকাতা:

"যা করেছি মুকুল রায়ের নির্দেশেই করেছি।" এমনটাই নাকি দাবি করেছেন বর্ধমানের প্রাক্তন পুলিস সুপার এসএমএইচ মির্জা। খবর সিবিআই সূত্রের। তাহলে ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশনে মির্জাকে যে টাকা নিতে দেখা গেছিল, তা কার নির্দেশে নেওয়া হয়েছিল? ফোনে মির্জা যে এক কোটি সত্তর লক্ষ টাকা ঠিক জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলছিলেন তার নেপথ্যেই বা কে ছিলেন? মির্জার বয়ানে সন্দেহের আঙুল নারদাকাণ্ডের সময় তৎকালীন তৃণমূল হেভিওয়েট নেতা  মুকুল রায়ের দিকেই। প্রসঙ্গত, ওই সময় তিনিই দলের তরফে বর্ধমান জেলার দায়িত্বে ছিলেন।

এদিকে মুকুলও তাঁর দাবিতে অনড়। "ভিডিও ফুটেজের কোথাও আমাকে টাকা নিতে দেখা যায় নি," দাবি মুকুলের। তবে ম্যাথু তাঁর কাছে কী উদ্দেশ্যে দরবার করতে এসেছিলেন? কেনই বা মুকুলকে বলতে শোনা গেছিল, ম্যাথুকে মির্জার সঙ্গে দেখা করতে?

"ম্যাথু জানিয়েছিলেন বর্ধমান অঞ্চলে তিনি কিছু ব্যবসা করতে চান। তাই তাঁকে সেখানকার পুলিস সুপারের সঙ্গে দেখা করতে বলি। এর বেশি কিছু না।" মুকুল রায়ের আরও দাবি, টাকাপয়সার ব্যাপারে তাঁদের মধ্যে কোনও কথাবার্তা হয়নি।

মির্জা মুকুল রায়ের বক্তব্যের মধ্যেকার অসঙ্গতি দূর করতে আজ দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা চলছে বলে দাবি সিবিআই সূত্রের। ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে গোটা ঘটনার কথা জানতে চেষ্টা চালাবেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। তার আগে মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

বৃহস্পতিবার মির্জাকে গ্রেপ্তারের পরদিনই মুকুল রায়কে তলব করে সিবিআই। দলের কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি শুক্রবার নিজাম প্যালেসে হাজির হতে পারেননি। তবে পরদিন, শনিবার দুপুর দুটোর কিছু পরেই মুকুল রায় সিবিআই দপ্তরে গিয়ে পৌঁছন। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক তাঁকে জেরা করা হয়।

সিবিআই দপ্তর থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুকুল এক বিস্কোরক মন্তব্য করেন।  তাঁর অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে এক ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে তাঁকেও নারদকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে দিতে। এরপরেই মুকুল রায় বলেন, "সিবিআইকে সর্বতোভাবে সাহায্য করতে আমি প্রস্তুত। কারণ আমি কোনও ভাবেই ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না।"

এদিকে নারদকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা তৃণমূলের আর এক সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার আজ এক অনুষ্ঠানে ম্যাথুর থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি  সরাসরি বলেন, "ইলেকশনের জন্য চাঁদা নিয়েছিলাম। রসিদও দিয়েছিলাম।" নির্বাচন কমিশনকে সেই টাকার হিসেবও দেওয়া হয়েছিল বলে সাংসদের দাবি।
Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours